সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
25.তোর্সার ঘরবাড়ি-২৫

25.তোর্সার ঘরবাড়ি-২৫

24.তোর্সার ঘরবাড়ি-২৪

24.তোর্সার ঘরবাড়ি-২৪

23.তোর্সার ঘরবাড়ি-২৩

23.তোর্সার ঘরবাড়ি-২৩

22.তোর্সার ঘরবাড়ি-২২

22.তোর্সার ঘরবাড়ি-২২

21.তোর্সার ঘরবাড়ি-২১

21.তোর্সার ঘরবাড়ি-২১

20.তোর্সার ঘরবাড়ি-২০

20.তোর্সার ঘরবাড়ি-২০

19.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৯

19.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৯

18.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৮

18.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৮

17.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৭

17.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৭

16.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৬

16.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৬

15.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৫/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

15.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৫/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

14.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৪/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

14.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৪/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

13.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৩/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

13.তোর্সার ঘরবাড়ি-১৩/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

12.তোর্সার ঘরবাড়ি-১২/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

12.তোর্সার ঘরবাড়ি-১২/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

11.তোর্সার ঘরবাড়ি-১১/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

11.তোর্সার ঘরবাড়ি-১১/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

10.তোর্সার ঘরবাড়ি-১০/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

10.তোর্সার ঘরবাড়ি-১০/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

9.তোর্সার ঘরবাড়ি-৯/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

9.তোর্সার ঘরবাড়ি-৯/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

8.তোর্সার ঘরবাড়ি-৮/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

8.তোর্সার ঘরবাড়ি-৮/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

7.তোর্সার ঘরবাড়ি-৭/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

7.তোর্সার ঘরবাড়ি-৭/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

6.তোর্সার ঘরবাড়ি-৬/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

6.তোর্সার ঘরবাড়ি-৬/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

5.তোর্সার ঘরবাড়ি-৫/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

5.তোর্সার ঘরবাড়ি-৫/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

4.তোর্সার ঘরবাড়িত-৪/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

4.তোর্সার ঘরবাড়িত-৪/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

3.তোর্সার ঘরবাড়ি-৩/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

3.তোর্সার ঘরবাড়ি-৩/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

2.তোর্সার ঘরবাড়িত-২/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

2.তোর্সার ঘরবাড়িত-২/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

1.তোর্সার ঘরবাড়ি-১/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

1.তোর্সার ঘরবাড়ি-১/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

তোর্সার ঘরবাড়ি-৮/মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস

তোর্সার ঘরবাড়ি //অষ্টম পর্ব
মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস
--------------------------------------

তোরসা নদীর ধারে ধারে ওই
দিদিগো মানসাই নদীর ধারে
আজি সোনার বঁধু গান গাহিয়া যায়
দিদি তোর তরে কি মোর তরে কি
নদীর পারে পারে....

বন্ধুরা সব কে কোথায়... তবু এই শারদীয়া বাতাস ঠিক চিনে নেয় সবাইকে। পাড়ার মেয়েরা ফেরে বাপের ঘরে। যেমন দুগ্গা এসেছেন মর্তে, চারদিন পর তাকে সারা শহর পরিক্রমা করে নিয়ে আসবে যে এই পথেই পাড়ায় সাজিয়ে রাখা পথে...সবাই ণ লে ট্রাক থেকে নামাবে প্রতিমা, হেঁইসা মালো টান হো...করতে করতে প্রতিমা নিয়ে বাঁধে উঠবে একে একে পাড়ার ডাকাবুকো ছেলের দল। বরাবর দেখে দেখে পরের বছরের জন‍্য প্রতীক্ষায় থাকে মিনি, মিনির বন্ধুরা। যেহেতু ট্রাকে প্রশেসনে যাওয়া তার নিষেধ, তাই সবার আগে বাঁধের উপর জায়গা নিয়ে দাঁড়ায়। সঙ্গে বড় কেউ থাকবেই মার নির্দেশে বা বাবার কথায়।ছোটতে মাথাও ছোট, কোলে তুলে নিত বড়রা দেখার সুবিধে হবে বলে। এখন মিনি একাই একশো। কলেজে পড়ছে। কিসের টান তবু। গিয়ে দাঁড়ায় বাঁধে। অন‍্যান‍্যরাও ঘেঁষাঘেঁষি। আজো কার ও চোখে জল, নিয়ম মেনে অনেকেই গলায় ঢেলেছে সিদ্ধির শরবত। চোখগুলো অনেকের ই লালচে ঢুলু ঢুলু। সব শিবের অবতার যেন। এ বাড়ির সেজ জেঠির বয়সী ছেলে, অন‍্য ভাইয়েরাও লুকিয়ে সিদ্ধির শরবতে চুমুক দেয় প্রতিবছর, ট্রাকে যেতেও বাড়ির ছেলেদের কোন বাধা নেই। মেয়েরাই নিষেধে আটকে আছে। কারো কোন ই অভিযোগ জমেনা মিনির জমে। বন্ধুরা ট্রাকে উঠে হাত নাড়ে, নদীর জলে নামে সিঁদুর মাখে আর কষ্টে মিনির বুক ফাটে। এখানে চড়ুয়া অমল ঘনারাম ঘঙ্চূ ওদের উঠতি যৌবনের কদর করে এপাড়া। প্রতিমা টানতে, নিচের কাঠ ধরে পাড় করে দিতে, তোর্সার ঠান্ডা জলে ভেসে থাকতে, বা কলস ভ'রে ডুব দিয়ে গঙ্গাজল ভ'রে দিতে ওদের সমকক্ষ আর কে! আম্রপল্লব সহ পিতল ঘট মাথায় তোলে চক্রবর্তী বাড়ির নালকদা। মন্ডপে গিয়ে সে ঘট মাটির বিড়ের
উপর রাখবে, ছেলেরা ভেজা জামা ঘোরাতে ঘোরাতে সবার গায়ে জল ছিটোবে, সবাই পবিত্র বারিকে প্রণাম করবে। আকাশে চাঁদ তখন মুচকি হেসে বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া ওচারীর ঘরের চালে নেমে আসবে, জ‍্যোৎস্না দেবে, আলো দেবে চরে্য মানুষদের আর বিসর্জনের ঘাট জুড়ে। কথাগুলো, ছবিগুলো বালির মত ঝুর ঝুর করে ঝ'রে যাবে নদীর পাড়ে। প্রতিমা সাত পাক ঘুরিয়ে ডাকের সাজের মুকুট নিয়ে চলল ভেসে নদী গভীরে...মিনির চোখে জল আসে কেন,কান্না পায় কেন! আস্ত মাটিতে প্রিয় মানুষেরা দাঁড়িয়ে। এখন আর ঘনারাম, অমল কেউ এমনকি পুনুও ওকে পাহারা দেয়না। সবাই এক একজন হয়ে ওঠা সূর্য স্তম্ভ। নিকষ কালো পাথরে কুঁদে গড়ে ওঠা পুরুষ গন্ধ ভাসে স্নানের উড়ে আসা জলে, মিনি আর ওর বন্ধুরা চোখের ইশারায় মন্ডপের দিকে হেঁটে যায় শান্তি জল নেবে বলে।
 লাল ঠাকুর ঘরের মেঝেতে এ বাড়ির বড়ছেলে অভিজিৎ মিত্র সঙ্গে আর সকলে বারান্দায়, মন্ত্রপূত জল শান্তি বারি বাড়ি থেকে নিয়ে সকলকে প্রণাম পর্ব চলে বড় থেকে ছোট পর্যায়ক্রমে। ঘরে ঘরে মিষ্টি মুখ নারকেলের আতিশয‍্য আর আলিঙ্গন, তারপর ই ঐ আজকের দিনের মত বন্ধুপর্ব শেষ। দেখাশোনা পর্ব শেষে পরদিন থেকে জীবন গড়ে নেওয়ার খেলায় কতগুলো বই, নোটস্ আর সীমাহীন ভাললাগা ওদের বড় হতে বলে। শহরে্য কারিগর রাজপ্রাসাদের গম্বুজ মিনারে লাল ইটের বাসর সাজায় কোন পরীর জন‍্য জলদ গম্ভীরে বাজতে থাকে সাহানা রাগিনী, পরজের টানে বেজে ওঠে মদনমোহন বাড়ির সানাই। মিনি, প্রজ্ঞাবতী মিত্র হয়ে যায় পলকছ। পুনু হয় প্রণবেন্দ্র মিত্র খাতায় কলমে। প্রজ্ঞাবতী কলেজ, প্রণবেন্দ্র শহরের নামী সাহেবের স্কুলে।

*     *      *
 একটু একটু করে বদলে যেতে থাকে মুখগুলো। সময় আর ঈশ্বরই তো নিয়ন্তা। হাতে একখানা দিক নির্দেশক মাপকাঠি থাকে তার।রোজ সাত সকালে বানভাসির অগাধ জলে উদরান্নের সন্ধানে লগি ঠেলে অনল নমিতা, ঘনারাম, তিত্তিরীর ছেলে মেয়ের সংসার হয়। কালের নিয়মে বৃদ্ধ হতে হতে ওচারিদের মুখগুলো বলীরেখায় ভাস্কর্য তৈরি করে। তারপর একদিন আর খুঁজে পাওয়া যায়না ওদের। মুখগুলো বদলে যায়। জীবনতো একটাই। বাঁচতেই হয়। রাস্তার এধারের পর পর বাড়িগুলোয় জ্বলত কয়লার উনুন, তার জন‍্য ঘুঁটে গুল সবকিছু আয়োজন বাড়িতেই হত। বড় বড় কয়লা,কাল হীরে হাতুড়িতে ভেঙে ছোট ছোট টুকরো হত। বড় বড় কাঠের তক্তার উপর গুল দেওয়া হত। মিনিও কতসময় মার গুল দেওয়া দেখতে দেখতে উৎসাহিত হয়ে নিজেও হাত লাগিয়েছে। আসলে মিনি মিলু, ঘঞ্চু, ঘনা, অমল, রতু এরা দু প্রান্ত,দু যুগের মানুষে্য মধ‍্যে সাঁকো তৈরি করে জীবন স্রোতে ভেসে পড়েছে। শুধু গল্প শুনেছে ১৯৫১ সালের ২১ শে এপ্রিলের খাদ‍্য আন্দোলনে নিহত পঞ্চ শহীদের কথা। তোর্সার পাড়ের শ্মশানের ধারেই এঁদের দাহ কাজ হয়েছিল। প্রচুর জন সমাগম ঘটেছিল সেখানে।...আর শিউরে ওঠা এই ঐতিহাসিক কাহিনীতে কি যে ছিল, চোখে জল নিয়ে মার বুকের আঁচলে মুখ লুকিয়েছে পুনু, মিনিও।
 বড় বড় গাছে ঘেরা সাধুবাবার আশ্রমের গল্প শুনেছে। কখনো একলাটি যেতে দেয়নি কেউ। লাল কাপড় পরা মাথায় জটা সুঠাম চেহারার সাধুবাবা প্রায় ই প্রাথমিক স্কুল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেছেন। কেমন গা ছমছম করত ওদের,কেমন ভয়ঙ্কর লাগত। ক্লাসঘরে ছুটে যেত।কতবার শুনেছে নদী ভাঙনে কত পাড়া চলে গেছে নদীর মাঝখানে। কতবার শুনেছে তখন নদীতে স্নান করতে ইচ্ছে হলে অনেকদূর যেতে হত। বহুদূর থেকে ভেসে আসত প্রবল স্রোতের শব্দ। আবার বদলে গেল বন‍্যা এল।ভয়ঙ্কর রূপে ১৯৫৪ সালে। পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবন। পলি ভরা ঘোলা জল। যেসব পাড়ায় বড় বড় মাঠ আর খোলা জায়গা জমি ছিল সব নদী গর্ভে, বাড়িঘরের তেমন ক্ষতি হলোনা কিন্তু অনেক পাড়ার বড় বড় পাকা বাড়ি ধ্বংস হওয়ার কাহিনী শুনে শুনে ছবি হয়ে গেছে ওদের মনের ভিতর। এভাবেই নদী এগিয়ে এসেছে শহরের দিকে... জলের এগিয়ে আসার শব্দে ভয়ে ভয়ে কাটানো মানুষ দেখেছে রাজ আমলের বর্ধিষ্ণু এলাকা পাটাকুড়ার বড় অংশ নদী ভাঙনে নিশ্চিহ্ন। রাজবাড়ির পিছন দিক জলের গভীরে। কেশব আশ্রম ছোট হয়ে গেছে। মিনিরা বড় হতে হতে খেলতে খেলতেও দেখেছে বাঁধে্য যাতে ক্ষতি না হয়, ফাটল ধরলেই লবন বস্তা কিংবা বড় বড় বোল্ডার তার বেঁধে নামিয়ে দেওয়া হত নদীর দিকে। নদী ভাঙনে বন‍্যার্তদের পাশে অভিজিৎ বাবু, মৃদুল এরা, হাজরাপাড়ার তরুণ বাসিন্দারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। দুর্গত মানুষেরা তাই বার বার ঘুরে আসে এ বাড়ির পাকা বারান্দায়। আজও আসে। মিনি মায়ের নিশ্চুপ আগুনে মুখ আর প্রচুর সহিষ্ণুতায় সকলের মুখের আহার তৈরি দাঁড়িয়ে দেখেছে। ততদিনে বাঁধ দাঁড়িয়ে গেছে মহীরুহের মত, ঢাল হয়ে ঠায় অচঞ্চল থেকেছে।
মাঝশহরে রাজশহর কতবার যে উত্তাল হয়েছে তার হিসেব নেই। মিনি তখন থ্রি। হঠাৎ ক্লাস থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হল প্রতিবাদ লাইনে। পাশের স্কুলের মাষ্টারমশাই শঙ্করবাবুর গুলি লেগেছে, সি আর পি এফ অকারণ গুলি চালানোর প্রতিবাদে ছাত্ররা উত্তাল। কি করে কখন বাড়ি ফিরেছিল সে কি করে বলবে! মনে নেই। শুধু মনে আছে বিকেল থেকে রাত বড়দের হাত ধরে তোর্সা বাঁধের উপর দাঁড়িয়ে লকলকে আগুন শিখায় আকাশের রঙ দেখেছিল বদলে যেতে। পুড়ছিল ডি এম অফিসের নানা নথিপত্র।ছাত্ররা সমুদ্রের মত ছুটে গিয়ে জেলা সমাহর্তা অফিসে ভাঙচুর চালায়, প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র পুড়িয়ে দেয়।অনেক রাত পর্যন্ত আগুন জ্বলেছিল।
 বন‍্যার পর যেমন প্রজাবৎসল মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ প্রজাদের মঙ্গলে এগিয়ে আসেন, তেমনি সেইসময়ের কেন্দ্র ও রাজ‍্য সরকারি বিভিন্ন মহলের সঙ্গেও আলোচনা চলে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, তৎকালীন মুখ‍্যমন্ত্রীও ভয়াবহ পরিস্থিতি থূকে মুক্তির উপায় খুঁজতে এ শহরেই চলে এসেছিলেন। ঠিক একইভাবে অল্পদিনেই সে সত্তরের দিনগুলিতে জেলা সমাহর্তা অফিসেও ছাত্রদের হাতে যেসব ক্ষতি হয়েছিল যতটা সম্ভব দ্রুত সমাধানের চেষ্টা হয়েছে। ভাল মন্দ দু:খ ভালবাসা সবটুকু আনন্দ জীবনে নিয়েই চেনা মানুষের জীবন বদলে যেতে থাকে।কত অদল বদল নিয়েও রাজার শহরে থেকে যায় কেউ কেউ জন্মসূত্রে, কেউ কর্মসূত্রে,কেউবা বিবাহ সূত্রে। নানা মানুষ তাদের প্রয়োজনে আসে, বসতি তৈরি করে আবার অনেকে চলে যায় অন‍্য কোথাও অন‍্য কোনোখানে... তোর্সা একই ভাবে কখনো দূর কখনো কাছে আসার খেলায় মাঝনদী থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকে।
 মিনি তখন নবম। একঝাঁক শাড়িপরা বন্ধু। হঠাৎ ই পাশের বাড়ির প্রিয় বন্ধুটি... শিশুপাঠ যার সঙ্গে জড়িয়ে, এ মিত্তিরদের মাটির বারান্দায় যে তিনশিশু ধারাপাত, শিশুসাথী, সহজপাঠ একসঙ্গে পড়েছে...একবাড়ির উঠোন থেকে অন‍্যবাড়ির উঠোনে পা রাখতে যে বাঁশের গেট ছিল তাদের মধ‍্যে হঠাৎ ই একজনের বিয়ে ঠিক হল। ওর নাম ঝুমুর। ঠান্ডা শান্ত মেয়ে। পড়াশুনোয় তেমন মাথা নেই তো কি! এত তাড়াতাড়ি পরের ঘরে! মিনির মায়ের মুখ ও গম্ভীর হয়েছিল। শুধু একটু অন‍্যরকম গল্প অন‍্য ছবির স্বপ্ন দেখছিল কি মিনিরা!! না ওদের ও ভারী রাগ জমেছিল।মনে হয়েছিল এমন বালিকা বধূর এমন কুমড়ো পটাশ বর! জোরেতো বলার নয়, তাই গুজ গুজ ফিসফাস।

*    *    *

তারপর কে কার খোঁজ রেখেছে! নিজেদের মত কাজের জগৎ, পড়ার জগতের বাইরেও কতকি সুখে আনন্দে দু:খে সব নিয়ে বড় হওয়া আরো বড় বৃহতের দলে। হঠাৎ ই শোনে ঝুমুর ফিরে এসেছে কোলের ছেলেকে নিয়ে। বিপুল অত‍্যাচারে। শ্বশুরবাড়ির ভীতি যূথবদ্ধ হয়ে ভয়ঙ্কর হতে থাকে মিনিদের মধ‍্যে, ছড়িয়ে যায় বাষ্পের মত। কখনো আকাশে তাকিয়ে উড়ন্ত চিলের দিকে চোখ পড়ে কিংবা দাদাদের মাঞ্জা দেওয়া সুতোর টানে রঙীন ঘুড়ি লাটাইয়ের সুতোর সঙ্গে ঘুড়িটা কেমন ধীরে উঠতে থাকে উঁচুতে দূরে আরও দূর বিন্দুর মত। মনখারাপ হয়ে যায়। অন‍্যমনস্ক হয়ে কতবার এপুল ওপুল লাফাতে গিয়ে হাতের কবজি কেটে রক্ত আর রক্ত, টিটেনাসের ভয়ে ইঞ্জেকশন সঙ্গে সঙ্গে। ভয়ে পাঁশুটে মুখে মার জন‍্য অপেক্ষা।
 মাঝখানে সেই ১৯৭১ এর পর বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের ঢেউ সামান‍্য হলেও ছবি ছবি মন। শত্রুপক্ষের যুদ্ধ বিমান।...সবাই বলত চীনের। বাড়ির বড়রা ঘর বারান্দার আলো নিভিয়ে দিত। ঘরের ভিতর মোমবাতি জ্বলত অথবা লোডশেডিং ল‍্যাম্প। নিজের ছায়াকেই রাতের অন্ধকারে আবছা আলোয় ভয়ঙ্কর মনে হত। অন‍্যরকম রোমাঞ্চ। মিনি আর বাড়িশুদ্ধু ভাইবোন, পাড়ার সবাই যেযার দোর এঁটে নিশ্চুপ হয়ে থাকা। প্লেনের শব্দটা ধীরে দূর থেকে আসত, তারপর আওয়াজ হত জোর, আবার দূরে মিলিয়ে যেত। পরে শুনেছে ওরা এ হল যুদ্ধ বাজারে'ব্ল‍্যাক আউট'। অভিজিৎ বাবু বড় বড় বাঁশের তৈরি ডোলে বছরের চাল এনে রাখতেন। সকলের বাড়িতেই চাল রাখা হয়েছিল। খোলা বাজারে না পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় মিনিরা ভাইবোনেরা কেমন টক টক স্বাদের ভাত ই নাক মুখ বন্ধ করে অমৃতের মত খেয়ে নিত।
ভিখিরীর দেখা মিলেছে তখন। এমনকি, বাড়িতে এসে বাঁকাচোরা এ্যালুমিনিয়ম বা কলাইকরা থালা বাড়িয়ে ভাত চেয়েছে। কোন কোন দিন ভাতের বদলে ফ‍্যানও চেয়ে নিয়েছে। আর ঐরকম ই এক দুপুরে ঘষা ঘষা সবুজ রঙের শাড়ি পরে ঢলঢলে চেহারার কালো কোলো এক মুসলিম বউ মিত্তির বাড়িতে ঢুকেছিল। নাম বলেছিল" জবেদা"। মিনির মনে আছে জবেদার মাথা ভরা তেলহীন চুল আর ভাসা ভাসা কাজল দেওয়া যেন এমন দুটি চোখ।সে এল তারপর সেই কবে যে আবার কোথায় চলে গেল কাজের মধ‍্যেই কোন ফাঁকে, মিনি এখন ও খোঁজে খুঁজেই যায়। বড় ভালোবেসেছিল যে...

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri