লে পাঙ্গা-৭/শুভ্রজ্যোতি দাস
লে পাঙ্গা/৭
শুভ্রজ্যোতি দাস
জিম
"ব্যস্ত আছ?"
" না, কি ব্যাপার দিলীপদা?"
"তাহলে একটু গেমস রুমে এসো না। দুটো আলোচনা আছে।"
দিলীপ দা গতকাল স্কুলে আসেননি। DSSA-এর মিটিং এটেন্ড করতে গিয়েছিল। মিহির ভাবল সেই ব্যাপারেই কথা হয়তো।
দিলীপদা শুরু করলেন, "তোমরা হয়তো জানো, গতকাল আমি DSSA-এর মিটিংয়ে ছিলাম। তো, সেই মিটিং এর দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েই এই আলোচনা।" তারপর একটু কাষ্ঠ হেসে বলল -"অবশ্য আমরা আদার ব্যাপারী, জাহাজের খোঁজে আমাদের কিই বা দরকার।"
-" বেশি প্যাঁচাস না তো। কি বলবি তাড়াতাড়ি বল।" - শুভাশিস দা তাড়া লাগায়।
-" আরে, মাস্টার মানুষ অত অধৈর্য হলে চলে।" শুভাশিস দা আর দিলীপ দার সম্পর্কটা বেশ অম্ল মধুর। দূর সম্পর্কের আত্মীয়। এই বয়সেও দুজনেই দুজনের পেছনে সারাক্ষন লেগে থাকে।
-" তো যা বলছিলাম, মিটিংয়ে প্রথম জাহাজের কথা যেটা বলা হল- সেটা জিম। এই জেলায় চারটা স্কুলকে জিম ইকুইপমেন্ট দেওয়া হবে। ক্রাইটেরিয়া রাখা হয়েছে - যে কোন একটি দলগত খেলায় স্টেট লেভেল এ ভালো পারফরমেন্স, অথবা ব্যক্তিগত ইভেন্টে অন্তত চার জনের স্টেট লেভেল পারফরম্যান্স। জোড়হাটি হাইস্কুল, মাধবপুর হাইস্কুল অটোমেটিক চয়েস। বাকিদের এই ক্রাইটেরিয়া পূরণের জন্য একবছর সময় দেওয়া হয়েছে। না পারলে জিম ফেরত যাবে।" - দিলীপ দা একটু থামল।
-"বাকি জাহাজে কি আছে শুনি।" - শুভাশিস দা তাড়া লাগায়।
-"আমাদের জাতীয় খেলা কাবাডি কে প্রমোট করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাই সামনের বছর থেকে স্কুল ভিত্তিক কাবাডি টুর্নামেন্ট চালু হবে। কাবাডি র টিম তৈরিতে স্কুলগুলোকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।"
-"ও এই ব্যাপার। আমাদের স্কুলের রাজ্যে কোন পারফরমেন্স নাই তাই তো? এতদিন ধরে তুই শুধু ঘাস ই ছিঁড়লি?"
দিলীপদা এবার কিছুটা উত্তেজিত -"তোমরা ম্যানেজিং কমিটি স্পোর্টসের জন্য যত টাকা দাও, তাতে ঘাস ই ছিড়তে হয়। এই যে ফুটবল টিম নিয়ে জেলায় খেলে এলাম, তার বিল তো দু সপ্তাহ হল দিয়েছি। টাকা দিয়েছ এখনো?"
শুভাশিসদা ব্যাকফুটে -"আচ্ছা ঠিক আছে, ঠিক আছে। ওটা নেক্সট মিটিংয়ে বের করে আনব। তো প্রশ্ন হল - আমরা কি কাবাডি টিম বানাব? এই তো? তা, তোরা কি ভাবছিস বল। শুনি।"
দিলীপদা এবারে একটু শ্লেষ মিশিয়ে বললেন -"ভাবা তো অনেক কিছুই যায়। কিন্তু ভাবলেই তো খরচ।"
শুভাশিসদা হঠাৎ বেশ উৎসাহ নিয়ে বললেন -"বানা কাবাডির টিম। টাকা পয়সা নিয়ে ভাবিস না। ব্যবস্থা হয়ে যাবে।"
-"কে দেবে, গৌরী সেন?"
শুভাশিসদা হেসে উঠে পড়লেন। বেরিয়ে যেতে যেতে বললেন- "টিমটা ভাল করে বানাস। রেসাল্ট চাই কিন্তু।"
সুবীর এবারে মুখ খুলল -"জিম টা পেলে ছেলেগুলোকে তৈরি করতে খুব সুবিধা হত। কিন্তু যে ক্রাইটেরিয়া দিয়েছে.....। ফুটবলে জোড় হাটি কে হারিয়ে স্টেটে যাওয়া মনে হয়না হবে। তাহলে স্যার, কাবাডিতে কি একটা চেষ্টা করা যেতে পারে।"
মিহির বলল -"কাবাডি তে যেটা সুবিধা, কোন স্কুলেই টিম নাই। সবাই নতুন। হয়ত বেশিরভাগ স্কুল টিম বানাবেই না। সেক্ষেত্রে এই একবছর উঠে পড়ে লাগলে ভালো কিছু হতেই পারে।"
দিলীপদা ভাবনায় পড়েছেন। অবশেষে মুখ খুললেন-"তাহলে আমরা কাবাডি র টিম বানাচ্ছি। এটাই ফাইনাল। তাই তো?" সকলেই সোৎসাহে সম্মতি জানাল।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴