লাল পরী-৭/মধুপর্ণা রায়
লাল পরী/৭
মধুপর্ণা রায়
ফোন কেটে দিল শাক্য।
:-- কে? আপনার বৌ?
মেয়েটা যে সব শুনছিল, ওকে দেখে মনেই হয় নি তা। চাঁদের আলো অস্পষ্ট হয়ে এসেছে। মেঘ করেছে নিশ্চয়ই। শাক্য আকাশের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর মুখে বলল:-- না।
:-- তব্বে? রক্ষিতা?
রক্ত চড়ে গেল শাক্যর। হঠাৎ মল্লিকার হাত ধরে একটান মেরে দাঁড় করাল তাকে। সপাটে এক চড় মেরে বলল:-- তোমাকে এক রাতের টাকা দিয়ে দেব ব্যস। বাড়তি কথা বলবে না।
হতভম্ব হয়ে গেল মেয়েটা। নেশার ঘোরে ঝাঁকুনি লাগল। পড়ে যাচ্ছিল মল্লিকা। শাক্য ধরে ফেলল। ধাক্কাতে ধাক্কাতে কটেজের বিছানায় ফেলে দিল তাকে। ততক্ষণে মেয়েটার দু'চোখে আগুন জ্বলেছে। ঠিক এমনই হয়েছিল মধুমন্তীর। সোফায় শুইয়ে দিয়েছিল শাক্য। গায়ের জোরে। দপদপ করছিল মধুমন্তীর বিশাল দুই চোখ। উঠে দাঁড়িয়ে আচমকাই সে চড় মেরেছিল শাক্যর গালে। অমন নরম হাতে অত জোর থাকতে পারে ভাবলে অবাক লাগে শাক্যর। সেদিনও মাতাল ছিল শাক্য। মদ না খেলে লিখতে পারত না। একের পর এক মেয়ে তার জীবনের আকাশ ফুঁড়ে প্রতিবিম্ব ফেলছিল। শাক্যর মনে হচ্ছিল তাদের কাউকে স্পর্শ করে নি সে।
সুজাতা ঘড়াই এসেছিল উত্তরবঙ্গের কোচবিহার থেকে। প্রথমটায় লাজুক- জড়সড়, অস্বস্তিতে থাকত। কেবল লিখবে বলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল কষবার ওদিকটায়। কবিতা লিখত মেয়েটা। মাঝারি ক্ষমতা। ধীরে ধীরে চেহারায় খোলতাই এল। শুরু হল দাপাদাপি। শাক্যর বাড়িতে যাতায়াত ছিল। একদিন মাঝদুপুরে মধুমন্তীর অনুপস্থিতিতে ওকে ছুঁয়েছিল শাক্য। শরীরেও এত বাচাল যে শেষ পর্যন্ত যেতে পারে নি। সেদিন কেমন একটা অপমানে ওর চোখও জ্বলে উঠেছিল। পরে অবশ্য হারিয়ে গেল ভিড়ে।
মল্লিকার দু'চোখের মণিতে আগুনের গোলা।
:-- আমাকে মারলে যে? শোনো, আমি সি গ্রেডের মেয়েছেলে নই। গাড়ি বের কর এক্ষুনি। চলে যাব আমি।
সে খুব দ্রুততায় বিছানা থেকে নামতে যেতেই শাক্য তাকে দু'হাতে ধরে ফেলল।:-- সরি। আসলে রঞ্জাকে রক্ষিতা বলাতেই আমার মাথায় কেমন আগুন চড়ে গেল!
:-- তবে ও তোমার কে? বৌ তো নয় বললে।
মেয়েটার ঠোঁট বিদ্রূপে ভাঙল।
:--- তুমি যে আমার কে রঞ্জা..... আমি বুঝতে পারি না....
:-- বুঝতেই হবে কেন? সম্পর্কটা প্রাণে বাজলেই হল।
:-- রবীন্দ্রনাথ থেকে আবার ধার করলে।
:-- সে ছাড়া আছেই বা কে, বল?
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴