সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

26-November,2022 - Saturday ✍️ By- বিমল দেবনাথ 407

শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

শালসিঁড়ি –৬
বিমল দেবনাথ
-----------------------

অপূর্ব পূর্ণ তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে কানাইয়ের দিকে তাকায়। কানাই বলে – স্যার, চাটনি দিই। 
-হ্যাঁ হ্যাঁ দাও । রসগোল্লা আছে তো শেষে? আঃ কী দারুণ খেলাম। কানাই বলে – না স্যার ,রসগোল্লা নেই।  আর একটু চাটনি দিই।
 - না না, খাওয়ার পর একটা রসগোল্লা খেতে হয়, হজমটা ভালো হয়, বুঝলে। আ! খাওয়া মাটি করে দিলে হে কানাই – এই বলে অপূর্ব হেসে ওঠে।
মাটির কথা শুনে মাধুরী ভাবনার জগত থেকে মাটিতে নেমে আসে। অপূর্বর এই হাসি মাধুরীর একদম ভাল লাগে না। 
ময়ূখ বলে  - এটা কুলের চাটনি। 
কানাই বলে- বন কুলের। 
ময়ূখ বলে-  কুলগুলো কী ভালো খেতে। কাকুর ঘরে কত বন কুল ছিল।
অপূর্ব হাপুস হাপুস করে চাটনি খায়। 
মাধুরী জিজ্ঞাসা করে- ময়ূখ, তুমি কখন এখানে বন কুল খেয়েছ? 
ময়ূখ বলে - সেবার কাকুর ঘরে মাংস খেয়ে কুলও খেয়েছিলাম। 
মাধুরী ভাবে ময়ূখ বিকাশের সাথে আর-যে কী কী  করেছে। সেই দিন রক্তন গাছে মাধুরী যখন মাটি লাগিয়ে দিয়েছিল, ময়ূখ বিকাশকে নিয়ে অন্য একটি গাছের দিকে চলে যায়।  মাধুরী বলে- ময়ূখ তোরা আয়। আমি বাবার কাছে গেলাম। ও অনেকক্ষণ একা বসে আছে। 
বিকাশ ঘুরে দেখে মাধুরীকে। মাধুরী বাঁহাতে জুতো তুলে নিয়েছে আর ডান হাতে শাড়ির কুচি আলগা করে একটু উপরে তুলে নিয়ে আলতো পায়ে অপূর্বর দিকে হেঁটে যায়। মাধুরীর পায়ের ছোঁয়ায় নুইয়ে পড়া ঘাসেরা আবার সোজা হয়ে উঠে। ঘাস যেন বুঝতে পারে মাধুরীর মনের কথা - এই যাওয়া বিবশ যাওয়া।  এই যাওয়া অনিচ্ছার যাওয়া। এই  যাওয়া অজানাকে ছেড়ে জানার কাছে যাওয়া। অচেনার অনন্দ কয় জন মানুষ পায় বা নিতে পারে। মানুষকে তো বেশির ভাগ সময় এই ভাবে  চলে যেতে হয়। মানুষের সমাজ বটের  মূলের মত শরীরকে  বেঁধে রাখে নানা নিয়মে। সময়ের সাথে নিয়ম বদলায় বটে কিন্তু নিয়ম থাকে।  মাধুরী তখন ময়ূখকে সব নিয়ম মুক্ত করে দেয়। ময়ূখ বিকাশের সাথে সেখানের অনেকগুলো গাছের পাশে পাশে ঘুরে বেড়িয়েছিল। কী কী জেনেছিল কে জানে…

কানাই বলে- স্যার বলেছিল ম্যাডামের কুলের চাটনি খুব পছন্দের। তাই করলাম আরকি। 
অপূর্ব জানে মাধুরীর কুলের চাটনি খুব পছন্দে। ঋতুতে অনেক কুল কিনে রাখে। 
ময়ূখ বলে- আমার খাওয়া হয়ে গেছে। আমি বাইরে যাই। বনটা দেখি।
অপূর্ব বলে – ঠিক আছে। মাধুরী, মনে আছে সেবার বিকাশ এক ব্যাগ বন-কুল এনে দিয়েছিল। 
মাধুরী বলে- সে আর বলতে। সেই কুল নিয়ে আমার কুল যাবার অবস্থা। 
 অপূর্ব  হাসতে হাসতে  বলে - ঠিক বলেছ। বিকাশ এক দিন এসে কুলগুলোর ব্যবস্থাপনা দেখে আমাকে এমন করে চার্জ করল যেন তুমি কোন কাজের না। 
মাধুরী হরিণ চোখে বলে- তুমি কি বলেছিলে?
অপূর্ব বলে – কী আর বলব। বললাম - আমার বৌকে যেমন তেমন ভাববি না। এই কুল দিয়ে এমন চাটনি বানাবে যে একবার খেলে তার স্বাদ জীবনে ভুলতে পারবি না। 
মাধুরী বলে- তাই বুঝি !!! তুমি চাটনির রকম ভেদ বোঝ। তোমার কাছে সব চাটনিই তো সব এক রকম। টক- মিষ্টি। 
অপূর্ব বলে - আরে সে কী বুঝি না বুঝি সেটা তুমি বোঝ। বন্ধুর কাছে জাহির করতে ক্ষতি কী। তাতে তো তোমার মহিমা বাড়বে। 
মাধুরী জানে বন্ধু মহলে মাধুরীর রূপ নিয়ে অপূর্বর খুব গর্ব। মাধুরী রূপ নিয়ে তেমন কিছু ভাবে না। ও মনে করে এই রূপ ওর পাওয়া, মনটা ওর নিজের গড়া। মন তো পাখির মত। স্বাধীন। উড়ে বেড়ায় ডালে ডালে। কখনও ভুল ডালে বসলে ডানা ঝাঁপটায় -আপ্রাণ। 
মাধুরী বলে- দেখ অপূর্ব, না বুঝে কথা বললে বিকাশ কেন ময়ূখও বুঝতে পারে। ওরকম অন্তঃসার শূন্য কথা বলবে না। 
অপূর্ব বলে- এখন আমি আবার কী বললাম?
মাধুরী- তুমি কানাইয়ের সামনে ওভাবে খাওয়াটা মাটি হয়ে গেল বলে হেসে উঠলে কেন? কোথায় কী বলতে হয় বুঝতে পারনা। 
অপূর্ব কানাই কে আসতে দেখে বলে- কানাই দারুণ রান্না হয়েছে।
কানাই হেসে বলে- স্যার। এবার সব সরিয়ে দিই। 
অপূর্ব বলে- ঠিক আছে।  
কানাই ডাইনিং টেবিল পরিষ্কার করে দেয়। অপূর্ব বেসিনে যায় হাত ধুতে যায়। হাত ধুয়ে এসে বলে- মাধুরী ওঠ। যেতে হবে তো। 
মাধুরী বলে-  বস্তুর সাথে মনের বিনা-সূতায় যে যোগ আছে সেটা বোঝার চেষ্টা করবে। অনেকবার বলেছি আবার বলছি। খাবারটা পুরোপুরি খেলে আবার বদনামও করলে। কানাইএর সামনে ওভাবে কথা বলা তোমাকে মানায় না। একটা তো স্ট্যান্ডার্ড রাখবে। 
অপূর্ব তর্ক করে - এখানে স্ট্যান্ডার্ডের কী আছে।
মাধুরী বলে- এটাই তো সমস্যা। 
অপূর্ব বলে – সমস্যা তোমার মাথায়। 
মাধুরী বলে – সমস্যা তোমার দৃষ্টিতে। যা দেখ সব দখল করতে চাও। মাটি মানুষ শরীর - সব। মানুষের মন  তোমার নজরে আসে না। তোমার মুখ আর মুখোশ আলাদা। তোমার লোভের আগুন সব জ্বালিয়ে দেয় পুড়িয়ে দেয়। সব খাক করে দেয়। আলো দেয় না। 
অপূর্ব কথা বাড়ায় না। ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। ও এই রকম। কোন কিছু দ্বিমত হলে এক মত না হয়ে চলে যায়। ফন্দী আঁটে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য। কেউ কিছু না বুঝলেও মাধুরী বোঝে।  মাধুরী অপূর্বর সংস্পর্শে এসে  অপূর্বদের মত কিছু লোক দেখেছে যারা সব কু্রে কুরে খায়। উঁই পোকার মত। এদের জীবনের অর্থ - অর্থ। বস্তু দখল - লক্ষ্য। এরা জানে না জীবন এক থেকে অনেক হলেও অনেক থেকে আবার এক-একা হয়ে গেলে – জীবন বাঁচে না…
মাধুরীর মনে পড়ে  সেবার অপূর্ব টাওয়ারে বাসে সিগারেট টানছিল। সিগারেটের গন্ধে পরিবেশটা বিশ্রি হয়ে আছে। অপূর্বকে বলে - তুমি জান না টাওয়ারে সিগারেট খেতে নেই। বিকাশ বুঝতে পারলে রাগ করবে।
অপূর্ব বলে - ময়ূখ আসল না। 
না- ও বিকাশের সাথে গাছ দেখছে। তুমি কিছু দেখলে। 
অপূর্ব বলে – না। 
মাধুরী টাওয়ার  থেকে বাইরে দেখে। নিচে একটা ময়ূর নাচছে। পাশে – এক দুই তিন চার পাঁচ – হ্যাঁ পাঁচটা ময়ূরী ঘুরে বেড়াচ্ছে । মাধুরী হঠাৎ উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। বলে- এই দেখ। ময়ূরটা কী সুন্দর নাচছে। তুমি দেখেছ। 
অপূর্ব  বলে – ওতে দেখার আছে। ওটা তো আগেও দেখেছি। 
মাধুরী এক মনে ময়ূরের নাচ দেখে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে। এই নাচ যেন সারা জীবন দেখা যায়। ময়ূর যখন পুরো লেজ খাড়া করে নাচে তখন যে কী সুন্দর লাগে পৃথিবীর কোন ভাষায় বুঝিয়ে বলা যাবে না।  ময়ূর পুরো লেজ তুলে নাচতে নাচতে পেখমগুলো মাঝে মধ্যে কেমন যেন নেমে যেতে চায়। তখন ময়ূর শরীরে  একটা কাঁপুনি তুলে আনে। সেই কাঁপুনিতে পেখমগুলো আবার খাড়া হয়ে যায়। আবার রঙের ছটা ছড়িয়ে পড়ে। ময়ূরী গুলো ময়ূরে চার পাশে ঘুরে ঘুরে খুঁটে খুঁটে দানা খায়।  ময়ূরীদের বিচরন ভূমি যেন মীনা বাজার।  সেই মহিলা মজলিসে সময়ে সময়ে  নানা ময়ূর আসে তদের রূপ নিয়ে- রাজ পুত্রের মত। যে যত বেশী নাচতে পারে সে তত বেশী পুরুষালী হয়। রুপে রঙে, রঙের সামঞ্জস্যে যে ময়ূর সেরা তাদের কদরই বেশী ময়ূরীদের মধ্যে। রাজপুত্র রাজ কন্যাদের মোহিনী নাচে ভুলাতে এত মগ্ন হয়ে যায় যে আশে পাশের কোন কিছুর খেয়াল থাকে ন। শালসিঁড়ির রাজ্যে কী অমোঘ নিয়ম। এই মনমোহনী নয়নাভিরাম দৃশ্যের সৃষ্টির সময় আশঙ্কা তৈরি হয় ময়ূরের মৃত্যুর।  এই আকস্মিক মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পেতে হয়তো ময়ূর চারদিকে ঘুরে নাচে। পাশের ময়ূরী যেমন গলা তুলে  ময়ূরের নাচ দেখে ঠিক তেমনি চিতাবাঘও ময়ূরের নাচ দেখে-ঝোপের আড়ালে বসে। 
মাধুরীর মনে পড়ে বিকাশ বলছিল - ঝোপের আড়াল থেকে চিতাবাঘ সুযোগ খোঁজে ময়ূর- ময়ূরীর চোখ এড়িয়ে কী ভাবে ময়ূরের ঘাড় কামড়ে ধরতে পারে। 
মাধুরী লাটোরে পাতার মত বিস্ময়ের চোখে বলে -সে কী!।
বিকাশ বলে শালসিঁড়ির রাজ্যে এমন আনেক কিছুই সম্ভব যা মানুষের দেশে সম্ভব নয় ; আবার অনেক কাজ আছে যেগুলো শালসিঁড়ির দেশে একদমই সম্ভব নয় সেটা আবার মানুষের দেশে সম্ভব। 
মাধুরী বলে- চিতাবাঘ এত সুন্দর ময়ূর  শিকার করে? খায়?
বিকাশ বলে- খায় কী। ময়ূরের মাংস চিতা বাঘের ডিলিসিয়াস ডিশ। তবে এই দৃশ্য খুব মর্মান্তিক।  
মাধুরী বুকের আঁচল ঠিক করে নিয়ে বলে – বিকাশ ,তুমি চিতাবাঘের ময়ূর শিকার দেখেছ? 
বিকাশ বলে – দেখেছ কি !!! রেকর্ড করেছি -হ্যান্ডিক্যামে। কিন্তু দেখাব না। 
মাধুরী বায়না ধরে রেকর্ডিংটি দেখবে বলে।
বিকাশ বলে- শোন তাহলে। একদিন এই রকম বিকালে টাওয়ারে  বসে আছি। চারপাশটা নিরীক্ষণ করছি।  আশে পাশে কোন বড় প্রাণী দেখা যাচ্ছে না। দূরে ওদাল গাছে লাল লাল ফল দেখি। অনেকে ওদাল ফলকে ফুল বলে ভুল করে। ভুল করবে নাই বা কেন। গাছে একটাও পাতা থাকে না। সারা গাছ লাল হয়ে থাকে - যেন লাল লাল ফুল ফুটে আছে। মনে হয় শালসিঁড়ির ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক। মাধুরী সচেতন হয়ে পড়ে- ও যে আজ লাল লিপস্টিক লাগিয়েছে। 
বিকাশ বলে -  নিচে কয়েকটি ময়ূরী খুঁটে খুঁটে দানা খাচ্ছে। ময়ূরটির চার দিক ঘুরে ঘুরে নাচছে। পাশে একটি লালি গাছে কত গুলো বানর লালি ফল খেতে ব্যস্ত। আমি হ্যান্ডিক্যাম প্যান করে করে এল-সি-ডি তে দেখছি।  এই দৃশ্য পটে ময়ূরের নাচ দেখে মোহিত হয়ে যাছিলাম। হঠাৎ একটা বানর খ্যাক করে উঠল আর ময়ূরীগুলো এক সাথে কাঁ কাঁ করে উঠল। তারপর সমস্ত বন একদম নিস্তব্দ হয়ে গেল। একটা কীটও ডাকছে না। বনে যেন চির শান্তি নেমে এসেছে। পৃথিবীটা যেন থমকে গেছে। দেখলাম একটি চিতা বাঘ মুখে ময়ূরটিকে কামড়ে ধরে নিয়ে চলে যাছে ঝোপের ভিতর…
মাধুরীর মনে হলো ঘাড়ের উপর যেন কে হাত বাড়াছে। কী এক আতঙ্কে ওর স্বপ্ন-সেতারের তার ছিঁড়ে যায়। চকিতে ফিরে দেখে অপূর্ব ওর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে...
অপূর্ব বলে- মাধুরী, দেখ ময়ূখ বিকাশ  আসছে। মাধুরী অপূর্বর কাছ থেকে একটু সরে যায়।
 বিকাশ বলে – অপূর্ব এতক্ষণ কী করলি। 
মাধুরী বলে – কী করবে আর। ধোঁয়া গিলল। আমাদের বনটাকে দুষিত করল।  বুঝলে বিকাশ, অপূর্বকে আমার চিমনি মনে হয়। সব সময় কালো ধোঁয়া ছাড়ে। 
অপূর্ব বলে- কালো ধোঁয়া বেরুবে না তো কী সাদা ধোঁয়া বেরুবে। আরে বাবা – জ্বলছি কার জন্যে - তোমার জন্য তো। 
মাধুরী বলে- শুনলে বিকাশ কী বলল।
বিকাশ বলে – অপূর্ব আজ ডিনার  করে যা। এই শুনে ময়ূখ হই হই করে ওঠে।  
অপূর্ব বলে- সেকি ,তুই যে বাড়ি যাবি বললি । এক মাস বাড়ি যাস না তো। 
হ্যাঁ সেতো যাবো। অপরূপা কে বলে দিচ্ছি। ওর জন্য দেশি মোরগের কষা মাংস নিয়ে যাচ্ছি। ও খুশিই হবে তোদের কথ শুনলে। আর আমার রান্না করা  মাংস তো ওর অমৃত। 
ময়ূখ বিকাশের হাত চেপে ধরে বলে – কাকু আমার কিন্তু দুটো লেগ পিস চাই। 
মাধুরী বলে- বিকাশ, দেখ কানাই ছুটতে ছুটতে আসছে।
বিকাশ জিজ্ঞাসা করে- কি হয়েছে?
কানাই বলে- রমেশকে বাইসন ইনজুরি করছে।
-কত বলি ওটা বাইসন নয়, গাউর। কী ভাবে করল ?
-আর টি তে বলল, হাতির ঘাস কাটছিল। হঠাৎ একটা গাউর ওর দিকে ছুটে আসে। রমেশ নিজেকে বাঁচাতে শুয়ে পড়ে। কিন্তু গাউর লাফ দেওয়াতে একটা পা ওর পেটে পড়েছে। অবস্থা ভালো নয়। অন্য মাহুতরা ধরা ধরি করে ক্যাম্পে নিয়ে এসেছে। 
বিকাশ বলে - চান্ডেলকে বল হাতি রেডি করতে…
অপূর্ব বলে- তাহলে বাড়ি যাবি না। 
বিকাশ বলে- ‘আর যাওয়া হল না মনে হয়। তোরা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যা। সন্ধ্যা হলে  রাস্তায় হাতি দাঁড়িয়ে থাকে। আমরাও নানা কাজে ব্যস্ত থাকব।‘ হাসি মুখে ময়ূখকে বলে- চলি, পরে আবার অনেক গল্প হবে। মাধুরী টা টা… পরে কথা হবে। 
মাধুরী ময়ূখকে কাছে টেনে নেয়। দেখে বিকাশ দৃঢ় পায়ে হেঁটে যায় হাতি রাইডিং স্ট্যান্ডের দিকে। এতো বিকাশ নয় - শালসিঁড়ির প্রধান সেনাপতি। মাধুরী ভাবে এরকম কত শালসিঁড়ির সৈনিক দিন রাত কাজ করে যায় পরিবার পরিজন ভুলে। মাধুরী নিজেকে বিকাশের পরিজন ,একান্ত আপন ভাবে। কুলের চাটনির অপূর্ব স্বাদের থেকে কুলের কাঁটা ফোটার ব্যথা বেশি অনুভব হয়। মাধুরী ময়ূখ দেখে হাতিটাকে ঘোড়া বানিয়ে বিকাশ বীর সেনাপতির গর্বে  আস্তে আস্তে হারিয়ে যায় বনের গভীরে…

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri