সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
103.চায়ের নিলাম ব্যবস্থার বিধি সরলীকরণ হোক/গৌতম চক্রবর্তী

103.চায়ের নিলাম ব্যবস্থার বিধি সরলীকরণ হোক/গৌতম চক্রবর্তী

102.এখনো মনে দোলা দেয় চা বলয়ের ফুটবল খেলা/গৌতম চক্রবর্তী

102.এখনো মনে দোলা দেয় চা বলয়ের ফুটবল খেলা/গৌতম চক্রবর্তী

101.বাগিচার প্রান্তিক জনপদগুলির সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা/গৌতম চক্রবর্তী

101.বাগিচার প্রান্তিক জনপদগুলির সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা/গৌতম চক্রবর্তী

100.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতিচর্চা (দ্বিতীয় পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

100.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতিচর্চা (দ্বিতীয় পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

99.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতি চর্চা (প্রথম পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

99.আদিবাসী জনজীবনের সংস্কৃতি চর্চা (প্রথম পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী

98.চা বাগিচাতে গ্রুপ হাসপাতাল একান্তই জরুরি/গৌতম চক্রবর্তী

98.চা বাগিচাতে গ্রুপ হাসপাতাল একান্তই জরুরি/গৌতম চক্রবর্তী

18-September,2023 - Monday ✍️ By- গৌতম চক্রবর্তী 764

ডায়না টি গার্ডেন/গৌতম চক্রবর্তী

ডায়না টি গার্ডেন
গৌতম চক্রবর্তী
--------------------

ডুয়ার্সের পথে পথে এখন চোখ আর মন জুড়োনো সবুজ। ঘন জঙ্গলে যেমন, তেমন চা বাগানেও। আপাতদৃষ্টিতে এমন দৃশ্য দেখে মন ভরলেও শান্তি নেই চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের। কারণটা অবশ্যই বৃষ্টির অভাব। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা শীতকাল বৃষ্টিহীনতায় ভুগেছে ডুয়ার্স যার জেরে এবার উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির জিয়নকাঠি চায়ের মরশুমের প্রথম পর্বের উৎপাদন  মার খেয়েছে অন্তত ৫-১০ শতাংশ। চা শিল্পের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মার্চ-এপ্রিল শুধু এই দুই মাসেই মেলে ফার্স্ট ফ্লাশের মহার্ঘ উৎপাদন। তাতে ধাক্কা খেয়ে ভালো নেই ডুয়ার্স-তরাই কিংবা পাহাড়ের দুটি পাতা ও একটি কুঁড়ির রাজ্য। চলতি আবহের এই কাহিনীর ব্যাক ড্রপে আরও কিছু হতাশার চিত্রনাট্য লুকিয়ে রয়েছে। ২০২০ সালে মার্চ থেকে শুরু হওয়া করোনাকালীন লকডাউনের জোর অভিঘাত নেমে এসেছিল চা বাগানেও। ২০১৯ সালে যে উৎপাদন ছিল ৪২৪ মিলিয়ন কিলোগ্রাম, তা একধাক্কায় কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৩৮৯ মিলিয়ন কিলোগ্রামে। অতিমারি অব্যাহত থাকলেও ২০২১ সালে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৪০৮ মিলিয়ন কিলোগ্রামে সম্মিলিত দৌড় শেষ করে বড় ও ছোট বাগানগুলি। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান বলছে, আগের বারের তুলনায় ৮ মিলিয়ন কিলোগ্রাম উৎপাদন বেড়েছে। তবে তৈরি চায়ের হারে বাড়েনি। নিলামমূল্য উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির আনুপাতিক হারে বাড়েনি। চা শিল্প মহলের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের চায়ের দামের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল গড়ে ৪.৭৮ শতাংশ। সেখানে তৈরির খরচ বৃদ্ধির হার ৯-১৫ শতাংশ। চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় ২০২০ সালের ঘোর করোনাপর্বে চায়ের গড় দাম কিলো প্রতি ৫৫ টাকার মতো বেশি থাকলেও এরপর আবার তাতে ভাটার টান নেমে আসে। স্বাদ-গন্ধের মৌতাতে ভরা যে ফার্স্ট ফ্লাশের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে প্রতিটি বাগান সেই চায়ের উৎপাদন কমে যায়। 

বাগিচার এই সংকট সময়কালেই কাঠফাটা গরমের এক মেঘলা জলীয় বাষ্পহীন দুপুরে চালসা থেকে নাগরাকাটা, গ্রাসমোর, ক্যারণ, লুকসান, রেডব্যাঙ্ক, হয়ে ডায়না চা বাগানের কাছে নেমে পড়ি বাস থেকে। বাস চলে গেল বীরপাড়ার দিকে। অল্পদূরে বানারহাটে এখন থেকে যাওয়ার জন্য অনেক লজ তৈরি হয়েছে। প্রকৃতি আর মানুষ এই দুয়ে মিলে ডুয়ার্সের প্রাণবন্ত চিত্রময় রূপ। ডুয়ার্সের অনুপম সৌন্দর্যের যেমন আকর্ষণ, তেমনি এই জনপদের মানুষজন প্রাণখোলা, দিলদরাজ আর অতিথিবৎসল। অনেকেই প্রশ্ন করেন কিসের টানে চা বাগানে বারংবার ছুটে ছুটে আসি? আসলে দেখার জন্য চাই অনুভবের জগত। প্রকৃতিকে ভালোবাসা। তুচ্ছতার মধ্যে এবং শিশির বিন্দুর মাঝে লুকিয়ে থাকে অসামান্য সৌন্দর্য। ধামসা মাদলের শব্দ, চা শ্রমিকদের গান, নাচ, চা বাগানের সমাজ জীবন। ডায়না টি কোম্পানি লিমিটেড (ডিটিসিএল) একটি শতাব্দীপ্রাচীন কোম্পানি যেটি ১৯১১ সালে নিবন্ধিত হয়েছিল। কোম্পানিটি ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত নবাব গুলাম জব্বার ও পরিবার দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। ডিটিসিএল তার একমাত্র বাগান অর্থাৎ ডায়না টি এস্টেট চা উৎপাদনের কাজে নিযুক্ত। অ্যারেস গ্রুপের হাতে ১৯৭৬ সালে ডায়না টি এস্টেটের ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয় এবং কাঁচা পাতা উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পায়। তৎকালীন অ্যারেস গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রয়াত শ্রী রাধেশ্যাম সিংহানিয়া একজন দূরদর্শী চা প্রেমিক ছিলেন। তিনি এই ক্ষতিকারক বাগানটিকে সেই অঞ্চলের অন্যতম সেরা বাগানে পরিণত করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন এবং তিনি পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স অঞ্চলের অন্যতম সেরা বাগান হিসাবে ডায়না চা বাগানকে পরিণত করার জন্য আপগ্রেডেশনের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। গুণমান, পরিমাণ উভয়েই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে ডায়না টি এস্টেটের মোট বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ১০ লাখ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানির মালিকের নাম সন্দীপ সিঙ্ঘানিয়া। কোম্পানির হেড অফিস কলকাতায়। বাগানে ম্যানেজারিয়াল স্টাফ ০৭ জন। প্রতিষ্ঠিত এবং স্বীকৃত ট্রেড ইউনিয়ন ২ টি। এগুলি হল পিটিডব্লিউইউ এবং ডিটিডিপিএল ইউ।

ডায়না চা বাগানের আয়তন ৪১৮.৩ হেক্টর এবং চাষযোগ্য আবাদিক্ষেত্র ৫৬৩.৩২ হেক্টর।  সেচযুক্ত অঞ্চল ৩৯৪.৯৯ হেক্টর, ড্রেনযুক্ত এলাকা ৪১৮.০৩ হেক্টর, প্ল্যান্টেশন এরিয়া ৪১৮.৩ হেক্টর। প্রতি হেক্টর উৎপাদনযোগ্য এবং সেচযুক্ত প্ল্যান্টেশন এরিয়া থেকে ২৪১৬ কেজি করে চা উৎপাদিত হয়। ডায়না চা বাগানে নিজস্ব চা পাতা উৎপাদনের গড় ৪০ লাখ কেজি। ফ্যাক্টরিতে নিজস্ব উৎপাদিত চা ১০ লাখ কেজি। বাইরের বাগান থেকে কাঁচা পাতা সংগৃহিত হয় না। মোট বাৎসরিক উৎপাদিত চা ১০ লাখ কেজি। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাগানে ইনঅরগ্যানিক সিটিসি চা উৎপাদিত হয়। বাগানটি চরিত্রগত দিক দিয়ে উন্নত মানের বাগান। ডায়না চা বাগিচার সাব স্টাফ এর সংখ্যা ৭৬ জন এবং করণিক ১০ জন এবং টেকনিক্যাল স্টাফ ৬ জন। বাগানের শ্রমিক পরিবারের সংখ্যা ৭০৩ এবং মোট জনসংখ্যা ৪৩০৯। বিগত আর্থিক বছরে অস্থায়ী শ্রমিক সংখ্যা ছিল ৭০০ জন।  ফ্যাক্টরিতে নিযুক্ত স্টাফ এবং শ্রমিক সংখ্যা ০৩ জন। চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক সংখ্যা ৪৮ জন। কম্পিউটার অপারেটর একজন। মোট কর্মরত শ্রমিক ৯৮৮ জন এবং শ্রমিক নয় এমন সদস্যদের সংখ্যা ৩৩২১ জন। ডায়না চা-বাগিচায় ব্যক্তিগত ইলেকট্রিক মিটার সহ পাকাবাড়ির সংখ্যা ৪৫৬ টি। সেমি পাকা বাড়ি ১৯৫, অন্যান্য বাড়ির সংখ্যা ২২। সরকারি সহযোগিতাতে তৈরি বাড়ি নেই। মোট শ্রমিক আবাস ৬৭৩। শ্রমিক সংখ্যা ৯৮৮। বাগিচায় শতকরা ৬৮ শতাংশ শ্রমিক আবাস এবং অন্যান্য বাসগৃহ। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছে বাগানটি আর্থিকভাবে দায়বদ্ধ। বাগান পরিচালনার কার্যকর মূলধন আসে ব্যাংক এবং নিজস্ব অর্থনৈতিক সোর্স থেকে। বাগানটির লিজ হোল্ডার ডায়না টি কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেড। চা বাগিচায় হাসপাতাল ১টি, ডিসপেনসারি নেই। আবাসিক ডাক্তার আছে। প্রশিক্ষিত নার্সের সংখ্যা ১ জন। বাগিচায় নার্সের  সহযোগী মিড ওয়াইভস ২ জন। কম্পাউন্ডার অথবা স্বাস্থ্য সহযোগী ১ জন। মেল ওয়ার্ডের সংখ্যা ৮ টি, ফিমেল ওয়ার্ডের সংখ্যা ৮ টি। আইসোলেশন ওয়ার্ড ৪ টি, মেটারনিটি ওয়ার্ড ২ টি। বাগিচার হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার আছে। 


পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনে স্নাতকোত্তর ৩৬ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্নএস্টেট ম্যানেজার সুদর্শন কুমার বাবল ছিলেন ২০০৪ সাল থেকে কোম্পানির ডায়ানা টি এস্টেটের সুপারিনটেনডিং ম্যানেজার। ২০১০ সালে তাঁর সুযোগ্য পরিচালনাতে সিআইআই দ্বারা পরিচালিত উন্নতমানের সিটিসি চা উৎপাদনের জন্য ডুয়ার্স এবং তরাইয়ের ১৫০ টিরও বেশি চা বাগানের মধ্যে ডায়না চা বাগানকে "ডুয়ার্সের রানী" হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছিল। ফ্যাক্টরিতে সিনিয়ার ম্যানেজারের সঙ্গে আলাপচারিতাতে বের হয়ে এল এক অন্যরকমের তথ্য। ২০২২ সালে ডুয়ার্স এলাকার এক একটি বাগানে নিলামমূল্য যা উঠেছিল তার তুলনায় চায়ের দাম এবার নজিরবিহীনভাবে এখনও পর্যন্ত প্রত্যাশিত নয়। ডুয়ার্সের বানারহাট এলাকার একটি চা বাগানের ২০২২ সালের নিলামে যা দর উঠেছিল এই একই সময়ের নিলামমূল্য কিলো প্রতি কমে যায়। কেন এমন পরিস্থিতি? প্রকৃতির খামখেয়ালিপনাই চায়ের বাজারকে ফাটকা বাজারে রূপান্তরিত করেছে। খবর পেলাম পাহাড়েও একই অবস্থা। দার্জিলিংয়ের ৮৭টি বাগানও খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে। গোটা উত্তরের মোট উৎপাদনের ৬২ শতাংশই আসে যে ৫০ হাজার চাষিদের বাগান থেকে, তাদের ফার্স্ট ফ্লাসের পাতা এবার এখনও পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১৮ টাকা কিলো দরে, গতবার যা ছিল ৩৫ টাকার আশপাশে। উৎপাদন মার খাওয়া কিংবা গুণমান বজায় রাখতে না পারায় দাম প্রাপ্তির আসল কারণ যে জলবায়ুর পরিবর্তনের তত্ত্ব তা এখন চা শিল্পে প্রতিষ্ঠিত সত্য। বিজ্ঞানীরা একে নয়া চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন। রোগপোকা কিংবা অতি বৃষ্টি মোকাবিলা সক্ষম চা গাছের নয়া ক্লোন আবিষ্কার ছাড়া এই জটিল সংকটের ঘূর্ণাবর্ত থেকে বেড়িয়ে আসার জো নেই। বারবার সেকথাই উঠে আসছে বিশেষজ্ঞদের আলোচনায়। ডুয়ার্সের মেটেলি-নাগরাকাটা এলাকাতে মার্চ মাসে বৃষ্টি হয়েছে ৬.২৭ ইঞ্চি যা অন্যান্য বছরের মার্চের তুলনায় ৩ গুণ বেশি। তবে ওই উচ্ছ্বাসে চোনা ঢেলে দিয়েছে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা কমে যাওয়ার ঘটনা। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ফার্স্ট ফ্লাশের নতুন কুঁড়ি আসার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছে। এমন ছবিই এখন কমবেশি সব বাগানে। সবমিলিয়ে ‘সবুজ সোনা'-র ঔজ্জ্বল্য দিন-দিন ফিকে হচ্ছে। খলনায়কের ভূমিকায় সেই আবহাওয়াই।



ডায়না চা বাগিচাতে অ্যাম্বুলেন্স আছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। চিকিৎসার জন্য শ্রমিকদের বাগানে অবস্থিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেফার করা হয়। বাগিচায় লেবার ওয়েলফেয়ার অফিসার নেই । বাগিচায় ওষুধ সরবরাহ মোটামুটি। ওষুধের তালিকা স্টক অনুযায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নোটিশ বোর্ডে দেওয়া হয় না। উন্নত মানের পথ্য সরবরাহ এবং নিয়মিত ডায়েট চার্ট অনুসরণ করা হয় না। ক্রেশের সংখ্যা ১ টি। ক্ৰেশে পর্যাপ্ত জলের ব্যাবস্থা, শৌচালয় আছে। দুধ, বিস্কুট বা পুষ্টিকর খাবার ক্রেশের শিশুদের দেওয়া হয় না। পর্যাপ্ত পানীয় জল ক্ৰেশে এবং চা বাগানে সরবরাহ করা হয় । ক্রেশে অ্যটেনডেন্ট ৩ জন। বাগিচায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। বাগিচা সংলগ্ন উচ্চ বিদ্যালয় আছে। শ্রমিক সন্তানদের বিদ্যালয়ে নেবার জন্য যানবাহনের ব্যাবস্থা হিসাবে একটা বাস আছে। বাগানে বিনোদনমূলক ক্লাব, খেলার মাঠ আছে । ডায়না টি গার্ডেনে নিয়মিত পি এফ বা গ্র্যাচুইটির টাকা জমা পড়ে। প্রায় ৫৫-৬০ লক্ষ টাকা শ্রমিকদের পি এফ বাবদ বছরে জমা পড়ে। ২০ শতাংশ হারে বোনাস চুক্তি অনুযায়ী মিটিয়ে দেওয়া হয় । পিএফ বা গ্র্যাচুইটি বকেয়া থাকে না। শ্রমিকদের মজুরি, রেশন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা চুক্তি অনুযায়ী দেওয়া হয়। তবে অফিস স্টাফদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে যেটা চোখে পড়ল সেটা হল চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ শুধু নয়, স্টাফ এবং সাব-স্টাফদের বেতন চুক্তি এখন কার্যত মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালে দু’দফায় চা শ্রমিকদের অন্তর্বর্তীকালীন মজুরি ১৭ টাকা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে শ্রমিকদের মজুরি ১৭৬ থেকে বাড়িয়ে ২০২ টাকা করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ২৩২ এবং মুখ্যমন্ত্রীর অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ অনুযায়ী আরো ১৮ টাকা বৃদ্ধি হাইকোর্টের রায়ে দিতে হচ্ছে মালিকপক্ষকে। ২০২০ সালে সরকারি তরফে সমহারে স্টাফ এবং সাব-স্টাফদের বেতন বৃদ্ধির নির্দেশিকাও জারি করা হয়। 

মোট বেতনের ওপর ১৫ শতাংশ স্টাফ, সাব-স্টাফদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল। এতে অন্তর্বর্তীকালীন ভিত্তিতে সামান্য বেতন বৃদ্ধি হয় বলে বাগান স্টাফদের অভিযোগ ছিল। সার্বিকভাবে বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপই করেননি বাগান মালিকরা।  বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি সংগঠনটির তরফে অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর করার দাবি রাখা হয়। কিন্তু সেটাও মানা হয় নি। ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল সর্বশেষ ৩ বছরের বেতন চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর থেকে আর কোনও নয়া চুক্তি সম্পাদিত হয়নি। শ্রমিকরা ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল থেকে বেতন চুক্তি কার্যকরের ব্যাপারে অনড় থাকেন। অন্যথায় যে কোনওভাবে চুক্তি সম্ভব নয় তা স্পষ্ট করে দেন। এর আগে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও এই দাবিতে অনড় ছিল স্টাফ এবং সাব-স্টাফ জয়েন্ট কমিটি। কিন্তু মালিকপক্ষ ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে বেতন চুক্তি কার্যকর করতে চায়। সর্বশেষ ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বেতন বৃদ্ধির চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব উঠে আসে। ওই দিনক্ষণ নিয়ে বাগানের স্টাফ এবং সাব স্টাফদের সংগঠন আপত্তি জানায়।  তাই ২০১৭ সালের পর নিয়োগ চুক্তি না হওয়ায় লাগাতার আন্দোলনে নামে স্টাফ এবং সাব-স্টাফ জয়েন্ট কমিটি। তাদের অভাব অভিযোগকে সামনে রেখে আন্দোলন করে চলেছেন স্টাফ এবং সাব-স্টাফরা। স্টাফ এবং সাব-স্টাফদের বেতন সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে শিলিগুড়ির দাগাপুরের শ্রমিক ভবনে বৈঠক ডাকা হয়েছিল যে বৈঠকে শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতনের দাবি উঠে আসে। ২০২০ সালে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি জটে আটকে গিয়েছিল স্টাফ এবং সাব-স্টাফদের বেতন। ভোটের মুখে রাজ্যের শাসকদলকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির দাবি তুলে ধরা হয়। তার সঙ্গে সঙ্গে কার্যত সাব-স্টাফরাও আন্দোলন শুরু করার বার্তা দিয়ে সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নেয়। কিন্তু মালিকপক্ষ পরিষ্কার করে দেয় কর্মীদের বেতন কাঠামো তৈরি নিয়ে তারা কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। যার জেরে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতিতেও ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিষ্ফলা থেকে যায়।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri