সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

03-December,2022 - Saturday ✍️ By- শুক্লা রায় 555

পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

পইলা সাঞ্ঝির কথা
পর্ব - ৫৪
শুক্লা রায়
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
আন্দনবাড়ি
কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে মালতী। ওর দিদা গরুর গাড়ির ওই আঁটোসাটো ছইয়ের ভেতরেই নাতনিকে কোলে জড়িয়ে রাখে। শেষের দিকে গলা ভেঙে কথা বলার শক্তিও হারিয়ে গেছে ওর। বুড়ি তাকিয়ে থাকতে থাকতে নরম সাদা আঁচলটা দিয়ে মুখটা যত্ন করে মুছে দেয়। গাল বেয়ে শুকনো জলের দাগ, চন্দন আর কাজলে মাখামাখি হয়ে আছে। বাড়ির কাছাকাছি এসে চওড়া খোলান পথে গাড়ি দাঁড় করায় গাড়োয়ান। সবাই ঝুপঝুপ নেমে গেলেও মালতী আর ওর দিদা গাড়িতেই থাকে। ততক্ষণে ছেলের মা হন্তদন্ত হয়ে বরণ করতে আসে। বর-কনেকে একসঙ্গে দাঁড় করিয়ে দিয়ে সুকোবালা বরণডালা নিয়ে আসে। বাজনদারেরা সাইকেলে আগেই পৌঁছে গেছে। বরযাত্রীর গাড়ি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তারা মহা উৎসাহে বাজাতে থাকে। আশেপাশের সবাই ভিড় করেছে। যারা বরযাত্রী যায়নি তারা কোনরকমে ছুটতে ছুটতে এসে জমা হয়েছে। কনে দেখার আনন্দ। একটা বৌ বলে,
"কইনা মাই, মুকখান কনেক ওটাখেনে, ভাল করি দেখং।"
এ কথা শুনে মালতীর মাথা আরো নিচু হয়ে থুতনি প্রায় বুকে লেগে যায়। এবার সুকোবালার কাছে হুকুম হয়,
"নে বৈরাতী, কইনাটার না মুকখান কনেক ওটে দিবার না পাছিত! ভাল করি দেকি।"
সুকোবালা হাসতে হাসতে মালতীর মুখটা তুলে ধরে বলে,
"ন্যাও বারে, বাড়িরে না মানষি এলা। কতয় দেকিবেন। আর কয়দিন পরে চোকুর আগালোতে ঘুরিবে তোমার!।"
সে মহিলা ভালো করে তাকিয়ে আস্তে ধীরে বলে,
"আছে না ভালে। মানান কাট, চেহেরায় পেহেরায় ভালে নাগেছে। বাউর সতে হামার হইসে জোড়াটা।"
তারপর গলাটা তুলে বলে,
"আজিকার দেকা আর ওইন্যদিনোত দেকা কী আর একে হোবার পায়! আজিকার দিনটায় ওইন্যমতোন!"
গাড়োয়ান ছইয়ের উপর থেকে বিয়ের ভাঙা মন্ডপটা নামিয় এনে একপাশে রেখে দিয়ে গরুগুলোকে খড়ের পুঞ্জিতে বেঁধে দেয়। সুকোবালা চালুনবাতি হাতে নিয়ে আগে আগে হাঁটতে থাকে। এবাড়ির মেয়েরাই এবার নতুন বৌয়ের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ একজন বলে,
"এইখান উমার বাড়ির চাইলোন বারে? কইনার বাড়ির?"
তারপর উত্তরের অপেক্ষা না করেই বলে,
"ফুলঝুরি গিলা ভালে তো বানাইসে। দেওয়ারী গিলাও সাজাইসে বেইশ করি। কইনার বাড়ির বৈরাতীটার সৌকিন্দার আছে বোদায়।"
আসলে বিয়ের শেষে ছেলের বাড়ির চালুন রেখে মেয়ের বাড়ির চালুন নিয়ে আসতে হয়। এটাই নিয়ম। সুকোবালা ঝাঁঝিয়ে বলে,
"মোরখানো না তে ভাল হইসে! মুইও না সাজাসুং!"
বাড়ির ভেতরে তুলসী মঞ্চের সামনে ওদের দাঁড় করিয়ে রেখে তুলসী বিয়েতে পাওয়া নারকেল পাতার পাটির উপর সুতির চাদরটা পেতে বসিয়ে দেয়। সামনে ধান-দুব্বা রাখা একটা কলার পাতায়। সবাই বিয়ের বাজনা শুনেই ছুটে এসেছে। সবার হাতেই দান-সামগ্রী। দান দিচ্ছে আর ধান-দুব্বা আশীর্বাদ স্বরূপ মাথায় ছুঁইয়ে দিচ্ছে। সুকোবালা দুই হাত দিয়ে দুজনের মাথা ঝুঁকিয়ে প্রণাম করাচ্ছে। যারা একটু রসিকতার সম্পর্কে তারা এক খাবলা ধান দুব্বা নিয়ে মাথা ভরিয়ে দিচ্ছে। সুকোবালা বর-কনের মাথা থেকে এসব ঝেড়ে ফেলতে ফেলতে বিরক্ত হয়ে বলে,
"না দ্যান বারে, না দ্যান তো, মোক এখেরে ভালে নাগেছে না। এমনি নিন বন্দ বারে!"
তারপর একটু থেমে বলে ধান-দুব্বা আরো কেনে দিবার নাগে বারে তো! এমনিই না দানগিলা দিলে হয়!"
সেবা-পূজা দেবেন বলে অধিকারী মশাই বসে আছেন। তিনি এবার নড়েচড়ে বসে বলেন,
"হিলা না দিলে চলে বারে! এইলায় তো আশুবাদ! কোনো জিনিস না দিয়াও যুদি খালি মাতাত ধান-দুব্বা দেয় তালে আশুবাদ হয়া যায়। হিলা জিনিস-পাতি তো হামরা নয়া সোংসার করির জইন্যে দেই।"
সবাই অধিকারী মহাশয়ের দিকে তাকায়। তিনি সামান্য বিরতি নিয়ে কিছুটা স্বগতোক্তির মতো গলায় বলেন,
"ধান-দুব্বায় হইল আসল। না দিলে চলে!"
তারপর গলা উঁচু করে কিছুটা ঘোষণার ভঙ্গিতে বলেন,
"ধান হইল ধন-সম্পদের চিহ্ন। আর দুব্বা! দুব্বা য্যামন গিঁটোয় গিঁটোয় বাড়ে ত্যামতোন ইমারও ঝুনি বংশ বাড়ে তাড়াতাড়ি। এইলায় হইল ধান আর দুব্বা দিয়া আশুবাদের আসল কাথা। যাক আশুবাদ করিমো তার ধন, জন ঝুনি তামাল্লায় বাড়ে তাড়াতাড়ি।"
সবার দান দেওয়া শেষ হয়ে গেলে বর-কনেকে তুলসী মঞ্চে প্রণাম করিয়ে সুকোবালা আরো কয়েকজন কনেকে ধরে ধরে নিয়ে যায়, পাশে বর। প্রথমে খোলানের ঠাকুর, তারপর বাড়ির ভেতর, খোলানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বড়দের প্রণাম করিয়ে ঘরে আনা হয়। এবার বরের ছুটি। নতুন বৌয়ের জন্য এখনও কিছু কিছু আচার বাকি আছে। একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে মালতীর কাপড় পাল্টিয়ে, বেশ-ভূষা পাল্টে দেয় মেয়েরা। এখানেই শুরু হয় আলাপ-পরিচয়। এতক্ষণ মাঝে মাঝেই শুনতে হয়েছে,
"বৌমা, ভাল করি দ্যাকো! মুই পিসাইশাশুড়ি হং। মাও করিয়ায় না ডেকাবেন বারে!"
কেউ বলছে, কাকিশাশুড়ি, ননদ। কিন্তু এখন জিজ্ঞেস করলে মালতী কিছুই মনে করতে পারবে না। এখানেও এক এক করে মেয়েরা বলছে,
"বৌদি, মুই ননন হং। এদি বগলোতে বাড়ি।"
ওকে ঘরে বসিয়ে প্রথমে এক প্রস্থ পরিচয় পর্ব শেষ করতে করতে ওর লাল শাড়িটা পাল্টে লাল পাড় কোরা শাড়ি পরিয়ে দেয়। এবার চুলটা খোলার পালা। একজন ছিপছিপে চেহারার মহিলা এতক্ষণ চুপ করে ছিল। এবার বলে,
"চুলগিলা টানি দ্যাখো তো, ততকরায় না মিছায়! খোঁপাটার ভিতরোত বোদায় কোনোখান ঢুকি দিসে ঢক দ্যাখের জইন্যে।"
এবার আর একজন খোঁপাটায় উপর উপর একটা ঝটকা টান দিয়ে জোর গলায় বলে,
"দ্যাকোং তো। ঢালুয়া খোঁপাটার ভিতরোত কী আচে? পেস্টা বোদায়!"
ঝটকা টানে মালতী ব্যথায় কঁকিয়ে ওঠে। অনেক কাঁটা, ক্লিপ দিয়ে সুকারুর বৌ মতিবালা খুব যত্ন করে খোঁপাটা বেঁধে দিয়েছিল বেশ শক্ত করে। ঝটকা টানে ব্যথা লাগলেও খোঁপা খুলল না। মালতীর কঁকিয়ে ওঠা কারো মনে কোনো সহানুভূতিও জাগাতে পারল না। এবার সবাই তাড়াহুড়ো করে কাঁটাগুলো টেনে টেনে খুলতে লাগল। ব্যথায় মালতীর চোখে জল চলে এলেও কাউকে কিছু বলতে পারল না। একজন বলে,
"গোড়খিঁচাখান টানি খুলো তালে এলায় ভিতরোত কী আচে বিরি যাবে।"
ইঞ্চি ফিতেয় কষে বেঁধেছে মতিবালা, টানতে খুলল না। এবার একটু ধৈর্য নিয়েই খুলল। ইঞ্চি ফিতাটা খুলতেই মালতীর একঢাল চুল ছড়িয়ে পড়ল। পেছনে যে মেয়েটা খুব টানাটানি করছিল ওর চোখমুখ ছাপিয়ে চুলগুলো নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়ল। সবার মুখ হা হয়ে গেছে। এবার ঘরে সুকোবালা ঢুকে বলে,
"কী বারে চেংরিগিলা, কইনাটাক কাপড়া পাল্টাইতে তোমার এত টাইম নাগে? মুই কনেক বাড়ি না যাইম! ইমাক লাস গাও ধোয়ালে মোর কাম শ্যাষ!"
সুকোবালা মালতীকে নিয়ে গোবর ফেলতে যায়। উঠোনে দাঁড়িয়ে ডাক দেয়,
"কোটে মা, কুন পাকে ঝুনি তোমার গোয়ালি ঘরটা বারে!"
একজন এসে গোয়াল ঘরে নিয়ে যায়। ঘরে গোবরের পরিমাণ দেকে সুকোবালা হায় হায় করে,
"হ্যা, অ্যাতলা গোবর! অ্যাত বড় গোবরের খাচারি এলায় ওটের পাবে বারে! তোমরা এখেরে আগিলা দিনের মানষির মতোন কচ্চেন বারে। অল্প চাইট্টা থুলেন হয়, মাইটা খালি নিয়ামের না নিগাইল হয়। ভিড়াটাও তো তোমার মেলা দূরোত!"
মালতী ততক্ষণে বাকিদের উৎসাহী নির্দেশমতো একটা ঝুড়িতে গোবরগুলো কষ্ট হলেও তুলে ফেলেছে। বাড়িতে ওর মা ই গোবর ফেলে, ওকে কখনো করতে হয়নি। স্নান করে চা খাওয়া হলেই ওর মা গোয়াল পরিস্কার করে। একটাই গরু। তবু যত্ন খুব। বলে,
"বেলা করি গোবর ফেলালে গরুর মুখ তিতা হয়, সাকালে গাও ধুয়া গোয়ালিঘর ঢুকির নাগে।"
কষ্ট করে অনেক চেষ্টায় গোবরের ঝুড়িটা কাঁখে তুলল। উপস্থিত সবাই মজা দেখলেও সুকোবালার মুখটা গম্ভীর। একা একাই গজগজ করছে,
"ছাওয়াটা বাড়িখানোত পাও দিয়ায় মানষিলাক ভাল করি চিনেছে!"
অনেকটা দূর গোবর ফেলার গর্তে গোবরটা ফেলে মালতী হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। কষ্টে, ভয়ে ওর কান্না পেয়ে যায়। ভিড়ায় আগে থেকে একটা কাঁচা টাকা রাখা ছিল। সুকোবালা বলে,
"নেক মাই, পাইসাটা কুড়ি নিয়া আনচোলোত বান্দেক।"
মালতী ততক্ষণে ভয়ে, পরিশ্রমে কাঁপতে শুরু করেছে। ওই অবস্থায় নিচু হয়ে কাঁচা টাকাটা কুড়িয়ে নেয়। এবার ফেরার সময় ফাঁকা ঝুড়িটা গোয়াল ঘরের একপাশে ঠেস দিয়ে রেখে বাড়ি ঢোকে। সুকোবালা ডাক দেয়,
"কোটে বারে মাও আইসো। তোমার নয়া বৌমা বলে কী কয়!"
সুবাসের মা সামনে এসে গম্ভীরভাবে দাঁড়ায়। মালতী সুকোবালার শেখানো বুলি আওড়ে যায়,
"মা মা, গোবর ফেলাইতে একটা কাঁচা টাকা কুড়ি পালুং।"
"পাইসেন তে ভালে হইসে। ভাল করি থও। পরে কাজোত নাইগবে।"
মালতী সুকোবালার নির্দেশে শাশুড়িকে পনণাম করে। এবার শেষবারের মতো নতুন বর-কনেকে স্নান করিয়ে বৈরাতীর ছুটি। উঠোনের তুলসী তলার পুজো শেষ করে অধিকারী মহাশয় একটা বেঞ্চে নিজের টোপলা-টুপলি সাজিয়ে রেখে বসে বসে চা খাচ্ছেন। মজা করে বললেন,
"তোমার বৌমা নক্কী বারে। আইসতে আইসতে হর পাইসা কুড়ি পাইল। তোমার আর কুনোয় অভাব থাকিবে না।"
আর একজন বয়স্ক মানুষ বসে বসে হুঁকা টানছিলেন। থামিয়ে বললেন,
"নক্কীয়ে বারে। পাইসা পাইল। এলা ইমারে হাতোত সোংসার। সোগাকে ভাল করি দিবে থুবে তবে না সব ঠিক চলিবে।" আলোচনা চলতে থাকে। সুকোবালা বড়ঘরের সামনে যে ঘাট কাটা হয়েছে ওখানে বর-কনের স্নানের জন্য হলুদ বাটা, বরণের জিনিসপত্র জোগাড় করতে থাকে। বর-কনেকে শেষবারের মতো স্নান করিয়ে দিয়ে ওর কাজ শেষ। ছেলের মা ই এখন মিষ্টি, দই খাইয়ে স্নানের শুরুটা করবে আগের মতো নিয়মেই। সুকোবালা একটু ব্যস্ততা দেখিয়ে সব করতে থাকে। বাড়ি গিয়ে ঘর-টর গুছিয়ে বিশ্রাম নিয়ে তবে আবার বৌভাত খেতে আসবে।
স্নান শেষে একটা লাল সুতি শাড়ি পরে চুপ করে বসে আছে মালতী। মন খুব খারাপ। বাইরে শুনল শাশুড়ির গলা। এই গলাটা চিনেছে মালতী তখনি। বলছে,
"নে বাউ, পাড়ার মানষিলাক আর একবার আন্দনবাড়ির ড্যাক দিয়া আয়।"
সুবাসের অনিচ্ছা বোঝা গেল।
"হামার এত্তি হিলা কী যে নিয়াম। নিমন্তন দিসি তাও আজি আরো, আরো একবার কবার নাগেছে।"
মালতীর মনটা খারাপ। শ্বশুর বাড়ির কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন সময় অন্য একটা গলার আওয়াজ পাওয়া গেল, গলাটা বেশ উৎসাহে টগবগ করে ফুটছে বোঝা যাচ্ছে, আওয়াজটাও ঘরের দিকেই আসছে ক্রমশ।
"নয়া বৌমা কোটে গেল হামার"!
তারপরেই উত্তরের অপেক্ষা না করে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলে,
"ঘরোত চুপ করি বসি নইলে চলিবে বারে! আইসো, দুপুরিয়া ভাত চাইট্টা তোমরায় আন্দো! আন্দনের ভাত তো ব্যাটেছাওয়ালায় আন্দিবে। তোমরাও ডাইলখান আন্দির পাবেন এলায়!"
মালতী আঁৎকে ওঠে। ভয়ে চোখ দিয়ে জল বের হওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু ওকে অবাক করে ওর শাশুড়ি ঘরে ঢুকে বলে,
"নোউক তো মাই। নয়া মানষিটাক ছাড়ি দেক আজি। এমনি আতিত নিন বন্দ। ওগুনের পাড়োত আরো উল্টি পড়িবে। বেলাভাটি মানষিলা আসি দেকিলে এলায় ভাল কবে!"
মালতী এটা আশাই করেনি। ওর শাশুড়ি প্রথমদিনেই ওকে বাঁচাতে এসেছে! কিন্তু সেই মহিলা ছাড়বার পাত্রী না,
"তোরে এখেরে এলাইতে বৌয়ের এত আদর বৌদি। হামরা বোদায় করিয়ে নাই!"
এবার মালতীর শাশুড়ি বলে,
"পত্থম দিনকার কাথা মোরো মনোৎ আছে মাইও। বিয়াও হইসে সেলা বাচ্চানি মানষিটা মুই। জামাউরিয়ে ভাল করি হং নাই মুই, তাতে বিয়াও দিসে মোক। আর আন্দনের দিনোতে তোমার বাড়িত হান্ডি হান্ডি ভাত নামাইতে হাতোত ফোস্কা পোইচ্চে মাই। চোকুর জলোত বসি ভাত খাসুং। ওইলা কাথা মনোৎ আচে দেকি মোর বোউক মুই না দ্যাং আন্দির। খাবার দিনটা কী ফুরাছে? আন্দিবে কে না, খামুকে না!" উৎসাহে জল পড়াতে অপর পক্ষ রেগে যায়।
"বৌ ওক এলাইতে মাতাত চড়াছে, নামের পাইলে হয় এলা।"
সুবাসের মা কিছু বলে না, বেরিয়ে যায়।
...............................................................
মানান কাট - মুখের সৌন্দর্য
দেওয়ারি - মাটির প্রদীপ
পেস্টা - বিড়া
গোবরের ভিড়া - সাধারণত একটা গর্তের মধ্যে প্রতিদিনের গোবরটা জমা হয়, ওটাকেই ভিড়া বলে।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri