সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
81.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৮১/অভিজিৎ দাশ

81.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৮১/অভিজিৎ দাশ

80.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৮০/অভিজিৎ দাশ

80.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৮০/অভিজিৎ দাশ

79.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৯/অভিজিৎ দাশ

79.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৯/অভিজিৎ দাশ

78.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৮/অভিজিৎ দাশ

78.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৮/অভিজিৎ দাশ

77.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৭/অভিজিৎ দাশ

77.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৭/অভিজিৎ দাশ

76.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৬/অভিজিৎ দাশ

76.উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৭৬/অভিজিৎ দাশ

22-December,2023 - Friday ✍️ By- অভিজিৎ দাশ 435

উত্তরবঙ্গের পত্রপত্রিকা : এক অনুসন্ধান-৫/অভিজিৎ দাশ

উত্তরবঙ্গের পত্র-পত্রিকা : এক অনুসন্ধান/৫
অভিজিৎ দাশ
                                    

                            মধুপর্ণী

             উত্তরবঙ্গের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরে অনন্য নজির স্থাপন করেছে কোনো বাণিজ্যিক পত্রিকা নয়, একটি লিটল ম্যাগাজিন। এক-একটি জেলা ধরে ধরে সংখ্যা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অনন‍্য ভুমিকা পত্রিকাটিকে বিশেষ মর্যাদার আসনে  বসিয়েছে। এ বিষয়ে সম্ভবত 'মধুপর্ণী' পথিকৃৎ। এরকম একটি সমৃদ্ধ লিটিল ম‍্যাগের জন্ম উত্তরবঙ্গের নাটকের শহর, সংস্কৃতির শহর বালুরঘাটে।
           ১৩৭১ বঙ্গাব্দে (১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে) পশ্চিম দিনাজপুর জেলার প্রাণকেন্দ্র বালুরঘাটে পশ্চিম দিনাজপুর সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের মুখপত্র হিসেবে 'মধুপর্ণী' যাত্রা শুরু করে। এর প্রকাশকাল ছিল ত্রৈমাসিক। সভাপতি কমলেন্দু চক্রবর্তী, সম্পাদক সুধীর করণ, সহকারী সম্পাদক অজিতেশ ভট্টাচার্য, রাধামোহন মহন্ত। সেদিন এক বিরাট সম্ভাবনার বীজ পুঁতে দেওয়া হয়।
           চার বছর পরে অজিতেশ ভট্টাচার্য পত্রিকাটি সম্পাদনা করতে শুরু করেন। 'মধুপর্ণী' নিছক একটি মুখপত্রে থেমে থাকেনি, সম্ভাবনার বীজটি অজিতেশ ভট্টাচার্যের সম্পাদনার গুণ এবং উপযুক্ত জল, বাতাস, উষ্ণতা পেয়ে আস্তে আস্তে মহীরুহে পরিণত হয়েছিল। আর এর জন্যই 'পশ্চিম দিনাজপুর সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ' 'মধুপর্ণী পরিষদ' হয়েছিল। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে এই রূপান্তর ঘটে। এই রূপান্তর পত্রিকাটিকে বাংলা ভাষার সম্পদে পরিণত হতে অনুঘটকের কাজ করে। নতুন পরিষদের সম্পাদক হন অজিতেশ ভট্টাচার্য, সভাপতি কালিদাস ভট্টাচার্য। উত্তরের প্রতিটি জেলা থেকে আঞ্চলিক সম্পাদক নির্বাচন পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ পদক্ষেপে পরিণত হয়েছিল। তারা হলেন-- গোপাল লাহা ( মালদা), হরেন ঘোষ (দার্জিলিং), আনন্দগোপাল ঘোষ (জলপাইগুড়ি) এবং কমলেশ দাস (কোচবিহার)। প্রায় জন্মলগ্ন থেকে সাহিত্য, সংস্কৃতির বিকাশে মধুপর্ণী কাজ করেছে। বিশেষ সংখ্যাগুলি প্রকাশ এর বড়ো প্রমাণ। ১৯৭৫-তে রামমোহন-মধুসূদন-শরৎচন্দ্র স্মারক সংখ্যা প্রকাশিত হয়। ওই বছরই উত্তরবঙ্গ তথা বাংলার অন্যতম সেরা নাট্যকার মন্মথ রায়কে নিয়ে প্রকাশিত হয় নাট্যকার মন্মথ রায় সম্বর্ধনা সংখ্যা। প্রসঙ্গত মন্মথ রায় বালুরঘাটেরই মানুষ ছিলেন। ১৯৮১-তে ক্ষুদ্র পত্রিকা সম্মেলন ও লোকসংস্কৃতি উৎসব সংখ্যা, ১৩৮৭ বঙ্গাব্দে চতুর্দশ বর্ষ উৎসব স্মারক সংখ্যা, ১৩৯০ বঙ্গাব্দে সাহিত্য সংখ্যা, ১৯৯৩ এর রজত জয়ন্তী বর্ষপূর্তি সংখ্যা মধুপর্ণীর যাত্রাপথে এক-একটি মাইলফলক।।
          এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজের পরেও এ কথা বলতে দ্বিধা নেই যে 'মধুপুর্ণী' উত্তরবঙ্গ চর্চায় সবচেয়ে সফল। উত্তরবঙ্গ নিয়ে কাজের সম্ভার প্রতিটিই এক-একটি রত্নখনি। উত্তরবঙ্গ চর্চার সূচনা ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে। সংখ্যাটি 'মধুপর্ণী উত্তরবঙ্গ সংখ্যা' হিসেবে চিহ্নিত। ২৬৬ পৃষ্ঠা জুড়ে উত্তরবঙ্গ বিষয়ে নিবন্ধের সম্ভার এখনো অনুসন্ধানীরা খুঁজে ফেরেন। পরের বছর উত্তরবঙ্গ গল্প সংখ্যা বের হয়। উত্তরবঙ্গের গল্পকারদের গল্প নিয়ে এই সংখ্যাটি উত্তরবঙ্গের সমৃদ্ধ গল্পচর্চার স্বরূপ প্রকাশ করেছে।
            উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলা (তৎকালীন) নিয়ে জেলা সংখ্যা প্রকাশের চিন্তা-ভাবনা সেই ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ থেকেই ছিল। এর সম্বন্ধে উত্তরবঙ্গের শেষ জেলা সংখ্যা 'দার্জিলিং জেলা সংখ্যা'য় সবিনয় নিবেদন অংশে সম্পাদক অজিতেশ ভট্টাচার্য লিখেছেন, "১৯৭৭ সালে উত্তরবঙ্গ সংখ্যা প্রকাশের পর আনুপুর্বিক সমৃদ্ধ জেলা পরিচিতিমূলক সংখ্যা প্রকাশের ব্যাপারে আমাদের প্রাথমিকভাবে উৎসাহিত করেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিভাগের অধ্যাপকবৃন্দ। ছাত্র-গবেষকদের জন্য এবং তাদের নিজেদের জন্যও বৃহৎভাবে বৃহত্তরভাবে সমগ্র বাঙালি পাঠকদের জন্য এই ধরনের কাজের উপযোগিতা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও নানা স্তরে উচ্চারিত হতে থাকে।সাতের দশকে আমরা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করেছিলাম যে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি অর্থনৈতিক দিক থেকে অনগ্রসর এবং সুযোগ-সুবিধা দিক থেকে অবহেলিত। এমনকি তার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্বন্ধে উত্তরবঙ্গবাসীরা অনেকে এবং সামগ্রিকভাবে বাঙালি জাতি অনবহিত। তাই উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলা সম্পর্কে ব্যাপক অনুসন্ধান এবং জেলা বিষয়ে নির্বাচিত প্রবন্ধ পাঠক-গবেষকের হাতে তুলে দেওয়া মধুপর্ণীর পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত হয়।" এভাবেই জেলা সংখ্যা প্রকাশের ভাবনা উঠে আসে। অবশ্য প্রকল্প রচনা ও এর রূপায়ণের মাঝে অনেকটা সময় চলে যায়। রূপায়ণের কাজ শুরু  হতে থাকে বাধা পেরোতে হয়েছে। সম্পাদক লিখেছেন, "একটি প্রকল্পকে রূপায়িত করার জন্য একটি ছোটো পত্রিকার পক্ষে ১৩ বছর সময় দেওয়া অবশ্যই উল্লেখ‍্য ঘটনা। অনেক যুদ্ধ, অনিশ্চয়তা, আশঙ্কা, উপহাস, বিশ্বাসভঙ্গ এই ১৩ বছরের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তবে তার তুলনায় সাহায্য সহযোগিতার অংশ আমাদের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ।" আসলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় খুব সহজে যে কাজ করতে পারত তা একটি লিটিল ম্যাগাজিনের পক্ষে করা যে কত কষ্টসাধ্য তা যারা করেছেন তারাই বুঝেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থবল, লোকবল (অধ্যাপক, গবেষক ও শিক্ষার্থী) অনেক। কিন্তু লিটিল ম্যাগের এর কোনোটি নেই। ফলে লেখক নির্বাচন করা, লেখা চাওয়া এবং লেখা পাওয়ার মধ্যে অনেক সময় চলে যায়। বারে বারে তাগিদ দিয়েও লেখা পাওয়া মুশকিল হয়। দায়সারা লেখা তো আর ছাপানো যায় না। 'মধুপর্ণী' তা করেও নি। ফলে দেরি হয়েছে।
            ১৯৮৫ তে মালদা জেলা সংখ্যা প্রকাশের মধ‍্য দিয়ে প্রকল্পের সার্থক রূপায়ণের সূত্রপাত।  ১৯৯৬-এ দার্জিলিং জেলা সংখ্যা প্রকাশের মাধ্যমে এর সমাপ্তি। মাঝে উনিশ ১৯৮৭-তে জলপাইগুড়ি জেলা সংখ্যা, ১৯৯০-এ কোচবিহার জেলা সংখ্যা, ১৯৯৩-এ পশ্চিম দিনাজপুর জেলা সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে।
            এই বিরাট প্রকল্পে উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলার ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, ভূগোল, জাতি, জনজাতি, সংস্কৃতি, লোকসংস্কৃতি, বন, নদী, অর্থনীতি, শিল্প, যোগাযোগ ব্যবস্থা, কৃষি, ভাষা, সাহিত্য, পত্র-পত্রিকা, পর্যটন, ব্যবসা, সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি কী নেই সংখ্যাগুলিতে? এককথায় জেলাগুলির যাবতীয় তত্ত্বতালাশ সংখ্যাগুলির সম্পদ। বিভিন্ন জেলা গেজেটিয়ারও এরকম কাজ করতে পারেনি। অনেক পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের মুখপত্র 'পশ্চিমবঙ্গে'র জেলা সংখ্যা প্রকাশ করতে শুরু করে। মোট নয়টি সংখ্যার মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলা নিয়ে দুটি পৃথক সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। স্থানীয় চর্চার ক্ষেত্রে মধুব্পর্ণী জোয়ার এনেছিল। আজ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অংশ নিয়ে মাইক্রো স্টাডি হচ্ছে। পত্র-পত্রিকার সংখ্যা ও বইপত্র প্রকাশিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে মধুপর্ণীর অবদান অনস্বীকার্য। পত্রিকাটি দ্বার খুলে দিয়েছে। উন্মুক্ত দ্বার দিয়ে হু হু করে হাওয়া ঢুকছে। সেই হাওয়ায় অবগাহন করছে বৌদ্ধিক সমাজ।
           মধুপর্ণী এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ। অর্থাৎ উপকারী। 'মধুপর্ণী' পত্রিকা তেমনি উত্তরবঙ্গকে জানা ও চেনার ক্ষেত্রে সমান উপকারী। সত্যিকথা বলতে কি 'মধুপর্ণী' আসলে মধুক্ষরা।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri