সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

28-November,2022 - Monday ✍️ By- বিমল দেবনাথ 655

শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

শালসিঁড়ি-৪৫ 
বিমল দেবনাথ 
^^^^^^^^^^^^^

- দাস স্যার তোর ফোন নম্বর নিয়েছিল। ফোন করেছিলো? -অপরূপা জিজ্ঞাসা করে।
- হ্যাঁ। আমাকে আবার পড়াশুনাতে মন লাগাতে বলল। - মাধুরী বলে। 
- পড়াশুনা মানে? -বিকাশ জিজ্ঞাসা করে।   
নানা কথার মধ্যে এই প্রথম মাধুরী মুখ তুলে সারাসরি বিকাশকে দেখে। কলিং বেলের শব্দ শুনে দরজা খুলে দিয়েছিলো  দোলা মাসি। ঘরে ঢুকে ড্রয়িং রুম পার হয়ে অংশু চলে যায় ময়ূখের ঘরে। বিকাশের পা থেমে যায় সোফার কাছে। সোফাতে বসে আছে মাধুরী-একাকী রাজ ধনেশের মতো । মাধুরীর পাশে বসে পড়ে অপরূপা -আতা ফলের মতো। ঘরে ধূপের গন্ধ। একই গন্ধ সময়ের সাথে ভিন্ন ভিন্ন অনুভুতি আনে মনে। বিকাশের মন বিষাদে ভরে যায়। মাধুরী কী পাথর হয়ে গেছে। সকালে স্নান করে ঘরে ধূপের গন্ধ ছড়িয়ে তারপর অন্য কাজ বা পড়াশোনা শুরু করা মাধুরীর ছোট বেলার অভ্যাস। সেই অভ্যাস কী মাধুরী বিয়ের পর এত বছর ধরে রেখেছে! তা বলে এই সময়ে। বিকাশ গোপনে ঘ্রাণ নেয়, শ্মশানের গন্ধ পায়। শৈশবের শুচি ঘ্রাণের জন্য আঁকুপাঁকু করে মন। যৌবন বড় স্বার্থপর। কামনা বন্ধ করে রাখে আলোক ঝর্ণার জানালাগুলোকে। মানুষগুলো ঘূর্ণিপাক খায় আপন আবর্তে।  কত কাল আন্তরিক আড্ডা হয়নি কারো সাথে। সময়কে গচ্ছিত রেখে বাঁচতে হয় যাদের তারা বাঁধা পড়ে আধুনিক নদীর মতো। প্লাবন ভুমি হারায়; প্লাবন হারায়। বুকে জমে বালি পলি পাথর জীবন বয়ে চলে অগোচরে। যারা নদীকে জানতো চিনতো তারা জানে জলের ঠিকানা। চাতক-চাতকীর মতো অপরূপা- মাধুরী এক জন আর একজনের দিকে তাকিয়ে আছে। দুজনের চোখের জল গাল বেয়ে পড়ে সোফায়।  বিকাশ সোফায় দেখে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত। বিকাশ চঞ্চল হয়ে ওঠে কিশোর চিতল হরিণের মতো। অবস্থা সামলে চলে যায় ময়ূখের ঘরে।           
- মাধুরী আমাকে ক্ষমা করে দে।  
মাধুরী বক ফুলের মতো চোখ করে তাকিয়ে থাকে অপরূপার দিকে। মাধুরীর মুখের কথা মোটা ঠোঁটের বাঁধ ভাঙ্গতে পারেনা। ফুলে ওঠে কেঁপে ওঠে। গঙ্গার গঙ্গাত্ব যে হারায় টেহেরী বাঁধের দাপটে। গঙ্গার গঙ্গাত্ব আসে তার বুকের মাটি আর জলের গুণে। মানুষের আবেগ অনুভুতি মনুষ্যত্ব আসে নিজের মন থেকে। নদী হেরে যায় নারীর কছে। মাধুরী হা হা করে কেঁদে উঠে অপরূপার বুকে মুখ গোঁজে। ভেঙ্গে যায় যেন টেহেরী বাঁধ। প্লাবিত হয় বুকে জমে ওঠা শুষ্ক বালু চর। পলি পড়ে, তৈরি হয় এক নতুন গাঙ্গেয় সভ্যতা।  মনে পড়ে বন্ধুদের কথা – অলোকনন্দা মন্দাকিনী পিন্ডার মন্দাকিনী ভগীরথের মতো।  মাধুরী আঁচল দিয়ে অপরূপার চোখ পুঁছে দেয়, মুছে নেয় নিজের চোখ মুখ।     
- এমন কথা বললি কেন অপরূপা। এমন কথা বলতে নেই।
- আমি উড়ে এসে জুড়ে না বসলে বিকাশ যে তোরই থাকতো। তোর আজ এই অবস্থা হতোনা। আমিতো বুঝতেই পারিনি তোর মনের কথা। যৌবনের উত্তাপ আমাকে অন্ধ করে রেখেছিলো। কস্তূরীর গন্ধের মোহ কি বোঝে মৃগ। বোঝে না। কিন্তু আমার বোঝা উচিৎ ছিলো। এই গন্ধে অন্য কেউও মোহিত থাকতে পারে। ভালোবাসতে পারে।    
- অপরূপা জীবাশ্ম খুঁড়ে বের করে কী লাভ। জীবাশ্ম প্রাণিত করতে পারে সমাজকে ব্যক্তিকে। কিন্তু নিজে জীবন ফিরে পায়না। 
- তবু মানুষ ফিরে তাকায়। তুই কেন কিছু বলিসনি। তোরা তো মুক্ত ছিলি। কোন বাঁধন ছিলোনা তোদের।  
- সব বাঁধন কি বোঝা যায় … দেখা যায়! যায়না। সবাই কি সব বাঁধন বুঝতে পারে, পারেনা। 
- তুই তো ওকে বলতে পারতি। 
- সম্পর্ক একটা জায়গায় যাবার পর ভালোবাসার কথা মুখে বলা যায়না, অপরূপা। ভালোবাসা অনুভবে চলে আসে। শরীরের কোষে কোষে চলে আসে। তখন ভালোবাসা শারীরিক থাকেনা। অশরীরী হয়ে যায়। মননের হয়ে যায়। ভালোবাসা শান্তির হয়ে যায় সুখের হয়ে যায়- কারণ সেই ভালোবাসায় ত্যাগ থাকে বিকাশের শালসিঁড়ির মতো। এই ত্যাগ শরীর কে স্বামীর কাছে অর্ঘ্য করতে বাধা দেয়না- গাছের ফল দেবার মতো। এই ভালোবাসার অনেক শক্তি সবুজ পাতার মতো। সে সূর্য বাঁধে  শত্রু বাঁধে জল দিয়ে। ভালোবাসার মিষ্টি ছড়িয়ে দেয় সারা সংসারে। তোরা খুব ভালো আছিস। সুখে আছিস আনন্দে আছিস। 
- না।
- কেন এমন বলছিস অপরূপা। 
- বিয়ের পরে জয়ের যুদ্ধ জয়ের আনন্দে ছিলাম। অংশুর অন্নপ্রাশন পর্যন্ত একটা মোহে ছিলাম। সন্তান যখন খুঁটে খেতে শুরু করে খুঁটে খুঁটে বের করে আনে রুঢ় বাস্তব। তোর মনে আছে মাধুরী?
- কী?
- অপূর্ব একবার দুবাই গেছিলো- কোন একটা কোম্পানির স্পন্সরশীপে, ভালো ব্যবসা দেবার জন্য। তোকে নেয়নি।
- হুম…
- পরে তুই যখন জানতে পারলি অন্য সবাই তাদের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গেছে। তোকে নিয়ে যায়নি। তোর জ্বর হলো। সেই জ্বর কিছুতেই কমেনা। তোকে আমরা নার্সিং হোমে ভর্তি করালাম। ডাক্তার বলল- অজানা জ্বর…
- অপরূপা, থাকনা সে সব কথা। আমার মাথা ধরে আছে। দোলাকে বলতো চা করতে। বিকাশ এসে ময়ূখের ঘরে ঢুকেছে আর বের হয়নি। ওকে তো এক কাপ চা করে দিতে পরতো। খালি বক বক করে যাচ্ছিস।  
দোলা চা নিয়ে আসে। মাধুরী বলে- এতক্ষণ লাগলো চা বানাতে। দাদাবাবুকে দিয়েছ?  হ্যাঁ বৌদি। চা জল আর দাদাবাবুর বিস্কুট দিয়েছি। অংশুদের আনারসের রস করে দিলাম। 
-তাও এত সময় লাগলে?
- লাগবেনা কেন। রান্না ঘরের কী অবস্থা করে রেখেছ। গ্যাসটা শেষ হয়ে ছিলো, সেটাওতো খেয়াল রাখনি। 
-যাও হয়েছে। ব্রেকফাস্ট বানাও এবার। অপরূপা কী খাবি?  
-না না আমরা ব্রেকফাস্ট করে এসেছি। 
অপরূপার মনে কত কথা ফিরে ফিরে আসে। মাধুরীর অনীহায় মনের কথা বায়বীয় হয়ে যায় চায়ের ধোঁয়ার মতো…    
- ফোনটা রিং হয়ে যাচ্ছে তোলার নাম নেই । কাজ যেন ও একা করে। হ্যালো হ্যালো…
- বল বলছি। 
- অংশুর প্রচণ্ড শরীর খারাপ তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসো।
বিকাশ তিন ঘন্টার আগে এসে পৌঁছায় না। অপরূপার মনে মনে খুব রাগ হয়। কলার মোচার মতো মন নিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে ফিরে আসে ঘরে। বলে -
- একটু তাড়াতাড়ি আসতে পারতে না। জ্বরে যে ছেলাটা অজ্ঞান হবার অবস্থা হয়েছিলো। 
- ভাবলাম একবারে বের হই। মাধুরীকেও তো দেখতে যেতে হবে।  
বিকাশের ফোন বেজে ওঠে। নার্সিং হোম থেকে ফোন আসে। মাধুরীর অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। বিকাশকে জরুরী ভিত্তিক ডেকেছে। অপরূপা জানতে চায় কার ফোন। বিকাশ বলে- আমি নার্সিং হোম চললাম। অংশুকে দেখে রেখো। খেয়ে নিও। আমার জন্য চিন্তা করবে না। আমি ক্যানটিনে কিছু খেয়ে নেব। বিকাশ অংশুর মাথায় হাত বুলিয়ে চলে যায়। এই প্রথম বিকাশ মাধুরীকে একা দেখতে যায়-রাতে। অপরূপা অংশুর পাশে শুয়ে থাকে, ঘুম আসেনা। বিকাশকে ফোন করে বার বার। বিকাশের ফোন রিং হয়ে যায়, বিকাশ ফোন তোলেনা।  অপরূপার মনে কত কথা উঠে আসে। অপরূপা সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দেয় কলার মোচার মঞ্জরীপত্রের ( bract) মতো। তবু থেকে যায় দাগ…
- গতকাল রাতে কবার ফোন করেছি, তুমি একবারো ফোন তোলনি।    
- ভাবলাম ঘুমিয়ে পড়েছ। 
- ঘুমিয়ে পড়লে ফোন করলাম কী ভাবে। সারা রাত দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। 
- কেন আমি তো বলেই গেলাম। তারপরও…
অপরূপা এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে বিকাশের দিকে। যেন ডুবুরী নেমেছে অতল সাগরে- সুলুক সন্ধানে। নাকি অন্য কিছু। চোখ কামনার প্রবেশ দ্বার। বিকাশের হৃদয় চঞ্চল হয়ে ওঠে। অসময়ে প্রেম অকাল বর্ষণের মতো। বিকাশ চোখ সরিয়ে নেয়। মাধুরীর কথা ভাবে। অপরূপা একবারো মাধুরীর কথা জিজ্ঞাসা করছেনা কেন – বিকাশের মনে ময়লা জমে।
- একবারও মাধুরির কথা জিজ্ঞসা করলে না তো।  
- সেই খবরটা নেওয়ার জন্য কতবার ফোন করেছিলাম, তুমি যখন ফোন তুললে না, এখন বলার দায়িত্ব তোমার। 

দায়িত্বের কথা শুনলেই বিকাশ গাছ দ্যাখে। গাছ নিঃস্বার্থ কত দায়িত্ব পালন করে- মরে গিয়েও। কোন বিষ ছাড়েনা আশে পাশে বা বাতাসে। আজীবন বিষ পান করে চেপে রাখে বুকে। নির্মল করে মানব জীবন। আমগাছের মাথায় বসে জানালার ফাঁকে উঁকি মারে একাদশীর চাঁদ। চাঁদের বুকে যেন ভেসে উঠে বাবার মুখ । বাবা বলতেন- নারী পুরুষ যখন মানুষ হয় তারা আম গাছ হয়ে যায়। তাই আম গাছটি লাগালাম বাড়ি উঠোনে। মানুষ মানুষই হয়, নারী পুরুষ শুধু একটি  কারণ। মানুষ হয়ে থাকতে হয় বাঁচতে হয় সব সময়। মাধুরী বিকাশ এক সাথে বেড়ে উঠতে উঠতে কখন যে আম গাছ  হয়ে গেছে বুঝতে পারেনি। একই অঙ্গে দুই ফুলে থাকলেও গাছতো এক। গাছে বাতাস হাঁটে শাখায় শাখায় ফুল ফুলে আদর ছড়ায় প্রজাপতির সাথে, মৌমাছির সাথে। প্রজাপতিরা নিজের বাসনায় বংশ বসায় গাছের। গাছ গাছই থাকে। অপরূপা প্রজাপতি হয়ে শুঙ্গ মারে…
- তুমি মাধুরী কে ভালোবাসো। 
- হ্যাঁ, ভালোবাসি।
- এখনো।  
- হ্যাঁ
- তাহলে বিয়ে করলেনা কেন? 
- ভালোবাসাতে নির্দিষ্ট কামনা না থাকলে বিয়ের কথা যে মনে আসেনা। কাম তার সাথে করা যায় যাকে নিজের শরীরের থেকে আলাদা দেখা যায়। মাধুরী যে আমার কোষে কোষে রোমে রোমে। 
- তুমি কথাটি বলতে পারলে।
- কেন অসুবিধা কোথায়।
- তুমি আমাকে ঠকিয়েছ।
ঝন ঝন করে ভেঙ্গে পড়ে কাঁচের প্লেট আলমারীর কাঁচ। বিকাশ অংশুর ঘরের দরজা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে গাছের মতো। কে বলে নীরবতা সম্মতির লক্ষণ! বিকাশের নীরবতা হিমালয়ের মতো দৃঢ় বিরোধিতা। মৌসুমি বৃষ্টির মত ঝর ঝর করে কেঁদে ওঠে অপরূপা। বিকাশ জড়িয়ে ধরে অপরূপা কে।  
- সম্পর্ক গাছ হয়ে গেলে কাম হয় না অপরূপা। 
- আমি কি করে জানব। তোমার সাথে মাধুরীর সব বিষয়ে খুব মিল। তোমার যে বিষয়গুলো আমি বুঝতে পারি না ও ঠিক বুঝে নেয়। আমাকে ধরিয়ে দেয়। আমার খারাপ লাগে। মনে অসুখ হয়।
- একদিন তুমিও বুঝতে পারবে, আমিও বুঝতে পারবো। আমার সাথে মাধুরীর সম্পর্ক যে কয়েক যুগের। তোমার সাথে মাত্র কয়েক বছরের।    
অপরূপা তাকিয়ে থাকে বিকাশের চোখে- কোর্চে বকের মতো। তুলে আনে আস্থা মাছ। এই মাছ পেট ভরায় না মন ভরায় না। বক ডানা ঝাপটায়। উড়ে বসে অন্য ডালে। নারী তো নদীর মতো। পাড় ভাঙ্গে পাড় গড়ে। এতটা পথ চলার পরেও মাধুরীর পাড় ভাঙ্গেনি, মন ভাঙ্গেনি! অপরূপা মোহে দুঃখে সুখে কষ্টে দুলে উঠে বিকাশের বুকের নিচে। দোলাচলের নৌকার হাল বিকাশ চেপে ধরে গভীর থেকে আরও গভীরে। অপরূপার শীৎকার শিহরন ভুলিয়ে দেয় সন্দেহের কালো জাল। আজ আবার কত দিন কত বছর পর একই রঙ অপরূপার চোখে মুখে। 
- কি হলো বল, ফোন তোলোনি কেন। 
- ফোনটা সাইলেন্স মোডে ছিল।
- কেন?
- মাধুরীর ঘুমের ব্যঘাত ঘটত যে…
- ওর কি হয়েছিল।  
- জ্বর বেড়ে যাওয়ায় অজ্ঞান হয়ে গেছিল।  অবচেতন মনে আমার নাম নিচ্ছিলো। রোগের কারণ শারীরিক থেকে মানসিক বেশি ছিল। এই রকম সংবেদনশীল ও সরল হৃদয়ের মানুষের সাথে মিথ্যাচার করলে অসহায় বোধ করে। অপূর্ব মিথ্যা বলে ঠিক করেনি। ডাক্তার বলল আমি কিছক্ষণ থাকলে মাধুরী আস্থা পাবে, মনে নিরাপত্তা আসবে। সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই মোবাইল সাইলেন্ট করে বসে ছিলাম ওর ক্যাবিনে। চেয়ারে বসে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম টের পাইনি। সকালে দেখি ও আমার হাতটি ধরে ঘুমিয়ে আছে পরম নিশ্চিন্তে। জ্বর নেই। ডাকতেই আমার হাত ছেড়ে নির্মল হাসি সহ মাথা নত করে দেয় সকালের গন্ধরাজ ফুলের মতো। বলে- তুমি কখন এসেছিলে। অপরূপা এসেছিলো? অংশুর কথা জানতেই রাগ করে ঢুঁই রানীর মতো। ও যেন আমাদের দুই পরিবারের দলের দল- রাণী, হাতিদের মতো। কি হলো শুনছ…   
অপরূপা ঘুমিয়ে আছে বিকাশের পৌরষ হাতের উপরে। একাদশীর চাঁদের আলো অপরূপার মুখমণ্ডলে এক অপূর্ব লাবণ্য ছড়িয়ে দিয়েছে। একাদশী চাঁদের আলো নাকি খুব পবিত্র। চাঁদের আলোয় ঘরে একটা স্নিগ্ধতা বয়ে যায় আলোর নদীর সাথে। বিকাশ অপরূপার মাথায় বিলুনি কেটে দেয়, বিড় বিড় করে বলে – এই আলোর নদী বয়ে নিয়ে যাক তোমার মনের সব কালো ভাবনা। তুমি সুখি হও আলোর মতো। অপরূপা ঘুমের মধ্যে “হুম” করে ঘুরে ফিরে শোয় অন্য দিকে। এই “হুম” সম্মতির না সুখের বিকাশ জানে না।  মনে হয় পৃথিবীর সব স্ত্রী’র কাছে স্বামীর কথার ভিতর থেকে সত্য মিথ্যা কথাকে আলাদা করার একটা ফিল্টার থাকে। হঠাৎ অপরূপা বিকাশের হাত টেনে আদুরে গলায় বলে উঠে – কি হলো শুয়ে পড়। বিকাশ বলে – দাঁড়াও ওয়াশ রুম হয়ে আসি—হুম আমিও…  
- কী হলো। কী চেয়ে আছিস। চা টা খা। চা টা জল হয়ে গেল যে। আমি কিন্তু তোর থেকে বড়। এবার বকবো।     
- না তোমাদের কত মিল। মাঝে মাঝে আমাকে খুব অমিল লাগে –বিকাশের সাথে। আমার মনে হয় বিকাশ আমার সাথে চাপে থাকে। মনে হয় খাঁচার পাখি। আর তোরা যখন কথা বলিস মনে হয় তোরা আকাশে উন্মুক্ত পাখি। আমার নিজেকে খুব ছোট মনে হয়। 
- তুই তো ছোটই। বোকা কোথাকার। দেখ সংসারে একটা টান থাকে জলের ঘূর্ণির মতো। বন্ধুত্বে দান থাকে পাহাড়ের চূড়ার মতো। আর যাদের এর কোনটা থাকেনা তারা উন্মাদ হয়ে ওঠে ধ্বংসের জন্য। উন্মাদ প্রকৃতি মানুষ কাউকে ভালোবাসেনা। বিকাশের উপর আমার অটুট আস্থা। ও শালসিঁড়ি নয় সারা সংসার রক্ষার কাজ করে। যে সংসার রক্ষার কাজ করে সে নিজের সংসার ভাঙ্গে কী করে। তারপর আমি আছি তো ঢুঁই রানী। মাধুরী নির্মল স্মিত হাসে ঝরে পড়া জুঁই ফুলের মতো। 
- তোর কি হবে মাধুরী! -আবার কলার মোচার মত মুখ করে বলে অপরূপা।
-  এত কথা বলার পরেও মুখটা কালো করে আছিস। আমি ঠিক চালিয়ে নেব ফলের মতো। সংসারে পুরুষেরা কলার পুষ্প দন্ডের মতো হয়। সিউডোস্টেমের মতো নিজেকে ঢেকে রাখে পাতার পিধানে (leaf sheath)। চলে গেলেও দাগ রেখে যায় ভাঁজে ভাঁজে। সেই দাগ যে কারণেই হোকনা কেন সেটা মোছা যায়না ভোলা যায়না। নারীরা বড় বিচিত্র - বেঁচে থাকতে পারে পার্থেনোকারপি করে কলার মতো। তোর কোন ভয় নেই আমাদের সম্পর্ক গাছের মতো।   
বিকাশের এক হাত ধরে আছে ময়ূখ আর এক হাত ধরে আছে অংশু। মাধুরী অপরূপা তাকিয়ে আছে হরিণীর মতো। অপরূপা বলে –
- তুমি কি দুই চোখে আলাদা দেখতে পারো!
- পারিতো। ভ্রমরের মতো। আমার একটা দুটো নয় পাঁচ পাঁচটা চোখ। দুটো দিয়ে তোমাদের দুজনকে দেখছি দুটো দিয়ে অংশু ময়ূখকে দেখছি আর আরেকটা দিয়ে নিজেকে দেখছি।   
মাধুরী এই কয়েক দিনে তালের মত শান্ত হয়ে গেছে। তীব্র দাবদাহেও শীতল ছায়া দেয় সুবাস দেয়। সদ্য ফুল ঝরে যাওয়া পটলের মতো ফোলা ফোলা চোখ… বিকাশ বোঝেনা বিড়ম্বনার বিনাশ নাকি মুক্তির আশ্বাস।  
- বিকাশ, আগামী ১৩ তারিখ ময়ূখের কাজ। সবাই কে বলে রেখেছি, প্রস্তুতি সব হয়ে গেছে। তুমি ঠিক সময় চলে এসো। না হলে ময়ূখ কষ্ট পাবে। অপরূপা…
- ঠিক আছে কিছু বলতে হবে না। সে কী করবে জানিনা। আমি অংশু ঠিক সময়ে এসে যাবো। 
বিকাশ বসে পড়ে চেয়ারে- ব্যারেল ক্যাকটাসের মতো। মাধুরীর কথাগুলো যেন ক্যাকটাসের কাঁটার মতো বিঁধছে। ময়ূখের কাজের সব কাজ একা করে নিয়েছে এর মধ্যে! নাকি অন্য কিছু। যে মেয়ে পুকুর হয়ে ছিল সে একটি ধাক্কায় তোর্সা নদী হয়ে গেল। বিকাশ কথা বাড়ায়না। বলে
- পেনড্রাইভটা।    
শাড়ির আঁচলের কোণ নাভি থেকে টেনে তুলে, আঁচলের গিঁঠ খুলে তুলে দেয় একটা কালো পেনড্রাইভ। কী আছে এই পেনড্রাইভে?  বিকাশ জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে থেমে গেল। মাধুরীর চোখে অষ্টমী দুর্গার ভ্রূকুটি কালো মনিতে আগুনের তেজ।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri