সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

28-November,2022 - Monday ✍️ By- বিমল দেবনাথ 615

শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

শালসিঁড়ি-৪৪
বিমল দেবনাথ
^^^^^^^^^^^^^

- তোমার গলায় কি টুথপেস্ট লেগে আছে? বিকাশ ইলিশ মাছ ইলিশ তেল দিয়ে ভাতের সাথে মাখতে মাখতে বলে। 
- তোমার আর কি নজরে পড়ল? - অপরূপা জিজ্ঞাসা করে।
- বাজার করে আসার পর থেকে তুমি যে মিঠু সহ রান্না ঘরে।  
- মাছটি কেমন? 
- মা দারুণ। – অংশু বলে। 
- তুমিও নিয়ে নাও। কত দিন একসাথে খেতে বসা হয়না।   
অপরূপা অংশু আর বিকাশকে আরও কিছুটা খাওয়ার পরিবেশন করে খেতে বসে এক সাথে। রান্না করার সময় মাছের তেল ছিঁটে এসে গলায় পড়েছিলো। অপরূপা সেখানে টুথপেস্ট লেপে দেয়। অপরূপা এমনই। যখন যে কাজ করে তাতে নিমগ্ন হয়ে যায়। সূঁচ সুতো নিয়ে বসলে সময় চলে যায় হাওয়ার মতো। ডাইনিং টেবিলের সময়টা অপরূপার একটা এরিস্টোক্রেটিক বিষয়। অপরূপার খাওয়ার স্টাইল আর মুখমন্ডলের দ্যূতি সার্ভ করা খাওয়ারের গারনেসিংকে হার মানায়। আজ অনেক দিন পর ওরা তিন জন আবার একসাথে বসেছে ডাইনিং টেবিলে। অংশুর খাওয়া শেষ হলে উঠে  যায়। 
- মিঠুতো ভালো রান্না করে। এবার রান্না ঘরটা ছাড়। আর কত শরীর পোড়াবে।  
- শরীর পুড়লে কিছু হয়না। আবার ঠিক হয়ে যাবে। মনটা না পুড়লেই হলো। 
- কি যাতা বলছ, মন পুড়বে কেন! …মাছটা মনে হয় বাংলাদেশের।    
অপরূপা জোর করে আরও একপিস মাছ আর কিছুটা ভাত দিয়ে দেয় বিকাশকে। 
- অত তাড়া কিসের। একটু আস্তে খাও। চিবিয়ে খাও…তবে তো খাওয়ার স্বাদ বুঝতে পারবে। 
একসাথে খেতে বসলে এই এক অসুবিধা বিকাশের। সবার আগে খাওয়া শেষ হয়ে যায়। অপরূপা বিকাশের এই অভ্যাসটা একদম পছন্দ করেনা। বিয়ের আগে এই সমস্যাটি ছিলনা। রেস্টুরেন্টে একটা মিক্সড ফ্রাইড রাইস যেন একদিন চলতো। ওদের বিয়ের পর বিকাশের এই একটা অভ্যাস বদল হয়েছে। বদলের কারণ অনেক বার অপরূপাকে বলেছে। যতবার শুনেছে অপরূপা ততবার হেসেছে- 
- আমাদের দুই বছরের ইন সার্ভিস ট্রেইনিং।
- সে তো জানি। 
- কিন্তু প্রথম বর্ষে কি হয়েছিল তা শুনলে …
- কী- অপরূপা আগ্রহ দেখায়।
বিয়ের পর প্রথম রাতেই বিকাশ বুঝে যায় প্রেম এখন পুকুর। গভীর শান্ত। একটা মুহূর্ত কত বাঁধ এনে দেয় মনে। স্রোতস্বিনী সাগর হয়ে যায় বিকাশের বুকে। বিশ্বাসকে মুক্তা করে রেখে দেয় দুই পাঁজরের ঝিনুকের মধ্যে। ডান হাত হৃদয়ের উপরে রেখে বাঁ হাতের আঙুল সাঁতার কাটে সমুদ্রে। আতর আদরের স্বরে আবার বলে-
- কী ভাবছ। বল। 
- তোমার মনে আছে, আমার প্রশিক্ষণের প্রথম তিন মাস তোমার সাথে কেন কোন রকম যোগাযোগ রাখিনি। 
- সে আর বলতে, অপূর্বটা একটা বদমাশ। ও বলে কিনা তোমার জীবনে কোন গুজ্জর রমণী- মৃগনয়নী এসেছে।   
- কিন্তু আসল ব্যপারটাতো এখনো জানোনা। 
- কী সেটাতো বলো।
- ইনস্টিটিউট এ ঢোকার সাথে সাথে টেনে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো বারবার’স রুমে। সখের গোঁফে যখন ক্ষুর লাগানো হচ্ছিলো চোখের কোণ ভিজে উঠেছিলো। সেখান থেকে চালান হয়ে গেলাম আমার জন্য এলটেট রুমে। রুমে কিভাবে মাল পত্র এলো জানিনা। দেওয়ালে লাগানো আয়নায় নিজেকে দেখে চমকে উঠলাম। সখের ড্যানি স্টাইলের চুল কোথায় যেন উড়ে গেছে। ন্যাড়ামুন্ডি হয়ে আছি। মনে হল আজন্ম আমি গোঁফহীন… 
কথা শেষ হবার আগেই অপরূপা খিল খিল করে হেসে ওঠতে গিয়ে হাসি জোর করে বন্ধ করে বলে- 
- গোঁফের সাথে খাওয়ার কী যোগ।  
- শোন বলছি। তখনো জানিনা চিনিনা কাউকে। তবে জানতাম আমরা প্রথম বর্ষে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ৮২ জন শিক্ষানবিশ এসে হাজির হয়েছিলাম। আমাদের সিনিয়র ছিল ৭৬ জন। শৈলশহরে রেঞ্জার ট্রেইনিং কলেজটি যৌবনের গরমে গম গম করছিলো।   আমার যে রুমমেট তার অবস্থাও একই রকমের। তার মুখে  কয়েকটা সরু কাটা দাগ। মনে হয় দাঁড়ি কাটতে গিয়ে কেটে ফেলেছে। নাম জিজ্ঞাসা করাতে নাম বললো কিন্তু বুঝতে পারলামনা। শুধু একটানা তিনটা শব্দ কানে লাগলো- ডি-ভি-ওয়ার। রাজ্য মেঘালয়। ও জানালো ঠিক  সাতটায় ডিনার বেল বাজবে। আমাদের দৌড়াতে হবে ডিনারের জন্য।      
- এতো রীতিমতো র‍্যাগিং।  
- না ম্যডাম, বিবিধের মাঝে মহা মিলন।  
- সেটা কেমন।
- বলছি। সন্ধ্যা সাতটা বাজতেই স্কুলের ঘন্টার মতো ঢং ঢং করে ঘণ্টা বেজে উঠলো।  পায়ের ধপা ধপ শব্দে কাঠের তিন তলাটি কেঁপে উঠল। সাথে চলল চিৎকার চেঁচামেচি। আমরা দুই জন দৌড় দিয়ে পৌঁছে গেলাম মস্ত এক ডাইনিং হলে। দাঁড়িয়ে পড়লাম একটা লম্বা লাইনে। মনে হলো আমার আগে আরও পঞ্চাশ জন হবে। লাইনের পাশে ঘোরাফেরা করছে কয়েকজন সিনিয়ররা- প্রিন্স কোট পরে। হঠাৎ শুনতে পেলাম একটা কড়া আদেশ- জুনিয়রস ইউ হ্যাভ টু ফিনিশ ইয়োর ডিনার বাই হাফ- এ্যান আওয়ার।  সাথে সাথে সবাই চিৎকার করে ওঠে- ইয়েস সার… তখন বুঝতে পারলাম ডিনারের বেল পড়ার সাথে সাথে সবাই কেন  দৌড় দেয়।  আমার মনে হলো লাইন শেষ হতে হতে আধ ঘণ্টা শেষ হয়ে যায়। ডিনার আর পাওয়া যাবেনা। যারা দৌড় দিয়ে আগে এসেছিলো তারা টেবিলে বসে ডিনার খাওয়া শুরু করেছে। আমাদের মতো যারা পরের দিকে  এসেছে তারা সার্ভিস টেবিল থেকেই খেতে শুরু করে। সেতো খাওয়া নয় গিলে নেওয়া। বলতে বলতে আধ ঘণ্টা কেটে যায়। আবার পাগলা ঘন্টি বেজে ওঠে। সব সিনিয়ররা জুতোর খট খট শব্দ তুলে ঢুকে পড়ে ডাইনিং হলে। মনে হলো জুতোর তলায় লোহার কিছু লাগানো আছে। খাওয়া হলোকি হলোনা, জুনিয়ররা সব ছুটলো ওয়াশ বেসিনে। আবার কড়া আদেশ নেমে এলো- জুনিয়রস গো টু অডিটোরিয়াম। টুডে ইজ চিত্রহার ডে। সবাই চিৎকার করে বলে- ইয়েস স্যার…     জান তো আমার মনে হয় সেই থেকে এই ইয়েস স্যার ইয়েস স্যার বলাটা অভ্যাসে চলে আসে।  
- তোমরা চিত্রহার দেখতে।       
- ওটাইতো মাত্র বিনোদন ছিলো। চিত্রহার দেখার সময় সিনিয়র জুনিয়র ভেদাভেদ থাকতো না। সবাই বেশ আনন্দ স্ফূর্তি করতো-একসাথে। তবে জুনিয়ররা খোলস ছেড়ে বেশী বের হতোনা। চিত্রহার দেখছি, আমার পাশে বসে ছিলো ভুটানের একজন অফিসার। সে বলে – হ্যালো আই এম রিঞ্চেন ভুটিয়া। মাই রুম ইস নেক্সট টু ইয়রস। তখন মমতাজের একটা বেশ রসালো নাচের গান হচ্ছিলো। নাচের তালে রিঞ্চেন খোলস থেকে বেরিয়ে পড়েছিল। সাথে যোগ দিয়েছিল কয়েকজন সিনিয়র।   
- বেশ তো। 
- শেষ করতে দাও। চিত্রহারে পর চলে জুনিয়দের ঘরে ঘরে সিনয়রদের আগমন। চলতে থাকে আলাপচারিতা আরও কতো কী- রাত্রি ৩ টা ৪ টা পর্যন্ত। এক ঘরে একাধিক সিনিয়র। যেখানে কেউ অসুস্থ থাকে সেখানে সিনিয়ররা বসে সারা রাত নার্সিং করে। সেই রাতে রিঞ্চেনের ঘরে কেরলের কয়েকজন সিনিয়র ঢোকে। আমরা অপেক্ষা করছি আমাদের ঘরে কে ঢোকে… কে ঢোকে করে... আমরা শুনতে পাচ্ছি রিঞ্চেনকে বলা হচ্ছে- হ্যাভ ইউ এঞ্জয়েড ডা ডান্স অফ মুমতাজ? – ইয়েস স্যার। নাও স্পেল সেক্সি। রিঞ্চেন উত্তর দেয়- এস ই এক্স ওয়াই। সঙ্গে সঙ্গে সব সিনিয়র এক সাথে চিৎকার করে ওঠে- হোপলেস… আর ওই জোকিং??? ইউ ডার্টি ফেলো।    
- এতো ভীষণ অন্যায়। ওতো ঠিক বলেছে।    
- তারপর কি শুনলাম সেটা শোন। সেক্সি ইজ ওয়ান বাই কস সি।    
- এতো হাইফাই তোমাদের ট্রেনিং…
- এক মাস ধরে প্রতিদিন চলল একই রুটিন। তিনবার দৌড় ডাইনিঙে। জুনিয়রের পর সিনিয়রা খেতে আসে। তারপর রাত্রি ৩টা ৪টা পর্যন্ত রুমে রুমে সিনিয়রদের প্রত্যাশিত আগমন। আবার ৫.৩০ মিনিটে কনকনে ঠন্ডায় শেভিং করে পিটি’র মাঠে। একদিন সকালে মাঠে গিয়ে সবাই ফল-ইন করেছি। পিটি ইন্সট্রাক্টর এসে চিবুকের নিচে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে উপরের দিকে টেনে চেক করতে লাগলো- প্রপার শেভিং হয়েছে কিনা। ডি-সিল্ভাকে লাইন থেকে বার করে দিল। শাস্তি দিল পিটি মাঠের সীমানা বরাবর ২৫ পাক দৌড়। জিহ্বা বের হবার উপক্রম।  
- তোমাদের সাথে তো লেডি অফিসার ছিল। 
- দুজন লেডি অফিসার ছিল। ওদের শুধু এই একটা এডভান্টেজ- শেভিং করতে হতোনা। আর বাদ বাকি সব এক। পিটির পর আবার সেই দৌড় শুরু… ফাঁকে ফাঁকে ক্লাস। 
- তোমাদের ক্লাস করতে হতো।
- ১৩ সাবজেক্ট পড়তে হয়েছে ম্যাডাম। কী ছিলোনা তাতে। ফরেস্ট্রি ছাড়াও পড়তে হয়েছে ফার্স্ট এইড থেকে ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার, সার্ভে থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং কত কী…
- তার মানে জ্যাক অফ অল মাস্টার অফ নান… 
-  সে তুমি যাই বলো। একদিন আমি কৃষ্ণমূর্তি আর সাইকিয়া সকাল ১০ টার ক্লাসে যাচ্ছি। করিডরে দেখা সিনিয়র বড়গোঁহাই-এর সাথে। আমাদের দাঁড় করালো। গভীর গম্ভীর গলায় সাইকিয়াকে বললো- সি ডা স্যু অফ ইয়র ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ইওর্স… ইয়েস স্যার… কেন ইউ সি ডা রিফ্লেকশন অফ ইয়র ফেস অ্যাট ডি টো অফ  ইয়র স্যু… নো স্যার। বড়গোঁহাই স্যার দাঁত চিপে বলে- হোপলেস, ইউ আর ডিফেমিং আওয়ার বিউটিফুল স্টেট অহম… রান ব্যাক এন্ড পলিশ ইউর স্যু এগেইন… এই ভাবে পিটি থেকে রাতের পিকেটিং চলল পুরো এক  মাস। তারপর হলো ফেশার্স ওয়েলকাম সেরিমনি। তারপর থেকে অন্য সব এক থাকলেও রাতের পিকেটিং হয়ে গেল আড্ডা আর ইন-ডোর গেম খেলার জায়গা।   ডাইনিঙের দৌড় রয়ে গেল একই রকম, কারণ সবার ক্লাস শুরু হয় একসাথে।  
- আচ্ছা 
- সেই যে খাওয়া গেলার অভ্যাস হয়ে গেল এখনো চলছে…   
- আবার কী যেন বললে- বিবিধের মাঝে…
- আমরা ভুটান সহ মোট ১২টি রাজ্যের ট্রেইনিরা এক সাথে ছিলাম। এক একটি রাজ্যের ফুড হ্যাবিট এক এক রকমের। এটিচ্যুডও ভিন্ন। একমাসের নরম গরম ব্যবহার আর ভালোবাসায় সিনিয়র জুনিয়র সবাই এক হয়ে গেলাম। তবে শ্রদ্ধার একটা দূরত্ব ছিলো। তৈরি হলো ব্যাচমেটদের মধ্যে ট্রাঙ্ক-মেট আর সিনিওর জুনিয়রদের মধ্যে স্টেট সিনিয়র স্টেট জুনিয়র জুড়ি।  
- সেটা কেন…
- দু-বছরের প্রশিক্ষণে ৬ মাস ছিলো ফিল্ড ট্রেইনিং। প্রথম বর্ষে ৩ মাস দ্বিতীয় বর্ষে ৩ মাস। সেই সময় লাগেজ কমানোর জন্য দুজনকে একটা ট্রাঙ্ক ব্যবহার করতে হতো। আমার ট্রাঙ্ক-মেট ছিলো ভুটানের। 
- ঝগড়া হতোনা। 
- না। তবে নারকলের নাড়ু বা ঐ জাতীয় কোন খাবার যে একে অপরের কৌটো থেকে না বলে খেয়ে নেওয়া বা অন্য সবাইকে বিলিয়ে দেওয়া ছিল মজার ব্যপার। ট্রেনিঙের সময় আমাদের বন্ডিং ছিল বিচিত্র। আমরা ছিলাম ভিন্ন ভিন্ন রঙের ফুল। সেই সব ফুলকে একসাথে গেঁথে মালা তৈরি করা খুব কঠিন কাজ। পুরো একমাসের টক মিষ্টি ঝাল প্রয়াসে তৈরি হয় সেই মালা।   
- ফুলের মালা না কচু, সব ন্যেড়া মুন্ডির দল। - অপরূপা খিল খিল করে হেসে ওঠে।   
- আস্তে। এত রাতে এমন করে হাসলে বৌদিরা সব ছুটে আসবে। আমার ঐ রূপ দেখলে তোমার কেমন লাগবে সেটা অনুমান করেইতো তিনমাস দেখা করি নাই।  
অপরূপা হাসি থামিয়ে বলে-  
- মাধুরী জানতো?
- না তো। 
- অপূর্ব আমাকে এমন সব কথা বলতো মাঝে মধ্যে আমার তোমার প্রতি সন্দেহ হতো। কিন্তু মাধুরীকে দেখতাম, তোমার প্রতি অগাধ বিশ্বাস। ও বলতো- বিকাশের দ্বারা কাউকে প্রতারিত করা সম্ভব নয়।  
- এখন তোমার কী মনে হয়। 
- তোমার বুকটা কত চওড়া। অপরূপা হাই তুলে বলে- লাইটটা নিভিয়ে দাও।
ডাইনিং টেবিলে ভেসে ওঠে শালবাড়ি বিট কড়াইগ্রাম রেঞ্জ মাঝগ্রাম রেঞ্জর বন বন্যজীবন পাখির গান আর অংশুর কিরণ। আলোকিত হয়ে ওঠে সংসার জীবন। একটা চঞ্চল মেয়ে গাছের মতো স্থির হয়ে যায়। শালসিঁড়ি প্রাণের যত্ন নেয় আর অপরূপা সংসারের। শালসিঁড়ি যখন নারী- পরিচ্ছন্ন রাখে সংসার জীবনের পরিবেশ। ভালোবাসায় মানুষ গাছ হয়ে যায়- কখনো নারী কখনো পুরুষ। তাও আজকে কেন হঠাৎ করে মন পোড়ার কথা বলল অপরূপা!   
- ময়ূখ কেমন আছে। 
- যেরকম থাকে…
- সব নিয়ম পালন করছে?
- না, যেটুকু না করলে নয়।
- ঠিক আছে। এইটুকু ছেলে। আর মাধুরী… 
- ও স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। তবে একটা পেন ড্রাইভ নিয়ে ও খুব চিন্তিত। ময়ূখের জন্য খুব চিন্তা করছে। 
বিকাশের ফোন বেজে ওঠে। বিকাশ উঠে গিয়ে ফোন রিসিভ করে। অপরূপা যেন হঠাৎ পদ্ম পুকুরে সাদা শালুক হয়ে যায়। বিকাশ আড় চোখে শালুক শুভ্রতা দেখে বলে-
- বলুন নির্মল বাবু। 
- স্যার গভর্নমেন্ট প্লীডার ভুজঙ্গ বিহারী কেসটা আর্মস কেস থেকে আলাদা করার আদেশ দিয়েছেন। আদেশটি নিয়ে এসেছি।  
- দারুণ খবর নির্মলবাবু। এখন আমাদের কাজগুলো তাড়াতাড়ি শেষ করে নিতে হবে।  
বর্ডারের কাছে জঙ্গলী লজ থেকে বন্দুক, লেপার্ডের চামড়া সহ ভুজঙ্গ বিহারীকে এ্যারেষ্ট করেছিলো বিকাশরা। লেপার্ডের সাথে বন্দুক থাকার জন্য পুরো কেসটার তদন্তের দায়িত্ব চলে যায় পুলিশের কাছে। পুলিশের হাজার  হাজার কেসের মধ্যে সময়ানুক্রমিক কারণে তদন্ত চাহিদা অনুযায়ী এগোয়না। বন আইন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন, বিশেষ আইন।  বন দপ্তরে এই ধরনের কেসের তদন্তের চাপ পুলিশের থেকে অনেক কম থাকে। তাই বনের অফিসাররা তদন্তের গতি আনতে পারে নিজেদের হাতে তদন্তের ভার থাকলে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আর্মস কেস ও বন্যপ্রাণীর কেস আলাদা করা হয়। বিকাশ চায় তদন্তটি নিজে হাতে করতে। সেভাবেই আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু মাধুরী যে পেন ড্রাইভটি পেয়েছে তাতে কি আছে! সেটাকি তদন্তের কাজে লাগবে! বিকাশ খক খক করে কেশে ওঠে-  
- কী হলো গলায় কাঁটা ফুটলো। ইলিশ মাছের সরু নরম কাঁটা গলায় লাগলে ভোগাবে। কত বলি খাওয়ার সময় ফোনটা ধোরোনা। ১০ মিনিটে কি পৃথিবী উল্টে যাবে। কে কার কথা শোনে। 
এক টানে উৎকণ্ঠার সাথে কথা বলে ওঠে যায় অপরূপা। ফিরে আসে বাটিতে শুকনো মুড়ি নিয়ে। 
- নাও মুড়ি কয়টা না চাবিয়ে শুকনো শুকনো গিলে ফেলো। তোমার তো গিলে ফেলার অভ্যাস আছে।   
কথা বাড়ায় না বিকাশ। শুকনো মুড়ির ঠেলায় কাঁটা সত্যি গেল কিনা বোঝা গেলনা। মিঠু এসে দাঁড়ায় পাশে। বলে-
- দাদাবাবু কাঁটার কথা ভুলে অন্য কিছু ভাবো, দেখবে কাঁটা চলে গেছে। 
মিঠু ঠিক বলেছে। পথের বাঁকের মতো মনের বাঁক নিলে পুরোনো কিছু ভুলে নতুন কিছুর সন্ধান মেলে। একটা মানুষ যে আকাশে উড়তে চাইতো, অতল সমুদ্রে ডাইভিং করে মুক্তার ঝিনুক খুঁজতে চাইত, সে দাঁড়িয়ে আছে গৃহকোণে। অথচ কলেজের পিছনের বট গাছের নিচে বসে যখন স্বপ্ন দেখতো তখন সে কোন দিন বলেনি- সে এক দিন বট গাছ হবে। সব মেয়েরা কি বট গাছ হয়ে ওঠে? সব বট গাছ কি অট্টালিকার কার্নিস কেটে থেকে মাটির নাগাল পায়। বিকাশ বুঝতে পারে বট অশ্বত্থের মূলের মতো ভালোবাসার প্রচণ্ড শক্তি, শুধু দেওয়াল নয় দালান ভেঙ্গে দেয়। দালান কী শুধু ইঠের বা মাটির হয়। দালান মনেরও হয়। মনের দালানে বাস করে ভালবাসা। কখনো রাজা বা রাণী হয়ে, কখনো ফকির হয়ে। রাজা বা ফকির কখনো ফাঁকি দিয়ে হওয়া যায় না। ফাঁকির ফাঁক দিয়ে কাম ঢোকে লোভ ঢোকে ক্রোধ ঢোকে, ভালোবাসা ঢোকেনা।  বিকাশ নিজে নিজেকে খোঁজে, ফাঁক খুঁজে পায় না। তাহলে আগুন লাগার আশঙ্কা কেন…

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri