সাইলি টি গার্ডেন (দ্বিতীয় পর্ব)/গৌতম চক্রবর্তী
সাইলি টি গার্ডেন (দ্বিতীয় পর্ব)
গৌতম চক্রবর্তী
----------------------------------
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। দামামা বেজে গেছে। রবিবার ছিলাম নাগরাকাটাতে। ডুয়ার্সের অন্যতম প্রাচীন জনপদ এই নাগরাকাটা এক সময় ব্রিটিশ প্ল্যান্টারদের দাপটে চলত। তার সাক্ষ্য বহন করছে প্রাচীন ইউরোপিয়ান ক্লাব। নাগরাকাটা ব্লকে রয়েছে একের পর এক বিখ্যাত চা বাগান। চায়ের কুঁড়ি তোলা থেকে শুরু করে চা প্রসেসিং এবং প্যাকেজিং পুরোটাই প্রত্যক্ষ করা যায় যে কোনও চা ফ্যাক্টরিতে ঢুকলে। তাছাড়াও ব্রিটিশ আমলে তৈরি চা বাংলোগুলিতে রয়েছে চা পর্যটনের একাধিক সম্ভাবনা। আসলে যেদিন কর্মদিবস সেদিন চা-বাগানের মহল্লায় সাইরেন বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় ব্যাস্ততা। কিন্তু ছুটির দিন নির্জনতায় ঘেরা বাগিচাতে থাকে না কোন শব্দ বা জন কোলাহল। সেটা বুঝলাম রবিবারের নয়া সাইলিতে গিয়ে। এর আগের সপ্তাহেই নয়া সাইলি বাগিচাকে নিয়ে কলম ধরেছি। বাগিচাকে নিয়ে আরো একটি পর্ব করার ইচ্ছা ছিল। তাই রবিবার দিনটা ছুটির দিন হলেও কারখানার বন্ধ গেটের সামনে এসে পৌঁছেছিলাম। রৌদ্রছায়াতে ঘেরা কারখানার সামনে অখন্ড নীরবতা। যেন পিনপতন হলেও শোনা যাবে। ছুটির দিনে এখানে শান্তি ভঙ্গ হয় বেয়াড়া শব্দে। চোখে পড়ল ঝকঝকে কারখানা প্রাঙ্গনের পেছনে যেন হাতছোঁয়া দূরত্বে চালচিত্রের মতো দাঁড়িয়ে আছে নগ্ন পাহাড়। ভারত স্বাধীন হবার পর বিদেশী প্ল্যান্টারেরা হাত গুটিয়েছে বাগিচার ব্যাবসা থেকে। কিন্তু গুডরিকসের মতো স্বনামধন্য কিছু প্রতিষ্ঠান এখনো তাদের গৌরব অক্ষুণ্ণ রেখেছে চা বাগিচা শিল্পে। ফলে এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে উত্তরের চা বাগিচাগুলিকে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে দেখার একটা পরিকল্পনা নিলাম। তীব্র গরম এবং সুকান্তদাকে অসময়ে বিব্রত করার ইচ্ছেটাকে সংবরণ করলাম এই ভেবে যে রবিবার ফাঁকা বাগিচাতে গিয়ে লাভ হবে না। তার থেকে নাগরাকাটা এবং ভগতপুরে হাটে আসা চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এবং কিছু নেতা যদি পাওয়া যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তাহলে পঞ্চায়েতের আগে নাগরাকাটা কি ভাবছে একটা চিত্র তো পাব।
সিদ্ধান্ত নিলাম বাগিচা সফরে এবার শ্রমিক এবং সাধারন মানুষের সঙ্গে কথা বলে হাল হকিকত তুলে আনব। সেই অনুযায়ী নাগরাকাটা থেকে শুরু করলাম আমার জুন-জুলাই এর বাগিচা সফর। চা শ্রমিকদের নিয়ে উত্তরবঙ্গে বামেদের আন্দোলনের পত্তন সেই পঞ্চাশের দশকেই শুরু হয়েছিল বলা যায়। তার পর যুগের পর যুগ ধরে চা বলয়ের মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল বাম শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের। ১৯৭৭ সালে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসে। আর চা বলয়ের মানুষের রায়ও দেখা যায় বামেদের দিকেই গিয়েছে। বলা চলে, আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ের মানুষের রায় যে মোটের উপরে ক্ষমতাশীল দলের দিকেই থাকে সেটা তখন আরও অনেকটা স্পষ্ট হয়। ২০১১ সালে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটে। তার পরেও চা বলয়ের দখল কিছুটা হলেও নিজেদের কাছে রাখতে সক্ষম হয়েছিল বামেরা। ২০১১ সালেও সেটা দেখা গিয়েছে। কিন্তু ছবি বদলাল ২০১৪ সাল থেকে। সে বছর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রতীকে জিতলেন দশরথ তিরকে। এর দু'বছর পরে আলিপুরদুয়ার জেলা যখন আলাদা হয়ে যায় তখন জেলার পাঁচটির মধ্যে চারটি আসনে ছিল তৃণমূল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েতেও একই ধারা বজায় থাকে। চা বলয়ের পঞ্চায়েতগুলিতে ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। কিন্তু তার পরই যেন ছন্দপতন। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলেও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার আসনে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে জয়ী হয় বিজেপি। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রেও হারের মুখ দেখতে হয় তৃণমূলকে। আর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য মমতার সরকার ক্ষমতায় এলেও তাতেও ব্যতিক্রম থেকে গেল উত্তরবঙ্গের চা বলয়। ২০১১ সালের আগে আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ে শ্রমিক আন্দোলনের রাশ কার্যত সিটু ও ইউটিইউসি-র মতো বাম শ্রমিক আন্দোলনের নেতাদের হাতেই ছিল। কিন্তু তার পর সময় যত এগিয়েছে ততই পতাকার সেই রঙ বদলে গিয়ে চা শ্রমিক আন্দোলনের রাশও ততদিনে চলে গিয়েছে তৃণমূলের আইএনটিটিইউসির নেতাদের হাতে।
এখন প্রশ্ন, চা বলয়ের রাজনীতিতে এই পরিবর্তন কেন? প্রবল মোদী হাওয়া সত্ত্বেও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সুফল পেয়েছিলেন সেই সময়ে সদ্য আরএসপি ছেড়ে তৃণমূলে নাম লেখানো দশরথ তিরকে। কিন্তু চা বাগানের 'রাশ' নিজেদের হাতে ধরে রাখার জন্য বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের একটা সময় মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও তৃণমূলের ক্ষেত্রে তা কিন্তু দেখা যায়নি। বরং দশ বছর ক্ষমতায় থাকলেও চা বলয়ের মাটির গন্ধ বুঝতে কখনই চেষ্টা করেননি রাজ্যের শাসকদলের নেতারা। উল্টে বহুবার চা শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে সাধারণ আন্দোলনকে গুলিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। চা বাগানের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাসিন্দাদের কাছে ওই নেতাদের পৌঁছনোর তাগিদও কখনও সেভাবে চোখে পড়েনি। এখানেই শেষ নয়। গোষ্ঠী রাজনীতির জেরে চা বাগানে কখনই একটি ইউনিয়ন গঠন করতে পারেনি তৃণমূল। ইউনিট খোলেনি একাধিক বড় বাগানে। তা নিয়েও একটা ক্ষোভ দানা বাধে চা শ্রমিকদের একাংশের মনে। পাশাপাশি একই দলকে একাধিক ইউনিয়নে বিভক্ত হতে দেখে বাগান শ্রমিকদের অনেকেই বিভ্রান্ত হয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চা বাগানের জীবনধারা বা চাহিদা বদলাতে শুরু করলেও সেটাও কিন্তু যথাসময়ে অনুভব করার প্রয়োজনীয়তা দেখাননি তৃণমূলের নেতাদের অনেকেই। চা বলয়ের শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা যে বিকল্প কাজ চাইছেন সেটাও বুঝতে চাননি তাঁরা। যদিও বিধনসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের শাসকদলের তরফে শ্রমিকদের মজুরি ১৭৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২০২ টাকা। চা বলয়ের আদিবাসী নেতাদেরই শ্রমিক আন্দোলনের মুখ হিসেবে তুলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। কিন্তু তার আগেই আরএসএস কিংবা বিজেপির চা শ্রমিক আন্দোলনের নেতা তথা সাংসদ জন বারলাদের প্রভাব যে চা বলয়ে অনেকটাই ছেয়ে গিয়েছে তা বিধানসভা নির্বাচনের ফলই পরিষ্কার করে দিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ের হারানো জমি ফিরে পেতে তৃণমূল, বিজেপি এবং জয়েন্ট ফোরাম কি কৌশল নেয় সে দিকেই তাকিয়ে সকলে। আসলে গণতন্ত্রের সংকট অনেক গভীরে। আদিবাসী চা শ্রমিকদের ভোটের রসায়ন শহর বা গ্রামাঞ্চল এর মত মোটেও নয়। শাসক এবং বিরোধী দলের নেতা থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থকদেরও প্রত্যেকেরই পাখির চোখ মজুরি। চা বাগানের মানুষদের কাছ থেকেই জানা গেল চা শ্রমিকরা কাকে ভোট দেবেন সে ব্যাপারে কি কোনো রাজনৈতিক দল আজ পর্যন্ত নানা কাজের ফিরিস্তি দিয়ে প্রভাব খাটাতে পেরেছে? চা বাগানের শ্রমিক কর্মচারীরা, বিশেষ করে আদিবাসীরা কাকে ভোট দেবেন তার অংক শেষ হয় ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে। সেখানে ভোটারকে শুধু প্রভাবিত নয়, ট্রেড ইউনিয়নিস্টদের পাশাপাশি পঞ্চায়েত প্রধান, খ্রিস্টান আদিবাসীদের ক্ষেত্রে পাদ্রীরা অথবা ধর্মগুরুরাও প্রভাবিত করেন। এমনটাই ডুয়ার্সের চা বাগানের বহু দিনের রীতি। এই রাজ্য তথা ডুয়ার্সে প্রায় চার দশক যাবৎ চা বলয়কে শাসন করত আরএসপি অথবা সিটু প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন তথা বাম সংগঠনগুলো। তখনো ভোটের অংক নির্ধারিত হত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং আদিবাসীদের ক্ষেত্রে ধর্মগুরুর আদেশ অনুসারে। ২০১১ এর ভোটের ক্ষেত্রটি ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম। সম্প্রতি চা বলয়ের অধিকাংশ পঞ্চায়েত এবং তার প্রধান তৃণমূলের দখলে। বাগিচার পরিস্থিতি নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের অভাব-অভিযোগ যেমন আছে, ক্ষোভও কিছু কম নেই। কিন্তু তারা কেউই শাসকদলের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করবেন এমন ক্ষমতা রাখেন না। বরং বেশ কয়েকজন যেমন প্রশ্ন করেছেন যদি শাসকদলকে ভোট না দিয়ে অন্য কাউকে ভোট দিই আর তারা যদি ক্ষমতায় আসেও তখন উন্নয়নের টাকা আসবে তো? কেঊ কেঊ আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন তখন নিজেদের সমস্যা নিয়ে যখন শাসকদলের নেতাদের কাছে গিয়ে দাঁড়াবো তখন তারাই তো বলবে যাদের ভোট দিয়েছিলি এখন তাদের গিয়ে বল। বোঝাই যাচ্ছে গণতন্ত্রের সংকটটা কোনদিকে।
২ মার্চ ছিল ডুয়ার্সের চারণকবি লাল শুকরা ওরাওঁ এর জন্মদিন। কিন্তু জন্মদিনে ব্রাত্যই থেকে যান লাল শুকরা ওরাওঁ। ক্ষেত্রসমীক্ষা করতে যাচ্ছি মেটেলিতে। চালসা গোলাইতে গাড়ি পার্ক করে একটু চা খাবার জন্য নামলাম। পশ্চিম ডুয়ার্সের চালসা গোলাই এর মেটেলি বাসস্ট্যান্ডের পাশে রয়েছে লাল শুকরা ওঁরাওঁয়ের মূর্তি। ২ মার্চ ১৯১১ সালে উনি জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যু হয় ৩০ মে ২০০১ সালে। ছবি তুলতে গিয়ে দেখলাম জন্মদিনের একদিন পেরিয়ে গেলেও একটি ফুলও পড়েনি ডুয়ার্সের বিশিষ্ট চাৱণকবি তথা তেভাগা আন্দোলনের অনন্য সৈনিক লাল শুকরা ওরাওঁয়ের পদপ্রান্তে। বিষয়টা নিয়ে একটু খোঁজখবর নেবার ইচ্ছা হলো। কি আশ্চর্য্! চালসাতে এমন একজনকেও পেলাম না যে লাল শুকরার সম্পর্কে জানে। মূর্তিতে তার জন্মদিন পালন নিয়ে সরকারিভাবে কোনও কর্মসূচিও চোখে পড়ল না। ২০০৯ সালে তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার চালসা গোলাইয়ে ওনার আবক্ষ মূর্তি বসায়। সে সময় তদানীন্তন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ বিভাগের মন্ত্রী যোগেশ বর্মন এই আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন। পরবর্তীতে ওনার নামেই চালসায় লাল শুকরা পার্কের নামকরণও করা হয়েছিল। ওনার জন্মদিনে কেউ একটি ফুলও দিল না। এটা খুবই দুঃখের বিষয়। মাটিয়ালি বাতাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক ভূজেল জানিয়েছিলেন ওনার জন্মদিন পালনের সরকারিভাবে কোনও নির্দেশ আসেনি। পরবর্তীকালে অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া (টাইগার) কে বিষয়টা জানিয়ে ছিলাম। তিনি অবশ্য জানিয়েছিলেন সরকারি স্তরে লাল শুকরার মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিকে অসম্মান এবং উপেক্ষা করা হলেও সংগঠনের তরফে ওনার মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়েছিল। আমি শুধুই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম একথা ভেবে যে হায় মূর্তি নিয়েও রাজনীতি!
ঠিক কি অবস্থায় আছে পরিকাঠামোহীন, বন্ধ বা দূর্বল অথবা অচল চা বাগানগুলি? কোথা থেকে কিভাবে আসছে তাদের পেট ভরাবার দানাপানি? যে বাগানগুলি বন্ধ অথবা যে বাগানগুলির অধিকাংশ গাছ এখন ঝোপঝাড়, বাকি সামান্য অংশে পুলিং হয়, অথবা নতুন পাতা গজায় কারা করে সেই কাজ? সাইরেন বেজে উঠুক, ফের চালু হোক রোজগারের কাজ এটাই কিন্তু প্রতিটি চা শ্রমিকের অন্তরের কথা। জলপাইগুড়ি, মালবাজার, মেটেলি, নাগরাকাটার যেকটি বাগানে সমীক্ষা করেছি তার মধ্যে উদাহরণ হিসাবে বলা যায় রায়পুর, জয়পুর, সোনালী, রাজা, তুনবাড়ি, সামসিং, মানাবাড়ি চা বাগান পরিকাঠামোহীন বাগান। বাগরাকোট, সাইলি, রাণিচেরা, কুমলাই, নাগেশ্বরী বা বা জুরান্তীর মতো চা বাগানে পরিকাঠামো থাকলেও শ্রমিকেরা নেই রাজ্যের বাসিন্দা। শ্রমিক পরিবারে শৌচাগার নেই, বাগিচায় হাসপাতাল নেই, থাকলেও বন্ধ বা প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নেই। বাগিচায় অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও অনেকক্ষেত্রে প্রয়োজন ছাড়া পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। বাইরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য শ্রমিকদের রেফার করেই বাগানের ডাক্তারবাবুদের দায়িত্ব শেষ। তবে অধিকাংশ বাগানে প্রশিক্ষিত বা অপ্রশিক্ষিত নার্স, কম্পাউন্ডার বা স্বাস্থ্য সহযোগী চোখে পড়েছে। কিন্তু বাগিচায় পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা নিয়ে শ্রমিকদের প্রশ্ন আছে। ওষুধের তালিকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নোটিশ বোর্ডে দেওয়া হয় না। হাসপাতালগুলিতে ডায়েট চার্ট অনুসরণ করে উন্নতমানের পথ্য সরবরাহ করা হয় না বলেও অভিযোগ। অধিকাংশ চা বাগিচায় লেবার ওয়েলফেয়ার অফিসার নেই। ক্রেশে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করার কোন ব্যবস্থা নেই। সময় সময় পানীয় জল ব্যবহারযোগ্য নয়। বাগিচায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বা বাগিচা সংলগ্ন উচ্চ বিদ্যালয় নেই না থাকার ফলে সন্তানদের দূরবর্তী বিদ্যালয়ে নেওয়ার জন্য যানবাহনের সংখ্যা অপ্রতুল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে তাই শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রশ্ন কাকে দেব ভোট আর কেনই বা দেব? তবু ভোট আসে, ভোট যায়, আর ডুয়ার্সের প্রান্তিক এই মানুষগুলি বসে থাকেন যদি কোনদিন নতুন সকাল হয় সেই আশাতে।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴