সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

03-December,2022 - Saturday ✍️ By- শুক্লা রায় 501

পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

পইলা সাঞ্ঝির কথা
পর্ব - ৪২
শুক্লা রায়
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷

নয়া গছের ফল

       "মাই, অসবালা! বাড়িত আছিস?"
ডাকতে ডাকতে উঠোনে পা দিয়ে বসমতী দেখল বাড়ি ফাঁকা। আপনমনেই বলল,
       "কোয়ারি কাট্টা নাগে দিয়া সাকালে উঠিয়ায় হিলা মানষি আরো কোটে গেইসে তে কায় জানে বা। কুমড়াখান আননু, কোটে থং এলা!"
কথা শেষ না হতেই দেখে রান্নাঘরের পেছন থেকে বিষেণ বেরিয়ে এল।
        "কী পিসাই? মাও ওত্তি, খোলানোত।"
          "তুই ফির আন্দনঘরের পাছোত কী করিস তে?"
           "অয় যে মাও কয়টা আদার গছ গাইচ্চে তে জঙ্গলে খায়া নিসে। ওইলায় কনেক হাত দিয়ায় অঠে দিবার ধচ্চুং।"
         "তোর মার তো আদার পোনোচ ফুরায়ে না। ওল, মাজালু হবে আর কয়দিন পরে। কুমড়াখান আনসুং তোর মাক দিবার। কোটে থং?"
বিষেণ এবার মাথা চুলকায়। তারপর বলে,
        "থওখেনে চালিখানোত। মাও এলায় থুবে ভাল করি।"
         "কোটে, আন্দনঘরের চালিত? কুকুর-নাকার মুখ দিবে এলায়। কোয়ারির বানখান খুলি ওদি ঢুকি থো কনেক।"
বলে বসমতী আর দাঁড়ায় না। খোলানের দিকে যায়। ওকে দেখে রসবালা হাসিমুখে জিজ্ঞেস করে,
        "বাড়ি ঢুকিলু দি? বাউ আছে?"
বসমতী খোলানের একধারে অল্প অল্প ঘাসের উপর বসতে বসতে বলে,
       "একফালা কুমড়া দিয়া আসিলুং। জালায় আছে। ভাজা খাইস।"
তারপর একটু থেমে বলে,
      "বাছাবাউক দেখিলুং। বিষেণটাক। আদা গছের জঙ্গল অঠের ধোইচ্চে।"
রসবালা ওর উত্তর পেলেও সে প্রসঙ্গে না গিয়ে জিজ্ঞেস করে কুমড়া কার না? তোমারে?"
          "মোরে গছের। আগুরি গাচ্চুং তে সেদিন দ্যাখোং কয়টা জালা আইচ্চে। আজি দেখোছোং তে ভাজা খাবার ঝোকোন হইসে কয়টা। একটা কাটি আনলুং বাড়ি। নয়া গছের ফল। একেলায় খাওয়া না যায়। তোকে কনেক আনি দিলুং। খায়া কোইস তো মিষ্টি আছে না নাই। গাড়িবার সোমায় তো মুখোত চিনি ফেলে গাচ্চুং। আজি দেখা যাবে কেমন মোজা কুমড়াখানের।"
তারপর রসবালাকে ধান গুটিয়ে ফেলতে দেখে জিজ্ঞেস করে,
       "নগদে শুকাইল ধানগিলা? অটে ফেলাছিত যে!"
রসবালা লম্বা বাঁশের হাতল লাগানো কাঠের চ্যাপ্টা চওড়া মাথা দিয়ে ধানগুলো একপাশে করছিল। এভাবে ধান গুলো দু-ভাগ করে ঝাড়ু দিয়ে সব ধান গুটিয়ে ফেলল। প্রশ্নটা করেই অবশ্য বসমতী নিজের ভুলটা বুঝতে পারল। রসবালার উত্তরের অপেক্ষা না করে নিজেই বলল,
      "হ, বাইন্যা দিছিত। আজিয়ে শুকাবে?"
রসবালা জড়ো করা ধানগুলোকে আবার বাঁশের হাতল লাগানো কাঠের টুকরোটা দিয়েই খোলানে ছড়িয়ে দিতে দিতে বলে,
        "ভাটিবেলা হইতে হইতে শুকাবে আজিয়ে। নিগাইম এলায়। চাকিস তো!"
         "নিগাইস।"
ছোট্ট করে উত্তর দিয়ে বসমতী উঠে পড়ে। তারপর বলে,
       "যাং। গাওখানোত জল দিয়া ভাত চাইট্টা চড়ে দ্যাং। কনেক পাথারবাড়ি গেসুং, গাও না ধুলে আউংশালিবাড়ি ঢুকির মনায় না। তোর বোনুও আজি নাই যায় কাজোত। বাড়িতে আছে। এইলা মানষি বাড়িত নোইলে মনটাত শান্তি নানাগে। খালি পাকটা ঘুইত্তে চাহা চাহা করি মরে।"
বসমতীর কথা শুনে রসবালা হাসে।
      "ঠিকে কাথাটা কসিস। বোনু এখেরে বেইন্যায় চাহা চান্দায় তো। তোক না পাইলে মোরঠে আসিবে। তে মোক তো বোনুক চাহা দিতে ভালে নাগে। ওঠে দুইটা কাথাও হয়।"
বসমতী মজা করে।
         "খোয়াবু তো। না খোয়াবুতে কী! তোর বোনুকে না যত্তনে পত্তনে চাহা রে, শাক-পিতার রে, মোটা মাছ রে। মুই তো মানষিটা ফেলানিত গেসুং!"
বসমতীর কৃত্রিম রাগ দেখে রসবালাও হাসে। হাসতে হাসতে বলে,
         "বেলাভাটি ধানগিলা কনেক চাকি দিস দি। সেলা তোকো যত্তনে পত্তনে খোয়াইম!"
বসমতী হাসতে হাসতে মাথার চুলটা খুলে আরো ভালো করে হাত-খোঁপা করতে করতে বাড়ির দিকে হাঁটতে থাকে।
      রান্না-খাওয়ার মাঝে মাঝেই রসবালা ধানগুলো পা দিয়ে নেড়েচেড়ে দিয়ে আসে। রান্নার সময়টা ছেলেকে দিয়েও এই কাজটা করিয়েছে। ধান প্রায় শুকিয়ে এসেছে। চড়া রোদ আজকে। খেয়ে উঠে বাসন-পত্র না মেজেই কলপাড়ে জল দিয়ে রেখে খোলানে ছুটল রসবালা। কয়েকটা ধান মুখে তুলে দেখে রেখে দিল। আবার ধন্দে পড়ে একটু দোলাচল করতে করতে হাতে তালুতে কয়েকটা ধান তুলে নিয়ে বসমতীর কাছে ছুটল। বসমতী ধান নিয়ে হাতের তানুতে একটু রগড়ে মুখে দিয়ে চিবিয়ে ওকে বলল,
       "আর কনেক হবে। এলাং চ্যাম্মেত চ্যাম্মেত করেছে! আর কয়টা ঘাটা খাবে।"
রসবালা বাড়ি ফিরে আগে খোলানে গিয়ে পা দিয়ে ধানগুলো ছড়িয়ে দিয়ে বাসন মাজতে বসে। বাসন মাজা হলে বড় বড় দুটো ডেলি নিয়ে খোলানে যায়। যেতে যেতেই বসমতীও পান চিবোতে চিবোতে এসে পড়ে। এবার নিজেই কয়েকটা ধান মুখে দিয়ে বলে,
      "হোইসে এইবার। ওঠা ওঠা ধানলা। কড়কড়া নাগেছে। বেশি আগাইলে আরো ভুকাইতে ভাঙি যাবে এলায়।"
রসবালা তড়িঘড়ি ধানগুলো গুটিয়ে ফেলে। ডেলিতে তোলে। সরেন এসে ডেলিটা মাথায় তুলে দেয়। রসবালা হনহন করে হেঁটে একটা বস্তায় ঢালে ধানগুলো। বড় ছেলে এসে বস্তার মুখটা ধরে। তারপর বলে,
         "আর কতলা আছে? চল, মুই আনোছোং। তোর এমনি কমরের বিষ!"
রসবালা হা হা করে ওঠে। 
         "নানাগে, নানাগে। তুই ভ্যান চালেয়া হাপসি-খাপসি আচ্চিস। তুই কনেক থাকি ন।"
সুষেণ এবার ডাক দেয়,
        "ভাইয়া রে, যা খেনে। খোলান থাকি ধানলা আনেক কনেক। মার কমরের বিষ দেখিন্না।"  
বিষেণ খেয়ে উঠে বাঁটুলটা হাতে নিয়ে নানা কসরৎ করছিল। দাদার ডাকে বাঁটুল রেখে মার হাত থেকে ডেলিটা নিয়ে বলল,
       "চল। কইলে না মুই আনোছোং। তে একেলায় আনিছিত।"
রসবালা কিছুটা স্বগতোক্তির মতো বলে,
       "খায়া উটিলেন মানষিগিলা। কনেক আরাম না কোইত্তে কাজের কাথা কোওয়া যায়! মনটায় না চায়।"
বিষেণ এসব কথা শোনে কিনা বোঝা যায় না। আপনমনে গুনগুন করতে করতে খোলানের দিকে পা বাড়ায়।
              পরদিন সকালেই বুধেশ্বরের বৌসহ সাম-গাইনে ধান ভানতে শুরু করে রসবালা। বুধেশ্বরের বৌ গাইন দিয়ে সামে রাখা ধানে পাড় দিতে দিতে বলে,
        "দুই মোণ ধান খাড়ায় হবে এলায়। দুই গাইনে ভুকামু। আগোত হামরা চেংড়িতে ধান ভুকার হেরা-জিতা নাগাসি। কায় জিতে। তিন গাইনে, চাইর গাইনে ভুকাসি। এখেরে আওয়ে-বাওয়ে। কী দিন গেইসে সেলা মা!"
রসবালাও সায় দেয়। আগে ওরাও দিনে দিনে অনেকগুলো করে ধান সাম-গাইনে ভুকাতো। বুধেশ্বরের বৌ একটু থেমে বলে,
         "মোক চাইট্টা কাড়ানি দ্যান তো মাও। ছাগলটাক খোয়াইম। নাই বাইস্যালি দিন আইসেছে, ছাগল-ছেলির ফোইজ্জোত ও আইসেছে। চাইরো পাশ্যে আবাদ-কিষ্ষি। বান্দিবারে জাগা হবে না। এই কাড়ানি আর ভাতের মাড়ে খোবার নাগে। সেলা চান্দে বেরা কোটে কাটলের পাত, বাঁশের পাত!"
রসবালাদের গরু তো আছেই, ছাগলও বেশ কয়েকটা। বর্ষাকালে পোষ্য পালার কষ্ট ও বোঝে। সেজন্য বলে,
       "নিগানখেনে। তোমরা চাইট্টা। মুই চাইট্টা। হবে ঝুনি।"
কথায়-বার্তায় কাজ এগোয় দ্রুত। মুখ দিয়ে একটা শব্দ করতে করতে বুধেশ্বরের বৌ পুরো শক্তি দিয়ে গাইন দিয়ে পাড় দেয়। রসবালাও একটা হাত দুলিয়ে দুলিয়ে ছন্দ মিলিয়ে পাড় বসায়। একসময় রান্নার সময় হলে রসবালা ঝটপট রান্না বসিয়ে দেয়। কড়াইয়ে জল দিয়ে মুসুর ডাল ধুয়ে দেয়। ফেনাটা ফেলে দিয়ে দু কোয়া রসুন, একফালি পেঁয়াজ আর দুটো কাঁচা লংকা ফেলে দেয়। আর একটা উনুনে ভাত ফুটে উঠতে উঠতে কচি কচি পুঁইশাক, একটু কুমড়ো, আলু মিশিয়ে কাটে। তারপর বুধেশ্বরের বৌ -এর দিকে তাকিয়ে বলে,
        "সাকালে চাইট্টা বিলাতি আলু বেচি থুসুং, ভাজা আন্দিম। বাছা বাউটার হামার খিব ফেষ্টি। মশলা ছাড়া খাবারে না চায়। আলু ভাজা পালে এলায় না হবে আগ।"
বসমতীর রান্না হয়ে গেছে আগেই। সকাল থেকে রসবালার খবর নেওয়া হয় নাই। একটা থালার উপর তিনটা বাটি বসিয়ে তার উপর আর একটা থালা দিয়ে ঢেকে রসবালার বাড়ি এল। রসবালার হাঁড়িতে তখন সশব্দে ভাত ফুটছে।
         "আন্দন-বাড়ন হয় নাই মাই? কতলা ভুকালেন?"
রসবালা সব্জিগুলো হাত থেকে নিয়ে টেবিলের মতো করে বানানো বাঁশের চাংড়াটায় রাখে। ততক্ষণে বেড়ার গায়ে হেলানো পিঁড়িগুলো থেকে একটা পেতে নিয়ে বসে পরে বসমতী।
           "মেলা চাইট্টায় ভুকালি দি। বৌমারও হামার ভালে হাত চলে। চেংড়ি থাইকতে উমরা বলে শকে শকে হাওলি দিসে মানষির ধান ভুকাত। তাও এ বেলাটা ভুকালে কালিকার দিনটাও খাবে। খালি এক ভুকা, দুই ভুকা হছে। আরো কাড়ের নাইগবে।"
বসমতী মাথা নাড়ে।
          "হু, হুটা তো নাগিবে। তাও তো এলা আটমাসিয়া দিন বাদে ধানলা নগতে শুকাইল। নাহাতে কেমন ফোইজ্জোত হইল হয়! আর বচ্ছর মুই সন মাসের শ্যাষ শ্যাষ ওউদ দেখিয়া দিলুং ধান উসিয়া। অয় যে ছোট দেওয়ানি যেদিন আরো চলি গেইল ওই দিনে। মুই ধান খোলানোত দিতে দিতে শুনোছোং মানষি দৌড়াদৌড়ি করেছে। দেওয়ানিক ঘাটোত না নিগাইতে না দ্যাওয়াটা নামিল! তিন মোণ ধান ধরি কী তিনকাচালখান গেল। এই যে দ্যাওয়া নামিল তে নামিলকে। মানষিও কান্দে, দ্যাওয়াও কান্দে।"
মাঝে রসবালা মগ্ন হয়ে শুনতে শুনতে নিঃশ্বাস ফেলে বলে,
        "মানষির কান্দন দেখিয়ায় তো দ্যাওয়া কান্দে দি!"
           "হুটা তো হয়।"
ছোট্ট করে উত্তর দিয়েই বসমতী ওর পুরনো গল্পে ফিরে যায়,
          "ধানলা খালি মেলি দিলুং মোতোন মাই। সেলা অতলা ধান ধরি কোটে থাকি কোটে যাং।"
বুধেশ্বরের বৌ গাইন থামিয়ে বলে,
         "সেলা কী কোইল্লেন ধানগিলা?"
         "কী আরো করিম। মাজিয়াতে চটি বিছি ম্যালে দিয়া একদিন থুলুং। হিদি মাটির ভাপ উটি ধান ঘামিয়া গোন্দ বিরাবে, তাকো ভয়। তোমার বাপ যে গাইলাছে মোক। মোরে দোষ। মুই কছোং ভাল দ্যাওয়াটা দেখিলুং! কায় জানে তে এমতোন ঠেকাবে। মুই কী গোণাপারা জানোং? কও তো বায় তোমরায় এলা! সেলা ওইলা ধান কান্তাইত ঘামেয়ায় শুকালুং! শনিবারিয়া সাতাও। ওই সোপ্তাটা গোটায় ঠেকাইল। মিনতির মাও আর কায় ঝুনি ঘরোতে ধানগিলা ভুকি দিল মোক।"
কথাটা ঠিক। ভালো আকাশ দেখে ধান ভেজানোর পর হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে আর কার বা কী করার থাকে! 
................................................................
কোয়ারি-কাট্টা - দুয়োর-কপাট
চালি খানোত - ঘরের বারান্দার চালার নিচটা
পাথারবাড়ি - মাঠে-ঘাটে
চ্যাম্মেত চ্যাম্মেত - কড়কড়ে নয়, চিমসানো মতো
বিলাতি আলু - ছোট দেশি আলু
আটমাসিয়া দিন - বর্ষাকে চারমাস ধরলে বাকি মাসগুলো একসাথে আটমাসিয়া
................................................................
                                    ছবি : ময়ূখ রায়

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri