পইলা সাঞ্ঝির কথা
পর্ব - ৩৯
শুক্লা রায়
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
উনমালাই ভাজাকালাই
প্রবল ব্যস্ততার মধ্যেও ছেলেকে অনেকক্ষণ থেকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল মালতীর মা। এবার দেখে আর সবাইয়ের সাথে কলাপাতা কাটতে গেছিল। দলে বেশ তিন-চারজন। মালতীর মা ছেলেকে দেখেই চিৎকার করে উঠল,
"তোর এখেরে খান দান নাই বাউ? গাও পাও ও ধোয়া নাই? সাক্কাল থাকি অংকরি বেড়ের ধচ্চিৎ? মনটা কছে না দ্যাং কয়টা পিটিত বসেয়া।"
রসবালা হা হা করে ওঠে।
"আজিকার দিনটা না কইস তো কোনো দি! আজি ওমোতোন কনেক হবে। দিধির বিয়াও নিইগসে! মানষি-দুনষি দেখেছে। কাজও না করেছে।"
মালতীর মার রাগ তবু যায় না। ঝাঝিয়ে উঠে বলে,
"তে খাবে না! কুন সাকালে এক কাপ চাহা আর চাইট্টা মুড়ি খায়া বেড়াইসে, আর পাত্তাখানে পাওয়া না গেল। বিয়াও নাইগসে তে উয়ায় এখেরে উনমালাই ভাজা কালাই হয়া বেড়াবে!"
রসবালা মালতীর মাকে পাত্তা না দিয়ে ওর ভাইকে ডাকে,
"নে বাউ, এদি আয় তো। বইস। চাইট্টা ভাত খা। খানদানের পাটটায় আগোত উটুক।"
তারপর গলাটা তুলে বলে,
"ন্যাও, কায় কায় খাবেন আইসো।"
খাবার লোক বাইরের সেরকম কেউ নেই যদিও। ছেলে পক্ষের লোক মেয়ে আশীর্বাদ করতে আসছে আজ। তাই রান্নার জন্য রসবালা আর সুকারুর বৌ এসেছে। মালতীর বড় মামা-মামিও এসেছে আজ সকালেই। পাড়ার দু-একজন বাচ্চা ছেলে কাজে-কর্মে সাহায্য করছে, এর বাড়ি তার বাড়ি থেকে বাঁশের বসার খাট, কাঠের বেঞ্চ এনে সাজিয়ে রেখেছে উঠোনে। ছেলে পক্ষের লোকজনকে খাওয়ানোর জন্য কাপ প্লেট, স্টিলের গ্লাস -এসবও এসেছে বিভিন্ন জনের বাড়ি থেকে। ভাত অবশ্য কলার পাতাতেই খাওয়াতে হবে। এত স্টিলের থালা জোগাড় করা সম্ভব হয় না। পাড়ার বেশির ভাগ বাড়িতেই দস্তার বা অ্যালুমিনিয়ামের থালা-বাসন।
মঙ্গলুর নতুন বিয়ে হয়েছে মাত্র কয়েকমাস আগে। সুকারুর বৌ মঙ্গলুর বৌয়ের কাছ থেকে একটা রঙচঙে শাড়ি, খোঁপায় গুঁজবার জন্য চুলের কাঁটা চেয়ে নিয়ে এসেছে। রান্নাঘর, গোয়াল ঘর একসঙ্গে আর একটাই শোয়ার ঘর মালতীদের। বাঁশের চাঙরার বিছানার এক কোণে জড়সড় হয়ে বসে অন্যমনস্ক হয়ে কাঁটাগুলি নাড়াচাড়া করছিল ও। ওর মামি ঘরে ঢুকে কাঁটাগুলো দেখে হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে দেখতে প্রশ্ন করে,
"কিনিসিস? বেইশ ঢক তো! এই মতোন উপার বানালে ভাল নাইগবে। ধনী মানষিগিলার বৌ-বেটিগিলার না আছে, উপার।"
মালতী মুখ নিচু করেই থাকে। তারপর আস্তে আস্তে উত্তর দেয়,
"বৌদি আনিসে মঙ্গলুদার বৌর।"
মালতীর কথা শেষ হতে না হতেই সুকারুর বৌ ঢোকে হৈ হৈ করতে করতে।
"নে তো মাই, আইসেক, তোক আগোত সাজাং। মানষিলা বলে জোগোতে আসিবে।"
মালতীর মামি জিজ্ঞেস করে,
"আলতা পেন্দাবু না?"
"হুলা না দুপুরে পেন্দাসুং মা। এলা খালি মুখ খানোত ছেনো মাখি দ্যাং আর মাতাটা বান্দি দিয়া কাপড় পেন্দাং।"
সুকারুর বৌয়ের উত্তর শুনে ওর মামি নিশ্চিন্ত হল মনে হল। তারপর বলল,
"পেন্দাও বা। মুই আরো কুচি করি কাপড়ায় পিন্দির না পাং। হামার এক তাওয়া কাপড়া পিন্দি ওইব্যাস। আগিলা বুড়িগিলা তো আরো বয়স হইলে আর কাপড়ায় নাই পিন্দে। ফোতা পিন্দিয়ায় বেড়াইসে।"
সুকারুর বৌ মালতীকে মুখটা ধুয়ে আসতে বলে। ততক্ষণে আঁচলটা বিছানায় রেখে পাট পাট করে ভাঁজ করতে থাকে। তারপর গলার ইমিটেশনের মোটা রূপোলি চেনে ঝুলতে থাকা দু-তিনটে সেফটিপিন থেকে একটা নিয়ে আঁচলের প্লেটটায় আটকে দেয়। অনুমানের উপর নির্ভর করে শাড়ির কুচিটাও বিছানাতেই করে আর একটা সেফটিপিনে আটকে সাবধানে একপাশে সরিয়ে রাখে। এরমধ্যে দু-তিনটে বাচ্চা ঢুকে পড়লে ধমকে ওদের বের করে দিয়ে আবার সাজানোর কাজে মন দেয়। মুখে ফেমিনা স্নো মিখিয়ে দিয়ে চোখে কাজল পড়ায়। সর্ষের তেলের সলতে পুড়িয়ে আম পাতার উপর কাজল পেতে রেখেছিল আগেই। তখনই বলেছিল,
'বিয়ার সোমায় একটা কাজলের ডিবিয়া আনেন বারে। কিনালায় প্যান্দেবার ভাল।'
কাজল পড়ানো হয়ে গেলে চুল বাঁধতে বসে। কালো ইঞ্চি ফিতায় কষে গোড়াটা বেঁধে চুলটাকে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে হাত খোঁপা করে কালো রঙের একটা পাতলা জাল দিয়ে খোঁপাটা ঘিরে নিয়ে তার উপর দিয়ে রূপোলি কাঁটাগুলো গুঁজে দিল। এতক্ষণ মালতী কোনো কথা বলেনি। হাত আয়না মুখের সামনে ধরলেও সেভাবে তাকায়নি। কিন্তু খোঁপায় কাঁটা গুঁজে দিতেই একটু সংকোচ বোধ করে। মিনমিন করে সুকারুর বৌকে বলে,
"কাঁটালা নানাগে তো বৌদি। বেইন্নায় বাজিবে এলায়। বাবাঘরের আগোত মোক সরম নাগে।"
"কিসের আরো সরম? আজি না কনেক সাজির নাগেকে। না সাজিলে হয়? মানষিলা কী কবে এলায়?"
মালতীর আপত্তিকে পাত্তা না দিয়ে সুকারুর বৌ খোঁপাটা হাত দিয়ে চারপাশটা গোল করে চেপে চেপে দেয়। মালতীকে বেশ লাগছিল দেখতে। ওর দিকে তাকিয়ে সুকারুর বৌয়ের মুখে একটা মৃদু আত্মতৃপ্তির হাসি ফুটে ওঠে। তারপর আন্তরিক গলায় বলে,
"চেঙরাটাক দেখসিস মাই? মনোৎ খাইসে?"
মালতী প্রথমে জবাব দেয় না। কিন্তু সুকারুর বৌয়ের পীড়াপীড়িতে বেশিক্ষণ চুপ করেও থাকতে পারে না। ছোট্ট করে সলজ্জ ভঙ্গীতে বলে,
"খাইসে।"
শাড়ি পরাতে পরাতে সুকারুর বৌ একাই নানারকম কথা বলতে থাকে। সবই শ্বশুর বাড়ি সংক্রান্ত।
"মিলমিশ করি থাকির নাগে মাইনো। কাহোকো এখেনা উঁচা কাথা কোওয়া যাবে না। আগ-দুঃখ, মনের কাথা মনোত থুইয়া কাম করির নাগিবে। কাহো একটা কাথা আসিয়া পুছিবে না তোক, কেমন আছিস কি কোনো। নিজের মানষিটায় একো সোমায়টাত বুজে না তে পর মানষির কাথা ফেলাও ওত্তি।"
মালতী মন দিয়ে শোনে ঠিকই তবে ভেবে পায় না সুকারুর বৌয়ের এত কষ্টের কথা কোথা থেকে বলছে। ওর তো শ্বশুর-শাশুড়ি নেই, ভালোই আছে। তবু কিছু বলে না। পুতুলের মতো সুকারুর বৌয়ের নির্দেশ পালন করতে থাকে।
"নে, কুচিলা গুঞ্জেক তো এলা! এদি কনেক কাপড়াখান টানেক তো। আঞ্চলখান এমতোনে নবে? না আর কনেক ছোট করিম?"
অবশেষে শাড়ি পরানো হল। সুকারুর বৌ এবার নিশ্চিন্ত হয়ে বলে,
"তে বইস তে কনেক একেলায়। মানষিলা আসিলে কিন্তুক কান্দিবু না কয়া দেছোং। নাহলে কাজলগিলা এলায় ছ্যানব্যান হবে।"
মালতী উত্তরে কিছুই বলে না। মুখ নিচু করেই বসে থাকে।
তাও মোটামুটি ছেলে পক্ষের লোকের আসতে আসতে বিকেলও ফুরিয়ে যাবার পথে। সাত-আটজন মানুষ সাইকেলে করে বাড়ি ঢুকতেই সবাই মিলে উলু দিয়ে ওঠে। মুহূর্তে বাড়িটা যেন প্রাণ পেয়ে যায়। উলুধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই মালতী, মালথীর মা আর মামি ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। সুকারুর বৌ এসে কৃত্রিম ধমক দিয়ে বলে,
"হ্যাঁ মা, তোমরা আজিয়ে যদি কান্দেন তে বিয়ার দিন কী করিবেন? আর তোমরা কান্দেছেন, মাইয়ো না তে কান্দিবে এলায় বেশি করি। কাজললা বোদায় হইল ছ্যানব্যান, ওনাচার দেখাবে এলায়।"
ওর ধমক খেয়ে আগে মালতীর মামি ওঠে, তারপর ওর মা ও আস্তে আস্তে চোখ মুছতে মুছতে ওঠে। সুকারুর বৌ একটা পাতলা কাপড় ভিজিয়ে এনে যত্ন করে মালতীর মুখটা হালকা মুছিয়ে আঙুলের ডগা দিয়ে আর একটু ক্রিম মাখিয়ে দেয়। হাত দিয়ে চুলটাকে একটু ঠিকঠাক করে দিতে দিতে ওর চোখ দুটোও ভিজে ওঠে।
মালতীর মা বাইরে এসে ভেজা গলায় কোনোমতে কাকে যেন জিজ্ঞেস করে,
"নয়া সাগাইলাক চা দিসেন?"
রসবালা উত্তর দেয়,
"দিছি। হয়া গেইসে। চা-মিষ্টি খায়ায় বলে আগোত আশুবাদ করিবে। তার পাছোত গল্প-সল্প।"
তারপর গলা তুলে সুকারুর বৌকে ডাকে,
"কোটে বারে বৌমা। তোমা বলে বৈরাতি হবেন। তে আইসোখেনে। ঠাকুমারীখান মুচি-কুচি ওইলা জোগাড় করি দেও।"
সুকারুর বৌ ঘর থেকে বেরোতে বেরোতে বলে,
"নন তো বারে। মানষিলায় এলাং চা-পানি কোনোয় খায় নাই।"
মুখে বললেও সুকারুর বৌ কিন্তু বসে থাকল না। একটা দস্তার জগে জল নিয়ে পাটের ন্যাতা দিয়ে খুব সুন্দর, যত্ন করে তুলসিমঞ্চের আশ-পাশে অনেকটা জায়গা লেপে দিল। তারপর একটুশুকাতেই ওখানে একটা নাড়কেল পাতার পাটি, তার উপর ধোয়া বিছানার চাদর এনে পেতে দিল। একটা চালুনের মধ্যে প্রদীপ সাজালো, দুর্বা আগেই তোলা ছিল। তার সঙ্গে ধান মিশিয়ে স্টিলের ছোট্ট রেকাবে রাখল। কেউ একজন পাশ থেকে বলল,
"একটা বাচ্চানি কাঁসার থাল জোগাড় করির নাই পান?"
সুকারুর বৌ সেদিকে না তাকিয়েই উত্তর দিল,
"নাই বারে। কার না চান্দাবেন?"
বসমতী বলে,
"মোক কইলে না ধরি আসিলুং হয়। হামার মাইর, বাউর দোনোঝনেরে আছে। ভাত-ছোঁয়ানীর না থালগিলা।"
একটা নতুন কেনা মাটির ঘটে আমের পল্লব দিয়ে তুলসিমঞ্চে একপাশে রাখে। বসমতী বাড়ি থেকে শঙ্খটা নিয়ে এসেছে, ওটাও একপাশে কলাপাতায় রাখা। একটা থালায় কাঁচা হলুদবাটা, ধূপকাঠি ধরিয়ে রাখল। কাজ কী কম! বাটিতে দই, মিষ্টি চামচ পাশে বড় দস্তার গ্লাসে জল। এসব করতে করতেই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। মালতীর মা সুকারুর বৌকে ডেকে বলে,
"তে ওদি এখেরে ঠাকুরোক গোছা-বাতি দেখাও বারে। সইঞ্জা না হইলকে।"
সুকারুর বৌ উলুধ্বনিসহ সন্ধ্যা দিয়ে বড়দের মাঝখানে একটা প্রণাম করল। রসবালা আপন মনে বলে,
"বৌমার গালাখেনা বেইশ। কী সোন্দর যোগার দেয়।"
এবার অনুমতি পেতেই মালতীকে নিয়ে এসে পেতে রাখা পাটির উপর বসিয়ে দিল। মালতী ভয়ে, লজ্জায় জড়সড় হয়ে মুখ নিচু করে বসে থাকে।
"মালতীর মামা হেসে হেসে মৃদু অভিযোগ করে,
"এলানি আসিলেন বারে। ছাওয়াটার মুখখানে তে ভাল করি দেখির না পাবেন।"
ছেলের বাপ হেসে বলে,
"কত আর দেখিমু। দেখিলিকে না সেদিন। এলা না হামার মানষি হইলকে। সেলা না দিনাও দেখিমু বারে। তোমরায় দেখিবার হাউস করিবেন।"
তারপর একটু থেমে বলে,
"আজি নিরক্ষনি হইল মানে আদ্দেক বিয়াওয়ে না হইল। আজি চাইলে হামার মানষি হামরা ধরি যাবার পাই।"
সবাই মাথা নাড়ে। কথা ঠিক।
সুকারুর বৌ এবার ডেকে বলে,
"ন্যাও বারে কায় আশুবাদ করিবেন, আইসো। কায় আসিবেন জলছিটা না কায়!"
সম্ভবত ছেলের মামা বলে,
"হামার জলছিটা এলাং ঠিকে করি নাই বারে। চেংরার জ্যাটো আছে, উমরায় আশুবাদ করিবে।"
একজন বয়স্ক মানুষ ধীরে ধীরে উঠে আসে। সুকারুর বৌ একটা একটা করে জিনিস এগিয়ে দিয়ে সাহায্য করছে। সবাই উলুধ্বনি দিতে থাকে। বসমতী শঙ্খটা হাতে নেয়। প্রথমে হাতদুটোকে ক্রশ করে চালুনটা তুলে কপালে ঠেকিয়ে নামিয়ে রাখল। পরপর তিনবার। ধূপকাঠিও তাই। তারপর কাঁচা হলুদ হাতে নিয়ে সামান্য নাকে শুঁকিয়ে মালতীর মাথার উপর দিয়ে পেছন দিকে ফেলে দিল। এটাও তিনবার। সামান্য গায়েও মেখে দেয়। তারপর সুকারুর বৌ মিষ্টির বাটিটা তুলে দিয়ে বলে,
"বাবা তোমার বৌমাক এলা মিষ্টি খোয়াও। এইলা তোমারে আনা মিষ্টি। দই খোয়াও। তার পাছে জল খোয়া মুখ মুছি দ্যাও। আইনসেন উমাল-টুমাল? না আইনসেন তে তোমার জামা দিয়ায় মুছি দ্যাও। তোমার বৌমা তালে তোমাক আদর করিবে বারে। বাবা বাবা কয়া পাছে পাছে বেরাবে।"
উপস্থিত সবাই হাসে সুকারুর বৌর কথা শুনে। বুড়ো মানুষটা এমনিই জবুথবু। তাও ওর মধ্যেই বৌমার মুখ মুছে দেয়। মালতী প্রণাম করে। তারপর ঘট থেকে আমের পল্লব দিয়ে তিনবার মালতীর মাথায় জল ছিটিয়ে দিয়ে পকেট থেকে একটা কৌটো বের করে ছোট্ট একটা মুসুরিদানা নাকফুল বের করল। নতুন বৌমার হাতে দিয়ে বাঁ হাতে ধান-দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করে বুড়ো নিজের জায়গায় গিয়ে আয়েস করে বসল এবার। মুখে একটা ছেলে-মানুষী তৃপ্তির হাসি। এরপর ছেলের বাবা একটা লাল রঙের শাড়ি-সায়া-ব্লাউজ ও আনুসঙ্গিক বাকি জিনিসগুলো, একটা রুমাল, সামান্য প্রসাধনের জিনিস হাতে তুলে দিয়ে আশীর্বাদ করল। উপস্থিত সকলেই দশটাকা, কেউ বিশটাকা দিয়ে মেয়েকে আশীর্বাদ করল। আশীর্বাদ পর্ব মিটলে সুকারুর বৌ মালতীকে আবার ঘরে নিয়ে গিয়ে বসায়। রান্না প্রায় হয়েই গেছিল। সেজন্য ঝটপট উঠোনেই জায়গা করে কলার পাতায় গরম ভাত, ডাল, খোসাসহ ছোট আলুর ভাজা একটা তরকারি আর সব শেষে রুই মাছের ঝোল দিয়ে শুরু হল খাওয়া-দাওয়া পর্ব।
যাওয়ার সময় হলে মালতীর জ্যেঠা শ্বশুর এবার গলা তুলে ডাক দেয়,
"কোটে বারে নয়া বৌমা। আইসো কনেক এলা বায়রা। হামাক বিদায় দ্যাও। মালতী সুকারুর বৌয়ের সাথে বাইরে এসে সবাইকে আর একবার করে প্রণাম করে। বড়রাও পরস্পরকে প্রণাম করল। সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হল দুই বেয়াই একসঙ্গে হাঁটু মুড়ে বসে পরস্পরকে প্রণাম করল।
..............................................................
উনমালাই ভাজা কালাই - আনন্দের আতিশয্যে চঞ্চল হয়ে পড়া।
নিরক্ষনি - মেয়ে আশীর্বাদ
যোগার - উলু দেওয়া
বায়রা - বাইরে