সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

28-November,2022 - Monday ✍️ By- বিমল দেবনাথ 534

শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

শালসিঁড়ি ৩৮
বিমল দেবনাথ
^^^^^^^^^^^^^

জামতলা টাওয়ার থেকে হাতি দুটি এখনো এসে পৌঁছায়নি। বিকাশ তাপসকে টাওয়ারের উপরে উঠে আসতে বলে।  নির্মলবাবু নিলয়কে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলে। নির্মলবাবু ফিরে যেতে দ্বিধা করছিল। বিকাশ বলে-  
- কিছু হবে না। আমি ঠিক আছি। আপনি যান। আপনি গিয়ে মাঝে মধ্যে কন্ট্রোলে বসে খবর নিলে হবে। বনে সব সময় আর-টি যোগাযোগ না হলে চিন্তার কিছু নেই। শুনেছি এই বেলার জন্য যে দুটো হাতি এসেছে সেইগুলো খুব ভালো। দাঁতাল হাতিটি ওদের বনের ত্রাস। বুনো হাতিরা খুব ভয় পায়। তাই ভয়ের কিছু নাই। আপনারা আসুন।   
অনিচ্ছা সত্ত্বেও নির্মলবাবুরা চলে যায়। বিকাশ তাপস অপেক্ষা করে হাতির জন্য। কেন যে দেরি করছে হাতিগুলো। গজমুক্তার কথা শোনার পর থেকেই মাথার মধ্যে হাতি ঘোরাফেরা করছে। বিকাশের এই এক রোগ যখন যেটা কাজে আসে সেটা মগজে গেঁথে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা শেষ না হয়। জগবন্ধু ফেরার সময় বলছিল-
- একদিন আমরা সকালের ডিউটি শেষ করে হাতিগুলোকে চরাতে এবং রাতের ঘাস জোগাড় করতে যাই। মাঝে মধ্যে আমরা কাছাকাছি সব ক্যাম্প বিটের হাতিদের নিয়ে এসে এক জায়গায় চরতে দিই। তখন হাতিরা কী দারুণ মজা করে।
- হাতিরা মজা করে, মানে? 
- সব হাতিগুলো এক সাথে হয়েই এমন চিৎকার শুরু করে যে আকাশ পাতাল ফাটাই দেয়। তারপর একজন আরেকজনের শুঁড়ে গন্ধ নেয়। কিশোর মাদা বাচ্চাগুলো নকল যুদ্ধ খেলা খেলে। একে অপরকে ঠেলে গুঁতো মারে চিৎকার চেঁচামেচি করে, সেই এক দারুণ দৃশ্য। আর সান করতে নামলে তো আর কথা নেই। হে হে হে… একে অপরকে ঠেলে ফেলে দেয় আবার জলে ডুবাই দেয়। জল ছিটায় আর তার সাথে চলতে থাকে নানা ধরণের ডাক। পোষা হাতিদের তো আর দলরাণী থাকে না যে আদেশ দিবে।
- তাই নাকি?    
- হ্যাঁ স্যার। পোষা হাতিদের নেতা হইলো মাহুত। তবে এই রকমের ঝুণ্ড মেলায় পোষা হাতিরা সহজে মাহুতের কথাও শুনতে চায়না। আর মাহুতরাও সেই দিন তাদের হাতিদের একটু ছাড় দেয়। মাহুতের এই শাসনে ঢিলাঢালা ভাব হাতিরাও বুঝতে পারে এবং মাহুতের এই ভালোবাসার ব্যবহার সব সময় মনে রাখে। 
- আচ্ছা।  
- সব হাতি বাচ্চাকাচ্চা নিইয়া সান করছিল, হঠাৎ গজরাজ বিশাল চিৎকার করে ওঠল। ও যেন সব হাতিদের নেতা হয়ে ওঠে।   
- গজরাজ কে? 
- ঐটা হইলো লালিবাড়ি বিটের হাতি। দাঁতাল। খুব ভালো হাতি। মস্তিতেও ডিউটি করতে পারে। চাইর পাঁচ বছর পর পর দাঁত কাইটে দিতে হয়। 
- তারপর। 
- নদীর পাড়ে একটা জংগলী দাঁতাল আসি নরমায়ার গন্ধ নিচ্ছিলো। গজরাজ যেন নদীটাকে পিঠে নিয়া ওঠে, ছুটে গেলো জংলী দাঁতালের দিকে। সব হাতিগুলো পালাইতে গিয়া দাঁড়াই পড়ে। জংলি হাতিটা গজরাজের দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। গজরাজ জংলী হাতির কাছে আইসে এমন ভাবে ব্রেক মারে যে সামনের পায়ের  তলা থেকে ধুলা ওঠে ধোঁয়ার মতো। গজরাজের  বিরাট চিৎকারে যেন সারা বন কাঁইপে ওঠে। জংলী হাতিটাও চিৎকার করে তবে গজরাজের মতো জোরে নয়। গজরাজ যেন সেদিনের ঝুণ্ড মেলার আনন্দে পুরা মস্তিতে ছিলো। তারপর বেড়ি এক পায়ে লাগানো। দুই পা খোলা। ধর্না  নাই। গজরাজ তখন পুরা স্বাধীন। ওকে পায় কে। গজরাজ শুঁড়টা মুখে তুলে গোল করে নিয়া এমন জোরে জংলিটার মাথা মারলো যে গজরাজের সামনের পা  মাটির উপরে উঠে যায়, শরীরের পুরা ভার জংলিটার গায়ে গিয়া পড়ে আর জংলির শরীর কুঁচকাই নিয়া পিছায় যায়। আবার হাতি দুইটা বিশাল চিৎকার করে। তারপর কেমন গুড় গুড় শব্দ করে আবার চিৎকার করে মাথায় মাথায় এমন ধাক্কা মারে যে জায়গাটা ধূলায় অন্ধকার হয়ে যায়। আমরা সব মাহুত পাতাওয়ালা হৈ হৈ করে ঐ দিকে সাবধানে যেতে থাকি। ধূলা কাটতেই দেখি জংলীটা লেজ তুলে দৌড়াচ্ছে আর পিছনে তাড়া করছে গজরাজ। মাহুত কার্ত্তিক ধাত্ ধাত্ বলাতে ও দাঁড়িয়ে গেল। কী ভাল দাঁতাল এইটা।               
- লড়াইয়ের জায়গায় গিয়ে কী দেখলে।    
- আর বলবেন না স্যার। জায়গাটা প্রায় ধূলা হইয়ে গেছে। আর একটা দাঁতের ভাঙা টুকরা পড়ে আছে। 
- বুনো হাতির দাঁত তো খুব শক্ত, তাহলে কি গজরাজের দাঁত ভেঙ্গে গেল? 
- না স্যার, জংলিটার দাঁত ভেঙ্গে গেছে।  
- কেন?  
- গজরাজের দাঁতের আগা তো সব সময় কাটা থাকে। যেটুকু দাঁত থাকে সেটা সলিড থাকে। হাতির দাঁতের আগার দিকে অনেকটাতে রক্ত যায়না বলে শুকনা থাকে। জোরে শক্ত কিছুর সাথে ধাক্কা লাগলে ভেঙ্গে যায়। জংলি হাতিটির দাঁত পুরা ছিল। সেই জন্য গজরাজের দাঁতের ধাক্কায় একটা দাঁতের আগা ভেঙে গেছে।  
- তোমাদের সুবিধা হল পরে হাতিটিকে দেখলে চিনতে পারবে। 
- হ্যাঁ, তবে হাতিটিও প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজবে। 
- তারপর কি হল?   
- গজরাজ আবার সানে নামল। আমরা আবার আমাদের হাতিকে সান কারাইয়ে যে যার জায়গায় চলে যাই।
- তোমরা বুনো হাতির স্নান দেখেছ?    
- দেখছি। একদিন হাতি সান করাইতে হাতি নিয়ে গেছি নাদীতে। গিয়ে দেখি এক দল হাতি নদীতে সান করছে। বাচ্চা কাচ্চা নিয়া। কতগুলা হাতি পুরা জলে ডুবে গিয়া খালি শুঁড়ের মাথাটা সাপলা ফুলের মতো জলের উপরে তুলে রাখছে। কেউ জল কাদায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। কেউ জলে পড়ে থাকা গাছের মুড়ার সাথে গা ঘষছে। আর কেউ… কুউ… গুড়… গুড় শব্দ করছে। আমাদের গন্ধ পাইয়া একটা বড় মাদি হাতি এমন চিৎকার করল যে সব হাতি হুড়মুড় করি ছুটে বনে ঢুকে যায়।            
- কেন?   
- ওই মাদিটাই ঐ দলের রাণী। ওর কথা না শুনলে মুশকিল আছে। হাতি দলে অনেক ছোট ছোট পরিবার থাকে।
- হাতির তো দল হয় জানতাম। ওদের ছোট পরিবার হয় নাকি?   
- জংলি হাতির ছোট পরিবার হয় তো। ওরা তো পরিবারে বিশ্বাস করে। বনের বাচ্চায়ালি মাদীর সাথে তার চাইরটা পাঁচটা ছোট বড় বাচ্চা বাচ্চি নিয়ে একটা পরিবার হয়। এই রকমের অনেকগুলা পরিবার মিলে হয় একটা হাতির দল। এই দলে মা মেয়ে মাসি নাতি নাতনিরা থাকে।   
- কেন পিসি মামা থাকে না?   
- দলে পিসি মামার পাত্তা নাই। ভাই বোন মাসি দিদা। মাসি দিদার দাদাগিরি বেশি।
- সেটা কেমন? 
- ধরেন একটা পরিবারে মাদা বাচ্চা হইল। বাচ্চাটা যেই যুবক হইল তেমনি মা মাসি দিদা দিদি যারাই থাকুক তারা ওকে পরিবার থেকে বাইর করে দিবে-রাণীর আদেশে।   
- (আহা রে, বেচারা) তাহলে এই ধরণের মাদাগুলো কি করে। 
- কি আর করবে। কিছু সন্ন্যাসী হয়া যায় আবার কিছু সান্ডা গুণ্ডা হয়া যায়।  
- সন্ন্যাসী সেটা আবার কি?   
- যাকে মালজুরিয়া বলে। আমরা সন্ন্যাসী বলি। কারণ ওরা আর সংসার করে না। ধরেন কোনো দল থেকে এক সাথে দুই বা তার বেশি মাদা হাতিকে রাণী বাইর করি দিল তখন ওরা একই দলের বা একই পরিবারে হবার জন্য এক সাথে থাইকে যায়। গুণ্ডা হাতিদের দাপটে কোনো দলে বিট (মেটিং) করতেও পারে না। তাই সন্ন্যাসী আর কি। হে হে হে … 
- আর যখন কোনো হাতি একা দল থেকে বের হয়?      
- সেগুলার অনেকে গুণ্ডা হাতি বা বিট হাতি হয়ে যায়। আবার কোনোটা দলে বিট করার সুযোগ না পেয়ে একুয়া হয়ে থাকে বা ঐ রকমের আরো একুয়া হাতির সাথে যোগ দিয়া মালজুরিয়া হয়ে যায়। 
- বনে তো অনেক মাদি হাতি আছে তবুও কেন সব মাদা হাতি মেটিং করতে পারে না? 
- স্যার এটা তো মানুষের সমাজ না যে মাদার জোর খাটবে। এটা হাতির সমাজ, এখানে মাদিরা সব ক্ষমতার ভোগ করে।  
- সেটা কেমন?
- মাদি হাতির ৯-১৫ বছরের মধ্যে হিট হয়। আর বাচ্চা যখন পেটে থাকে, এই ১৮ থেকে ২২ মাস; তখন খালি হিট হয় না। ধরেন একটা দলে চাইর পাঁচটা হিট হবার মতো মাদি থাকে। আবার মাদির হিট হলেই যে বিট করতে পারে তা কিন্তু নয়।     
- কেন?  
- দলের রাণী আর অন্য মাদি হাতি মিলেমিশে খেয়াল রাখে কোন মাদির কখন হিট হয়। দলে বাচ্চাদের অবস্থা কেমন। খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা কেমন, দলে কোনো মাদি হাতি ভর্তি থাকলে তার দেখাশুনার জন্য দাই-মা হাতি রয়েছে কিনা; সব বিচার বিবেচনা করে দলের রাণী হিট মাদিকে বিট করার সুযোগ দেয়।     
- (বাঃ হাতিদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ যে পুরো মাদিদের হাতে) তাহলে মেটিং করে কী ভাবে? 
- দলের জন্য সব ঠিক থাইকলে দল রাণী অনুমতি দেয়। তা নাহলে কোন গুণ্ডা হাতির ক্ষমতা নাই হিট মাদিকে বিট করে।  
- হিট হলে মাদি তো পালাতে পারে। 
- সে পালাতে পারে, কিন্তু পালাবে না। রাণী সুযোগ দিলে তবেই পালাবে।   
- কেন?
- মাদি হাতির প্রতি, তার বাচ্চার প্রতি, পরিবারের প্রতি বিট করা মাদা কোনো দায়িত্ব নেয় না। ও খালি বিট করে তারপর মাদির হিট শেষ হলে বিট মাদা চলে যায়। বিট করা মাদি ও তার বাচ্চার উপর যত মায়া যত ভালোবাসা যত দায়িত্ব, দলের মাদিদের, দলের রাণীর। হিট হওয়া মাদিরা জানে রাণীর কথা অমান্য করে বিট করতে গেলে, বিট শেষ হলে রাণী দলে ঢুকতে না দিলে; ওর যে বাচ্চা দেওয়া বাচ্চা পালা অসুবিধা হয়ে যাবে।  
- তাহলে মেটিং হয় কি ভাবে? 
- সব দিক ভেবে রাণী রাজি হলে হিট মাদি হাতি দলের বাইরে যায়। এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে। দলের বাইরে তখন হিটের গন্ধ পেয়ে মাদা হাতিরা ঘুরতে থাকে।  সেই মাদাদের মধ্যে যে মাদা সব থেকে বেশি  শক্তিশালী বড়সড় তাকে নিজের কাছে আসতে দেয় এবং বিট করতে দেয়। হিট চলাকালীন এক সাথে থাকে। তবে সেই সময় যদি আরো ভালো মাদা এসে যায় তার সাথেও বিটে যায়। কারণ ও জানে যে, ওর বা ওর  বাচ্চার দায়িত্ব সে মাদা কখনও নিবে না। তাই ভালো থেকে আরো ভালো বাচ্চা পেটে নিতে চেষ্টা করে।   
- আচ্ছা এমনও তো হতে পারে যে অতি বড় গুণ্ডা হাতি এসে গেছে, রাণীর কথা অমান্য করে রাণীর দল ভেঙে মেটিং শুরু করে, তখন কী হবে?  
- রাণী দলকে নিয়ে পালায় যায়, অতি বড় গুণ্ডা হাতির সাথে লুকাচুরি খেলে, এক জংগল ছেড়ে অন্য জংগলে চলে যায়। 
- (চূড়ান্ত নারী স্বাধিকার) লুকোচুরি খেলায় কি জিততে পারে। 
- সব সময় পারে না। অসম লাড়াই হয়, কখনো মাদি মারা যায় বা কখনো রানীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিট হয়। 
- স্যার হাতি দেখা যাচ্ছে।– তাপস বলে।  
- কোথায়!!! 
জামতলার দিক থেকে গজরাজদের আসতে দেখে। বিকাশ হাওয়া খেয়ে নেয়। মাথার মধ্যে যে ছয় নখ ওয়ালা হাতির কথা গজমুক্তার কথা বিড় বিড় করছে পিঁপড়ের মতো। তাপসকে বলে-
- কনট্রোল থেকে অন্য পার্টির খবর নাও। 
- পেট্রোলিং পার্টি কলিং কন্ট্রোল পেট্রোলিং পার্টি কলিং কন্ট্রোল …
- রেসপন্ডিং কনট্রোল। 
- পেট্রোলিং এর অন্য দলের কোনো খবর আছে?
- না। কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। 
- ও কে। ওভার।
গজরাজ ও মেনকা টাওয়ারের কাছে এসে দাঁড়ায়। কার্ত্তিক বলে-
- দেলাই সালাম।
হাতি দুটি শুঁড় তুলে বিকাশদের নমস্কার করে স্বাগতম জানায়। এই ক্ষেত্রে হাতি মাহুত এক। মেনকা হাতির উপর থেকে এক জন স্টাফ নমস্কার জানায় ও পরিচয় দেয় – আমি বনরক্ষী দেবারু। লালিবাড়ি বিট থেকে আসছি। দেবারুর পিছনে বসে আছে জামতলার টাওয়ারের ভগবান- কাঁধে বন্দুক নিয়ে। ভগবান বলে- 
- স্যার জামতলায় গাড়ি নিয়ে চলে আসলে অনেক তাড়াতাড়ি, হাতিতে উঠতে পারতেন।
- তোমাদের এত দেরি হল কেন। 
- স্যার, টাওয়ারে হাতিগুলো আসার পরে ঘাসে ছেড়ে দেয়। আমি তো আর টি-তে বার বার খোঁজ নিচ্ছিলাম। আপনার কোনো খোঁজ কেউ পাচ্ছিল না। আমি তো চিন্তায় পড়ে গেলাম। 
- মেনকার মাহুতের কি নাম?
- স্যার আমি গণেশ। 
বিকাশ গজরাজের উপর ওঠে বসে। পিছনে বসে পড়ে তাপস। কার্ত্তিক বিকাশের দিকে তাকায় –
- কার্ত্তিক, সকালের ডিউটিতে জগবন্ধু হাতির পায়ের ছাপ পেয়েছে- ছয় নখের। ভাবছি সেই দণ্ডীটা আবার ধরব। কি বলো? - বিকাশ বলে।  
- হাতির সামনের পায়ে সাধারণত পাঁচটা করে নখ থাকে। কখনো আমি ছয় নখ পাইনি। জগবন্ধু যখন বলেছে ঠিকই বলেছে। ছয় নখের হাতি কিন্তু বিশেষ হাতি হবে। কোন দিকে যাব স্যার? -কার্ত্তিক বলে।  
- এই যে উত্তর পশ্চিম দিকে যেই দণ্ডী গেছে সেটা ধর। যেখানে ছয় নখের হাতির পায়ের ছাপ আছে সেখান পর্যন্ত আমি নিয়ে যেতে পারব। তারপর যা করবে তুমি করবে। 
কার্ত্তিক মাইল বলে হাতের লাঠি দিয়ে মাথার উপরে আদর করার মতো করে যত্নে একটা বাড়ি দিল আর গজরাজ সকালে রবিলাল যে দণ্ডী ধরে সেন্ট্রাল টাওয়ারে ফিরে এসেছিলো সেই দণ্ডী ধরে হাঁটতে শুরু করে। মেনকা তার পিছু  নেয়।  
- ঐ দিকে গেলে যে হরিণ ঝোড়ার দোমুখায় যাবো। ঐখানে বিকাল বেলায় অনেক জন্তু দেখা যায়।– ভগবান বলে। 
- তুমি কেন বলছিলে ছয় নখের হাতি বিশেষ হাতি হবে।
- এমনিতে হাতির সামনের পায়ের পাতার গোলাই বেশী হয়, বেশীর ভাগ সময় পাঁচটা নখ থাকে কারণ হাতির মাথা বড় হয় আর ভারী হয় বলে। সেখানে ছয় নখ মানে পায়ের গোলাই আরো বড় এবং মাথাও সাধারণ হাতির থেকে অনেক বড় হবে। আর বড় মাথার হাতি খুব ভালো হয়। বড় হয়।   
বিকাশ আর কথা বাড়ায় না। বনে যে কোন মুহূর্তে যে কোন ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তার উপর বনে রয়েছে মস্তি হাতি একটি নয় দুটি। পুরনো দণ্ডীতে হাঁটার ফলে দুটো হাতি যে হাঁটছে টের পাওয়া যাচ্ছেনা। এই হাতি দুটো বেশ ভাল প্রশিক্ষিত মনে হচ্ছে। হাতির খাওয়া আর যাওয়া, যাওয়া আর খাওয়া’র থিওরি মানছে না। চুপচাপ হাঁটছে আর মাঝে  মাঝে শুঁড় তুলে কী যেন খোঁজে। গজরাজের হাঁটা এত ভালো যে বিকাশের মনে হয় ও যেন টেবিলের উপর বসে আছে। হাতি দুটির নীরব ও একাগ্র দৃঢ় হাঁটা দেখে মনে হয় যেন গোপন শিকারে বেরিয়েছে। শিকারে অবস্থান সুনিশ্চিত জানা। বিকাশের মনে পড়ে মহারাজাদের শিকারে অনেক গল্প কথা, যেগুলো পড়েছে বইয়ে। সেই গল্পের কথা যে জীবনে সত্যি হবে সে কোন দিন ভাবেনি। তবে তখন রাজা মহারাজারা শিকার করত বন্দুক দিয়ে, বিকাশ বেরিয়েছে ক্যামেরা আর দূরবীন নিয়ে। বিশেষ হাতির খোঁজে। এখনো পর্যন্ত ভারতে যে সকল হাতি রাজারা শিকার করেছিল তার মধ্যে সব থেকে বড় হাতি শিকার করা হয়েছে গারো পাহাড়ে। সেটার উচ্চতা ছিল ১১ ফুট ৪ ইঞ্চি। লম্বা ২৬ ফুট ৫ ইঞ্চি। সেই হাতির সামনের পায়ে কয়টা নখ ছিল কেন যে লিখে রাখেনি! এই হাতিটি কি সেই হাতি থেকেও বড়! চলতে চলতে কার্ত্তিক হাতের লাঠি দিয়ে সামনের দিকে ডান পাশে ইশারা করে। বিকাশ দেখে কুম্ভি গাছে অনেক বক বসে আছে। মনে হল গজরাজের চলা আরো দৃঢ় হয়ে উঠেছে। কার্ত্তিক বলে- 
-  ঐ গাছে এত বক জমা হয়েছে, মনে হয় আশে পাশে কোনো বড় জন্তু আছে।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri