সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

24-November,2022 - Thursday ✍️ By- শুক্লা রায় 500

পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

পইলা সাঞ্ঝির কথা
পর্ব - ৩৬
শুক্লা রায়
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷

ট্যারেয়া

বসে থেকে থেকে দুবার চা, তারপর মুখভর্তি পান খেয়ে কান্তেশ্বরের গরম লাগতে থাকে। বসমতী রাগে গজগজ করে। ওর গজগজকে মোটেও পাত্তা না দিয়ে কান্তেশ্বর দোতারা হাতে ডারিয়া ঘরে এসে বসলে বসমতী এবার সত্যিই রেগে যায়। 
       "বাছুরটার না গালার দড়িখান পোচকোটা নাইগসে। কদ্দিনে কসুং এখান দড়ি পাকের নাগে আর ইমিরা বিরাছে দোতোরা হাতোত ধরিয়া বাউদিয়ার নাখান। ছাওয়ালাক এখেনা দেখে টেখে না দিবেন তে হৌক কি হয়, ফেল করিলে বুঝেন সেলা।"
    "ধুর, তোমার এখেরে এত কাথা তো! নে মাই, বাউ। ঘরোত হোটে কি করেন? ন্যালটেঙটা ধরিয়া আগিনাতে আইসো। এঠে পড় দোনোঝনে। মুই দেখছোং।"
রাগ করে দোতারাটা আবার দেয়ালে ঝুলিয়ে রেখে কান্তেশ্বর উঠোনেই আবার একটা পিঁড়ি পেতে নেয়। তারপর গোয়ালঘর থেকে পাট আর চালে গুঁজে রাখা দড়ি পাকানোর উৎকোনটা হাতে নিয়ে পা ছড়িয়ে দড়ি পাকাতে বসে। বাচ্চাগুলো হৈ চৈ করতে করতে উঠোনে পাটি পেতে বই নিয়ে বসে। কিন্তু পড়ার থেকে পরিবেশ মারামারির দিকেই বেশি এগোচ্ছে দেখে কান্তেশ্বর এবার হুঙ্কার ছাড়ল,
      "হু হু, কী! পড়া হছে না কী হছে! পিটিত যায়া পড়িলে মোর এই উৎকোনটাক দোষ না দ্যান কিন্তুক ছাওয়ারঘর।"
এক হুঙ্কারে সুর পাল্টে জোরে জোরে ইতিহাস, ভূগোলে উঠোন মুখরিত হয়ে উঠল। সন্তুষ্ট হয়ে কান্তেশ্বর আস্তে আস্তে গুনগুন করতে করতে দড়ি পাকানোয় মন দিল।
         "বাড়িত আছিত দি?"
রসবালার গলা শুনে বসমতী উত্তর দেয়,
       "আছোংকে না তে। কোটে আর যাইম। তুই ফির এলানি কেনে তে!"
রসবালা বলে, 
           "মুই একেলায় না হং। আইসেকখেনে, বিরাখেনে কোনেক। কায় কায় আছি বিরিয়া কনেক দেখেক।'
বসমতী বের হয়ে দেখে রসবালার সঙ্গে মিনতির মা, সুকারুর বউ, অনিলের বউ আরো অনেকে। দেখে যুগপৎ অবাকও হয় খুশিও হয়ে ওঠে।
         "হ, তোমরা আরো এলাসিনি কেনে সোগায় তো!"
অনিলের বউ বলে,
         "আসিলি দোরকারোত। তে আগোত কেটলিটা আখাত না বসিলে কাথাটা হবে না।"
পাশ থেকে আর একজন হাসতে হাসতে বলে,
         "হামার কাথার দাম আছে মাইও, কেটলিখান কেমন নাচে দেখিমো তার পাছে কাথা।"
অন্য একটি বয়স্ক মোটা গলা ধমকে ওঠে, 
        "ছেই বারে। নাই বসিতে তোমরা এখেরে চাহার ত্যানে মরেছেন তো! আগোত বোইসো, কী কবার আইচ্চেন কও। তার পাছে গারস্ত খোয়ালে খাবেন!"
কান্তেশ্বর বাঁশের তৈরি বসার লম্বা চৌকিটা এগিয়ে দিয়ে বলে,
    "ন্যাও, আগোত খাটখানোত বোইসো। তার পাছে কী খবেন কও।" 
কেউ কেউ বাচ্চাগুলোর পাশেই বসে পড়ে। 
         "কী বই পড়েছেন বাউ? কুন কেলাশে পড়েন?"
তারপর উত্তরের অপেক্ষা না করেই বলতে থাকে,
          "পড় বারে পড়। তোমাল্লা না পড়িবেন তে কায় পড়িবে? হামার প্যাটোত নাই ভাত, হামার বই পড়া দোলাবাড়িত।"
বাচ্চাদুটো উত্তরে কিছু বলার সুযোগ না পেয়ে কেমন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে মুখ কাঁচুমাচু করে বসে থাকে।
আসলে সবাই দলবেঁধে এসেছে 'ট্যারেয়া' করার জন্য। একজন দুজন কথা বলতে বলতে দলটা ভারীই হয়েছে। তাছাড়া প্রায় প্রতিবছরই ট্যারেয়া করা হয়। কিন্তু কেউ উদ্যোগ না নিলে তো চলে না। তাই এখানেই একটা মিটিং করবে বলে পাড়ার মহিলারা দল বেঁধে হানা দিয়েছে। মোটা গলার বিষাদুর ঠাকুমা বলে,
       "মিটিন টিটিন আরো কী বাউ! আসিলি তোমারে বাড়িত, বৌমাও মনে করিস হাউসালি আছে। তোমারে খোলানোত হোউক আন্দা-বাড়াটা। ওসারে পোসারে আছে, এটে সুবিধা। তে ন্যাও সোগায় কী খাবেন, সাদা ভাত ডাইল ঘোন্টো না খেসেড়ি করিবেন?"
কেউ খিচুড়ি কেউ সাদা ভাতে ভাগ হয়ে গেল দলটা। তবে আগেরবার মানে গতবছর যেহেতু খিচুড়ি হয়েছে সেহেতু এবার সাদা ভাতই জয়লাভ করল। একজন বলে,
      "সুদায় সুদায় ভাত খাবার থাকি খেসেড়িয়ে না ভাল আছিল।"
        "সুদায় না খাবেন তে খাবেন এলায় নানানখান! ঠাকুরের নায় ট্যারেয়া।"
বর্ষিয়সী মহিলার ধমক খেয়ে একজন সরল মনে প্রশ্ন করে,
         "ট্যারেয়া তে কেনে করে তো?"
বিষাদুর ঠাকুমা বলে,
     "ট্যারেয়া হইল আখাল সেবা। শ্রীকৃষ্ণ যে আখাল আছিল। কৃষ্ণ, বলরাম, সুদাম সোগায় আখালি কইচ্চে। তে একদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আর সোউগ আখালগিলা মিলি ওত্তি গোরু চড়াইতে চড়াইতে জঙ্গলেতে বনভোজন কইচ্চে। ওইটায় হইল আখাল সেবা। কাহো কয় ট্যারেয়া, ত্যারেয়া। তে ওইদিন ঠাকুরের নায় খায় দেখি নিরামিষে খাবার নাগে। তে কাহো কাহো হাঁসের ডিমাও আন্দে। কেনে? হাঁসের ডিমা তে হামরা বিষহরি ঠাকুরোক দেই! হাঁসের ডিমা মনে করেক ওটে নিরামিষে ধরির নাগে। মাও খায় যেহেতুক।"
কথা হল চালটা সবাই যে যার বাড়ি থেকেই মাথাপিছু হিসেব করে দেবে আর ডালটা, সব্জিটা কেনা হবে। তাতে সবাই কিছু করে টাকা দেবে। একজন ক্যাশিয়ার হল, বাজার কে কে যাবে তাও ঠিক করা হল। দুই একটা পরিবার আছে যাদের বনভোজনের চাঁদা, চাল কিছুই দেবার সামর্থ্য নেই, তাদেরটাও ধরা হল। বিষাদুর ঠাকুমা বলে,
     "ন্যাও, উমার থাকিলে না উমরা আপনে দিল হয়, তে সোগায় এটে আলন্দ করিমু, ওই কয়টা মানষিক কী আর বাদ থোওয়া যায়! দশের মইদ্যোত আপনে হবে সোগারে। ঠাকুরের নায় কুনোদিন কম পড়ে না।"
কথাটা হয়। সবাই মাথা নাড়ে। তারপর চা, পান-গুয়া খেয়ে  হৈ হৈ করতে করতে বের হয়ে যায়।
পরদিন সকালে স্নান-টান সেরে বসমতী কান্তেশ্বরকে তাড়া লাগায়।
       "ন্যাও, ওই মতোন থ্যাম থ্যাম করি বসি না নন তো! কলার না ঢোনা কাটি আনো এখান। ট্যারেয়া ফেলের নাগে। আজি গরু বাছুর মানষি সোগারে জার পালাবে। ছাওয়ালা এলায় চুপ করি গাও ধুয়া ফেলাবে ট্যারেয়া না ফেলাইতে।"
কান্তেশ্বর কলাগাছ থেকে একটা ঢোনা কেটে ওটাকে সুন্দর করে কেটে টেটে রেডি করে দেয়। বসমতী মাচা থেকে একটা লাউয়ের জালি নিয়ে আসে। বাঁশেল সরু কাঠি গেঁথে দিয়ে লাউয়ের জালিটার তিনটা ঠ্যাঙ বানিয়ে একটা পশুর আকৃতি দেয়। পাশে একটু গোবর রাখে। এবার গাঁদা ফুল আর মাদারের ফুল বাঁশের সরু কাঠিতে গেঁথে গেঁথে সুন্দর করে সাজিয়ে কলার ঢোনাটার এ প্রান্তে একটা এবং ও প্রান্তে একটা মাথা গুঁজে শৈল্পিক নিপুণতায় ঢোনাটা সাজিয়ে রাখে। ওটা দেখেই বাচ্চারা ট্যারেয়া ফেলার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠে। সব রেডি করে একটা দস্তার জগে জল নিয়ে বসমতী বাচ্চাদুটোকে ডাকে। মেয়ের হাতে ঢোনাটা আর ছেলের হাতে ধূপ দেশলাই দিয়ে নিজে জগ আর ফুল জলের ঘটিটা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটা তিনমাথার রাস্তা আছে সেখানে আসে। আরো অনেকেই ট্যারেয়া ফেলতে এসেছে। বসমতী দেখে বলে,
      "এত্তি এই একটায় তেপথি। সোগায় এটেখেনায় আইচ্চে।"
তারপর তিনমাথা রাস্তাটার মাঝখানে ঢোনাটা রেখে পুজো দেয়, ধূপ ধরায়, প্রণাম করে। নিজের প্রণাম শেষ হলে বাচ্চাদুটোকে একসঙ্গে প্রণাম করতে বলে। ওরা নিচু হয়ে প্রণাম করতেই বসমতী হাসতে হাসতে একসঙ্গে দুজনের গায়ে মাথায় জগের জলটা ঢেলে দেয়। ওরা ওরা চিৎকার করতে করতে আবার হাসতে হাসতেও একসঙ্গে বাড়ির দিকে দৌড়ায়। বসমতী খালি জগটা আর ঘটিটা হাতে নিয়ে আসতে আসতে ওদের উদ্দেশ্যে চেঁচায়,
     "পাছ পাকে ঘুরি না দেখেন। তালে কিন্তুক জার আরো ধরিবে। আগোত যায়া গোয়ালি ঘর ঢুকেন, গরুর জার পালাবে। তার পাছোত চুয়া যান। বাল্টিঙোত জল তুলি থুসুং। ওটে গাত দেওয়া ত্যাল আছে। কনেক মাখেন। মুই আইসোছোং।"
বসমতীর এত কথা শোনার অপেক্ষায় ওরা নেই। প্রতিবছর একই নিয়ম। ওরা জানে। সেজন্য দুজন একসঙ্গে ছুটে গিয়ে গোয়াল ঘরে ঢুকেই বেরিয়ে এসে ঝুপ ঝুপ গায়ে জল ঢালে। বসমতী তাড়াতাড়ি এসে দুজনকে ভালো করে স্নান করিয়ে গায়ে তেল মাখিয়ে রোদে বসিয়ে রাখে। রান্না করেই রেখেছিল। এ বেলাটা কোনোরকমে সেড়ে সন্ধের অনুষ্ঠানের দিকে বসমতীর মন পড়ে থাকে।
বিকেল হতে না হতেই প্রস্তুতি শুরু হয়। কয়েকজন বেলাবেলি হাটে চলে যায়। দুজন পুরুষ বসমতীদের খোলানের একপাশে গর্ত করে বড় বড় চৌকো খুঁড়ে উনুন তৈরি করে। ইট পেতে দেয়। বিকেলেই সব্জি কাটা হয়ে যায়। মহিলারা সবাই পরিপাটি করে তেল মাখানো মাথা চিড়ুনি করে সিঁথি কেটে জ্বল জ্বল করে সিঁদুর দিয়ে কাজ করতে জমায়েত হয়। পুরনো শাড়ি কাপড় দিয়ে রান্নার জায়গাটা ঘিরে দেওয়া হয়। একদিকে পলিথিন, চটের বস্তা পেতে বাচ্চা-বুড়োরা বসে পড়ে। ওখানেই কিসসা, অস কষ সিঙারা বুলবুলি খেলা, হুঁকোর গুড়ুক শব্দ, সবরকম হৈচৈ মিলে মিশে একাকার। 
উনুন পরিস্কার করে লেপে প্রথমে পান সুপারিতে সিঁদুর লাগিয়ে উনুনের পাশে কলাপাতার উপর রাখল রাঁধুনী বিষাদুর ঠাকুমা। তারপর আর একটা কলাপাতায় চাল-ডাল কাঁচা সব্জি দিয়ে ছোট্ট একটা সিধে বানিয়ে রেখে ধূপ ধরিয়ে ফুলজলসহ পুজো দিয়ে তবেই উনুনে আগুন দিল। হরিধ্বনি শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে জায়গাটা ভরে উঠল মূহুর্তে। রান্না করবে সবাই মিলেই। কিন্তু শুরুটা বিষাদুর ঠাকুমা করে দিল। এই ব্যপারে ওনার খুব নিষ্ঠা।
গল্প, গান আর বাচ্চাগুলোর হৈ হুল্লোড়ের মধ্যেই একসময় রসবালা হাঁক দিল,
      "উটো ছাওয়ার ঘর। চটিলা ভাল করি বিছাং। পৌটি দিমু এলা।"
একদিকে কলার পাতা কেটে রাখা। বাচ্চা আর বয়স্ক মানুষদের আগে বসিয়ে দেওয়া হল। এরমধ্যে খোল আর করতালও এনে রাখা হয়েছে। পাড়ারই একটা কীর্তনের দল আছে। ভাত, ডাল সব্জি পাতে দেবার পর খোল-করতাল, উলুধ্বনিসহ হরিধ্বনি দিয়ে তবে খাওয়া শুরু করা নিয়ম। তবে বাচ্চারা কি আর এত কথা মানে। ওরা আপনমনে খাওয়া শুরুই করে দিয়েছে। তারপর হরিধ্বনি শুনে কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।
সব শেষ হতে হতে রাত গভীর হয়ে যায়। আগামীকাল বাসিভাত খেয়ে বাসন-কোসন সব মাজা হবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্ত বেঁচে যাওয়া খাবার বসমতীর রান্নাঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে একে একে সব বিদায় নেয়। বাচ্চাগুলো তখন অনেকেই ঘুমিয়ে কাদা।
................................................................
উৎকোন - দড়ি পাকানোর জন্য বাঁশ দিয়ে তৈরি জিনিস
ট্যারেয়া - ফাল্গুনের তেরো তারিখে পালিত বনভোজন অনুষ্ঠান।
আখাল সেবা - রাখাল সেবা
নায় - নামে।
জার - শীত
পৌটি - সারি। খেতে বসানোর সারি অর্থে
................................................................

                                            ছবি: শুক্লা রায়

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri