সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

28-November,2022 - Monday ✍️ By- বিমল দেবনাথ 434

শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

শালসিঁড়ি-৩৫
বিমল দেবনাথ
*************

বনের উঠোনে হাতির পায়ের ছাপের সাথে পড়েছে নানা শ্বাপদের দ্বিপদের পায়ের  ছাপ। সমস্ত শ্বাপদের পায়ের ছাপ বিকাশের চেনা। বনে শ্বাপদের গণ বিচার করে পায়ের ছাপ মনে রাখা হয়। যেমন বন বিড়াল মেছো বিড়াল চিতাবাঘ ইত্যাদি। আবার শ্বাপদ  তাছাড়াও আছে বুনোশুকর ও নানা হরিণের গাউরের ইত্যাদির পায়ের ছাপ। বুনোদের পায়ের ছাপ যত  বেশি দেখে বিকাশের মন তত ভালো হয়ে যায়। কিন্তু দ্বিপদের পায়ের ছাপে বিকাশের মনে সন্দেহ বাড়ায়।  কয়েকটা দ্বিপদের পায়ের ছাপের ধরণ এবং গতিবিধি কেন যেন বুলবুল নাইনের বিটবাবুর পাওয়া প্লাস্টিকের থলির কথাটাকে সমর্থন করে। বিকাশের মনে টান টান উত্তেজনা। বলে- 
- নিলয় কন্ট্রোলকে কল কর।
- পেট্রোলিং পার্টি কলিং কনট্রোল   পেট্রো্লিং পার্টি কলিং কনট্রোল …  
- রেসপন্ডিং পেট্রোলিং পার্টি।  
- বলে দাও যেন সবাই খুব সতর্ক থাকে। আর আমার গাড়িটিকে যেন সেন্ট্রাল টাওয়ারে এনে রাখে। আর টি যেন সবাই খোলা রাখে। সবাই পেট্রোলিং শেষ করে জামতলা টাওয়ারে আসবে। সেখান পরের ডিউটি কী হবে সেটা হবে।    
নিলয় নির্দেশাবলী রিলে করতে থাকে। বিকাশ বন উঠনের থেকে যে দণ্ডীগুলো বনের ভিতরে চলে গেছে সেগুলোকে ভালো করে দেখতে থাকে। বন উঠোন থেকে পাঁচটা দণ্ডী পাঁচ দিকে চলে গেছে। তার মধ্যে দুইটি দণ্ডী খুব লক্ষণীয় - একটি বন বস্তির দিকে চলে গেছে, হাতি দুটি বন থেকে যেটা দিয়ে বস্তিতে গিয়েছিল বা যেটা দিয়ে বিকাশরা এসেছে বনের ভিতরে এই ফাঁকা জায়গায়। অন্যটি  চলে গেছে সেন্ট্রাল টাওয়ারের দিকে। মনে হচ্ছে সেন্ট্রাল টাওয়ারের দিক থেকে সেই হাতিদুটি লড়াই করতে করতে এই ফাঁকা জায়গাটাতে এসে পড়ে। বীরেরা যে ফাঁকা জায়গাতে অস্ত্র চালাতে ভালোবাসে। লক্ষ্য ঠিক রাখা যায়।  বনের যে অংশটি স্ক্যানিং করার কথা সেটার আয়তন প্রায় ৬০০ হেক্টর বা ৬০ বর্গ কিমি।       
স্ক্যানিং কথাটি মনে আসতেই বিকাশ মনে মনে হেসে ওঠে। এত বড় বনে গাড়ি চলার মতো শুধু চারটি রাস্তা আছে। এছাড়া আছে পায়ে চলার দণ্ডী ও ঝোপে বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো প্লান্টেশনের কাইচি লাইন। কোন পায়ে হাঁটার দণ্ডী বা কাইচি লাইন দিয়ে হাঁটলে সামনে পিছনে কুড়ি পঁচিশ ফুট দেখা গেলেও ডানে বায়ে পাঁচ ফুটের বেশি দেখা যায় না। পায়ে হাঁটার দণ্ডী আর কাইচি লাইন ছাড়া সারা বনের ভিতরে আছে বুনো প্রাণীদের চলার অসংখ্য দণ্ডী। বুনোদের চলাচলের অনেকগুলো দণ্ডী বনের  স্টাফদের পক্ষে  ব্যবহার করা সম্ভব হয়না- দুর্গমতার জন্য। বন স্ক্যানিং হবে শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে। সাথে আছে দুটো কুনকি হাতি। বিকাশের জানা নেই হাতি দুটি কুনকি নাকি কুনকি বানানোর জন্য পোষ মানানো হাতি।   
বনে চলার পথে মাইল ফলকগুলো হলো বুনো প্রাণীর গাছের গায়ে গা ঘষার দাগ, গাছের বাকল নখ দিয়ে চিরে দেওয়ার দাগ, বিশেষ ভাবে গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে থাকার চিহ্ন, তৃণভোজী বুনোপ্রাণীদের মুখ থেকে পড়ে যাওয়া খাদ্য এবং মাঝে মধ্যে কিছু গাছের বিকৃত আকার। হাঁটার গতি বনের ফাঁকফোকর দিয়ে দ্যাখার আয়তন ও সময়ের পরিমাণের উপর স্ক্যানিং-এর মান নির্ভর করে। বনে পায়ে হাঁটা থেকে হাতির পিঠে বসলে বন দ্যাখার পরিধি অল্প বেড়ে যায় হাতির  উচ্চতার জন্য। একই সময়ে হাতির পিঠে বসে বেশি এলাকা দেখা গেলেও পায়ে হেঁটে সারাদিনে বেশি এলাকা দেখা  যায়, বনের পরিস্থিতি এবং বনের স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো বোঝা যায়। আবার মানুষ যত সময় পায়ে হেঁটে ডিউটি করতে পারে, হাতি পিঠে গদি নিয়ে তত সময় ডিউটি করতে পারেনা। হাতির শরীর গরম হয়ে যায়, রেগে যায়। হাতির পিঠে বসে আহত মৃত বুনো প্রাণীদের খুঁজতে বা বুনো প্রাণীদের শরীর স্বাস্থ্য খুঁটে দেখতে বেশ সুবিধা হয়। দুই হাতির লড়াইয়ে জয়ী হাতিটির শারীরিক অবস্থা কেমন আছে সেটা সুনিশ্চিত করা এবং তার সাথে টাস্কর হান্টারের সন্দেহজনক গতিবিধি চিহ্নিত করা আজকের স্ক্যানিঙের উদ্দেশ্য।       
বন উঠোনে পাঁচটি দণ্ডী ছাড়া আর কোন চিহ্ন দেখা যায়না। এই অবস্থায় শুধুমাত্র দুটো হাতি কোন দিকে চালনা করলে ভালকিছু হতে পারে সহসা সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন। এই বিষয়ে স্থানীয় স্টাফের সাথে কথা বলে নিলে ভালো হয়। বিকাশ ডাকে- 
- সীতারাম।  
সীতারামের কোন উত্তর না পেয়ে খোঁজ করতে বোঝা যায় আর একটি হাতি বন উঠানে বা আশেপাশে নেই। মাহুত সরু গলায় কুউউ করে শব্দ করার পর প্রতিউত্তর ভেসে আসে কুউউ… কিছু ক্ষণের মধ্যে হাতিটি বন থেকে বেরিয়ে আসে। বিকাশ জিজ্ঞাসা করে-
- সীতারাম তোমরা কেন পিছিয়ে পড়লে। 
- স্যার হাতিটি হাঁটতেই চাইছে না। খালি ছটফট করছে। বার বার ডানদিকে শুঁড় তুলে গন্ধ নিচ্ছে। আর ডান দিকে বনে ঢুকে যাচ্ছিল। মাহুতের কথাও শুনছে না। লাঠিটা দিয়ে কী জোরে জোরে মাথায় মেরে প্রায় ঠেলে এখান পর্যন্ত নিয়ে আসলো।  
- তোমার হাতিকে এই হাতির সাথে ভিড়াতে বল। 
- কি নাম তোমার?
- রমেশ।
- মাদি হাতি চালাতে এত কেন অসুবিধা হচ্ছে? 
- স্যার, হাতিটি কয়েক দিন ধরে বেশী ছটফট করছে, কথা শুনতে চায়না। 
- সব সময় কি এই রকম করে।  
- না স্যার বছরে তিন চার বার একটু গণ্ডগোল করে। চলেন স্যার, ঠিক হয়ে যাবে।  
- জগবন্ধু এই মাহুত কি নতুন। 
- হ্যাঁ সার। 
- নরমায়া-তো ভালো হাতি, খেয়াল রাখবে।  
- স্যার। 
- ওকে আলাদা দণ্ডী দেওয়া যাবে? 
- রবিলালের সাথে গেলে ভালো হয়। 
- আছা। সীতারাম, তোমরাতো প্রতিদিন বনে পেট্রোলিং করতে আসো, কি মনে হচ্ছে আমাদের কোনদিকে গেলে ভালো হবে। 
- স্যার বাঁদিকে, সেন্ট্রাল টাওয়ারের দিকে গেলে হয়। 
নরমায়া রবিলালের কাছে আসতেই রবিলাল নরমায়ার জননাঙ্গে শুঁড় দিয়ে গন্ধ নেয়। নরমায়া শুঁড় তুলে ডানদিকে কী যেন খোঁজে। বিকাশ বলে –
- জগবন্ধু, ডানদিকের দণ্ডীটা নাও। 
জগবন্ধু কিছুক্ষণ যেন কী ভাবল। তারপর বলে- 
- স্যার ডান দিকে মনে হয় হাতি আছে। 
- তা হলে ঐ দিকে যাওয়া ঠিক হবে। 
- কিন্তু রিক্স হবে স্যার। শুনলাম দাঁতাল হাতিটি মস্তিতে আছে। সামনে মাকনা হাতি পেলে তাড়া করবে। 
- সাথে মাদি হাতি আছে তো। 
- সে জন্য আরো বেশী ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে, মাদিটিকে আলাদা করে নিবার জন্য।  
বিকাশের মাথায় গজ মুক্তা… টাস্কর হান্টার … দাঁতাল… রাতে আলো… প্লাস্টিকের থলি… কথাগুলো মৌমাছির মতো ভন ভন করেতে থাকে। ৬০০ হেক্টরের বনে দুটো হাতি যেন মহাসমুদ্রে ডিঙ্গি নৌকার মতো। ভালো কিছু সীমিত সময়ে করতে হলে কাজ সুনির্দিষ্ট এবং সঠিক হতে হবে। অল্পস্বল্প ঝুঁকি নিতে হবে।  হাতিগুলো নিয়ে যে আড়াই ঘণ্টা থেকে তিন ঘণ্টার বেশী ডিউটি করা যাবেনা। শরীর গরম হলে, এমন ভাবে পিঠ কাঁপায় যে হাতির পিঠে বসে থাকা যায়না। মাকনা হাতিটির নাকি আবার শরীর গরম হলে ক্ষেপে যায়। তখন কথা শোনে না। একবার মাকনাটির শরীর গরম হবার জন্য ক্ষেপে গিয়ে তার নিজের মাহুতকে আছাড় দিয়ে মেরে ফেলেছিল। সেই হাতির উপর আজ মাহুত জগবন্ধু যে প্রাণের বন্ধু। বিকাশ বলে -   
- চলো ডানদিকেই যাই। এমনিতেই সময় কম তার উপর এত বড় বন। ঝুঁকি নিতেই হবে। তারপর নিলয়কে বলে কনট্রোল থেকে খবর নিতে, অন ফুট পেট্রোলিং পার্টিদের।  
নিলয় কল করে। শোনা যায় কনট্রোল উত্তর দেয়- পূর্ব নির্ধারিত জায়গা থেকে দুটো টিম পশ্চিমের নদীর থেকে জামতলা টাওয়ারের দিকে রওনা দিয়েছে। আর একটা টিম পুবদিকের জোড়া কালভার্ট থেকে এবং চার নম্বর টিম উত্তর- পূর্ব দিকের হরিণঝোড়ার দোমুখা থেকে জামতলার দিকে রওনা দিয়েছে। 
- জগবন্ধু নরমায়াকে সামনে রাখ। তাহলে এদিক সেদিক করতে পারবে না, পিছিয়ে পড়তে পারবেনা।  
সামনে নরমায়াতে মাহুত রমেশ সীতারাম আর গবিন, পিছনে রবিলালে জগবন্ধু বিকাশ আর নিলয়। বনের উঠোন ছেড়ে ঢুকে যায় বনে। অন্যদিকে আরো দশ জনের চারটি দলে পায়ে হেঁটে ঢুকে গেছে বনে ভিতরে। রাস্তা বাদ দিয়ে উত্তর  বঙ্গের বনে পায়ে হেঁটে বা হাতির পিঠে বসে বন টহল করাকে, আক্ষরিক অর্থের স্ক্যানিং-এর সাথে এক করে নিলে খুব ভুল হয়ে যাবে। স্ক্যানিং শব্দটি বনের বাইরের জগতের জন্য প্রযোজ্য। বনটহলের গুরুত্ব এবং আন্তরিকতাকে উচ্চতর মানে নিয়ে যাবার প্রচেষ্টাকে বোঝাতে বনে স্ক্যানিং শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কারণ বনের বাইরের মতো বনের ভিতরে  প্রতিটি ইঞ্চি প্রতিটি ফুট নজরে আনা যায়না। অনেক কিছুই না দেখে, পরোক্ষ চিহ্ন বিচার বিশ্লেষণ করে অনুমান করতে হয়। বনে বুনো প্রাণী কখন কী চিহ্ন কেন ফেলে যায় এর কোন লিখিত সিলেবাস বা পাঠ্য বই পাওয়া যায়না। এটা বনে কাজ করে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। আর সবার অভিজ্ঞতা সমান হয়না স্বাভাবিক কারণে। যদি সেটা সম্ভব হতো তাহলে ক্লাসে সবাই প্রথম হতো। বনের বাইরে কোন বিষয়ে স্ক্যানিং করে যত সঠিক ফল পাওয়া যায় বনে ততটা সঠিক ফলের আশা করা ঠিক নয়। বনে স্ক্যানিং-এ এই হিউম্যান এরর বেশী হবার ফলে ঘটে যায় কত দুর্ঘটনা। শালসিঁড়ির সৈনিককে কত কথা সইতে হয় ঘরে বাইরে। বিকাশ এই হিউম্যান এরর কম করার আপ্রাণ চেষ্টা করে।  হাতির পিঠে বসে নজর রাখে চারদিকে। তার জন্য জগবন্ধুকে মাঝে মধ্যে বলতে হচ্ছে ধাত… মাইল… বাঁয়ে চাপ... ডাইনে চাপ… হেই হাতি পিছু… 
- জগবন্ধু ঐ ডানদিকের গাছের ডালটা দেখ।
- হ্যাঁ স্যার। মাটি লেগে আছে। হাতি পিঠ ঘষেছে। সকালের হবে হয়তো।  
- কী করে বুঝলে সকালের হবে?  
জগবন্ধু হাতিটিকে ডানদিকে সাত আট ফুট বনের ভিতর নিয়ে গিয়ে শাল গাছটির তলায় দাঁড় করায়। গাছটির একটি ডাল মুল কান্ড থেকে প্রায় মাটির সমান্তরালে চলে গেছে অনেকটা দূর। ডালের নিচের দিকে কাঁচা মাটি লেপটে আছে। কাঁচা মাটির স্তরের নিচে যে আরো মাটির স্তর আছে তা বোঝা যাচ্ছে ধারের শুকনো মাটির স্তর দেখে। জগবন্ধু জিজ্ঞাসা করে- 
- স্যার বুঝতে পারলেন। 
পিছন থেকে কোন উত্তর না পেয়ে মাহুত পিছনে দেখে। বিকাশ গাছের ডালে লেগে থাকা মাটি দেখতে দেখতে সম্মতি সূচক মাথা নাড়ে। নরমায়া ডানদিকে বনে না ঢুকে দণ্ডীর উপর দাঁড়িয়ে থাকে সামনের দিকে তাকিয়ে। জগবন্ধু রবিলালকে আবার দণ্ডীতে ফিরিয়ে আনে। আবার দণ্ডী ধরে চলতে থাকে ওরা। বিকাশ জিজ্ঞাসা করে-
- হাতিটি কতক্ষণ আগে গেছে বলে মনে হয়? 
- এখনো মাটি পুরা ভিজা আছে। মনে হয় আধ ঘণ্টা হবে হয়তো… 
- এই হাতিটি কি দাঁতাল হবে। 
- স্যার সেটা সঠিক বলা যাবে না। হলে হতে পারে।  
- তাহলে একটু তাড়াতাড়ি হাতি হাঁটাও, যদি দেখা পাওয়া যায়। হাতিটির আঘাত কতটা বিপদজনক যদি বোঝা যায়। নিলয় বাইনোকুলারটি দাও তো। 
হাতিটি মাত্র আধা ঘণ্টা আগে এই দণ্ডী দিয়ে গেছে ভেবে বিকাশ মনে মনে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। সেই উত্তেজনায় জল ঢেলে দিয়ে জগবন্ধু বলে- 
- স্যার হাতিটি এই দণ্ডী ধরে যায়নি।  
- মানে, এই দণ্ডী ধরে তা হলে কোনো হাতি গেছে।   
- অন্য কোন হাতি হবে হয়তো। 
- তাহলে এখন বনে অনেক হাতি আছে মনে হয়। 
- তাই মনে হচ্ছে স্যার। 
- আচ্ছা, মাটির দাগের উচ্চতা দেখে সেই হাতিটির উচ্চতা কত হবে মনে হয় জগবন্ধু?
- মনে হয় আট- সাড়ে আট ফুট হবে স্যার।   
- নিলয় যে হাতিটি মারা গেল তার সামনের পায়ের গোলাই কত ছিলো। 
- স্যার চার ফুট পাঁচ ইঞ্চি।  
- তার মানে সামনের পায়ের গোলাইয়ের দুই গুন, প্রায় আট ফুট দশ ইঞ্চি। জগবন্ধু হাতি ঘোরাও, সেই হাতিকে ফলো করো।    
বনে পুরনো দণ্ডী বাদ দিয়ে বনের ভিতরে হাতি নিয়ে চলা খুব কষ্টকর। মাহুতেরা সচরাচর পুরনো দণ্ডী ধরে বনে টহল মারে। সাধারণত বুনোরা বনে ওদের ভালো রাস্তায় হাঁটে। বনে বুনো হাতিদেরও পরিচিত পথ থাকে। সেই সকল পথের কিছু পথ বেশী ব্যবহৃত হয় আর কিছু পথ কম ব্যবহৃত হয়। বুনো হাতিরা সাধারণত ওদের দণ্ডী ছাড়া হাঁটেনা। গাছের ডালে পিঠ ঘষা হাতিটি যে বনে দণ্ডী ছাড়া হাঁটছে!  
বসন্ত শেষে গ্রীষ্মের প্রাক বর্ষায় বন চিকন সবুজে মাতাল হয়ে আছে। শাল গাছের সাথে চিলৌনি চাপ টুন লাপচে গামার লালি লসুনি থালি ইত্যাদি নানা গাছের নতুন পাতায় বন ঘন হয়ে উঠেছে। মাটি থেকে হাতির মাথা পর্যন্ত আশেপাশে দশ ফুট দুরের কিছু দেখা যাচ্ছেনা। তারউপর গাছ থেকে গাছ পর্যন্ত লতিয়ে আছে পেঁচিয়ে আছে ঝুলে আছে আরারেকাঁটা চরচরে ময়না নাগবায়েলোর ইত্যাদির মতো নানা লতা। দণ্ডী ছাড়া পথে নরমায়া হাঁটতে চাইছেনা রবিলালের আগে। সে  এখন রবিলালের পিছনে পিছনে হাঁটছে। মাঝে মাঝে গোঁত খেয়ে পিছনে সরে গিয়ে দণ্ডী ধরে ডান দিকে চলে যেতে চায় বার বার। রমেশ কোমরে গোঁজা ভোজালি বের করে একটা লাপচে গাছের সরু ডাল কেটে লাঠি বানিয়ে গবিনের হাতে দেয়। তাড়াতাড়ি হাঁটার জন্য গবিন হাতিটিকে পিছনে মারে আর রমেশ সামনে মারে। লাঠিতে কাজ হয়ে গেলে  মাহুতরা লোহার অঙ্কুশ ব্যবহার করেনা। অঙ্কুশ ঝুলে থাকে গদির পাটের রশার সাথে। রশা হলো রশির বড়দা, অনেক মোটা। ঘন বনে জগবন্ধু কষ্ট করে হাওয়া দণ্ডী খেয়াল রাখে। মাঝে মধ্যে গাছের ডাল লতা এমন ভাবে সামনে এসে পড়ে যে হাতি আগাতে পারেনা। জগবন্ধু জুল্টিতে পা রেখে কোমর সোজা করে ভোজালি দিয়ে ডাল কাটে লতা কাটে। চলার রাস্তা  বানায়। রাস্তা বানাতে গিয়ে রাস্তা হারিয়ে যার।  হাওয়া দণ্ডী হারিয়ে যায় বার বার। আবার চার দিক খুঁজে দণ্ডী ধরতে হয় জগবন্ধুকে। 
- হাতিটা যেন হাওয়ার মতো হাঁটছে ।- জগবন্ধু বলে।
- ও তো হাওয়ার মতোই হাঁটবে। ওর পিঠে গদি নেই মানুষ নেই, ফ্রি হেঁটে যাচ্ছে।  
- সেটা ঠিক। তবে হাতিটি আমাদের গন্ধ পাইছে। তা নাহলে কোথাও একটু দাঁড়াবে কিছু খাবে। না শুধু হেঁটেই যাচ্ছে। 
- তুমি আরো একটু হাতিটিকে জোরে হাঁটাও। 
হাতের লাঠি দিয়ে সামনে আসা মাকড়সার জাল লতা সরু ডাল সরিয়ে দুই পা দিয়ে হাতির কানে টপ গিয়ারে চেপেচেপে হাতিকে যথা সম্ভব তাড়াতাড়ি হাঁটানোর চেষ্টা করে জগবন্ধু। হঠাৎ সামনে আসা একটা আরারিকাঁটা লতাকে মাহুত লাঠি দিয়ে আড়াল করে তাড়াতাড়ি পার হতে গেলে সেই লতা মাহুতের লাঠি থেকে পিছলে গিয়ে বিকাশের  ঘাড়ের ডানদিকে লাগে। ঘাড়ের আনেকটা জায়গা লম্বা হয়ে চিরে যায়। রক্ত ঝরে পড়ে। মাহুত কী যেন বলল হাতিকে। হাতি দাঁড়িয়ে যায়। শুঁড় দিয়ে কিছু লতা তুলে দেয় মাহুতের হাতে। মাহুত তার আগা আর পাতা হাতে ডলে লাগিয়ে দেয় কাটা জায়গাটাতে। নিলয় পিছন থেকে বিকাশের পকেট থেকে রুমাল বের করে গলায় চেপে বেঁধে দেয়। গন্ধ থেকে বোঝা যায় মাহুত আসাম লতার আগা ও পাতা ডলে লাগিয়ে দিয়েছে।  
- হাতিটিকে কী বললে যে এত ঝোপ ঝাড়ের মধ্যে থেকে তোমাকে শুধু আসাম লতা তুলে দিলো। 
- এই লতার গন্ধের কমান্ড শিখানো আছে স্যার।  
- কী ভাবে?
প্রশ্ন শুনে মনে হলো জগবন্ধু বুক টানটান করে বসে। গর্বে যেন ওর বুক ভরে উঠেছে। সন্তুষ্ট স্বরে বলে- 
- অভয়ারণ্যে আমাদের শুধু পুরনো দণ্ডী ধরে টহল দিলে হয় না। ওখানে অনেক বেশি বুনো প্রাণী আছে। ওদের দেখতে আমাদের হামেশাই দণ্ডীর বাইরে গিয়ে বন দেখতে হয়। একদিন ময়না কাঁটা আমার বাঁ পাটাকে পাশ দিয়ে চিরে দিয়েছিলো। রক্ত বন্ধ করার জন্য হাতির পিঠ থেকে নেমে আসাম লতা তুলে হাতিটিকে গন্ধ চিনিয়ে কমান্ড বুঝিয়ে দিই। তারপর সেই কমান্ড বনে বার বার ব্যবহার করতে করতে হাতিটির মুখস্থ হয়ে গেছে। এই রকম আরো কত কমান্ড আছে!  
- বাঃ। বেশ ইন্টারেস্টিং তো। একদিন সময় করে সব কম্যান্ডের কথা শুনব। এখন কম্যান্ড দাও দেখি আমাদের সামনের হাতিটি কত দূরে আছে অনুমান করতে পারে কিনা!  
মাহুত হাতির কানের পাশে পা দিয়ে কী যেন করে। ডান হাতের লাঠি বাঁ হাতে নিয়ে ডান হাত দিয়ে মাথার উপর হাত দিয়ে থাপ্পড় দেয় কয়েকটা। হাতিটি শুঁড় উপর দিকে তুলে কি যেন খোঁজে- এদিক ওদিক। তারপর মট মট করে একটা গাছের ডাল ভেঙে ফেলে দেয়।   
- স্যার, আগের হাতিটি পালাচ্ছে। পাত্তা পাওয়া মুশকিল আছে। - মাহুত বলে

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri