সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

21-November,2022 - Monday ✍️ By- শুক্লা রায় 494

পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

পইলা সাঞ্ঝির কথা
পর্ব - ২৯
শুক্লা রায়
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷

মুখ আন্ধারি

খোঁপা করতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে যায় সুকারুর বউ। মোটা গোছের চুল অথচ লম্বায় খুব বেশি নয়। সেজন্য বারবার খুলে পড়ছে। তা দেখে মালতীর মা বলে, 
         "গোড় খিঁচাখান দিয়া টানি কষ্যি বান্দেক, তেই না খুলিবে।"
সুকারুর বউ এবার বিরক্ত গলায় বলে,
        "বান্দেছোং কে না, তাও খুলি পড়েছে। ছেই মাই চুলগিলা অংকরি বোছোরে কাটি না দিস তো আর।'
মালতী কিছু বলে না। কেঁদে কেঁদে এমনিই চোখ লাল। ওর মা উত্তর দেয়,
    "আর কাটা না যাবে। এইবারে শ্যাষ। মুইয়ে কাটির কসুং। উকুনি তে মাথাটাত যে। এই যে নদীখানোত গাও ধুবে! কইলে শুনে না। ও পাড়িয়া বেচ্ছুয়াগিলার মাথাৎ ভত্তি উকুনি। ওইলায় নদীত ভাসি আইসে। হামার মাইর মাথাটাৎ এখেরে উকুনিতে বোঝাই হইসে।"
সুকারুর বউ বলে,
        "মোক দিস তো মাতাটা, দেখি দিম। দুই দিন উল্টা কাঁকন দিলে উকুনি কোটে যায়!"
মালতীর মা রেগে বলে,
      "দেকির দ্যায় কি তে, দেক্কিরে না দে। মাতাটায় নাড়ির পাবুনা কোনেক।"
বাইরে থেকে মালতীর বাবা ডাক দেয়,
      "কোটে গেইলেন। অ্যায় যে পানগিলা ন্যাও, ধুয়া থও।"
সুকারুর বউ কালো ফিতে দিয়ে শক্ত করে গোড়াটা বেঁধে খোঁপা করে যত্নে চারদিকে কাঁটা গুঁজে দেয়। কাঁটাগুলো ওর বিয়ের, বাড়ি থেকে এনেছে। তারপর কুচি করে আস্তে আস্তে সময় নিয়ে শাড়িটা পড়ায়। আঁচল বিছানায় ফেলে আগেই প্লেট করে নিয়ে সেফটিপিন গিয়ে আটকে নিয়েছে। এখন শাড়িটা পড়িয়ে আঁচলটা ব্লাউজের সাথে আটকে দিয়ে মালতীকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে আগে নিজে। তারপর বলে,
       "মুকখানোত এলায় পরে ছেনো মাখি দিম। মানষিলা আগোত আসুক। কাজলের ডিবিয়া আছে?"
মালতী মুখে কিছু বলে না, ঘাড় নাড়ে। সুকারুর বউ শাসন করে বলে,
    "কাজল প্যান্দে দিবার পাছোত কিন্তুক আর কান্দিবু না মাই, তালে এলায় মুকখানো বয়া দেখা যাবে।"
তারপর হেসে বলে,
   "মেলা খাটুনি গেল মোর। বিয়াও হইলে নয়া পাত্রট্টে একটা খিলিপান চায়া খাইম। কয়া দিলুং কিন্তুক।"
মালতী রসিকতার কোনো জবাব দেয় না, ঘাড় গোঁজ করে একভাবে বসে থাকে।
সুকারুর বউ আর দাঁড়ায় না, মালতীকে সাজিয়ে রেখে পান-সুপারি রেডি করে, দস্তার বালতি ভরে জল আনে। একটা মাটির কলসি রাখা, সেটাতেও জল এনে দস্তার বাটি দিয়ে মুখটা ঢেকে রাখে। আয়োজন প্রায় শেষ। এখন লোকগুলো এলেই হল। মালতীর বাপ লুঙ্গির উপর একমাত্র পাঞ্জাবিটা গায়ে চাপায়। ওর মা ও একটা পরিষ্কার কাপড় পরে চুল আঁচড়ে সিঁদুর পরে। প্রসাধন বলতে আসলে তো এটুকুই।
          কান্তেশ্বর রেডি হয়ে বাড়িতেই অপেক্ষা করে আছে। লোকগুলো এলে তো সামনে দিয়েই যাবে তখনি যাওয়া যাবে। শীতের দুপুর। একটু গড়িয়ে নিতে পারলে ভালো হত। কান্তেশ্বর মনে মনে ভাবে। কেমন আলসেমিতে পায়। ঘন ঘন হাই তুলতে তুলতে বিরক্ত হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। লাফা, পালং, ধনে, বাবরিতে ভরা ক্ষেতের একপাশে লকলকে লাউ মাচা। মনে মনে বসমতীর প্রশংসা না করে পারে না। তাকিয়ে থেকেও শান্তি।
       "কি বাহে, না যান তোমরা! আইসো। হামারে সতে।"
পেছনে তাকিয়ে দেখে চারখানা সাইকেলে চারটে লোক। একজনকে দেখেই চিনে ফেলে, ফাকাই ঘটক। পান খাওয়া মুখটা হাসিতে চকচক করছে। কান্তেশ্বরের মালতীর কথাই মনে পড়ে, একদিন বলেছিল, 'ওইটা মানষি পান খায়, খয়রা পড়া দাঁতলা দেখিরে মনটা না যায়।' সেই ফাকাই এখন ওর বিয়েরও ঘটক হবে। বাকি লোকগুলোও ওকে দেখে সৌজন্যের হাসি হাসে।
        "আগাও। মুই না এডি। তোমারে বাচ্চে আছোং। তোমরা যাও মুই হাঁটি যাং।"
একজনের মাথায় ঘাড় পযর্ন্ত যত্নে বড় করা বাবরি চুল বেশ পরিপাটি করে আঁচড়ানো, হাতে ঘড়ি, বলে ওঠে,
   "তে আর কদ্দুর, হামরাও না হয় হাঁটিই যাই!" 
কথা বলে মাথাটা ঝাঁকালে বাবরি চুল হাওয়ায় একটু লটর পটর করে। সবাই সাইকেল থেকে নেমে পড়ে। একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কথা এগোয়।
        "তোমরা ছাওয়াটার কি হন তে?"
ঢোলা পায়জামার উপর ফুল সার্ট, তার উপর চাদর জড়ানো। প্রশ্নটা তার কাছ থেকেই এল। লোকটি উত্তরের অপেক্ষা না করেই আত্মপরিচয় দিতে তৎপর হয়,
        "মুই হনু চেংরার বাপ বাহে, ইনায় হইল পিসা,"
বলে আঙুল দিয়ে বাবরি চুলকে দেখায়। তারপর আর একজনকে যে কিনা প্রথম থেকেই মুখটা নিরাসক্ত করে রেখেছে তাকে দেখিয়ে বলে- "এইটা চেংরার মামা।"
কান্তেশ্বর আগ্রহ নিয়ে তাকায়। তারপর টেনে টেনে বলে,
    "মুই এই টারি-বাড়ির মানষি। ছাওয়াটা মোক কাকা করি ডেকায়।"
ছেলের বাপ এবার আগ্রহ নিয়ে বলে 
     "তে কেমন বারে। তোমরা কেমন দেখেন মাইটাক।"
কান্তেশ্বর জোর দিয়ে বলে,
   "ছাওয়া হামার খিবে ভাল বারে। কাজে-কম্মে কাহো হেরের না পাবে। হিদি মাই-মান্ত্রি চলন, বড়-ছোট জ্ঞান টনটনা। তে বয়সটা এখেনা কম।"
বলতে বলতেই মালতীদের বাড়ি পৌঁছে যায় সবাই। উঠোনে বাঁশের খাট পাতা, তার উপর বিছানার চাদর পাতা। একপাশে একটা বেঞ্চি। সবই চেয়ে-চিন্তে জোগাড় করা। মালতীর বাবা অপেক্ষাতেই ছিল। দেখতেই সাদরে সবাইকে বসায়। স্টিলের পানের বাটা এগিয়ে দেয় সবার দিকে একে একে। গল্প জমে ওঠে। হেঁউতি থেকে 'অশেষা কিষ্যি' হয়ে আজকালকার ছেলে-মেয়েদের আচার-আচরণ সমকালীন সবই আলথচনাঋ উঠে আসে। কথায় কথায় বেরিয়ে পড়ল ছেলের পিসে কুষাণ যাত্রায় বাঁশি বাজায়। নাম-গানেরও একটা দল আছে ওদের। দুটো করে মেরি বিস্কুটসহ চা পরিবেশন হলে ঘটক একটু গলা খাঁকারি দেয়। বলে,
      "তে আন্দার হছে বারে। ছাওয়াটাক আনির কং?"
সমস্বরে সবাই সম্মতি প্রদান করলে তুলসি তলায় একটা বিছানার চাদর পেতে দিথে বলে ঘটক। সুকারুর বউ ভয়ে জড়সড়, কম্পিত কলেবর মালতীকে ধরে ধরে সামনে নিয়ে আসে। মালতীর হাতে একটা থালায় ধান-দুব্বা আর প্রদীপ। অবশ্য শুধু পানের বাটা হাতে নিয়েও বের হতে পারত। ওর মা একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকে মেয়েকে। বুকটা মোচড় দিচ্ছে কিনা বোঝা গেল না। সবাইকে প্রণাম করা হয়ে গেলে কান্তেশ্বরই আগ বাড়িয়ে বলে,
     "বইস মাই বইস ওদি ঠাকুমারীত যায়া।"
সুকারুর বউ ধরে ধরে বসায়। মালতী এতটাই নার্ভাস হয়ে পড়েছে যে নিজে কিছু করার ক্ষমতাটাও নেই যেন আর ওর। এবার ফাকাই ঘটক বলে,
   "ন্যাও, কি পুছিবেন পুছো।"
ছেলের বাবা বলে,
   "কি আরো পুছিমু বারে। এইলায় না কাথা। পুছিবারে আর কি আছে হোটে। উয়ার মামা যুদি কুনো পুছে তে পুছুক।"
ফাকাই বলে,
     "পুছো কেনে। ছাওয়াটা হামার আও কারির পায় না না পায়, কানোত শুনে না না শুনে। হাঁটিলেক তো দেখিলেন। এলা আওটাও শুনো। তার পাছে না কাথা হবে।"
ছেলের মামা আর পিসে মিলে আস্তে আস্তে প্রশ্ন করে, নাম কি, কয় ভাই-বইনি। আন্দির পায় না পায়। ছেলের পিসে রসিক মানুষ। জিজ্ঞেস করে,
       "আলুর ডাইলোত কি তেলানি দিবার নাগে বারে?  জানেন মাও?"
প্রশ্ন শুনে মালতী একটু থমকায় তারপর অস্ফুটে বলে,
        "চোন্দোনি। অসুনের পাত।"
সঙ্গে সঙ্গে হৈহৈ করে ওঠে।
   "এই তো আন্দা-বাড়া শিকসেন বারে।"
মালতীর মা বলে,
   "বাচ্চা থাকি আন্দে বারে। মাই হামার তামোনে আন্দির পায়।"
ফাকাই এবার তাড়া দেয়।
     "ছাওয়াটা আর কত্থন বসি নয় তে। এলা যাউক! কি কন বারে?"
সবাই হা হা করে ওঠে।
   "যাউক যাউক। হইসে না দেখা বারে। কি আর এত দেখে!"
ছেলের পিসে মালতীর দিকে তাকিয়ে বলে,
   "তে মাবো। যাও এলা।"
সুকারুর বউর নির্দেশে আর সাহায্যে মালতী উঠে আবার সবাইকে প্রণাম করে। ছেলের বাবা পাঞ্জাবির পকেট থেকে দুটো দশটাকার নোট বের করে প্রদীপের থালাটায় রাখে। মালতী থালাটা উঠিয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে ঘরে ঢোকে। ওকে ঘরে ঢুকিয়ে রেখে সুকারুর বউ তৎপর হয়। দস্তার গ্লাসে জল ঢালে। থালায় করে নিয়ে দিয়ে আসে। পাত্রপক্ষ প্রথামাফিক একটু আমতা আমতা করে বলে, 
   "আরো জল কেনে। না খাই আর কোনো বাহে। যাই এলা, না করি দেরি। তাতে দ্যাখো তো মুখ আন্ধারিত পড়ি গেলি। ঘটকটা আরো হামার কানা। আতি হইলে এলায় সাইকোলে টাইকোলে পড়িবে যেটে সেটে।" 
মালতীর বাবা অস্থির হয়ে বলে,
   "বইসো বইসো। বউমা আনো বারে পছ করি।" 
সুকারুর বউ প্লেটে সুজি বাড়তে থাকে হাতা দিয়ে। মালতীর মা হাতে হাতে সাহায্য করতে করতে ফিসফেস করে বলে,
   "আলগোতে নিগান। এইলা মাটিয়া পেলেট। নগতে ভাঙে।"
সুকারুর বউ বলে,
   "কার না আইনসেন মা?"
    "কার বাড়িত আর পাবো এইলা জিনিস! ওয় কান্তেশ্বরের ঘরের। সাকালে জোড়ালুং এইলা নানানখান জিনিস। কালি আরো মাঞ্জি-ঘষি দিয়া আসিম।"
সুজির পর আর এক প্রস্থ পান-গুয়া মুখে ফেলে লোক চারজন সাইকেলে ওঠে। ওরা এগিয়ে গেলেও ফাকাই একটু দাঁড়ায়। কান্তেশ্বর আর মালতীর বাপকে বলে,
   "দেখি তে। কি হয় এলা। তিনটা দিন শুভাশুভ চিন্তা করিবে বলে।"
মালতীর বাপ ব্যস্ত হয়ে বলে,
   "হুটা না হয়। তে কি খবর দেয় কনেক কয়া পেটান। ভাল-মন্দ।"
তারপর একটু থেমে বলে,
   "এমনি দেনা-পাওনার কাথা কোনো কইসে? মোর আবস্তা তো জানিসে। যদ্দুর শক্তি তদ্দুর ভক্তি।"
ফাকাই বলে,
   "হুটা হবে পরে আল্লাপ। ছাওয়া আগোত পছন্দ করুক, তার পাছে।"
মালতীর বাবা মাথা নাড়ে,
   "হুটা না হয়, হুটা না হয়।"
ফাকাই প্যাডেলে চাপ দিয়ে ধিরে ধিরে বেরিয়ে যায়। বাকি তিনজন একটু দূরে তার অপেক্ষায়। কান্তেশ্বরও বাড়ির পথ ধরলে মালতীর বাপ অন্ধকারটার দিকে তাকিয়ে একা একাই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর বাড়ি ঢুকে বলে,
   "বেঞ্চিখান দিয়া আইসোং আইতোতে। উমার মানষি-দুনষি আসিলে নাগিবে।" তারপর সুকারুর বউকে বলে,
  "বৌমা, এঠে চাইট্টা ভাত আন্দো তোমার শাশুড়ির সতে। সুকারুক আর ছাওয়ালাক মুই ডেকে আনোছোং।"
সুকারুর বউ নিচু এবং নরম গলায় বলে,
   "ছোট বাবা তো আসিল না বা, মালতীর কাকা। কন নাই!"
মালতীর বাবা একটু থমকায়। মালতীর মায়ের সামনে উত্তর দিতে হয়ত একটু ইতস্তত করে। তারপর বলে,
   "কসুং না বারে। সাকালে যায়া দোনটা মানষিকে কয়া আচ্চুং। কেনে যে আসিল না!"
মালতীর মা মুখ ঝামটা দিয়ে ওঠে,
       "আসিবে, কায় আসিবে? হামার কায় আছে? হামার আহা বাহা কাহোয় নাই, হামরা হলি ওচারির বাইগোন।"
সুকারুর বউয়ের সামনে মালতীর বাপ দৃষ্টতই বিব্রত বোধ করে, একটা ধমক দিয়ে বলে,
       "ন্যাও, তরকারি পাতি কাটো। ভোক নাগাইসে। বৌমা নয়া মানষি তামাল্লায় ছাড়ি না দ্যান।"
এরকম সময় মালতীর কাকা বাইরে থেকেই ডাকে,
     "এ দা, কোটে মানষিগিলা আইচ্চে? গেইসে?"
একসঙ্গে সব প্রশ্ন করে সঙ্গে সঙ্গেই উত্তরের অপেক্ষা না করে কিছুটা কৈফিয়ত দেবার ঢঙে বলে,
      "মোই অ্যায় গেলুং কনেক সরেন ওঝার বাড়ি। বাবা কি একটা কইনা দিয়া বিয়াও দিল হোন হোন পোন পোন পালায়ে না! আজি আরো মাতা ঘুরি পড়ি গেইসে আগিনাত। তে জলটল ছেকি কনেক সুস্থ করি কাকিক আনি থুয়া গেলুং। নয়া কোনো আরো দোষ-দুষি হইসে নাকি। কয়া আসিলুং। আসি দেকি কনেক ঝাড়ি-টারি দিবে।"
মালতীর বাবার মনের কষ্ট নেমে গিয়ে এতক্ষণে একটু হাসি ফুটল। হৈ হৈ করে বলল,
   "বৌমা কনেক চা জ্বালাও বারে, তারপাছে ভাত চড়ান এলায়।"
..............................................................
বোছোরে কাটা - মুড়িয়ে কাটা
কাজলের ডিবিয়া - কাজলের কৌটো
খিলি পান - মিষ্টি পান
মুখ আন্ধারি - সন্ধ্যার গায়ে গায়ে সময়কে বোঝায়।
যেটে সেটে - যেখানে-সেখানে
যদ্দুর শক্তি তদ্দুর ভক্তি - সার্মথ্য বুঝে চলা
আহা বাহা কাহোয় নাই, ওচারির বাইগোন - আগে পিছে কেউ নাই

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri