সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
28.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৮

28.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৮

27.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৭

27.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৭

26.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৬

26.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৬

25.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৫

25.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৫

24.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৪

24.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৪

23.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৩

23.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৩

22.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২২

22.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২২

21.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২১

21.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২১

20.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২০

20.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২০

19.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৯

19.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৯

18.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৮

18.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৮

17.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৭

17.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৭

16.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৬

16.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৬

15.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৫

15.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৫

14.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৪

14.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৪

13.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৩

13.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৩

12.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১২

12.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১২

11.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১১

11.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১১

10.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১০

10.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১০

9.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৯

9.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৯

8.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৮

8.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৮

7.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৭

7.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৭

6.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৬

6.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৬

5.স্মৃতি দিয়ে ঘের্রিত-৫/রণজিৎ কুমার মিত্র

5.স্মৃতি দিয়ে ঘের্রিত-৫/রণজিৎ কুমার মিত্র

4.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৪

4.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৪

3.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা৩/রণজিৎ কুমার মিত্র

3.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা৩/রণজিৎ কুমার মিত্র

2.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা২/রণজিৎ কুমার মিত্র

2.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা২/রণজিৎ কুমার মিত্র

1.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১/রণজিৎ কুমার মিত্র

1.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১/রণজিৎ কুমার মিত্র

16-December,2022 - Friday ✍️ By- রণজিৎ কুমার মিত্র 589

স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৬

স্মৃতি দিয়ে ঘেরা/পর্ব : ২৬
রণজিৎ কুমার মিত্র  
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^

"যা-কিছু পেয়েছি, যাহা-কিছু গেল চুকে,
চলিতে চলিতে পিছে  যা রহিল পড়ে ,
যে মণি দুলিল যে ব্যথা বিঁধিল  বুকে,
ছায়া হয়ে যাহা মিলায় দিগন্তরে ,
জীবনের ধন কিছুই যাবে না ফেলা -
ধুলায় তাদের যত হোক অবহেলা"
                    (গীতালি, ১৩২১)
 
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় চার দশক অতিবাহিত করেছি। এই দীর্ঘ সময়ে কত কি যে দেখেছি জেনেছি শুনেছি। একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে বা বিভাগের ছাত্র পর্ব থেকে গ্রন্থাগারের জীবিকা পর্বে আসা, এসবের বাইরেও ছিল একটা বিরাট প্রসারিত জগত, সেখান থেকে মাঝে মাঝে কত কি যে কুড়িয়ে পেয়েছি, হয়তো কখনো নিজের সামর্থের সীমানার বাইরেও ঢুকে পড়েছি।  তবে আনন্দ হয়েছে অনুপ্রবেশকারী বলে কেউ ফিরিয়ে দেয় নি, মনে হয়েছে নিজের ক্ষুদ্রতা,  তুচ্ছতা নয়, বিশ্বাস রেখেছি -'পূর্ণের পদপরশ তাদের পরে'।
       
বিশ্ববিদ্যালয় যে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান এতে দ্বিমতের কোনো অবকাশ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পরিকল্পনার সাথে আরো অনেক বিষয় থাকে, সংশ্লিষ্ট সমাজের শিক্ষাসহ অন্যান্য অনেক বিষয়ই উন্নয়নে সাহায্য করে, ভাবনার আদান-প্রদান করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্প্রসারণের মূল ধারার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেশ কয়েকটি বিষয়ের চর্চা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যেমন দর্শন বিভাগের বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ, আম্বেদকর স্টাডিস, এছাড়াও ওমেন স্টাডিস ও অন্যান্য চর্চাকেন্দ্রগুলি। এই ধারায় আরেকটি কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল 'সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচার' এই  সেন্টারটির সাথে আমার কিছু দিনের যোগাযোগ ঘটেছিল। এই কেন্দ্রের সদস্য ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে এই সেন্টারটির সাথে যুক্ত করে কিছু কাজ করবার সুযোগ দিয়েছিলেন, আমি কৃতজ্ঞ এই কেন্দ্রটির প্রতি। 
          
উত্তরবঙ্গ জুড়ে তখন ভাষা বিরোধ চলছে। ভাষা ও উপভাষা নিয়ে নানাবিধ তর্ক বিতর্ক চলছে, যার অভিঘাত বিশ্ববিদ্যালয়েও  পড়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তখন অধ্যাপক ডকটর পীযূষ কান্তি সাহা। রাজবংশী ভাষা, কামতাপুরী ভাষা বিতর্ক, ও এক ধরণের আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদের উত্থানে  এতদিনের সংহতি-সম্প্রীতিতে সংকট দেখা দিচ্ছিল।  সেই সময়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়  'সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচারস' গড়ে তুলবার কথা ভাবেন।  তিনি নিজে এসে এই সেন্টারটির ভবনের শিলান্যাস করেছিলেন । প্রথমে সেন্টারটি লাইব্রেরি এন্ড ইনফরমেশন সাইন্সএর ভবনে,  পরে কলা বিভাগের ভবনে স্থানান্তরিত হয়। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও রংপুর সাহিত্য পরিষদ পত্রিকায় উত্তরবঙ্গের ভাষা সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ নজরে আসে।  এই বিষয়ে আরো অনুসন্ধান চালাতে থাকি। সেই সময় জলপাইগুড়ির কবি ও দ্যোতনা পত্রিকার সম্পাদক গৌতম গুহ রায়ের পত্রিকার জন্য বাংলা উপভাষা নিয়ে একটি তথ্যপঞ্জি সংকলন করেছিলাম। এই  লেখাগুলি নিয়ে পরে গৌতম একটি বই প্রকাশ করেছিলেন 'ভাষা সংবেদন ও নির্মাণ'। সেই সময়কার ভাষা বিতর্কর সময়েই শুধু নয় আজও উত্তরবঙ্গের ভাষা প্রসঙ্গে এই বইটি সমান গুরুত্বপূর্ণ। সুকুমারী ভট্টাচার্য, দেবেশ রায়, অশ্রুকুমার সিকদার, সুখবিলাস বর্মা, গিরিজা শংকর রায়,  নির্মল দাস ,  মৃণাল মিরি,  ধর্ম নারায়ণ বর্মা, উদয়নারায়ন সিংহ-দের মূল্যবান আলোচনার সাথে, আমার সংকলিত তথ্যপঞ্জিটিও স্থান পেয়েছিল। এই 'ভাষা সংবেদন ও নির্মাণ' সম্পাদক গৌতমের  একটি শ্রেষ্ঠ কীর্তি।
    
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচারাল সেন্টারে যুক্ত হয়ে অনেক কিছু শিখেছি।  অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম উত্তরবঙ্গের ভাষা- উপভাষা বিষয়ে একটি প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশ করি। সেই উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ,  রংপুর সাহিত্য পরিষদ পত্রিকার যে কয়েকটি সংখ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ছিল তা থেকে উত্তরবঙ্গের ভাষা বিষয়ক প্রবন্ধগুলির অনুলিপি করে একত্রিত করছিলাম। কলকাতায় গিয়ে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ গ্রন্থাগার থেকে আরো কিছু প্রবন্ধ সংগ্রহ করেছিলাম। সেখানে গিয়েও এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পরিচালন সমিতির মাননীয় সদস্যদের বাকবিতন্ডা-দলাদলি সে সময় প্রায়ই সংবাদপত্রের শিরোনামে থাকত। আজ এই দল লাইব্রেরিতে তালা ঝোলায়,  কাল ঝোলায় আর এক দল । পাঠক-গবেষকরা একেবারে নাজেহাল। দু'তিনবার সেখানে যাবার প্রস্তুতি নিলেও আবার কলকাতার বন্ধুরা আমাকে সাহিত্য পরিষদের অবস্থা  স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যেতে নিষেধ করেছিল। পরে অবস্থা স্বাভাবিক হলে আমি সেখানে গিয়ে কাজ করি। ওই গ্রন্থাগারের পৌঁছে সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক মহাশয়ের কাছে গ্রন্থাগার ব্যবহার করবার অনুমতি চাইলাম তিনি নানারকম জেরা শুরু করলেন, আইডেন্টিটি কার্ড-চিঠিপত্র ইত্যাদি দেখাবার পর তার সব সন্দেহের নিরসন হল, তিনি গ্রন্থাগার  ব্যবহার করবার অনুমতি দিলেন। উত্তরবঙ্গ থেকে  আগত বলে যেভাবে  গ্রহণ করেছিলেন, তা যথেষ্ট অপমানজনক ছিল। ব্যক্তিটি কলকাতার সারস্বত সমাজের বিখ্যাত মানুষ, নাম উল্লেখ করে তাকে আর অসম্মানিত করতে চাই না। তবে সেদিন আমার সব সমস্যার সমাধান করতে এগিয়ে এসেছিলেন সেই সময়কার সাহিত্য পরিষদ গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক ডক্টর অরুণা  চট্টোপাধ্যায়, তিনি জানালেন পরিচালক বর্গের দুই অংশের দলাদলিতে সাহিত্য পরিষদ গ্রন্থাগার ও মিউজিয়ামের করুণ অবস্থার কথা।  এই গন্ডগোলের জেরে তার বেতনও কয়েক মাস বন্ধ ছিল। আলাপ জমাতে বেশি দেরি হল না। যথেষ্ট সহযোগিতা-সুবিধা তিনি করে দিয়েছিলেন। দুদিন কলকাতায় থেকে সব কাজ সারলাম। কথাপ্রসঙ্গে জানলাম গ্রন্থাগারিক ডক্টর অরুণা চট্টোপাধ্যায়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অঙ্কুশ ভট্ট-র সহপাঠী। অরুণাদি নিজেও একজন গুণী মানুষ,  ঊনবিংশ শতাব্দীর রেনেসাঁ ও রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করেছেন, তার বইটিও পন্ডিত মহলে সমাদৃত ।
                      
রংপুর সাহিত্য পরিষদের পত্রিকাগুলির জরাজীর্ণ অবস্থা, জেরক্স করা কিছুতেই সমর্থনযোগ্য নয়, অরুণাদি ব্যবস্থা করে দিলেন,  সাহিত্য পরিষদের অনুমোদিত একজন রাইটার এলেন, তিনি পুরনো পত্রপত্রিকার প্রবন্ধগুলি হাতে লিখে কপি করে দিলেন, যৎসামান্য সাম্মানিক নিয়ে। আমি কাজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এলাম। সেসময় লাইব্রেরিতে কলকাতা ও দিল্লির প্রকাশনা সংস্থার অনেক  প্রতিনিধিরা আসতেন নিয়মিত,  এ রকমই একজন আমার কাজটি সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে প্রকাশ করতে চাইলেন, পান্ডুলিপি দিলাম, কয়েক মাস পরে বুঝলাম প্রতারিত হয়েছি। প্রকাশনা সংস্থার ওই ব্যক্তিটি শুধু আমার কাছ থেকে নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং স্থানীয় কয়েকটি কলেজের অধ্যাপকদেরও প্রতারিত করেছেন। কলকাতায় নাম ঠিকানা ছিল,  তাদের প্রকাশন সংস্থাকে জানানো সত্ত্বেও কোন ব্যবস্থা হল না। আমার অগ্রজপ্রতিম সহকর্মী তপন গুপ্ত আমার অসহায় অবস্থা দেখে কলকাতায় লোকটার বাড়ি পর্যন্ত গেছেন কিছুই হয়নি। তপনদা ও তনয়া  বৌদি অনেক চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু কিছুই হল না।  উত্তরবঙ্গের লেখকদের কলকাতার কিছু অসাধু প্রকাশক এভাবেই  প্রতারিত করে।  উত্তরবঙ্গে এখনো তেমন নির্ভরযোগ্য প্রকাশনা সংস্থা গড়ে উঠল না। 
      
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর গিরীন্দ্র নারায়ণ রায় লাইব্রেরিতে নিয়মিত আসতেন,  তিনি তখন লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচারাল সেন্টারের ডিরক্টর আমার সব কথা শুনে এগিয়ে এলেন। বইটিকে সেন্টার থেকে প্রকাশ করবার জন্য তার প্রস্তাবে উপাচার্য সম্মত হলেন। তবে আমাকে সম্পাদনার সহযোগী হিসেবে নিতে বললেন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ রেজাউল করিমকে । মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক পীযূষ কান্তি সাহার নির্দেশে সেন্টারে সম্পাদক পরিষদ গঠিত ছিল, যার সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ডক্টর বিমলেন্দু দাম। সদস্য ছিলেন অধ্যাপক ডক্টর পুষ্পজিত রায়, দ্বিগবিজয় দে সরকার, অধ্যাপিকা ব্রততী ঘোষ রায় , লোকসংস্কৃতিবিদ  ডক্টর বিমলেন্দু মজুমদার ও আকাশবাণী শিলিগুড়ি কেন্দ্রের অধিকর্তা শ্রীপদ দাস। সকলেই পূর্ব পরিচিত  ও  শিক্ষক প্রতিম। সবাই গ্রন্থটি সম্পাদনায় উৎসাহ দিলেন  কাজ  ভালোভাবে শেষ করবার জন্য। বইটির কাজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসে হয়েছিল।  
সভাপতি  বিমলেন্দু দামের এই বইয়ে অবতরণিকা অংশ  থেকে সামান্য অংশ উদ্ধৃত করছি - "যে উদ্দেশ্য নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন, উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনা, সেই উদ্দেশ্য পূরণের প্রথম প্রয়াস হিসেবে এর মূল্য  অস্বীকৃত   হবে বলে মনে  করি না।...
"গ্রন্থ রূপায়নে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাদের মূল্যবান পরামর্শ ও সক্রিয় সহযোগিতা পেয়েছি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অবশ্য কর্তব্য। প্রথমে এই পরিকল্পনার মূল প্রস্তাবক উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী গ্রন্থাগারিক ডকটর রনজিত কুমার মিত্রকে ধন্যবাদ জানাতে হয় তার প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক পীযূষ কান্তি সাহার স্বীকৃতি লাভ করে। প্রকল্পটিকে বাস্তবায়িত করতে তার কর্মপ্রেরণা আমাদের কাজকে ত্বরান্বিত করেছে। যিনি সমগ্র কাজের  কর্ণধার তথা পরিচালক সেন্টার ফর স্টাডিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচার-এর অধিকর্তা গিরীন্দ্র নাথ রায় কে সাধুবাদ জানাই ।" 
                   
এই কাজে অধ্যাপক নির্মল দাস আমাদের প্রচুর সাহায্য উৎসাহ দিয়েছিলেন। অধ্যাপক নির্মল দাস আমাদের জলপাইগুড়ির মানুষ। একসময় আমাদের পাড়ায় তাদের পৈতৃক বসতবাটি ছিল। নির্মলবাবুর বাবা চাকরি করতেন ভান্ডিগুড়ি চা বাগানে। সসম্ভ্রমে তাকে দূর থেকে দেখেছি। রেজাউল ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ছাত্র,  তিনি আমারও শিক্ষকতুল্য। এই বইটির বিষয়ে তার পরামর্শ আমাদের সবসময় উৎসাহিত করেছে। বইটি ইউনিভার্সিটি প্রেস মুদ্রিত হয়, বইটির প্রচ্ছদ করেছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক  ডক্টর নিখিলেশ রায়।
                    
সেন্টার থেকে মাঝে মাঝে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত, সবই আঞ্চলিক সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। স্থানীয় শিল্পীরা উৎসাহের সঙ্গে তুলে ধরতেন স্থানীয় ভাষা-সংস্কৃতির শৈল্পিক রূপকে। এই সেন্টার থেকে দোতারা-সারিন্দার ওয়ার্কশপ হয়েছে, লোকশিল্পীরা বহুবার এসেছেন অনুষ্ঠান করতে। ২০০৭এর ৭ই মার্চ  রবীন্দ্র-ভানু মঞ্চে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল, যা আমার আজও মনে আছে।অনুষ্ঠানটির অফিশিয়াল শিরোনাম ছিল 'পারফরম্যান্স কাম ওয়ার্কসপ' উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলের স্বনামধন্য শিল্পীরা তাদের নিজেদের সংস্কৃতি-নৃত্য-গীত-বাদ্য-পালাগান তুলে ধরেছিলেন। সেদিন অনুষ্ঠিত হয়েছিল  সত্যপীরের গান, ভাওয়াইয়া,  গম্ভীরা গান, দোতারাপালা, বাউল গান। মুগ্ধ করেছিল নাগরিক দর্শক-শ্রোতাদের। আমার দায়িত্ব পড়েছিল সত্যপীরের গান সম্পর্কে ভূমিকা করে দেওয়া। সত্যপীরের গান গেয়েছিলেন বিখ্যাত গীদাল জিতেন বর্মন। উপস্থিত দর্শকদের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম যদিও তার পরিচয় তার গানে ।

আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই চর্চাকে যথাযথভাবে মর্যাদা দান ও গবেষণার পর্যায়ে উন্নীত করা দরকার। এই আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন অধ্যাপক গিরীন্দ্র  নারায়ণ রায।  তারপর অনেক ডিরেক্টর এসেছেন- গেছেন কিন্তু যে আদর্শ আর লক্ষ্য নিয়ে এই সেন্টারটি স্থাপিত হয়েছিল, তা বোধহয় অধরাই থেকে গেল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই আঞ্চলিক ভাষা সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রটি কোনভাবেই অবহেলা বা অবজ্ঞার বস্তু নয়।আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, এখানে  কাজ করবার সুযোগ পেয়ে। এখান থেকে যা কিছু সঞ্চয় করেছি আমার কাছে তা খুব মূল্যবান। এ পর্বের শুরু যে মহজন বাণী দিয়ে শুরু করেছিলাম তা দিয়েই শেষ করি - "জীবনের ধন কিছুই যাবে না ফেলা /ধুলায় তাদের যত হোক অবহেলা।"

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri