দাঁড়াবার জায়গা/ছাব্বিশ
সমর দেব
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^
বড়দের
দিকে আমরা কেউ কেউ ঈর্ষাকাতর চোখে তাকিয়ে থাকতাম। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই
বড়দের ‘আপার হ্যান্ড’ আমাদের কাউকে কাউকে বোধহয় পীড়া দিত। তুলনায়, আজকের
ছোটরা আমাদের চেয়ে বোধহয় ভাগ্যবান। তারা পরিবারে এবং সমাজেও স্ৰেফ বয়সে
ছোট বলেই অবহেলিত, অবজ্ঞাত, তুচ্ছ থাকে না। এখনকার ছোটরা বরং অনেক বেশি
গুরুত্ব পায় সমাজে, সংসারে। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে বাড়ির বাচ্চারা আগের
তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্ব পায়। তাদের আশা আকাঙ্ক্ষাকে যেমন অনেক বেশি
গুরুত্ব দেওয়া হয়, তেমনই তাদের যে-কোনও সাফল্যকেই অভিভাবকরা পৰ্যাপ্ত মূল্য
দেয়, কখনও হয়ত একটু বেশিই। আমাদের কোনও সাফল্যকেই, কোনও কৃতিত্বকেই
ধৰ্তব্যের মধ্যে আনা হতো না। আমাদের সময়ের অনেকেরই দেখেছি ছোট থাকতে আর
ভালো লাগছে না। ফলে, কোনও ভাবে নিজেকে বড় বলে প্ৰতিপন্ন করার প্ৰবল একটা
চেষ্টা ছিল প্ৰকট। দুই প্ৰজন্মের পরিবেশ, পরিস্থিতি এবং অভিভাবক ও ছোটদের
মধ্যে ব্যবহারের এই তারতম্যের ভালো-মন্দ নিয়ে বলছি না, কিন্তু দুই
প্ৰজন্মের মধ্যে ব্যবধানের বিষয়টা খালি চোখেই প্ৰকট।
আমার
নিজের ক্ষেত্রে, পরিবারের অভ্যন্তরে এবং পাড়ায়, প্রতিটি বিষয়ে বড়দের
নাক গলানো মোটেই পছন্দের ছিল না। পাড়ায় দেখেছি, যাঁর অক্ষর পরিচয়ও হয়ে
ওঠেনি, তিনিও সব বিষয়ে জ্ঞান বিতরণ করতেন স্রেফ বয়সে বড় এই অধিকারে!
অপ্ৰয়োজনে ধমক ধামক করতেন বড়রা। একদিন, আমাদের বাড়ির কয়েকটা বাড়ি পরেই
যে পুলটা আছে, সেখানে পাড়ারই একজনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তেমন কিছুই নয়,
ক্লাসের নানা অভিজ্ঞতার পারস্পরিক বিনিময় মাত্র। সে মহারাজা
নৃপেন্দ্রনারায়ণ স্কুলের ছাত্র, সেও ক্লাস এইট। কথায় কথায় আমরা খুব
হাসছিলাম।
একজন প্রবীণ
মানুষ এগিয়ে আসছেন দেখে আমরা হাসি সংবরণ করে তাঁর দিকে তাকালাম।
অ্যালুমিনিয়মের বাসনপত্র বড় বড় দুটো ঝুড়িতে নিয়ে কাঁধের বাঁকে চাপিয়ে
তিনি ফিরি করতেন। আমাদের বাড়ি থেকে তাঁর বাড়ি বোধহয় দেড় কিলোমিটার
দূরেই। আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়েই তাঁর নিয়মিত যাতায়াত। আমরা তাঁকে
কাকু সম্বোধন করতাম। তিনি কাছাকাছি এলে আমাদের দিকে হাসি মুখে তাকালেন।
তারপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘তরা কুন কেলাসে পড়স ? ’
আমরা
দুজনেই জানালাম যে, আমরা ক্লাস এইটে। তিনি বললেন, ‘কী যে পড়স তরা!’ তাঁর
চোখে স্পষ্ট অবিশ্বাস। আমরা তাঁর দিকে তখনও তাকিয়ে। তিনি বললেন, ‘বানাম কর
তো ‘কাজিম চকিদার’। আমরা তাঁকে সংশোধন করে দিয়ে বললাম ‘কাছিম’, ‘চৌকিদার’?
তিনি চুপ করে থাকলেন কিছুক্ষণ। তারপর বললেন, ‘পারস নাই তো’! তারপর হাত-পা
নেড়ে বিচিত্র ভঙ্গিতে বললেন, ‘কাউয়ায় ডাগলো কা, মাজে ধরল জিম – অইল কাজিম।
আর, গরে আছে চকি নৌকায় আছে দাঁড় – অইল কাজিম চকিদার’!
আমরা
দুজনে পরস্পরের মুখে তাকিয়ে আছি। তিনি এরপর বললেন, ‘ভালা কইরা পড়। কিছুই
তো শিখস নাই’! আমরা তখন স্তব্ধ হয়ে পুলের ওপরে বসে আছি। কেমন একটা
ভ্যাবাচাকা অবস্থা। তিনি যেমন এসেছিলেন তেমনই ধীরে ধীরে আরও এগিয়ে গেলেন।
আমরা তাঁর চলে যাবার পথের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
এরকম
কত অভিজ্ঞতা যে আছে! মনে আছে, প্রাইমারি স্কুলে মাকড়সাকে প্রধান শিক্ষক
বলপ্রয়োগে আমাদের শেখাচ্ছিলেন ‘মাকড়োশা’ উচ্চারণ করতে! ফলে, আমাদের
শিক্ষার একেবারে হদ্দমুদ্দ দশা!
আর
ছোট থাকতে চাইছিলাম না। ইস, কবে যে বড় হব! কী করে যে বড় হওয়া যায়, সে
সম্পর্কে আমাদের কারও বোধহয় কোনও ধারণা ছিল না। তবে, স্কুলের পড়া শেষ হলেই
যে খানিকটা বড় হওয়া যাবে এব্যাপারে একটা আশার আলো দেখা যাচ্ছিল। ফলে,
আমরা অনেকেই দ্রুত স্কুলের বাঁধন কাটাতে চাইছিলাম। আমাদের আর তর সইছিল না।
তারপর
আমরা ক্লাস নাইনে! ক্লাসের কেউ কেউ অনেকটা লম্বা হয়ে গেছে। আমাদের কারও
কারও অবশ্য তেমন বাড় নেই! তাহলে আমরা কবে বড় হব? ক্লাসের বন্ধুরা দুয়েকজন
পরামর্শ দেয়, রিং-এ ঝুললে লম্বা হওয়া যায়। আমাদের মধ্যে তখন সবচেয়ে লম্বা
ছিল ছোটকা (ধ্রুব)। আর, বেঁটেদের তালিকায় আমরা মাত্র কয়েকজন। ছোটকার পাশে
দাঁড়ালে কেমন অস্বস্তি হয়। মনে আছে, এনসিসি প্যারেডের সময় স্যর নির্দেশ
দিতেন – লম্বা ডাইনে, ছোটা বাঁয়ে...। আমরা দুয়েকজন সবসময়ই বাঁয়েই থাকতাম!
তবে, শেষ পর্যন্ত জীবনের বৃহত্তর ক্ষেত্ৰে এই নিয়ম না মেনে আমরা কেউ বামে,
কেউ ডাইনে অবস্থান নিয়েছি! সে অন্য কথা।
কিন্তু
এইট থেকে নাইনে উত্তরণ ঘটার পর আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বেশ লায়েক হয়ে উঠেছে।
হাঁটাচলায় বিশেষ ভঙ্গি, চুলের যত্ন, কথাবার্তায় বোলচাল শুরু হয়েছে
অনেকের।
নতুন একজন
শিক্ষক এলেন। তাঁর নাম ধরা যাক ‘ক’ (তাঁর নাম উল্লেখ করছি না সঙ্গত
কারণেই)। পাতলা ছিপছিপে চেহারা, ফর্সা, মাথায় ঝাঁকড়া চুলের বাবড়ি। চমৎকার
পুরুষালি গোঁফ। বয়স তখন তাঁর তিরিশ ছোঁয়নি। খুব সুন্দর তাঁর পোশাক আশাক।
সাদা প্যান্ট তাঁর খুব পছন্দ ছিল। তখনও সাইকেল তার কৌলীণ্য হারায়নি। ফলে,
অনেক শিক্ষক যেমন সাইকেল নিয়ে স্কুলে আসতেন, তিনিও। সেই সময়ে কম বয়সী, একটু
মস্তান টাইপের পুরুষরাই মূলত বাইক চালাতেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা
কেউ কেউ স্কুটার পছন্দ করতেন। তবে, আমাদের শহরের অধিকাংশ মানুষ পায়ে হেঁটে
বা সাইকেল নিয়েই চলাফেরা করতেন। তাতে কারও সম্মানহানি হতো না, হয়নি।
তখন
কিছুদিন হলো আমরা একটু আগে আগেই স্কুলে পৌঁছনোর অভ্যাস করে ফেলেছি। কোনও
মহৎ উদ্দেশ্যে নয় অবশ্যই। আমাদের উদ্দেশ্য ক্লাস শুরুর আগে স্কুলেরই খেলার
মাঠে বা ক্লাসে বসে একপ্রস্ত গুলতানি মারা। একদিন প্রদীপ এবং গৌতম এসে খবর
দিলো, ‘ক’বাবু প্রতিদিনই ক্লাস শুরুর আগে শহরের নামী মেয়ে-স্কুলের সামনে
দাঁড়িয়ে থাকেন! কেন তিনি অন্য একটা স্কুলের গেটে নিয়মিত দাঁড়িয়ে থাকেন
সেকথা সে বলে চোখের ইশারায়। আমরা কেউ কেউ প্রদীপের বার্তাটা শুনে চুপ করে
থাকলেও, কয়েকজন আমোদে গড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ প্রদীপ, গৌতমের বার্তার সত্যতা
নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে। তাতে ক্ষুব্ধ প্রদীপ বলে, ‘বিশ্বাস না হলে, চল আমার
সঙ্গে’। গৌতম বলে, ‘স্যর দেখলে কিন্তু পিঠের ছাল তুলবে’। প্রদীপ বলে,
‘ছাড়,...(লেখার অযোগ্য)’। মেয়ে-স্কুলের সামনে স্যরের দাঁড়িয়ে থাকার
তথ্যটা যাচাইয়ের জন্য আমাদের দীর্ঘ আলোচনায় স্থির হলো, পরদিন আমরাও সেখানে
সময়ে পৌঁছে যাব। এবং সিদ্ধান্ত মতো আমরা বেশ কয়েকজন যথারীতি স্কুল শুরুর
অনেকটা আগে সেই স্কুলের গেটের দিকে তাকিয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকলাম!
তারপর অধীর প্রতীক্ষা। সময় আর কাটতেই চায় না। আমরা অধৈর্য হয়ে যখন ফিরে
আসার কথা ভাবছি, তখনই একটু দূরে ‘ক’বাবুকে দেখা গেল! তিনি গেটের কাছে এগিয়ে
গেলে শাড়ি পরা একটি মেয়ে স্কুলে ঢোকার মুখে তাঁর দিকে একবার তাকিয়ে চলে
গেল। ইতিমধ্যে আমাদের কৌতূহল মিটে গেছে। এমন বুঁদ হয়ে দেখছিলাম যে, আমাদের
দলের প্রায় সকলেই এরই মধ্যে কখন যেন কেটে পড়েছে টের পাইনি। প্রদীপও কোথায়
সটকে পড়ল। তখন আমি একা দাঁড়িয়ে! আমার হাত-পা কাঁপছে। কী করব বুঝতে পারছি
না। স্যর সাইকেল নিয়ে আমার পাশ দিয়ে বিদ্যুৎ গতিতে বেরিয়ে গেলেন, আর, একবার
ঘাড় ঘুরিয়ে আমাকে দেখলেন কটমট করে। আতঙ্কে আমার হাত-পা পেটের মধ্যে
সেঁধিয়ে যাবার জোগাড়। অস্পষ্ট এক অপরাধবোধে কুঁকড়ে আছি।
সেদিন
তিন পিরিয়ডে স্যর এলেন ক্লাসে। কিন্তু কী আশ্চর্য, কিছু ঘটেছে বলে মনেই
হলো না! তিনি যথারীতি পড়িয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেন। একটা ব্যাপারই
লক্ষ্য করলাম, যতক্ষণ ক্লাসে ছিলেন, একবারও আমার দিকে তাকালেন না! দীর্ঘকাল
আমিও স্যরের কাছ থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতাম। অবশেষে মুখোমুখি পড়ে গেলাম
একদিন! আমাদের হাফ ইয়ারলি পরীক্ষা চলছে। সেদিন ইতিহাস পরীক্ষা। অন্যদের
কাছ থেকে বই নিয়ে একটা খাতায় কিছু প্ৰশ্নোত্তর লিখেছিলাম। সেটাই নিয়ে গেলাম
স্কুলে। পরীক্ষা শুরুর আগে সকলেই বই খুলে ঝালিয়ে নিচ্ছিল। আমিও খাতাটা
খুলে দেখছিলাম। ক্লাসে এলেন ‘ক’ বাবু। আমরা সকলেই বই-খাতা নিয়ে সামনের
টেবিলে রেখে এলাম। ঘণ্টা বাজলে শুরু হলো পরীক্ষা। প্ৰশ্নপত্ৰে চোখ বুলিয়ে
দেখি সব ‘কমন’। ঘাড় হেঁট করে নিশ্চিন্তে লিখছি। হঠাৎ আমার সামনে ‘ক’ বাবু!
হাত থেকে একটা খাতা আমার সামনেই ছুড়ে ফেললেন। এই খাতাটাই আমার! আমি
বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি। তিনি চিৎকার করে বললেন, ‘চল’! আমি উঠে দাঁড়ালাম।
কিছুই বুঝতে পারছি না। তিনি একহাতে আমার হাত পাকড়ে অন্য হাতে আমার খাতাটা
নিয়ে হনহন করে হাঁটতে শুরু করলেন। একবার ঘাড় ঘুরিয়ে আমাকে দেখে তাঁকে
অনুসরণ করতে বললেন। কী হলো কিছুই বুঝতে পারছি না। তিনি আমাকে নিয়ে সোজা
হেডস্যারের ঘরে ঢুকলেন। আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছি। হেডস্যার আমাকে একবার
দেখলেন, ব্যস। ‘ক’বাবু আমাকে বললেন, ‘যা’।
হেডস্যারের
ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা ক্লাসে গিয়ে ঢুকলাম। আমার পেছনে পেছনে ঢুকলেন
‘ক’বাবু। তিনি আমার দিকে না তাকিয়ে বললেন, ‘তোকে এক্সপেল করা হয়েছে। বেরিয়ে
যা। পরীক্ষা দিতে পারবি না’। আমি বেরিয়ে এলাম ক্লাস থেকে। একেবারে চলে না
গিয়ে ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকলাম ভিখিরির মতো। ইতিমধ্যেই স্কুলে তৎপরতা
শুরু হয়ে গেছে। ইন্দ্ৰা ভাইয়ের হাতে নোটিশ, সেটা নিয়ে তিনি ক্লাসে ঢুকলেন।
‘ক’বাবু নোটিশটা সবাইকে পড়ে শোনালেন। ততক্ষণে বুঝে গেছি পুরো ঘটনাটা। এবং
বুঝে গেছি, মেয়েদের স্কুলের সামনে স্যারের উপস্থিতি সরেজমিনে পরীক্ষা করতে
গিয়ে স্যারের একেবারে সামনে পড়ে যাওয়ার এইপরিণতি!
নিজে
সবটাই চেপে গেলেও বাড়িতে খবরটা চলে গেল স্কুলেরই অন্য ক্লাসের কয়েকজন
ছাত্ৰের মাধ্যমে। দাদা-দিদিরা যে প্ৰবল ভৰ্ৎসনা করে গেল, তার সঙ্গে তুলনীয়
যুদ্ধক্ষেত্ৰের কাৰ্পেট বোম্বিং। বলতে পারছি না, আমি টুকলি করিনি। বরং,
স্যার বদলা নিয়েছেন! মেয়েদের স্কুলের সামনে স্যারের নিয়মিত উপস্থিতির
ঘটনাটা দেখতে গিয়েই এই বিপত্তি, সেকথা বলি কী করে! সন্ধ্যায় বাবা ঘরে ফিরলে
বিপদটা বাস্তবিকই কেটে গেল! বাবার প্ৰশ্নের জবাবে শান্ত স্বরে বললাম, আমি
টুকলি করিনি। ব্যস, বাবা যেন বুঝলেন। তিনি আমাকে বললেন, যা পড়তে বস।
আমি
নিরুদ্বিগ্ন মনে যথারীতি পড়তে বসে গেলাম অন্যদের পাশে। কিন্তু, সপ্তাহ
খানেক ধরে আশপাশের কেউ কেউ আমাকে পরীক্ষায় এক্সপেল করার বিষয়ে বেশ উৎসাহ
দেখাল। স্কুলে একদিন বারীন রাহা স্যার আমাকে সামনে পেয়ে বললেন, ‘ইতিহাস
পরীক্ষা ছিল না সেদিন?’ আমি সম্মতিসূচক মাথা নাড়লে তিনি বললেন, ‘যত্তসব’!
আগের বছরই তিনি ইতিহাস ক্লাসে আমার লেখা খাতা দেখে খুশি হয়ে হেডস্যারের ঘরে
আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেকথা তিনি মনে রেখেছেন বলেই ইতিহাস পরীক্ষায় আমার
বিরুদ্ধে টুকলির অভিযোগে তিনি গুরুত্ব দেননি। সেকথা তিনি নিজেই আমাকে
বলেছিলেন। তবে, কেন আমার বিরুদ্ধে ‘ক’ বাবু ওরকম পদক্ষেপ নিলেন তিনি বুঝতে
পারেননি!
পৃথিবীতে কত
ঘটনাই ঘটে, সবটা কি আর স্পষ্ট হয়! কোন কৈশোরের ঘটনা আজও ভুলতে পারিনি, সেই
অপমান। পরিণত বয়সে বুঝি, কাউকে চূড়ান্ত আঘাত করার সেরা উপায় চরিত্ৰহনন।
তবু, ‘ক’ বাবুর ভয়ানক সেই অপরাধ আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। তিনি দীৰ্ঘজীবী হোন,
সুস্থ শরীরে বেঁচে থাকুন। এই লেখার অবসরে তাঁর উদ্দেশে আমার প্ৰণাম। তাঁর
কাছেও তো শিখেছি জীবনের অনেক মানে।