সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
28.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৮

28.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৮

27.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৭

27.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৭

26.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৬

26.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৬

25.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৫

25.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৫

24.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৪

24.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৪

23.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৩

23.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৩

22.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২২

22.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২২

21.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২১

21.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২১

20.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২০

20.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২০

19.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৯

19.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৯

18.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৮

18.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৮

17.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৭

17.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৭

16.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৬

16.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৬

15.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৫

15.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৫

14.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৪

14.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৪

13.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৩

13.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৩

12.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১২

12.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১২

11.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১১

11.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১১

10.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১০

10.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১০

9.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৯

9.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৯

8.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৮

8.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৮

7.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৭

7.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৭

6.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৬

6.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৬

5.স্মৃতি দিয়ে ঘের্রিত-৫/রণজিৎ কুমার মিত্র

5.স্মৃতি দিয়ে ঘের্রিত-৫/রণজিৎ কুমার মিত্র

4.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৪

4.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৪

3.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা৩/রণজিৎ কুমার মিত্র

3.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা৩/রণজিৎ কুমার মিত্র

2.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা২/রণজিৎ কুমার মিত্র

2.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা২/রণজিৎ কুমার মিত্র

1.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১/রণজিৎ কুমার মিত্র

1.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১/রণজিৎ কুমার মিত্র

15-December,2022 - Thursday ✍️ By- রণজিৎ কুমার মিত্র 532

স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৪

স্মৃতি দিয়ে ঘেরা/পর্ব : ২৪
রণজিৎ কুমার মিত্র
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^

আধুনিকতার প্রধান ভিত শিক্ষা । উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী বর্ষ সূচনা হয়েছে। এই দীর্ঘ ৬০ বছরে উত্তরবঙ্গে যে এই বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিকতার ভিত গড়ে দিয়েছে, এ কথা বলতে বেশ একটু গর্ব অনুভব হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উৎসারিত সংস্কৃতি এই এলাকার শত সহস্র  ছাত্র-ছাত্রীদের উজ্জীবিত করেছে, সকলেরই মনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের উজ্জ্বল স্মৃতি এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ঘিরে। আজও অনেকে  বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুভব করেন তাদের নিজস্ব স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়।  তবে একথা স্বীকার করতেই হবে এসবের কতটুকুই বা আমি  জানি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ বছরের ফিরে দেখার ভাঁজে ভাঁজে রয়ে গেছে কত যে জানা-অজানা  মহতী  আখ্যান,  ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মণিমুক্তা। এই বিশ্ববিদ্যালয় যে  কত মানুষের সত্তার সঙ্গে যে জুড়ে আছে !

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিতে ছাত্র সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমার দেখা ছাত্রসংগঠনের বহু নেতাই পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিযুক্ত হয়েছেন, হয়তো কখনো কখনো সেইসব নিযুক্তির ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন শিথিল করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন সম্পূর্ণ ছাত্র-ছাত্রী নিয়ন্ত্রিত সংগঠন নয়, তারা কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত। এ রাজ্যে যে রাজনৈতিক দলটি যখন শাসকদলের বিরাজ করে, তখন সেই রাজনৈতিক দলটির ছাত্র সংগঠন বেশি প্রাধান্য পায়, সক্রিয় থাকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে এমনটাই দেখেছি। প্রতিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের নোটিশ দেবার সাথে সাথে ক্যাম্পাসে ছাত্রদের মিছিল মিটিং শুরু হয়। দেওয়ালে দেওয়ালে পোস্টার, এদিকে ওদিকে ফেস্টুন ঝোলানো হয় । বেশ মজা লাগত ছাত্র-ছাত্রীদের মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে যখন লাইব্রেরির সামনে দিয়ে যেত, তখন লাইব্রেরি সংক্রান্ত দাবিদাওয়াগুলো বেশ জোরেই চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলে, তারা আমাদের দিকে হাসি হাসি মুখে হাত নাড়াতেন। প্রতিবছরই একটা কমন স্লোগান থাকত 'লাইব্রেরির সুযোগসুবিধা  বৃদ্ধি করতে হবে। বাড়ি নিয়ে যাবার বইয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে, দরকারি টেক্সট বইয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে।'    পরে ছাত্রনেতারা  লাইব্রেড়িতে এসে বলতেন,  লাইব্রেরি সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া রাখতেই হবে ওটাই সবচেয়ে পপুলার আইটেম। ক্রমে গ্রন্থাগারের সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছিল, কিন্তু সেসব সুবিধার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের আগমন লাইব্রেরিতে ঘটত না। ধীরে ধীরে ছাত্র-ছাত্রীদের লাইব্রেরিতে যাতায়াত কমে যেতে দেখেছি, এটা শুরু হয়েছে জেরক্স-এর বাড়বাড়ন্ত হওয়ার ফলে। কেউ আর লাইব্রেরিতে বসে একাধিক বইপত্র নিয়ে নোট করে না, সব কিছু নাকি রেডিমেড পাওয়া যায়! এখন তো শুনি ক্লাস না করলেও চলে।। শিক্ষকরাই হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ করে নোট  পাঠিয়ে দেন। সময়ের সাথে সাথে পাঠ অভ্যাস বদলে যাচ্ছে, লাইব্রেরি ব্যবহার করবার রীতিনীতিও পরিবর্তন ঘটেছে,  সময়ই বলতে পারবে এসবের ভালো-মন্দ। অনলাইন শিক্ষার একটা চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়ে গেল এই অতিমারী পর্বে। সমস্ত শিক্ষা-সমাজ যেন দুটো ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল অনলাইন আর অফ লাইন । 
            
ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটু কমই হত এরকমটা অনেকে বলে থাকেন। অন্তত পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তুলনায় এখানকার ছাত্ররা অনেক বেশি  শান্ত নম্র। এখানকার জল হাওয়ার গুণে যথেষ্ট কোমল স্বভাবের। তবে সামান্য মারামারি-হাতাহাতি-বচসা যে একেবারেই হত না তেমনটা নয়। বহু বছর ছাত্র সংগঠনের কোনো বিরোধীপক্ষ ছিল না। শাসক দলের ছাত্রসংগঠনের থাকত একছত্র আধিপত্য, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের ঘোষণার দিন থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত বেশ উত্তেজনা থাকত, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের হোস্টেলে। বিজয় মিছিল বের হত বেশ ঘটা করে। কত বিচিত্র অভিজ্ঞতার স্রোতে ভাসতে ভাসতে চলেছে এই  স্মৃতির তরী। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে দু'দলের মধ্যে সংঘর্ষ ও মৈত্রী দুই দেখেছি ।   ভালো লাগত কখনো কখনো  ওদের অকারণ চঞ্চলতা।

মনে পড়ে একবার এক নিরীহ অধ্যাপকের কোয়ার্টারের সামনে কারা বোমা ফাটাল। কে বা কারা এই কাজ করেছেন  তা তদন্ত করতে পুলিশ এল কারা যেন সেই নিরীহ অধ্যাপকের কোয়ার্টারের দেওয়ালে গোটা গোটা অক্ষরে রাতের অন্ধকারে লিখে গিয়েছিল-
                 "He pretends to be God
                  But he is a Fraud. "
সেই সময়ে শিলিগুড়িতে পুলিশ আধিকারিক ছিলেন নজরুল ইসলাম, সাহিত্যিক হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনার উল্লেখ  তিনি তাঁর স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন। নজরুল ইসলাম শিলিগুড়িতে থাকাকালীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করতেন, অনেকের সঙ্গেই তার বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল, তবে সেসব একান্তই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাগত কারণে। তাঁর স্ত্রী সম্ভবত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলজি বিভাগের গবেষিকা ছিলেন। নজরুল ইসলাম একাধিক উপন্যাসের রচয়িতা, তারই একটি উপন্যাসের পটভূমি শিলিগুড়ি যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাও আছে।  স্পষ্টবক্তা আদর্শবাদী ও  শিক্ষাব্রতী হিসেবেও বঙ্গীয় বিদ্বজন সমাজে নজরুল ইসলামের যথেষ্ট পরিচিতি আছে। আমার  দুই ছাত্রপ্রতিম সম্পাদক পার্থপ্রতিম মল্লিক ও শুকদেব চন্দ, ওরা ওদের পত্রিকা' সৃজনীধারা'তে নজরুল ইসলামের বেশ বড় একটি সাক্ষাৎকার  প্রকাশ করেছিলেন। নজরুল ইসলাম শিলিগুড়ি ছেড়ে অনেক দিন  চলে গেছেন, কিন্তু উত্তরবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে তিনি  এখনো যথেষ্ট আগ্রহী । 
            
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে উপাচার্যের একটি সংঘর্ষের কথা খুব মনে পড়ে,  তখন উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক কৃষ্ণনাথ চট্টোপাধ্যায়। শাসকদলের অনুগত না হলে উপাচার্য হওয়া যে  সম্ভব নয়, এটা অনেক পুরনো ট্রেডিশন যা আজও সমানভাবে সক্রিয়।  সেই সময়ে উত্তরবঙ্গের কতগুলো অঞ্চল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয।  বন্যাপীড়িত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা চেয়েছিলেন তাদের প্রস্তুতির জন্য পরীক্ষা কিছু দিন পিছিয়ে যাক,  তারা উপাচার্যের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন,  কিন্তু উপাচার্য  কৃষ্ণনাথ চট্টোপাধ্যায় এই আবেদন অগ্রাহ্য করলেন। জনশ্রুতি, উপাচার্যের কেউ কান ভারি করেছিলেন,  তিনি মনে করলেন ছাত্ররা পরীক্ষা পেছানোর দাবি করে উপাচার্যকে হেনস্থা করার ষড়যন্ত্র করছে। উপাচার্য ছাত্রদের  দাবির গুরুত্ব দিলেন না,   তখন ছাত্রছাত্রীরা অবস্থান শুরু করলেন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে। অধ্যাপক পুলিন দাস তার স্মৃতিকথায়  নিরপেক্ষভাবে এই ঘটনার কথা লিখেছেন-"বন্যাপীড়িত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা চাইল আসন্ন পরীক্ষা কিছুদিন পিছিয়ে  যাক।  প্রার্থনা না-মঞ্জুর হওয়ায় এক সন্ধ্যায় ছাত্র-ছাত্রীরা অবস্থান শুরু করে দেয় উপাচার্যের কোয়ার্টারের সামনে। তাদের সরিয়ে দিতে তৎপর হয়ে ওঠে এস.এফ.আই দলভুক্ত ছাত্ররা।  জোর জবরদস্তি,  ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কিতে কাজ হল না দেখে পুলিশ ডেকে লাঠির ঘায়ে    অবস্থানকারী ছাত্র-ছাত্রীদের হটিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের লাঠির দাপটে পালিয়ে গিয়ে সেই রাতের অন্ধকারে কেউ আশ্রয় নেয় গোসাইপুর কেউবা লচকার পুলের  নীচে রাত কাটায়।"
পরদিন উপাচার্য কৃষ্ণনাথ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষকদের এক সভায় ডেকে ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পর্কে ভয়ঙ্কর অভিযোগ করলেন, পুলিনবাবুর লেখা থেকেই সেই অভিযোগের বর্ণনা করা যাক - "সেই মুহূর্তে ছাত্র-ছাত্রীরা এতখানি হিংস্র হয়ে উঠেছিল যে ফ্রিজ-এর পেছনে লুকিয়ে পড়তে না পারলে উপাচার্যের মৃত্যু ছিল অবধারিত, হত্যা উদ্যত ছাত্র-ছাত্রীদের হাত থেকে আত্মরক্ষা করতে পেরেছিলেন নাকি শুধু তার প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব-এর জন্য। সেদিন সভায় অধ্যাপকদের একাংশ যার মধ্যে উপাচার্যের অনুগত বামপন্থী অধ্যাপকরাও ছিলেন, উপাচার্যের বক্তব্য শুনে তারা হাসবেন না কাঁদবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পুলিনবাবু উত্তেজিত হয়ে সেদিন যে কথাগুলো বলেছিলেন তিনি সেই সব  তার স্মৃতিকথা লিখেছেন- "স্নাতকোত্তর যারা পড়তে আসেন, তাদের বয়সটা উত্তেজনাপ্রবণ হলেও তাদের মাথায় কখনো উপাচার্যকে খুনের ভাবনা কিছুতেই আসতে পারে না।" পুলিনবাবুর কাছে ছাত্রদের উপাচার্যকে হত্যার অভিযোগ কিছুতেই বিশ্বাসযোগ্য মনে হল না। খুব দুঃখের সঙ্গে তিনি লিখেছিলেন - "হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে যেসব ছাত্র-ছাত্রীদেরকে, তারা সবাই আমাদেরই ছাত্র-ছাত্রী। আমরা তাদের জানি-চিনি, তাদের পূর্ব পরিচয় আমাদের অজানা নয়। এমতাবস্থায় উপাচার্য কর্তৃক আনীত হত্যার অভিযোগ যদি সত্যি বলে মেনে নিতে হয়,   তাহলে আমাদের শিক্ষক মশাইদের সর্বাগ্রে ভেবে দেখতে হবে আমাদের কোন শিক্ষা দানের ফলে ভদ্রঘরের এইসব নিরীহ ছেলে মেয়েরা রক্তপিপাসু খুনি হয়ে উঠল। তাও আবার যার তার নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত মাননীয় উপাচার্যর, দুর্লভ রক্ত।" সেদিন পুলিনবাবুর এই বক্তব্য সকলের ভালো লাগেনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমাজ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়, উপাচার্যের অনুগামীরা পুলিন বাবুর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন। আর একদল উচ্ছ্বসিত অভিনন্দন জানান।

আমার সৌভাগ্য আমি পুলিনবাবুর ছাত্র,  লাইব্রেরিতে এলে সব সময় আমার এবং আমাদের সমসাময়িক বন্ধুদের কুশল জানতে চাইতেন। স্যারকে যেভাবে দেখেছি তিনি  ছাত্র স্বার্থে সব রাজনীতির উর্ধ্বে ছিলেন। শিক্ষার স্বার্থে  সবসময় অটল থেকেছেন। ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক শ্রদ্ধায়- ভালবাসায়, পরম মমতায় সব সময়  রক্ষা করেছেন। অবসর নেবার পরেও দীর্ঘকাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তার আত্মিক সংযোগ ছিল।  তার স্মৃতিকথা 'স্মৃতি জাগানিয়া' কে শিরোধার্য করেই 'স্মৃতি দিয়ে ঘেরা' এগোচ্ছে তার সীমিত ক্ষমতাটুকু নিয়ে।

খুব মনে পরে, সেই সময়কার শাসকদলের বিরোধী ছাত্র সংগঠনের ছাত্র নেতা দেবাশিস বিশ্বাস-এর কথা।  উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার দেখা সবচেয়ে সেরা ছাত্র নেতা। দেবাশীষ ছাত্র পরিষদের সুপরিচিত নেতা ছিলেন, জলপাইগুড়ির ছেলে, ওকে ওর শৈশব থেকেই চিনি, অত্যন্ত মেধাবী সংস্কৃতিমনস্ক। স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়েছে ও সব সময়, কখনোই চলতি হাওয়ার পন্থী হয়নি। দেবাশীষ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ে ছাত্র স্বার্থ রক্ষার লড়াইয়ে কখনো কোনো আপস করেননি এই কারণে ওকে অনেক অবিচারের শিকার হতে হয়েছিল। কিন্তু মেধাবী এবং লড়াকু ছাত্রটি সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে  ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থকে সবসময় সুরক্ষিত রেখেছে। দেবাশীষ এখন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপরিচিত অধ্যাপক। সেই অধ্যাপক হওয়া কালীন সময় থেকে  বিতর্ক ওর পিছু  ছাড়েনি, আর দেবাশীষ ছাড়েননি  ওর নিজের আদর্শ ও বিশ্বাসকে। জলপাইগুড়ির  সকলের অত্যন্ত আদরের ভালোবাসার এই ছেলেটির অভাব সবাই খুব বোধ করে। আমাদের দুর্ভাগ্য পরিণত দেবাশীষকে আমরা জলপাইগুড়িতে পেলাম না। আজও এই শহর ওর জন্য অপেক্ষা করে।
         
পশ্চিমবঙ্গে কি শিক্ষা-গণতন্ত্রের পরিসর ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে আসছে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দীর্ঘকাল সর্বস্তরের নির্বাচন বন্ধ হয়ে আছে। মনোনীত সদস্যরাই চালাচ্ছেন সব।  বিধানসভার নির্বাচন হয়ে গেল, সামনে পৌরসভার নির্বাচনের ঘন্টা বাজছে, দীর্ঘ অতিমারীর সন্ত্রাসের পর স্কুল-কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা আবার খুলে যাচ্ছে, গণতান্ত্রিক পরিসরে খোলা হাওয়া হয়তো আবার বইবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সমানী মন্ত্র আবার ধ্বনিত হবে? 

বি দ্র:  এ পর্বের ছবিগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ফজলুর রহমানের  সৌজন্যে প্রাপ্ত।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri