সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

21-November,2022 - Monday ✍️ By- শুক্লা রায় 525

পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

পইলা সাঞ্ঝির কথা
পর্ব : ২৩
শুক্লা রায়
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷

কাতি গোছা ২

চোর ডে চোর চোর চোর
বাইগোন বাড়ির চোর
চোর গেইসে আলিপুর
চোরের দাড়ি পুরপুর
চোর গেইসে ফালাকাটা
চোরের দাড়ি আদাকাটা

কাক-পক্ষীর পাখা ঝাপটানোর আগেই মানুষের গলা বেজে ওঠে। অন্ধকার তখনও গাছ-পালা উঠোনের গায়ে লেপ্টে আছে। মানুষের গায়েও। নরম শীতের আমেজে কাঁথা জড়িয়ে নিশ্চিন্ত ঘুম হয়ে। এর মধ্যেই সুষেণ উঠোন থেকে কলা গাছ দুটো তুলে বাড়ির পাশের শুকনো ডোবাটাতে ফেলে এসে কুয়ো পাড়ে জল তুলে হাত-পা ধুয়ে শুয়ে পড়ে। আর একটু ঘুম দেবে। রসবালা গোড়াদুটো লেপে দেয়, কাক পক্ষীকে গর্তটাও দেখানো চলে না। তাই অন্ধকার থাকতেই এসব করে ফেলতে হয়। ছেলে ঘুমালেও রসবালার আর ঘুম আসে না। কিছুক্ষণ বসেই থাকে দরজায়। কিন্তু সকাল হতে তখনও বেশ দেরি। সুষেণের বাপের সহ্য হয় না। কাঁথার ভেতর থেকে মুখ বের করে বলে,
    "না থাকেন তে এংকরি বসি না নন, যাও গোয়ালি ঘর থাকি গরুলা বাকরাও। একখান কাজ আগাবে এলায়।"
রসবালা হাই তুলতে তুলতে বলে,
  "বাকরাইম তো, না বাকরাইম তে কি। আর তোমরা দিনমনটায় থাকি থাকি সেজারির খ্যার গুন্ডা কর।"
   "তে কি তে। ছ্যাংছেঙা মাটিখানোত বসি আছেন, ঠ্যাঙলা বাসুলি চড়েছে না! নয়া হিম পড়েছে। নাগুক তো ঠান্ডাখান। তোমাক ঔষদ কেনে টৈষদ আনি দিম এলায়।"
সুষেণেল বাপের কথায় রসবালা রাগ করে ঠিকই, কিন্তু একটু এদিক ওদিক দেখে কিছুটা স্বগতোক্তির মতো,
  "নানাগে মোক তোমার ঐষোদ" বলে শুয়ে পড়ে। কিন্তু আর ঘুম আসে না। সুষেণের বাপ যথারীতি আবার ঘুমে তলিয়ে গেল। কিন্তু রসবালার নড়াচড়ায় বিরক্ত হয়ে গজগজ করে,
   "হুর, কেনে যে এত উষ্টুং পুষ্টুং করেছেন তে কায়জানে। নিন না ধরেতে উটো। আগিনাখান সামটো।"
বেলা হতে না হতেই সুষেণের বাবা গরুগুলো বের করে খোলানেই বেঁধে রাখে। রসবালা প্রথম লক্ষ্য করে গোয়াল ঘরের পাশের নারকেল গাছ থেকে দুটো নারকেল নেই। তিনটাই ছিল অবশ্য। সুষেণ প্রথমে কথাটা বিশ্বাস করেনি। তাচ্ছিল্য করে বলেছে,
  "কায় তোর দুকিনা নাইকেল নিগাবে! দুকিনা নাইকেল ব্যাচেয়া কি বড়লোক হবে!"
রসবালা বলে,
  "নাহয়, নাহয় বাউ, কালি যে চোরের ষাইট ছিল। যেইলা মানসি নয়া চোর করা ধরিবে তায় কালিকার আতিত কোনো একখান চোর করি ষাইট করি নেয়।"
   "তোক কইসে! নাই কামের দুনিয়ার ফালতু কাথা।"
কিন্তু ভালো করে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল। তাই তো! দুটো নারকেল নেই! তারপর কিছুটা যেন অপ্রস্তুত হয়েই বলে,
  "খাউক। কায় নিগি খাইসে খাউক। হামাক তো এখেনা দিয়া গেইসে।"
ওর বাবা হো হো করে হেসে বলে,
   "ন্যাও হইসে, সুষেণের মাও, এলা কনেক খাবার-টাবার কর। বেলা হছে।"
      বেলা একটু গড়াতেই চোর খেলার ধুম পড়ে গেল। পাড়ার ছোট ছোট বাচ্চারা মুখে মুখোশ পরে চোর খেলতে এসেছে। হাট থেকে কেনা সস্তার শোলার মুখোশ বা মুখা পরে সলজ্জ ভঙ্গীতে কচি গলায় উচ্চারণ,
   "চোর ডে চোর চোর চোর..............."
 নাতি সম্পর্কের কেউ এলেই সুষেণের বাপের টার্গেট হল নাক খুলে নেওয়া, কানটা ধরা। এই নিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে সারা সকাল তারও একচোট খেলা হয়ে যাচ্ছে। রসবালা গজগজ করে,
  "কাম নাই তে শাকবাড়িখানোত কাজ কর। কুশ্যি দিয়া শক্ত মাটিলা ভাঙি নরম কর। মুই চাইট্টা বেশি করি নাপা, পালোন, ধুনিয়া ফেলাং। ফাকোতে ছাওয়ালাক না বোলান তো!"
কিন্তু সুষেণের বাপ শুধরায় না, হাসে। মজা পেয়েছে। খামোখা বাচ্চাদের পেছনে ছোটে। বলে,
   "তোর কানটা কাউয়ায় নিগাইল বাউ। হর দ্যাখ ঢাল কাউয়াটা মাতার উপোরোত!"
কখনও বলে,
  "চিলাটা আসিল। নিগাইল কানটা। নাকটা ধরি পালাইল। দ্যাখেক দ্যাখেক দ্যাখেক!"

বুধেশ্বরের ছেলে এল দলবলসহ। ওর মুখে সুপারির খোল কেটে বানানো মুখোশ। পাটকাঠি দিয়ে বানানো নাক আলতায় ছোপানো। চোখের জায়গাটা সুন্দর করে কেটে গোটা মুখোশটা আলকাতরা দিয়ে লম্বা লম্বা দাগ টেনে বানানো। চোরের মুখ। ও হয়তো শুনেছে এই বাড়ির দাদুর নাক খুলে নেবার চেষ্টার কথা, বাড়ি ঢোকে না ভয়ে। উঠোনের মুখটায় দাঁড়িয়ে নাকটা হাতে ঢেকে মিনমিন করে বলে,
  "চোর ডে চোর চোর চোর.........."
সুষেণের বাপ আরো মজা পায়। না চেনার ভাণ করে বলে,
  "হিটা আরো কায়? হিটা চোর তো নয়া দেখোছং। গালাত যে জোরে নাই!" তারপর টেনে টেনে বলে,
  "হিটা কি হামার বুদেশ্বরের বেটা নাকি রে? ওই মতোনে যে দেখছোং। তোক আরো চোর করির কায় শিকাইল?"
রসবালা একটা বাটিতে করে অল্প চাল আর একটা বেগুন ওদের ব্যাগে ঢেলে দিতে দিতে বলে,
  "তোমরা এখেরে কথায় না শুনেন তো বাউর বাপ! চুপ করি নওখেনে। ছাওয়ালা ভয় খাবে না?"
  "না খায় ভয়!" 
তারপর বূধেশ্বরের ছেলের কান ধরবে কি ওরা সঙ্গে সঙ্গেই চলে গেছে। এরমধ্যে  হঠাৎ মনে পড়াতে সুষেণের বাপ বলে,
  "হ, ডেকাও তো ডেকাও তো বুধেশ্বরের বেটাক। মুই ডেকালে এলায় আসিবে না। কলার গোড়ের পাইসা কয়টা দিয়া দ্যাও।"
      পূর্ব পুরুষের উদ্দেশ্যে প্রদীপ দেবার জন্য উঠোনে যে কলাগাছ পোঁতা হয় তার গোড়ায় খুচরো পয়সা পুঁতে দিতে হয়। সেই পয়সা নিজে খরচ করা যায় না, দান করতে হয়। সাধারণত চোর খেলতে আসা বাচ্চাদেরই দেওয়া হয়। ভোজ খাওয়ার সময় ওদের কাজে লাগে।
সুষেণ-বিষেণ দুজনেই সকালে লাল চা চিঁড়া খেয়ে বেরিয়েছে মরা নদীর পাড়ে। পুরুন্ডির গাছের গোড়া আনতে। আজকে গরুকে পূজা দিতে হয়। রসবালা স্নান-টান করে বড়ঘরে অর্থাৎ উত্তর ঘরে ঢোকে। আতপ চাল বের করে। বড় দু-তিনটে চালকুমড়াও বের করে উঠোনে নামালো। সুষেণের বাপ গরুগুলোকে স্নান করাতে নদী নিয়ে যায়।
      "ওকি ওওওওওওওওওওওও
বন্ধু কাজল ভোমোরা রে
কুনদিন আসিবেন বন্ধু কয়া যাও কয়া যাও রেএএএএএএএএএএএ"
নিঝুম নদীর পাড় আজকে কোলাহলমুখর। তারমধ্যে কেউ একজন গান ধরে। নিতান্তই সাদা-মাটা গলা, কিন্তু প্রাণের টান সবাইকে ছুঁয়ে যায়। গানের ফাঁকে ফাঁকে কথা-বার্তা, গল্প-গাছা দিব্যি চলতে থাকে।
রসবালা সব বের করে রেখে রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সুষেণের বাবা সুপেন ঘষে ঘষে গরুগুলোকে স্নান করিয়েছে আজকে। খোলানে বেঁধে রেখে নিজেও হুস হুস করে স্নান করে নিল। দেখে দুই ভাই বাইরে থেকে এসে ওর আগেই স্নান করে নিয়েছে। বিষেণ  উঠোনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে। ছোট হাত আয়নাটা বড়ঘরের বেড়ায় গোঁজা। ওর পেছনে সুষেণ দাঁড়িয়ে হেঁড়ে গলায় তাগাদা দেয়,
  "নে খেনে বাছা বাউ। পছ করি কাখা। মুই কোনেক আয়নাখান দেখং। দ্যাখ তো মোর চুলিগিলা কেমতন আউলি-ঝাউলি আছে!"
বিষেন চুল আঁচড়ে চিরুনিটা আয়নার মাথায় গুঁজেই মাকে ডাকে,
  "মা, ওমা, খাবার হইসে মা?"
গরুগুলোর মাথায়, শিঙে তেল লাগায় রসবালা আর আপন মনে ওদের সাথে গল্প জুড়ে দেয়। সাদা গাইটার কপালে সিঁদুর মাখাতে মাখাতে বলে,
  "দ্যাখ তো ধৌলি, তোক আজি কেমন ঢক নাগেছে। কিরে কাল্টু, আয়, তোক কনেক খড়িমাটির টিপ পেন্দাং।"
শিঙে তেল মাখানো আর গাই গরুকে সিঁদুর এবং হালুয়া গরুগুলোকে খড়িমাটির টিপ পরানো হয়ে গেলে রসবালা আর সুপেন দুজনে গরুর সামনের দুই পায়ে ভক্তি করে। গরুগুলো কুন্ডির গন্ধ পেয়ে চঞ্চল হয়ে ডাকতে থাকে, ছটফট করে। সুপেন ভাগ ভাগ করে, কলার পাতায় হালুয়া দুটোকে আলাদা আর বাছুর গাইগুলোকে আলাদা করে কুন্ডি দেয়। আতপ চাল, ভেজানো ছোলা, চুন পড়া চালকুমড়ো গোল গোল করে কেটে তার সাথে পুরুন্ডির গোড়া গোল গোল করে কেটে, চিতি বাখর সহ কুন্ডি মেশানো হয়। এর গন্ধে দূর থেকেই গরুগুলো চঞ্চল, অস্থির হয়ে ওঠে। তারস্বরে ডাকতে থাকে। মাথা ঝাঁকায়। পারলে দড়ি ছিঁড়ে ছুটে আসে।
সুষেণ বলে,
   "কেনে তো এত নিয়াম করির নাগে বাবা! না কইল্লে হয় না?"
সুপেন বলে,
  "অয় যে বাবারে। এলাইতে তোমরা হাপসেন। এলাং গোটায় সোংসারটার ভার তো পানে নাই।"
সুষেণ ওর বাবাকে শুধরে দেয়। বলে,
   "হুটা কাথা না কসং। করিবার দি না করিমু। কিন্তুক কেনে করির নাগে!"
সুপেন একটু থামে। শান্ত নরম গলায় বলে,
  "এইলা আগিলা মানষিলা করি গেইসে, এইলা না হামাকো করির নাগে। হেই বাপ-ঠাকুর্দার ঘর কয়া গেইসে কুন্ডি খোয়ালে গরু-বাছুরের রোগ-বিয়াধি কম হয় বলে, দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। উমরালা করি গেইসে, মানিসে। হামরাও করি মানি।"
  "হুম"
বলেই দ্বিগুন উৎসাহমাখা গলায় সুষেণ বলে ওঠে,
  "ও বা, হিলা খালি হামরা দেশি মানষিলায় না করি, হর আদিবাসি, মেচিয়া উমরাও করে। মোর বন্ধুটা আইচ্চে। উমরা আদিবাসি। একে সতে ঘাস কাটি। আজি দেখং উয়াও আইচ্চে বুড়া নদীটার পাড়োত, পুরুন্ডি নিগির। পুছিলুং তে কছে।"
বিষেণের পেটের খিদে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এসব আলোচনায় ওর উৎসাহ কম। আলোচনা এখানেই থামিয়ে দিতে তৎপর হয়।
   "তুই এখেরে এত কাথা কইস তো দা। দেখিন্না গোয়ালি ঘরের সড়োত পানি মাছের খোল্টাখান ঝুলি থুসে। কেনে? গরুর ঠাকুরানি হবে না। তে হিটাও ওমোতনে একটা নিয়াম। মা খাবার দে তো মোক ভোগ নাগাইসে।" 
সুপেন হাসে।
   "মোর এখিনা বেটা খালি ভোগ ধরিই মরে।"
...............................................................
ছেংছেঙা - খুব ঠান্ডা
বাসুলি চড়া - হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
উষ্টুংপুষ্টুং - উশখুশ করা
হাপসেন - হাঁফিয়ে যাওয়া
সড় - ঘরের ভেতরে আড়াআড়ি থাকা বাঁশ
...............................................................
তথ্যঋণ : মনেশ্বর রায়। 
খগেনহাট (বানিয়াপাড়া) ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ার।
...............................................................
ছবি ঋণ : রীতা রায়

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri