সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

62.পইলা সাঞ্ঝির কথা-শেষ পর্ব/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

61.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬১/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

60.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৬০/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

59.পইলা সাঞ্ঝির কথা=৫৯/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

58.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৮/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

57.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৭/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

56.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৬/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

55.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৫/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

54.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৪/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

53.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫৩/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

52.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫২/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

51.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫১/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

50.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৫০/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

49.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৯/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

48.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৮/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

47.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৭/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

46.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৬/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

45.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৫/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

44.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৪/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

43.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪৩/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

42.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪২/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

41.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৪১/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

40.পইলা সাঞ্ঝির কথা/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

39.পইলা সাঞ্ঝির কথা-৩৯/শুক্লা রায়

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

38.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৮

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

37.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৭

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

36.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৬

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

35.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৫

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

34.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৪

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

33.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩৩

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

32.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩২

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

31.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩১

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

30.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩০

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

29.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৯

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

28.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৮

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

27.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৭

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

26.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৬

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

25.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৫

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

24.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২৪

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

23.পইলা সাঞ্ঝির কথা /২৩

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

22.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

21.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২১

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

20.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২০

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

19.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৯

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

18.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৮

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

17.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৭

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

16.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৬

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

15.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৫

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

14.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৪

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

13.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১৩

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

12.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১২

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

11.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১১

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

10.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১০

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

9.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৯

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

8.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৮

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

7.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৭

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

6.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৬

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

5.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৫

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

4.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৪

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

3.পইলা সাঞ্ঝির কথা/৩

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

2.পইলা সাঞ্ঝির কথা/২

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

1.পইলা সাঞ্ঝির কথা/১

21-November,2022 - Monday ✍️ By- শুক্লা রায় 550

পইলা সাঞ্ঝির কথা/২২

পইলা সাঞ্ঝির কথা
পর্ব - ২২ 
শুক্লা রায়
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
কাতি গোছা

সকাল থেকে লেপা পোঁছার কাছে ব্যস্ত রসবালা এক কাপ চা খেয়েই যন্ত্রের মতো চলছে। তার মধ্যে ছোট ছেলে আবার ভাত ছাড়া একটা বেলা থাকতে পারে না। সকালিয়া রোদটা না গড়াতেই ওর ঘ্যানঘ্যান শুরু হল,
   'মা, ভাত চড়াবু না? মোক খালি অল্প কয়টা চাউল জ্বালে দে, শাক-পিতার নানাগে। নুন দিয়ায় খাইম।"
সুষেণ পাটকাঠি দিয়ে লন্ঠন বানাতে বানাতে এক ধমক লাগায়,
  "নোইস তো বাছা বাউ, অত তোর ভাত ভাত কিসের? একটা দিন চুড়ায় চাইট্টা খামু এলায় নাল চা দিয়া।"
রসবালা চেঁচায়,
  "নন বারে ছাওয়ার ঘর। একিনা মুচিয়া খাবার করছোং। ভুবুরা চাইট্টা নগদে হজম হয়া গেইল? নন উটি ভাজোং কয়খান।"
রুটির কথা শুনে বিষেণ রেগে আগুন হয়,
  "না খাং মুই তোমার একোড। তোমারা ভাজি তোমরায় খাও। মুই আজি না খায়ায় নোইম।"
বসমতী বিষেণের রাগ দেখে রসবালাকে বলে, 
   "কি না খায় বাউ, একোড? কেনে রে বা?"
    "না খাং পিসাই। একোড খাইলে মোর বুক বলবলায়।"
কথাগুলো বলে বিষেণ ব্যাজার মুখে উঠোনের একপাশে রাখা বাঁশের তৈরি খাটটায় গিয়ে বসে। রসবালা সেদিকে তাকিয়ে বলে,
  "নে, অত তাও হোওয়া না যায়। আজি পূজার দিনটা। পোন্তা চাইট্টা আছে ওইলায় খাইস এলায় নুন মরুচ দিয়া।"  বসমতীও বুঝিয়ে বলে,
  "আজি যে ভাত আন্দা না যায় রে বা। হামার দেশি মানষির দেখিস না মেলা নিয়াম। এখেনা বেলা কুনোমতে কাটিবে এলায়। বাপ-ঠাকুর্দাক আজি বাতি দেখের নাগে। সোগায় আজি বাড়ি চিনি চিনি আসিবে। বাড়ি-ঘরগিলা দেখিবে। হামাক মানষিগিলাকো দেখিবে। ভাল আছি না নাই, সবে দেখিবে। আজিকার দিনটা ভাত খাওয়া না যায়। উটি-আটা খায়ায় গোছা দিবার নাগে।"
বিষেণ বলে,
  "তে মানষি যে কয়, যায় বলে বাপের বেটা/খায়া দায়া দেয় গোছা।"
বসমতী হেসে ফেলে। সুষেণ বলে,
   "ইয়ায় হামার খালি প্যাটটা ধরি মরে। ভাত চাইট্টা না পালে এখেরে পাগলাই উটে।"
বিষেণ বলে,
  "তোক কিন্তু মুই কয়া দিলুং, এ দা। হামার বাড়ির দুইটা মরুক, মুই কিন্তুক ভাত না খায়া গোছা দিবার না পাইম।"
সুষেণের বাপ হাসতে হাসতে বলে,
   "অয় দি, ইয়ার কাথা শুনেক। বোত্তাতে হামাক মানষি দুইটাক মারির চাছে।"
রসবালা এসব কথায় কান দেয় না। কুয়োর পাড় থেকে হাত-পা ধুয়ে বলে,
     "মরংখেনে আগোত। সেলা বুজিবে। মাও মইল্লে কেমন নাগে! নোইস দি, এখেনা চা জ্বালাং। সাকাল থাকি কুনোই মুকোত দ্যাং নাই। এত্তোকোনা চা গালাত ঢালি দিসুং, ওই সার। টুটি মুক শুকি আছে।"
বসমতী পিঁড়িতে বসতে বসতে বলে,
  "আসিলুং পুছির, তোমা কোলার গছ আনিসেন? না আনেন তো হামারে দুইটা আনো। মেল্লা ছোট ছোট চারা হইসে। হামার দুইটা কাটিল উয়ার পিসা। আর খাটি বানাসিত বাউ?"
সুষেণের বাবা বলে,
   "বানাইসে, বড় বাউ। চুয়ার পাড়োত বাল্টিঙোত করি বোদায় ভিজি থুইসে। নাহলে নরম হবে না যে।"
বসমতী নিশ্চিন্ত হয়ে বলে,
  "হইসে। ঠোগি-ঠোগা, ন্যালটেং এলায় ভাটিবেলা বানা যাবে।"
সুষেণ চায়ের কাপ হাতে নিতে নিতে বসমতীকে বলে,
  "মুই এলায় কয়টা বানে থং। তোমরা আরো আকাশ বাতি দ্যান না কি?"
বসমতী নিরাসক্ত ভঙ্গীতে উত্তর দেয়,
  "উঁঃ, নাই ওইলা হামার গোতোত বা। নাই দেই কুনোদিন। তোমারো তো নাই?"
বিষেণ অবাক হয়ে বলে,
  "আকাশ বাতি আরো গোতোত থাকির নাগে? কেনে?"
  "অয় যে কাহারো গোতোত থাকে নিয়াম। সেলা সিন্ডার না ন্যালটেঙোত একটা গোছা ধরেয়া উপরোত ওঠে দিবার নাগে। যুদি কাহারো বংশোত অল্প বয়সী ছাওয়া-পাওয়া অসুখোত না হয় তে ডিগিত পড়ি, না হয় তে পোকার কামোড়োত মরে তাহালে বলে এংকরি আকাশবাতি ধরে দিবার নাগে। ছাওয়াটা সেলা ওইটা বাতি দেখি বুজির পায় এইটা হামার বাড়ি। সেলা আইসে।"

চা করেই রসবালা আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ছোট ছেলে বলে,
  "মা দেওয়ারিগিলা জল থাকি অঠে থুইম?"
রসবালা কাজ করতে করতেই উত্তর দেয়,
   "থো। চুয়া থাকি পিঁড়া একখান ধুয়া আন আগোত।"
বিষেণ পিঁড়িতে জলের বালতি থেকে মাটির প্রদীপগুলো আস্তে আস্তে সাবধানে তুলতে থাকে, জলটা ঝরে গিয়ে শুকাবে রোদে। খুব সকালেই এক বালতি জলে প্রদীপগুলো চুবিয়ে রেখেছিল রসবালা। সুষেণের একটা পুরনো ছেঁড়া গেঞ্জি ধুয়ে দিয়েছে ভালো করে ক্ষার দিয়ে গরমজলে সেদ্ধ করে, ওটা দিয়ে সলতে পাকাবে। 

      বিকেল হতে না হতেই সব্জি কেটে, রান্না ঘরে জল টল ভরে সব রেডি করে রেখে রসবালা উঠোনে তুলসিতলার একপাশে পুঁতে রাখা কলা গাছদুটির গোড়া ভালো করে জল-কাদা মেখে লেপে দেয়। তারপর সুষেণের বাপকে বলে,
  "ন্যাও, তোমরা হাত-ঠ্যাং ধন না কি ধও। ধুতিখান পিন্দো। জোগোত জাগাত পূজাত বোইসো। ন্যাতেন তোমরায় এলায় ভোকে আতলাবেন।"  
 তারপর দুই আঙুলে আটা তুলে গোড়ার চারধারে আল্পনা দিয়ে দেয়। কলা গাছদুটির গায়ে বাঁশ থেকে ছেঁচে তোলা পাতলা কাঠি গোল করে গুঁজে দিয়ে বেশ ফুলের পাপড়ির মতো করে সাজানো। ওই গোল গোল কাঠির ফাঁকে ফাঁকে পূর্ব পুরুষের উদ্দেশ্যে প্রদীপ তুলে দেবে রসবালা আর সুষেণের বাবা। সুষেণদের করনীয় কিছু নেই, যেহেতু ওদের বাবা মা বেঁচে আছে। সুষেণের বাবা রসবালাকে আল্পনা দিতে দেখে রসিকতা করতে ছাড়ে না। সুষেণকে ডেকে বলে,
  "হর দ্যাখ, তোর মাও কেমন কোলার গোড়োত আল্পনা দিসে, দেখিবার ঢক হইসে কেমতন। একপাশে কাউয়ার ঠ্যাং, একপাশে বগের ঠ্যাং।"
রসবালা মুখ ঝামটা দিয়ে ওঠে,
   "তে তোমরা দিবার নাই পান। কইলে না মুই না দিলুং হয়।"
   "আর বচ্ছর থাকি বাবাকে দিবার কইস। কেনে উয়াক আরো ঢক নাগে!"
সুষেণ গম্ভীর মুখে বলে কেরোসিনের কূপি থেকে একটা মোম ধরিয়ে নিয়ে বিষেণকে ডাক দেয়,
  "বাছা বাউ, আয় রে, একটা চকলেট বোমের প্যাকেট আনসুং। ফুটাই।"
সুষেণের বাপ আঁৎকে ওঠে,
  "এক প্যাকেট গোটায়? দুইটা-তিনটা আইনলে হয়! ফাঁকের না ওইলা পাইসা খরচ। ফুটালে না গেল! পাইসাখান শ্যাষ!"
তারপর থেমে বলে,
  "মম কতলা আনচিস? মমো এক প্যাকেট?"
সুষেণ সংক্ষেপে "হুঁ" বলে সামনের খোলানে গিয়ে দাঁড়ায়। একটু পরেই দুই ভাই মিলে দু-তিনটে  বোম ফাটিয়ে ফেলে। বাকি কয়টা রেখে দেয় খাওয়ার পরে ফাটাবে বলে।
 দেখতে দেখতেই চারদিক কেমন মিশমিশে অন্ধকারে ভরে গেল। অমাবস্যার রাত বলে কথা। পাটকাঠির তৈরি তিন ঠেঙে ঠগিগুলোতে প্রদীপ বসিয়ে উঠোনের কোণে, কূয়োর পাড়, খিড়কি, খোলানে আলো জ্বালায় রসবালা। সব বাড়িতেই আলো জ্বলে ওঠে। শান্ত এক নরম মিটমিটে আলোয় উঠোন-বাড়ি কেমন রহস্যময় হয়ে ওঠে।
পূজা দিয়ে সুষেণের বাপ ছেলেদের ডাকে। পূজা দেবে বলে ধুতি পরেছে, খালি গা, গলায় পৈতে। হাতে প্রসাদের কলার ঢোনা। একটু যেন অন্যরকম লাগছে। নিত্যদিনের মানুষটার ভেতর একজন অন্য কেউ থেন বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিল কোনোদিন। ছেলেদের প্রসাদ দিয়ে রসবালা আর নিজেও খায়। রসবালা রান্না ঘরে দ্রুত হাতে উনুন ধরাচ্ছে দেখে ডাক দেয়,
  "ন্যাও আইসো। পোসাদলা নিগি থও, ছাওয়া-ছোটগিলা এলা আসিবে দিবার নাগিবে। আর কোলার গোড়ের পোসাদলা তো ইমরা খাবার না পাবে, হামরায় খাই।" 
নিয়মমতো কলা গাছের গোড়ায় যে প্রসাদ দেওয়া হয় ওটা যারা গোছা দেয় না তারা খেতে পারে না। ওখানকার দুটো ঢোনা রসবালারা নিজেরাই খায়। সুষেণের বাবা পুজোর ফুল, ঢোনা সব তুলে নিয়ে পাশের শুকনো ডোবাটায় ফেলে আসে। এসে আবার ধুতি ছেড়ে লুঙ্গিসপরে নিয়ে পুরনো চেহারায় ফেরে। 
   সব শেষ হতে না হতেই রসবালা রান্না করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ছোট ছেলেটাকেই তার ভয়। খিদে পেলে মাথা খারাপ করে দেয়। আজকে সবাই খেতেও বসবে তাড়াতাড়ি। লোভনীয় খাবার। সারাদিন ভাত ছাড়া থাকার পর রাতে এখন মূলা-বেগুন আলু ফূলকপি দিয়ে ধনেপাতার তরকারি আর সিদলের আওটা। সারাবাড়ি রান্নার সুগন্ধে ভরে উঠল ধীরে ধীরে। রান্নাঘরে পিঁড়ি ফেলার আওয়াজ হতেই বাপ-বেটা তিনজনে সচকিত হয়ে উঠল। খেতে বসে বিষেণ বলে,
   "এখেনা আলু ভাজির পালু হয় মা!"
ওর বাবা ধমক দেয়,
  "নে ওইলায় খা। এতলা শাক আন্দিসে তাও আরো আলু ভাজা নাগে!"
বিষেণ কিছু বলে না। মুখ নিচু করে খেতে খেতে একটু পরে আবার বলে সিদোলোত কোনেক মাগুর মাছ হলে ভাল হইলেক হয়। হেনা মা?"
রসবালা মাথা নাড়ে। নিঃশ্বাস ফেলে বলে,
     "চাইলে আরো কোটে পাইস বাপ। ধনী মানষিলা না খাচে। আজি মাছ দিয়া সিদল, কালি মসং খাবে। হামা অত কোটে পাই। মাছ কয়টা শুকাসুং দেখি সিদোলকোনা খাবার পাছেন।"
কথা বলতে বলতে রসবালা সবাইকে বেশি করে করে সিদল পাতে দেয়। সুষেণ এবার রেগে যায়,
         "তামাল্লায় যে পশ্যিছিৎ। তুই কি খাবু তুই? তোক খাবার নানাগে। হামাকে সবলায় দেক। দেখং, তোর আছে না নাই!"
রসবালা হেসে ফেলে। হাতাটা আড়াআড়ি রেখে বাটিটা ছেলেকে দেখায় যাতে ঠিকমতো পরিমাণ বুঝতে না পারে। মুখে বলে,
    "আছে না, থুসুং। কতলা আছে। এইলায় মোর মেলা।"
সুষেণের বাপ টিপ্পনি কাটতে ছাড়ে না -
     "বাপটা যে দিনমনটায় কামলার মতোন খাটি, করি মিলি আনে, হুদি টান নাই। খালি মাওটারে চিন্তা। মোর এখেনা বেটি নইল হয়, কতয় মোর জ্বালা কইল্লেক হয়। এইলা বেটা হয়া উয়ার মা-রে ভাল হইল।"
রসবালা হেসে বলে,
   "মাওটার টান না টানিবে তে কি তে। ছাওয়াটা মোর বাচ্চাকাল থাকি ওই মতোন। তোমরা এলা ঝালা খাইলে হোবে?"
সুষেণ এসব বাড়তি কথার উত্তর দেয় না। মার দিকে তাকিয়ে বলে,
   "মোর থালিখানোত বইস মা তুই।"
সবাই তাকিয়ে দেখল এক কোণে যত্ন করে মার জন্য সিদলের আওটা রেখে দিয়েছে সুষেণ। হাঁড়ি থেকে নিজের জন্য ভাত নিতে নিতে গর্বে আনন্দে রসবালার বুক ভরে ওঠে। সেদিকে তাকিয়ে সুষেণের বাবাও একটু মুচকি হেসে কুঁয়োপাড়ের দিকে যায়।

.........................................................
ন্যালটেঙ - লন্ঠন
একোড - রেকর্ড। মজা করে বানানো শব্দ। আগে গ্রামোফোন রেকর্ড আর রুটি একই রকম গোল গোল বলে লোকে রুটি রেকর্ড, গ্রাম্য উচ্চারণে একোড বলত।
সিদোল - রাজবংশী ট্রাডিশনাল খাবার। সুঁটকির সঙ্গে কচুর ডাঁটি সাম-গাইনে  মিশিয়ে সর্ষের তেল হলুদ মাখিয়ে তৈরি করা হয়।
..................................................................
                                       ছবি : সুজিত রায়

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri