সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

26-November,2022 - Saturday ✍️ By- বিমল দেবনাথ 440

শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

শালসিঁড়ি-২১
বিমল দেবনাথ
^^^^^^^^^^^^^

- বৌদি, অংশুর ময়ূখের খাওয়া হয়ে গেছে। ওরা অংশুর রুমে গেল। আমি গেলাম, অনেক রাত হল। 

মিঠু বেরিয়ে যায়। বিকাশ অংশুর রুমের দিকে যায় - স্রোতের টানে। এক নদীর অনেক স্রোত, কেউ বোঝে কেউ বোঝে না। বিকাশ চলে যায় নৌকার মতো। বিকাশ চলে যাবার পর মাধুরী বয়ে চলে নদীর বুকের বালির মতো। 
- অপরূপা আমার আর ভালো লাগে না। হাঁপিয়ে উঠেছি।
- কেন কী হয়েছে? 
- অপূর্ব বেশ কয়েক বছর ধরে কেমন যেন অন্য রকম হয়ে যাচ্ছে।  
- তুই একটু বেশি ভাবছিস। পুরুষ মানুষ এই বয়সে কাজ করবে না তো কখন করবে। 
- না, তোকে ঠিক বোঝাতে পারছি না। 
- আমাকে আর বোঝাতে হবে না। অপূর্ব আসতে দেরি করছে বলে চোখে হারাচ্ছিস। 
- চোখে হারাব কি, ও তো এখন আমার চোখে চোখ রেখে কথা বলে না। কয়েক বছর আগেও আমি ওর চোখে সারা বিশ্ব দেখতাম; ও আমার চোখে সাগর দেখে ডুব দিত...

মাধুরীর চোখ হঠাৎ হাজার তারায় উজ্জ্বল হয়ে উঠল। শরতের শিউলি ফুলের সরলতা নিয়ে মাধুরীর চোখ দুটো নেচে নেচে বলে উঠল-
- এক দিন কী হয়েছিল জানিস! আমি আর অপূর্ব দুজন একে অপরের চোখে কতক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। কখন যেন ময়ূখ এসে আমাদের মাঝেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে। আমরা বুঝতে পারিনি। ঘোর কাটল ময়ূখের কান্না শুনে। আমি বললাম, কী হয়েছে বাবা, কাঁদছ কেন। সে বলে, কখন থেকে তোমরা মুখোমুখি স্থির বসে আছ একে অপরের দিকে তাকিয়ে। নড়াচড়া করছ না। আমি ভাবলাম কী হলো তোমাদের। আমি ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে হাসিতে লুটিয়ে পড়লাম। তখন অপূর্বর মুখটা লজ্জায় যা হয়েছিল না - দেখার মতো!
মাধুরী হাসতে গিয়ে হাসতে পারল না। অপরূপা প্রদীপের সলতে বাড়িয়ে আলো বাড়ানোর মতো চেষ্টা করল, মাধুরীকে হাসাতে। তবু মাধুরী এখন আর হাসে না আগের মতো। নারী পুরুষের সম্পর্ক শাল, চাপের মূলের মতো - মাটির তলে যোগাযোগ থাকে রসে রসে, লবণে লবণে। কোথাও রসে বা লবণের খামতি হলে ভাষা ফুটে ওঠে পাতায়। অপরূপা বুঝতে পারে মাধুরী যেন কত কথা লুকায় চোখের পাতায়। অপরূপা বলে 
- কী হয়েছে মাধুরী আমাকে খুলে বল। তুই তো শালগাছের মতো সংসারটা ধরে রেখেছিস। তুই ভেঙ্গে পড়লে হবে? অপূর্ব ঠিক এসে যাবে। তুই তো বলেছিলি, ওর সময় হলে ঠিক চলে আসবে। 
- ওর আর এখন সময় হয় না অপরূপা। তুই বুঝবি না কত মেয়েদের কত কথা এমনি এমনি বলতে হয় মাকাল ফলের মতো। 
- মাধুরী!!!
- জানিস আমার কত দিন এক সাথে শুই না। এখন ময়ূখ আমার তন্দ্রা আর অতন্দ্রিলার সাথী। অপূর্ব প্রায়ই অনেক রাত করে বাড়িতে আসে। মাঝে মধ্যে মদের মাত্রা এত বেশি থাকে যে বাড়িতে এসে বমি করে। সকালে দোলা মাসির দয়ার দৃষ্টি আমাকে খুব ছোট করে দেয়। সারা দিনরাত শুধু টাকা আর টাকা। টাকা যে একটা মানুষের চরিত্রকে এই ভাবে টলিয়ে দিতে পারে আমি অপূর্বকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। তারপর আজ যদি ও একই অবস্থায় তোদের বাড়িতে আসে তাহলে বিকাশের কাছে আমার অবস্থাটা কী হবে বল।  
- বারে বিকাশ তো তোর খুব ভালো বন্ধু। ওকে সব খুলে বলতে পারিস। ও যদি কিছু করতে পারে। 
- অপরূপা, এক জন পুরুষের সাথে বিয়ের আগের বন্ধুত্ব আর বিয়ের পরের বন্ধুত্বে অনেক তফাৎ। 
- তফাৎ, না? দাঁড়াও দেখাচ্ছি। বিকাশ বিকাশ, শোন, এদিকে এসো। মাধুরী ডাকছে। 
- বল। কী বলবে।
- কী করছিলে এতক্ষণ।
- আর বলো না। ময়ূখ চেপে ধরেছিল আমার হাওয়া থেকে জল খাওয়া গল্পটা শুনবে বলে। বুঝিয়ে এলাম যে আজ অনেক রাত হয়েছে পরে বলব।
- শোন তোমার বন্ধুর কথা। বলে কিনা পুরুষ বন্ধুর সাথে বিয়ের আগে এক রকমের সম্পর্ক আর বিয়ের পর অন্য রকমের সম্পর্ক। 
বিকাশ মাধুরীর দিকে তাকায়, মাধুরী অপরূপা বিকাশের দিকে তাকায়। ওরা যেন এখন বালিহাঁস। বিকাশ ভাবে- শালসিঁড়ি কী বিচিত্র। জলপাই জাম আমড়ার ফুল ফোটে কিশলয়ের কোলে কমল কুসুম থেকে আবার গান্টে গাছের ফুল ফোটে গাছের গায়ে গায়ে- কঠিন বাকলে। মেয়েদের বিয়ে হলে কত কথা লেগে যায় লাগিয়ে রাখে শরীরে গান্টে ফুলের মতো মাদারের কাঁটার মতো। বাঁচতে চায় পৃথিবীর সুখ দুঃখগুলোর সাথে। মানুষ কী এমনই হয়- আপন না থাকলে বিশ্ব আপন হয়- না হলে হয় পাগল। একটু আগেই তো ও সারা বিশ্বের হিসাব টেনে এনে আমাকে  কেমন জব্দ করেছিল!  ও কী বলতে চেয়েছিল - জবরদখলে মানুষ কেন চুপ থাকে ? জবরদখল কী শুধু জমির হয়? সম্পত্তির হয়?  মনের কী জবরদখল করা যায়? সম্পত্তির ব্যাপ্তি সমুদ্রের মতো হলে কি সব নোনা হয়ে যায় সমুদ্রের জলের মত। তাহলে কিসের এত লড়াই...  শালগাছেরা তো বেঁচে থাকে এক সাথে এক মাটিতে। 
বিকাশ নিজেকে নিজে ঝাঁকিয়ে চাঙ্গা করে নেয় নৃত্যরত ময়ূরের মতো। চোখে মুখে হাসির ঝলক এনে টাইটানিকের নায়ক জ্যাক ডসনের মতো দুই হাত খুলে বলে-
- মাধুরী বল কী বলবে।  
অপরূপা হাসিতে লুটোপুটি খায়। মাধুরীর চোখ থেকে জল পড়ে- বটের পাতার মতো, কেউ দেখে না। বিকাশ মনের কথা মনে রেখে দেয় কচ্ছপের ডিমের মতো। শরীর হালকা করে ভাসিয়ে দেয় জলে। বলে - 
- শোন তোমাদের একটা থ্রিলিং সত্য ঘটনা বলি। ততক্ষণে অপূর্ব চলে আসবে আর মাধুরীর সময় কেটে যাবে। 
মাধুরী আমফান বুকে নেয় ম্যানগ্রোভের মতো। শালসিঁড়ি বেঁচে থাকে, বাঁচিয়ে রাখার জন্যে। মাধুরী মুখ মোছার অছিলায় চোখ মোছে চোখ তুলে বলে,  
- বল, তোমার গল্প শুনি। 
- তুমি আর তোমার ছেলে একদম এক। 
- বারে! এক কেন হবে না। মা আর ছা কী আলাদা হয়- অপরূপা বলে, মাধুরী ম্লান হাসে। 
-শোন, আমার এক সোর্স আছে নরহরি। একদিন বলে - বর্ডারের কছে একটি বাগান বাড়ি আছে, সেখানে নাকি নানা সন্দেহজনক কাজকর্ম হয়। বন, বন্যপ্রাণ চালানের ব্যাপারও থাকতে পারে। একদিন যাবেন নাকি স্যার। 
আমি বললাম- যাব মানে অবশ্যই যাব। সেই মতো একদিন নরহরিকে নিয়ে গেলাম বর্ডারে। 
দেখলাম-রাস্তা থেকে পাঁচশ মিটার দূরে বেশ বড় একটি জংলী বাগান বাড়ি। চারপাশে ইঁট-সিমেন্টের শক্তপোক্ত উঁচু দেয়াল। তার উপর  ব্লেডতারের  গোল গোল বেড়া। বর্ডারের  রাস্তার যেখান থেকে বাগানবাড়ির রাস্তা শুরু হয়েছে সেখানে বসানো হয়েছে এক মস্ত গেট।  
- আচ্ছা। মাধুরী বলে।
নরহরিকে বললাম এ যে চিনের প্রাচীর। ভিতরে কী করে যাওয়া যাবে। নরহরি কয়েক বার মস্ত গেটটাকে ধাক্কা মারে। কোন সাড়া সাড়া শব্দ পাওয়া যায় না। নরহরির হম্বিতম্বিতে কিছু কৌতূহলী পথচারী দাঁড়িয়ে পড়ে। জানতে চাইলে বলে, মালিক না এলে বা মালিকের আগাম খবর দেওয়া না থাকলে এই গেট খোলে না। আমি বললাম - তোমরা কি বুঝতে পার কখন কখন এখানে লোকজন আসে। উত্তর আসে, বোঝা যায় তো। যখন লোকজন আসে তখন ঐ বহুতলের ঘরে আলো জ্বলে, না হলে গেটের আলো দুইটি ছাড়া পুরো বাড়িটা অন্ধকারে ডুবে থাকে। আমি বললাম – নরহরি, চল পরে আর একদিন আসবো, মালিকের সাথে যোগাযোগ করে। পিকনিক করার জন্য এটা বেশ ভালো জায়গা। বিকাশ মনের কথা গোপন করে ঝিনুকের মুক্তোর মতো। জড়ো  হওয়া মানুষগুলোর কৌতূহল চলে যায়, নিরুৎসাহী হয়ে চলে যায় যে যার দিকে। আমি নরহরিকে বললাম - নরহরি এবার খেয়াল রাখবে কখন এই বাগানবাড়িতে আলো জ্বলে।
 মাধুরী অপরূপা বলে-  তারপর তারপর...
-  তারপর একদিন নরহরি ঠিক খবর দেয়। আমি নির্মলবাবুকে সাথে নিয়ে চলে যাই সেই বাগান বাড়িতে। 
- ঢুকতে দিল? ফোন নম্বর পেলে কী করে।
- শোন সব কাজ সবার জন্য নয়। সোর্সের কাজ সোর্স করেছে; আমি আমার কাজ এই কয়দিনে করে রেখেছিলাম। ফোন করতে কিছুক্ষণের মধ্যে গেট খুলে গেল। আমি বললাম, এন্ট্রি রেজিস্ট্রার কোথায়। দারোয়ান বলল, আমাদের কোনো রেজিস্ট্রার নাই সাব। বললাম, মালিক কোথায়। বলে -ভিতরে সাব। আমি বললাম, হরি গাড়ি স্টার্ট কর। ভিতরে চল। 
বাগান বাড়ির ডিফিউসড লাইটে বোঝা যাচ্ছে চার দেওয়ালের ভিতরে রাস্তার পাশে লাগানো হয়েছে নানা বিদেশি গাছ। ফাঁকা জমিতে নানা ধরণের গাছগাছালি। বাইরে থেকে যতটা বড় মনে হয় ভিতরে আসার পর বোঝা গেল বাগান বাড়িটি তার থেকে  অনেক বেশি বড়। জায়গাটা যেন একটা ছোট খাটো বন। অনেকটা আসার পর একজন গার্ড বাঁহাত দিয়ে রাস্তা দেখিয়ে দেয়। গাড়ি ঢুকে যায় মাটির তলায় একটা পার্কিং জোনে। গাড়ি থেকে  নামার পর একজন গার্ড এমনভাবে সাদর অভ্যর্থনা জানালো যে নির্মলবাবু গলে গেল। নির্মলবাবুকে আপাদমস্তক দেখার সাথে সাথে আবার বুক টান টান করে দাঁড়ায়। ভিতরে ঢুকে দেখি আলো ছায়ার মধ্যে চলছে খুব জোরালো মিউজিক। তামাকের গন্ধ মদের মাদকতা আর উষ্ণ যুবতি নারীর চটুল হাসি যেন মিউজিককে করে তুলছে অদম্য মোহনীয়। একজন মধ্য বয়সী পুরুষ আমাকে বলে - বসুন বসুন। গান বাজনা শুনুন। তারপর কথা বলব। আমি বুঝতে দিই না, আমি  কে বা কী। বললাম আজ হবে না একটা অন্য কাজে আছে। এর মধ্যে তো পিকনিক করতে আসব। তখন বেশ জমিয়ে আড্ডা মারা যাবে।     নাম জিজ্ঞাসা করতে বলে- ভুজঙ্গ বিহারী রায়। আমি বুঝতে পারলাম লোকটি মিথ্যা বলছে। কিন্তু ওকে বুঝতে দিলাম না। নরহরির সন্দেহ আমার বিশ্বাসে পরিণত হলো। বললাম, এখানে পিকনিক করতে কত খরচ হবে। ভুজঙ্গ কী বলল কত দাম বলল মিউজিকের শব্দে কিছুই বোঝা গেল না। আমি বললাম , ঠিক আছে। আমি পরে কথা বলে নেব। ভুজঙ্গ বলে- ঠিক আছে। আজ আমি একটু ব্যস্ত, এই পার্টির জন্য। আমি বললাম, একটা কথা বলব?  ভুজঙ্গ উত্তর দেয়- কী বলুন। আপনার বাগানটি ঘুরে দেখব? নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই- ভুজঙ্গ আনন্দে বলে। আর একটা কথা, আপনার বাগানবাড়ির এন্ট্রি রেজিস্ট্রার নেই, ওটা করিয়ে রাখবেন। অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই পাবেন। আমি বাগান ঘোরার নামে বাগান বাড়িটির নক্সা বানিয়ে নিই।  
মাধুরী বলে - কেন? 
- ওটাই তো অপারেশনের প্রথম ব্লু- প্রিন্ট। 
ব্লু প্রিন্ট কথাটি শুনে মাধুরীর মনে পড়ে যায়- অপূর্ব এক দিন ব্লু প্রিন্ট ব্লু প্রিন্ট বলে চিৎকার করছিল। বলছিল- আমাকে সরানোর ব্লু প্রিন্ট হচ্ছে। আমিও দেখে ছাড়ব। বলছিল- তুমি সাপ হলে আমিও নেউল। আচ্ছা ভুজঙ্গ মানে তো সাপ.... মাধুরীর বুকটা টন টন করে।‌ বলে- 
- বিকাশ তোমরা কী ব্লু-প্রিন্ট করেছিলে??
- বন্য প্রাণী শিকারী ধরার।
- ধরেছিলে?
- ধরেছিলাম, তিন মাস ট্রেকিং করে। 
বাব্বা! কী করে ধরলে? কাকে ধরলে? কিসের জন্যে ধরলে?  অপরূপা মাধুরী  অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে। বিকাশ বলে- বলব আর এক দিন যুত করে। আজ বড় মনটা আনচান করছে – অপূর্বর জন্যে। বিকাশ অপূর্বকে ফোন করে, অপূর্বর ফোন বেজে যায়, ফোন ধরে না। মাধুরী উৎকন্ঠায় জিজ্ঞাসা করে- কী, অপূর্ব  কিছু বলল। বিকাশ বলে না কিছু। মাধুরীর মন যেন কেমন কু গায়। সাপ ভুজঙ্গ ব্লু-প্রিন্ট ইত্যাদি শব্দগুলো তেঁতুল বিছার মতো চরে বেড়ায় যেন মেঝেতে। মাধুরীর মন ছটফট করে, কত কী খারাপ কথার সাথে নিজের ভাবনা মেলাতে থাকে- জেলের জাল বোনার মতো। জেলেরা তো মাছের ধরণের উপর জালের গিঁট দেয়। মাধুরীর আশঙ্কার শব্দের সাথে বিপদের ভয় গিঁট মারে বুকে-মনে। 
মাধুরী জিজ্ঞাসা করে- বিকাশ, শুক্রাকে কী সত্যি হাতিতে মেরেছিল? ময়না তদন্তের রিপোর্ট কী এসেছিল? বিকাশ বলে- ওহো, তোমাদের বলা হয়নি?  ময়নাতদন্ত কী – শুক্রার মৃত্যুর কারণ পরের দিন গাছে ঝুলে থাকে , মরা মাকড়সার মতো। মরে গিয়েও জন্ম দিয়ে যায় আরো কত মাকড়সা- আরো কত জাল। অপরূপা বলে- সেটা কী? বিকাশ বলে- মাকড়সা নিজে মরে গিয়ে সন্তানের জন্ম দেয়। সোমারি মরে গিয়ে একবার অন্তত হাতির মান রাখে। মাধুরী বলে- সে কি করে? বিকাশ বলে- সোমারি হিরামতির কাকিমা। সেই দিন রাতে  হিরামতি যখন পালিয়ে যেতে অস্বীকার করে,  শুক্রা সোমারির কাছে গিয়ে দুঃখ করছিল একান্ত ভাবে। সোমারি শুক্রাকে ধরে আদর করে সান্ত্বনা দিচ্ছিল। তখন সোমারির  মাতাল স্বামী ওদের রাতের বেলায় ঐ অবস্থায় দেখে হল্লা জুড়ে দেয়। চাবাগানের সান্ডা গুন্ডারা এসে জড়ো হয়। শুরু হয় নানা মুখরোচক গাল গল্প। অনাহারের দারিদ্র্যের চা বাগানে যে কামনা বাসনা এক মাত্র বিনোদন। এই বিনোদনে কোন ভাগ হয় না। ভুল বোঝবুঝিতে কত প্রাণ যায় চা বাগানের লাইনে। সে রাতে কিছু মদমত্ত মাতাল বলি দেয় শুক্রাকে হাতির নামে।  সোমারি মরে গিয়ে  যেমন অপমানের হাত থেকে মুক্তি নেয় তেমন আবার চা বাগানের নানা ধরণের মৃত্যুর  অনেকগুলো জালকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। অপরূপা বলে- কী সব্বনাশ!!! মাধুরী নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে প্রহর গোনে… কখন অপূর্ব ফিরে আসবে সুস্থ শরীরে সুস্থ মনে। বিকাশ বলে- মাধুরী, অপূর্ব এখন এমন কী করে ! তখনই মাধুরীর ফোন বেজে উঠে...হ্যালো হ্যালো মাধুরী বলছেন। শুনুন আপনার স্বামী গাড়ির সাথে এক্সিডেন্ট করেছে- বর্ডারের কাছে…

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri