সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
35.চা-ডুবুরী-৩৫/সুকান্ত নাহা

35.চা-ডুবুরী-৩৫/সুকান্ত নাহা

34.চা-ডুবুরী-৩৪/সুকান্ত নাহা

34.চা-ডুবুরী-৩৪/সুকান্ত নাহা

33.চা-ডুবুরী-৩৩/সুকান্ত নাহা

33.চা-ডুবুরী-৩৩/সুকান্ত নাহা

32.চা-ডুবুরী-৩২/সুকান্ত নাহা

32.চা-ডুবুরী-৩২/সুকান্ত নাহা

31.চা-ডুবুরী-৩১/সুকান্ত নাহা

31.চা-ডুবুরী-৩১/সুকান্ত নাহা

30.চা-ডুবুরী-৩০/সুকান্ত নাহা

30.চা-ডুবুরী-৩০/সুকান্ত নাহা

29.চা-ডুবুরী-২৯/সুকান্ত নাহা

29.চা-ডুবুরী-২৯/সুকান্ত নাহা

28.চা-ডুবুরী-২৮/সুকান্ত নাহা

28.চা-ডুবুরী-২৮/সুকান্ত নাহা

27.চা-ডুবুরী-২৭/সুকান্ত নাহা

27.চা-ডুবুরী-২৭/সুকান্ত নাহা

26.চা-ডুবুরী-২৬/সুকান্ত নাহা

26.চা-ডুবুরী-২৬/সুকান্ত নাহা

25.চা-ডুবুরী-২৫/সুকান্ত নাহা

25.চা-ডুবুরী-২৫/সুকান্ত নাহা

24.চা-ডুবুরী-২৪/সুকান্ত নাহা

24.চা-ডুবুরী-২৪/সুকান্ত নাহা

23.চা-ডুবুরী-২৩/সুকান্ত নাহা

23.চা-ডুবুরী-২৩/সুকান্ত নাহা

22.চা-ডুবুরী-২২/সুকান্ত নাহা

22.চা-ডুবুরী-২২/সুকান্ত নাহা

21.চা-ডুবুরী-২১/সুকান্ত নাহা

21.চা-ডুবুরী-২১/সুকান্ত নাহা

20.চা-ডুবুরী-২০/সুকান্ত নাহা

20.চা-ডুবুরী-২০/সুকান্ত নাহা

19.চা-ডুবুরী-১৯/সুকান্ত নাহা

19.চা-ডুবুরী-১৯/সুকান্ত নাহা

18.চা-ডুবুরী-১৮/সুকান্ত নাহা

18.চা-ডুবুরী-১৮/সুকান্ত নাহা

17.চা-ডুবুরী-১৭/সুকান্ত নাহা

17.চা-ডুবুরী-১৭/সুকান্ত নাহা

16.চা-ডুবুরী-১৬/সুকান্ত নাহা

16.চা-ডুবুরী-১৬/সুকান্ত নাহা

15.চা-ডুবুরী-১৫/সুকান্ত নাহা

15.চা-ডুবুরী-১৫/সুকান্ত নাহা

14.চা-ডুবুরী-১৪/সুকান্ত নাহা

14.চা-ডুবুরী-১৪/সুকান্ত নাহা

13.চা-ডুবুরী-১৩/সুকান্ত নাহা

13.চা-ডুবুরী-১৩/সুকান্ত নাহা

12.চা-ডুবুরী-১২/সুকান্ত নাহা

12.চা-ডুবুরী-১২/সুকান্ত নাহা

11.চা-ডুবুরী-১১/সুকান্ত নাহা

11.চা-ডুবুরী-১১/সুকান্ত নাহা

10.চা-ডুবুরি-১০/সুকান্ত নাহা

10.চা-ডুবুরি-১০/সুকান্ত নাহা

9.চা-ডুবুরি-৯/সুকান্ত নাহা

9.চা-ডুবুরি-৯/সুকান্ত নাহা

8.চা-ডুবুরি-৮/সুকান্ত নাহা

8.চা-ডুবুরি-৮/সুকান্ত নাহা

7.চা-ডুবুরি-৭/সুকান্ত নাহা

7.চা-ডুবুরি-৭/সুকান্ত নাহা

6.চা-ডুবুরি-৬/সুকান্ত নাহা

6.চা-ডুবুরি-৬/সুকান্ত নাহা

5.চা-ডুবুরি-৫/সুকান্ত নাহা

5.চা-ডুবুরি-৫/সুকান্ত নাহা

4.চা-ডুবুরি-৪/সুকান্ত নাহা

4.চা-ডুবুরি-৪/সুকান্ত নাহা

3.চা-ডুবুরি-৩/সুকান্ত নাহা

3.চা-ডুবুরি-৩/সুকান্ত নাহা

2.চা-ডুবুরি-২/সুকান্ত নাহা

2.চা-ডুবুরি-২/সুকান্ত নাহা

1.চা-ডুবুরি-১/সুকান্ত নাহা

1.চা-ডুবুরি-১/সুকান্ত নাহা

07-December,2022 - Wednesday ✍️ By- সুকান্ত নাহা 379

চা-ডুবুরী-২০/সুকান্ত নাহা

চা-ডুবুরি : পর্ব-২০
সুকান্ত নাহা
^^^^^^^^^^^^^^^^

অচেনা বৃষ্টিধারা

নীলপাহাড়ি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে । ধীর অথচ দৃঢ়প্রত্যয়ী ছন্দে।  বাগান খুলতেই, নিয়ন্ত্রণহীন যে পাতাগুলো তরতরিয়ে বেড়ে উঠেছিল সেগুলো ছেঁটে ফেলা হয়েছে। সেখানে মাথা তুলছে কচি পাতা। সবুজের ছোঁয়াচ লেগে বাগানের শ্রী ফিরছে একটু একটু করে। অথচ যে হতভাগ্য পাতাগুলো কাটা পড়লো, শরতে সেগুলোই শেষরাতে ফিচেল-নাগর বৃষ্টির ভেজা খুনসুটি আর দিনমান ঠাঠালো রোদ্দুরের মিঠেকড়া সোহাগে নতুন করে যেন আরেক পোঁচ যৌবন ফিরে পেয়েছিল। গতরসুখের আনন্দে বেড়ে ওঠা চিকন পাতাগুলো চেয়েছিল যন্ত্রের তীব্র নিষ্পেষণে নিজেদের সঁপে দিয়ে চায়ের কাপে 'অটাম-ফ্লাশ' এর সুগন্ধ ছড়াতে । কিন্তু বেড়ে ওঠার আনন্দ  থিতিয়ে যেতেই অবাক হয়ে তারা দেখল কেউ এলো না তাদের তুলে নিতে। দিনের পর দিন নিরাপত্তাহীন খোলা আকাশের নিচে ওরা পড়ে রইলো  মন খারাপ করে। এই সুযোগে ওদের  কচি ডাগর গতর বেয়ে নির্ভয়ে  হামাগুড়ি দিয়ে উঠতে লাগল জংলি মেকানিয়া লতা, আর আগ্রাসী টেরিডোফাইট আগাছা । আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে  ধরে মাসের পর মাস কামুক পরগাছাগুলো নিরন্তর ধর্ষণ করে গেল ওদের। ধ্বস্ত হল ওদের যৌবন।  ধূসর, রসহীন, পাতাগুলো দেখে মানুষ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে লাগল ' হায় রে, সোব পাতা বাঞ্জি হোই গেলাক...' কেউ বা বললো, ' উপায় ছৈন হো, আবো কাটেরই ফেকনু  পড়ছ... '।  বুড়িয়ে যাওয়া কাঠিসার পাতাদের চা-তল্লাটের মানুষ বলে 'বাঞ্জি' পাতা । 'বাঞ্জি' হয়ে যাওয়া পাতার কোনও কদর নেই। গতি নেই কেটে ফেলা ছাড়া। তবে মুদ্দোফরাস চালে কাটলেই তো আর হল না। সে কাটারও ব্যাকরণ আছে। রীতিনিয়ম আছে । ঠিক মতো কাটা না হলে বসন্তের ছোঁয়ায় গর্ভঘুম ছিঁড়ে যখন মাথাচাড়া দেবে সবুজ শিশু পাতা , সেসময় পাতা আসবে না।  ভরা ফাগুনে আদিগন্ত ন্যাড়া ডালপালা দেখতে দেখতে ঢেকে যায় কিশলয়ে। সেই কিশলয় বড় মহার্ঘ। চা-বলয়ে যার আদুরে নাম 'ফার্স্ট-ফ্লাশ'। 

তাই এমনভাবে ডালপালা কাটতে হবে  যাতে 'ফার্স্ট-ফ্লাশ' ফসকে না যায়। সুগন্ধি ফার্স্ট-ফ্লাশ মানেই তো এক ধাক্কায় সুনামের বাজারদখল। বছরভর ভাল দাম পাওয়ার আশ্বাস। ফার্স্ট-ফ্লাশ মানেই তো চড়া দামে বিক্রির সুযোগ। আর ফার্স্ট-ফ্লাশ মানে হলো সুনামের ফ্লেভারটুকু থাকতে থাকতে  যতটা পারা যায় বাজারের মাখনটুকু তুলে নেওয়া।  সঙ্গত কারণেই তাই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রবল চাপ ছিল। চটজলদি পাতা চাই। চাপ খেয়ে ম্যানেজারবাবুটি নড়েচড়ে বসেন।  ঠেলা দেন অধস্তন সহকারীদের। তারা হাতে ষোল আর আঠারো ইঞ্চির কলমছুরি বাগিয়ে ছোটেন সর্দারদের পাতা ছাঁটার নমুনা দেখাতে। নমুনাই যে আসল। ওটা গড়বড় হলেই তো সব খেলা মাটি। নমুনা বুঝে নিয়ে সর্দাররা ডাল-কাটিয়েদের  পইপই করে বুঝিয়ে দেয় ,কেবল বেড়ে ওঠা বেয়ারা  ডালপালাগুলোই  মাথা বরাবর সমান করে কাটতে হবে। যাতে 'টেবল-টপ'অর্থাৎ গাছের চাঁদি বরাবর লেভেল যেন সমান থাকে। চালু লব্জে  যাকে বলে 'হাওয়া কলম' । অর্থাৎ ছুরি চলবে হাওয়া চিরে ওপর ওপর। কোনমতেই তা গভীরে যাবে না। গভীরে গেলেই পাতা আসতে দেরি হয়ে যাবে।  আর দেরি হওয়া মানেই  এ যাত্রায় মাখন ফস্কে যাওয়া। 

যদিও ওসব মাখনের গপ্পে জোহান এক্কার কোনও আগ্রহ নেই।  মাস গেলে মাইনেটুকু ছাড়া বরাদ্দ পাঁচশো গ্রাম কালো-সোনার গুঁড়ো, ওটুকুই কাজের বিনিময়ে বাড়তি হকের প্রাপ্য। আগে জুটত চারশো। সর্টিং-সর্দার হওয়ার পর একশো গ্রাম বেড়েছে। তাতেই সে খুশি ।  বয়সের ঘোড়া তিন কুড়ি ফলকের দিকে ছুটছে। সময় হলেই যে কোনওদিন ওপরওয়ালা থেমে যাওয়ার কাগজ ধরিয়ে দেবে ।  

কাগজ হাতে পেয়ে জোহান বড়জোর করজোড়ে আর্জি জানাবে, ' আজ্ঞে হুজুর,  আমার পাওনাগন্ডা? '  এযাবৎ সকলেই যে আশ্বাস বাণী শুনে এসেছে তাকেও সেটাই শুনতে হবে, 'আরে কাহেকো চিন্তা করতা হ্যায় জোহান,  জলদি হি সবকুছ মিল যায়েগা....আব কুছদিন ঘর মে রহকে আরাম তো কর লো...'। কিন্তু আদতে সময়মতো কিছুই হাতে আসে না। পি. এফ, গ্র্যাচুইটির টাকা পাওয়ার আশায় দিন গুনতে গুনতে অনেকেরই  ঠাঁই হয় সাত হাত মাটির নিচে কিংবা ময়নাখোলার কুলকুল স্রোতে। 

কাঠমিস্ত্রি  নকুল মন্ডল যেমন, পাওনা টাকার জন্য দরবার করতে করতে শেষমেশ হাল ছেড়ে দিয়ে একদিন বলেছিল, ' কি আর করা যায় কন...টাকার জইন্য ম্যানেজরের লগে তো আর মারামারি করতে পারি না...সবই হৈল গিয়া আমাগো কপাল। কপালের নাম গুপাল।'' আসলে  নকুল হাড়ে হাড়ে বুঝেছিল তার ননীচোরা 'গুপাল' শুধু ননীটুকুই চেটেপুটে খেতে শিখেছে। সময়মত হাত উপুড় করতে তার বেজায় অনীহা । যে কারনে জোহানদের হকের টাকা কাটা হয়, জমা পড়ে না যথাস্থানে। জীবনভর গোপাল সেবান্তে  প্রসাদী কৃপার গুড়েও নিতান্তই বালি। নীলপাহাড়িতে এ গল্প যেন দিনকে দিন গা সওয়া হয়ে যাচ্ছে ।  ইউনিয়ন নেতারাও কেমন যেন ন্যাতানো পাঁপড়ের মত মিইয়ে গেছে। ভিন্ন মতবাদী চারটে ইউনিয়ন জোটবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদের রাস্তায় যেতে দ্বিধাগ্রস্ত। সিঁদুরেমেঘ দেখে চুপ থাকে তারা। 

তবু 'বদলি-গুনতি' অর্থাৎ ভদ্র ইংরিজিতে যারে কয় 'রিপ্লেসমেন্ট' সেটুকু অন্তত পাওয়া যায় নিয়মমাফিক। জোহানের দুই ছেলের একজন সরকারি চাকুরে। আরেকজনকে  বাড়ির সামনে ছোট একটা দোকান খুলেছে। একমাত্র মেয়েরও বিয়ে হয়ে গেছে। বদলি-গুনতিটা কাকে দেওয়া যায় সে নিয়ে কিঞ্চিৎ দুর্ভাবনায় রয়েছে জোহান। ছোটছেলে ব্যবসা ছাড়বে না। স্ত্রীরও বয়স হয়েছে। কদ্দিন  আর পারবে কামাই করতে। এক হয় ছোট ছেলেকে বিয়ে দিয়ে ঘরে 'বহুরিয়া' এনে তাকে যদি কাজটা দেওয়া যায়। আগাম এসব চিন্তা ভাবনাগুলো পাতাচোষা  লুপার পোকার মত মাথায় এঁটে বসে থাকে। না ভাবলে উপায়ও যে নেই। হঠাৎ করে বসে গেলে সংসারে একটা বড় আয়ের উৎস যে বন্ধ হয়ে যাবে । পাওনা টাকা কবে আদায় কবে হবে তারও তো কোনও ঠিক নেই। 

তাই ওসব ননী মাখনের বাজারদর নিয়ে বিন্দু মাত্র রুচি নেই জোহানের। বরং কোনটা বিপি, কোনটা বিওপি, কোনটা ও.এফ আর কোনটাই বা বিওপি-এসএম, এসব ও ভাল বোঝে। সর্টিং মেশিনের চালুনি ভেদ করে কোন গ্রেডের কতটা মাল বেরোলো সেগুলো খাতায় টুকে রাখা, তারপর লোক দিয়ে সেগুলো প্রিন্টেড ব্যাগে প্যাকিং করানো থেকে শুরু করে ব্যাগের মুখ সেলাই করিয়ে চালানের জন্য থাকে-থাকে সাজিয়ে রাখা সব কাজ তাকেই করাতে হয়। এমনকি তৈরি চা চালানের সময় গুনে গুনে চালান-গাড়ি তে তুলে দেওয়া ইস্তক যাবতীয় কাজের গুরুদায়িত্ব জোহান মুন্ডার একার কাঁধে। আজ অবধি যে কাজে মারাত্মক কোনও ভুলচুক তার হয়নি।  

গাছে পাতা এলেও তা ছিল খুবই সামান্য। তোলার মত হয়নি। সদানন্দ পাঠক তাই প্রথম থেকেই ঝুঁকে পড়েছে পাতা কেনার দিকে। মালিককে বুঝিয়েছে বাগানে পাতা আসতে কিছুটা দেরি হবে। এইবেলা বাজার ধরতে হলে বাইরের ছোট চাষিদের থেকে ভাল মানের কচি পাতা কিনে ম্যানুফ্যাকচারিং করে মার্কেটে না ছাড়তে পারলে পরে হাত কামড়াতে হবে। সেইমত নিজের সোর্স খাটিয়ে প্রথম রাতেই সে বেড়াল মেরে দিয়েছে। কেনা পাতায় যে চা তৈরি হয়েছে প্রথম লটেই  তার দাম পাওয়া গেছে আশাতীত। মালিক তাই খুশি। ঝোপ বুঝে সদানন্দ তৎপরতার সাথে তার কাছের লোক ভাগবত পাশোয়ানকে লাগিয়ে বাইরের থেকে পাতা আনছে । পকেটও গর্ভবতী হতে শুরু করেছে। ম্যানেজারও যাতে বঞ্চিত না হয় পাশোয়ানকে দিয়ে শতাংশের হিসেব কষে তাকেও পাইয়ে দেয়ার বন্দোবস্ত করেছে সদানন্দ।  এসব ব্যপারে আটঘাট বেঁধে রাখতে সে ওস্তাদ।  বাগানের তালা খোলার সাথে সাথে নিজেরও যে ভাগ্যের তালা খুলে গেছে একথা বলাই বাহুল্য। তবে চারটে আঙুল ঘিয়ে ডুবে রইলেও সদানন্দের একটি আঙুল বেজায় কাদায় পড়ে আছে। বউ আর তাকে ছেড়ে যাচ্ছে না কোথাও।  যেজন্য রাতারাতি বেচারা হুলোর, বৌ-ন্যাওটা 'ভিগি-বিল্লি' হয়ে নিরানন্দে দিন কাটছে । 

অন্যদিকে সুমন্ত চলে যাওয়ার পর থেকেই মনটা বিমর্ষ থাকে সুবর্ণর। ছুটির পর কোয়ার্টারে ফিরতেও মন চায় না। ইচ্ছে করেই বেশি সময় কাটায় ফ্যাক্টরিতে। তারপর রাত করে ঘরে ফিরে কোনোমতে কিছু মুখে দিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়। প্রতি সপ্তাহে বাড়ি ছোটে নিঃসঙ্গতা কাটাতে। তূর্যর পরীক্ষা দ্রুত এগিয়ে আসছে। বাবাকে কাছে পেলে ছেলেটাকে কিছুটা রিল্যাক্সড মনে হয়। তূর্ণাও নিশ্চিন্ত হয় স্বামীকে কাছে পেয়ে। সুমন্ত মারা যাওয়ার পর ও সর্বক্ষণ  দুশ্চিন্তায় থাকে  সুবর্ণর স্বাস্থ্য আর খাওয়া দাওয়া নিয়ে। 

ফাগুলাল আর আসে না। তার বদলে  বিন্তি নামের একটি মেয়ে এসে দুবেলা রান্না করে দিয়ে যায়। ফাগু ফের পাড়ি দিয়েছে কেরালায়। বেঁচে উঠে বউটা ফিরে এসেছিল ওর কাছে। কান্নাকাটি করেছিল হাতে পায়ে ধরে। কিন্তু ততদিনে সংসার করার ইচ্ছেটাই হয়ত মরে গেছিল ফাগুর। তাই শুধু বাচ্চাটাকে বউ এর হাতে তুলে দিয়ে স্বামীর সাথে ঝগড়া মিটিয়ে নিতে বলে ও রওনা দিয়েছে কেরালার উদ্দেশ্যে। যাওয়ার আগে বউকে বলে যায় আগামী বছর মেয়েটাকে স্কুলে ভর্তি করাতে। পড়ার খরচ বাবদ প্রতিমাসে ও টাকা পাঠাবে ।  সুরন্তির বিষ খেয়ে বেঁচে ফেরার ঘটনাটা কেন যেন হঠাৎ করে আমূল বদলে দিয়েছে ফাগুকে। এখন আর সে নেশাপাতি করে না। বরং 'বাগড়া' কামাই মানে অনেক টাকা উপার্জনের স্বপ্ন দেখে দিনরাত।  টাকা কামাই করে একদিন নীলপাহাড়িতে ফিরবে। ফিরে এসে দোকান খুলবে। মেয়েটাকে পড়াবে। অনেক- অনেক দূর পর্যন্ত । যাতে বড় হয়ে সে সরকারি দপ্তরে চাকরি করতে পারে। স্বপ্নের এই মায়াকাজল চোখে লাগিয়েই ও ঘর ছেড়েছে । 

যাওয়ার আগে দেখা করে মনের কথাগুলো জানিয়ে শেষে একটা দামি কথা বলে গেছে ফাগুলাল, ' মোর আউরৎ মোর বিশোয়াস তোড়লাক, তবভি উকে মোয় মাফ কৈর দেলো বাবু...লেকিন হামিন জনি-মরদকর ঝগড়া বিচে মোর বিটি বেচারাঠো কা-লে দুঃখী হোবয়... আয়ো সে উকর বিটিকে দূর রাখেককর মোর ভি  কোনো হাক নাখে বাবু... ওহেলে বিটিকে উপর ঠেন ছোইড়কে মোয় চললো... ' ফাগু চলে যাওয়ার পর সুবর্ণ ভাবে, একজন বিশ্বাসঘাতিনী বউ, একজন নির্দয়ী মাকে ক্ষমা করে সন্তানকে আবার তার কাছেই ফিরিয়ে দেওয়ার মত এত বড় উদারতা সে নিজেও কি দেখাতে পারতো! শুধু সে কেন, হয়ত অনেক লেখাপড়া জানা সচেতন মানুষও পারত কিনা সন্দেহ। তবে খুব নির্লিপ্ত ভাবে সংসার ত্যাগ করে চলে গেলেও কোথায় যেন ফাগুর পুরুষাকারে আঘাতপ্রাপ্ত ক্ষতস্থানটা দেখতে পায় সুবর্ণ। বারবার 'বাগড়া-পৈসা' কামাই করার কথাটা বলার সময়  মনে হচ্ছিল ফাগু যেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।  রুপোলি মুদ্রার চমকে চোখ ধাঁধিয়ে গিয়ে যে মেয়ে তার স্বামীর বুকভরা ভালবাসার হদিশ পায় না, তাকে সে দেখিয়ে দিতে চায় যে টাকা কামাই করাটা বড় কঠিন কাজ নয়। যেটা কঠিন তা হলো  সত্যিকারের ভালবাসতে পারা। 

সুমন্তর চেয়ারটা এখন ফাঁকা পড়ে থাকে। ওর রেখে যাওয়া ব্যবহার্য কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস টেবিলের ড্রয়ার খুলিয়ে তুলে দেয়া হয়েছে ওর মেয়ে, বউয়ের হাতে। পড়ে আছে শুধু ওর হাতের লেখা কিছু কাগজ, ফাইলপত্র, প্লাকিং-চার্ট, লিফ-বুক। খালি ড্রয়ারে কয়েকটা খুচরো পয়সা। পুরনো ডাকটিকিট। ভাঙা পেনসিলের টুকরো। ডটপেনের খালি রিফিল। নতুন কেউ ঐ চেয়ারের দখল নিলে ওগুলোও আর থাকবে না। ধীরে ধীরে মুছে যাবে স্মৃতি। নীলপাহাড়ির মানুষ একদিন হয়ত ভুলেও যাবে তাকে। পরবর্তী প্রজন্ম হয়ত জানবেও না সুমন্তবাবু বলে একজন কেউ ছিল। যে ভালবেসে আঁকড়ে ছিল এই মাটি। নীলপাহাড়ির প্রতিটা 'সেকশান', ধূড়া-পাকদন্ডি, চৌপাল, রাস্তা, সবছিল তার নখদর্পণে। শ্রমিকদের প্রত্যেককে যে নামে চিনত। খোঁজ রাখত তাদের পরিবারের। আর শ্রমিক-মালিক বিরোধের মাঝে সেতু হয়ে দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করত বারবার।

শ্রাদ্ধ শান্তির পর পায়েল মেঘাকে নিয়ে চলে গেছে কলকাতায়। মেঘা যেতে চাইছিল না মায়ের সাথে। সুবর্ণ অনেক বুঝিয়ে বলায় রাজি হয়েছিল যেতে। তবে ফিরে গিয়ে ও যে আর মায়ের সাথে থাকবে না সেটা কড়ার করিয়ে নিয়েছে। একটা লেডিস হস্টেলের সাথে যোগাযোগ করেছে। সেখানেই গিয়ে উঠবে। যতদিন না ও পাশ করে কোথাও থিতু হচ্ছে ওর যাবতীয় ব্যয়ভার ওর নামে সুবর্ণর রেখে যাওয়া ফিক্সড ডিপোজিট আর জীবনবীমার টাকা দিয়েই চলবে । প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কোম্পানি পুরো জমা না করায় সব টাকা এক্ষুনি পাওয়া যাবে না। গ্র্যাচুইটির কিস্তি মাসে মাসে কবে পাবে তারও কোনও ঠিক নেই। তাই যতদিন না কোম্পানি পুরো টাকা  দিচ্ছে ততদিন ওদের কোয়ার্টার না ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে বড়বাবু দিব্যেন্দু রায়। কোয়ার্টারটা তাই বন্ধই পড়ে থাকে। তালাবদ্ধ কোয়ার্টারটার দিকে তাকাতে ইচ্ছে করে না সুবর্ণর। যাতায়াতের পথে তবু চোখ চলে যায় প্রাণহীন বাড়িটার দিকে। বুকটা ভীষণ মোচড় দিয়ে ওঠে তখন। 

'-বাবু, কাল কিতনা ব্যাগ চালান্ যায়েগা...' 

জোহানের ডাকে ঘোর কাটে সুবর্ণর। এতক্ষণ নিস্তব্ধ ফ্যাক্টরি অফিসের চেয়ারে বসে মোবাইল দেখতে দেখতে মনটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছিল। প্রসেসিং শেষ হবার পর সদানন্দ পাঠক  সুবর্ণকে মেশিন ওয়াশিং এর কাজটা দেখতে বলে চলে গেছে বাংলোয়। আর ঘন্টাখানেকের মধ্যে ওয়াশিং শেষ হলেই গেটে তালা দিয়ে চাবির বাক্সটা চৌকিদারকে দিয়ে বাংলোয় পাঠিয়ে ঘরে ফিরবে সুবর্ণও।  ফ্যাক্টরিতে সাকুল্যে দশজন কাজ করছে এই মুহূর্তে। একটু আগে সর্টিংরুমে গিয়ে দেখে এসেছে জোহান সর্দার ফ্লোরের মালগুলো প্যাকিং করাচ্ছে। মালগুলো কালকের মধ্যে পাঠাতে হবে ওয়্যারহাউজে। 

-' চলিয়ে, ম্যায় আ রহা হু। ' বলে যখন উঠে যাচ্ছিল সুবর্ণ চেয়ার ছেড়ে তখনই মোবাইলটা বেজে ওঠে। অচেনা নাম্বার। রিসিভ করতেই অপরপ্রান্ত থেকে একটি মহিলা কন্ঠ ভেসে আসে, 

'হ্যালো... আমি কি সুবর্ণময় মিত্রের সাথে কথা বলছি... ' স্নিগ্ধ, মিষ্টি, ছন্দোময় গলার স্বর, আগে কখনও শুনেছে বলে মনে করতে পারে না সুবর্ণ। 

-' হ্যাঁ, বলুন... কে বলছেন। '

-' আপনি আমায় চিনবেন না। আমি শ্রাবস্তী। শ্রাবস্তী সেন। বিজনদার কাছে আমার কথা হয়ত শুনে থাকবেন।'

মুহুর্তে মনে পড়ে যায় এন. জে. পি স্টেশনে বিজনদার কথাগুলো। এর মধ্যে বিজনদার সাথে আর কথা বলা হয় নি । একদিন যদিও উনি ফোন করেছিলেন। ঠিক সেই মুহুর্তে জলঢাকার ধারে সুমন্তর শরীরটা আগুনের গ্রাসে একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছিল।  সব শুনে আর কথা বাড়াননি বিজনদা । গতকালও অনেক রাতে একবার ফোন করেছিলেন। হয়ত শ্রাবস্তীর কথাটা জানাতেই। মিসকল দেখেও পরে আর ফোন করার কথা মনে নেই, 

-' ও হ্যাঁ-হ্যাঁ বলুন... ' সুবর্ণ উত্তর দেয়। 

-' কেমন আছেন আপনি? '  নম্র সৌজন্যতা  ফোটে অপর প্রান্তে। 

-' হ্যাঁ, ভাল...আপনি? সুবর্ণ উত্তর দেয়। 

-' ভাল। আপনাকে কি কাল রাতে বিজনদা কিছু জানিয়েছেন ? '

-' হ্যাঁ, অনেক রাতে ফোন করেছিলেন...আমি তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে মিসকল দেখি। যদিও পরে আর ফোন করা হয়ে ওঠেনি। '

-' বাগানের মানুষরা কি খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে...?'  হঠাৎ খাদে নামিয়ে আনা গলার স্বরে কৌতুক ঝরে শ্রাবস্তীর গলায়। দেখা না গেলেও সূক্ষ্ম হাসিটা অনুভব করে সুবর্ণ। 

-' না-না ঠিক তা নয়, আমি একটু রাত করেই বিছানায় যাই। নাইট ডিউটি থাকলে অবশ্য... '

-' আমিও কিন্তু চা-বাগানের মেয়ে। মানে আমার জন্ম চা-বাগানে। যদিও খুব ছোট থাকতেই বাগান ছেড়ে চলে আসি মায়ের সাথে। আমার বাবা আসামের একটি চা বাগানের ম্যানেজার ছিলেন। চা
- বাগানের  সাথে আমার সুখের স্মৃতি যেমন আছে তেমনি জড়িয়ে রয়েছে ভীষণ দুঃখের স্মৃতিও। 

-' তাই বুঝি... ' শ্রাবস্তীর বাবার ঘটনাটা বিজন তালুকদারের কাছে জানলেও সেটা ব্যক্ত করে না সুবর্ণ। 

-' সুযোগ হলে শোনাব একদিন। বিজনদা আমাকে আপনার ফোন নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বললেন। আপনি কি এখন ফ্রি আছেন... আই মিন, কথা বললে অসুবিধে হবে না তো? '

-' না, না বলুন ... '

শ্রাবস্তী জানায় সে এখন শিলিগুড়িতে এক বান্ধবীর ফ্ল্যাটে আছে। কদিন ধরে বিজনদার সাথে তরাইয়ের দু' একটি বাগানে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছে। পরশু নীলপাহাড়ির তে আসতে চায়। বিজনদা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় আসতে পারছে না।  কিভাবে আসবে, ট্রেনে এলে কোন স্টেশন এ নামবে ইত্যাদি জানতে চায়। উত্তরে সুবর্ণ তাকে বিস্তারিত বুঝিয়ে দেওয়ার পর সে বলে, 

-'তরাইয়ের বাগানগুলো থেকে কিছু ফিল্ড ডেটা পেয়েছি। কিছু বিজনদা জোগাড় করে দিয়েছেন বিভিন্ন বই পত্র ঘেঁটে। দু' একজনের সাথে কথাও বলিয়ে দিয়েছেন যাঁরা চা বাগান নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু আমি চাইছি  বাগান বন্ধ হলে নারী শ্রমিক, শিশুরা, কি অবস্থায় পড়ে সেই চিত্রটা ধরতে। এই তথ্যগুলো মনে হয় আপনার কাছে পেয়ে যাব। যেহেতু শুনলাম আপনারা রিসেন্ট এই ক্রাইসিস টা পার করে এসেছেন। '

খুব গুছিয়ে সুন্দর করে কথা বলতে পারেন শ্রাবস্তী।  শুনতে শুনতে কেমন যেন ঘোর লাগছিল সুবর্ণর। বাধা না দিয়ে চুপচাপ শুনে যাচ্ছিল। 

-' তবে এভরিথিং ডিপেন্টডস আপটু ইওর কনসেন্ট। আপনি যদি সময় দিতে পারেন তা হলেই যেতে পারি... হ্যালো... শুনতে পাচ্ছেন... '

ঘোর কেটে সুবর্ণ বলে ওঠে,  -' না, না ঠিক আছে, আপনি আসতে পারেন। তেমন হলে না হয় আমি সময় বের করে নেব। কে বলতে পারে আপনার সাথে তথ্য জোগাড় করতে করতে আমারও কাজে লেগে যাবে না। '

-'আপনার লেখা গল্প ' ফুলমতিয়া' কিন্তু পড়ে ফেলেছি আমি...' আবারও গলার স্বর খাদে নেমে হালকা কুয়াশার মত ভেসে বেড়ায়। 

-'ওহ্, তাই নাকি... কোথায় পড়লেন? '

-' আপনার গল্পগ্রন্থে, বিজনদা পড়িয়েছে। '

-' ওঃ, সে তো বহুবছর আগের লেখা। এখন গল্পটা পড়লে মনে হয় কত কাঁচা লেখা... '

- আমার কিন্তু ভাল লেগেছে। আর বলতে পারেন ওটা পড়ে এটুকু বুঝেছি আপনি ফুলমতিয়া চরিত্রটি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। আমি ও কিন্তু এদের খুব ক্লোজ ফ্রেমে ধরতে চাইছি। এই ফুলমতিয়া দের কথা কিন্তু সকলের জানা দরকার। এ ব্যাপারে আপনার সাহায্য পেলে আমি এগোতে পারি'। 

কী বলবে চট্ করে বুঝে উঠতে পারছিল না সুবর্ণ। কেমন সাহায্য চাইছে, কীভাবে কাজটা শুরু করবে কিছুই জানাল না শ্রাবস্তী। কতদিন লাগবে তাও বোঝা যাচ্ছে না। 

"-হ্যালো, কী ভাবছেন...? 'শ্রাবস্তীর গলা শোনা যায়। 

-' না-না, কিছু না ...বলুন। '

-' বললাম আপনাদের ওখানে কাছেধারে কোনও গেস্ট হাউজ বা রিসোর্ট আছে? সিকিওরড...রিলায়েবল ? আই মিন এই কাজের জন্য আমাকে হয়ত দু একদিন থাকতে হতে পারে। '

একটু ভেবে নিয়ে সুবর্ণ বলে, ' সে হয়ে যাবে। আপনি কি একাই আসবেন? '

-' আমি তো একাই। বিজনদা থাকলে সুবিধে হত। উনি বলেছিলেন উনার এক বন্ধুর গাড়ি আছে। তাতে নিয়ে যাবেন আবার নিয়ে আসবেন।  সেটা যেহেতু হচ্ছে না...তাই। আমি কি আপনাকে একটু বেশি অসুবিধেয় ফেলে দিচ্ছি সুবর্ণ বাবু। '

- না- না তা কেন। আমার চেনাজানা একটি রিসোর্ট আছে। নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন সেখানে। জলঢাকা নদীর ধারে। সিনিক বিউটিও সুন্দর। আপনার ভাল লাগবে। '

'ওঃ... দারুন। কতদিন প্রকৃতির মাঝখানে নিশ্চিন্তে দুটো দিন কাটানো হয় না। কলকাতায় থাকলে কেবল কাজ আর কাজ। বাইরে কোথাও সেমিনার বা  কনফারেন্সে  গেলেও সেই এক আরবান ক্যাওস এর মধ্যে থাকা। যদিও এবারে পেলিং,ইয়ুমথাম ঘুরে এলাম। ভাল লাগল। তবে চা-বাগান আলাদাই। কেমন যেন স্বপ্নের মত।  '

এক নিঃশ্বাসে  শ্রাবস্তী যখন বলে যাচ্ছিল সুবর্ণর মনে হচ্ছিল অবিশ্রান্ত ঝর্ণা থেকে ছিটকে আসছে মিহি কুয়াশার মত জলবিন্দু। জলবিন্দুর প্রতিটি কণা যেন অদ্ভুত ভাবে স্পর্শ করছে তাকে । কথোপকথন শেষ হতেই সুবর্ণর মনে হয় বসন্তের শেষ বিকেলে একটা অচেনা ঝোড়ো বৃষ্টিধারা যেন হঠাৎ করে ভিজিয়ে দিয়ে হারিয়ে গেল বনস্থলীর দিকে।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri