সুবর্ণর যদিও নিশ্চিন্তি উবে গেছে এই মুহূর্তে। রাত আটটা নাগাদ সি. টি. সি-র কনভেয়ার বেল্টটা ছিঁড়ে গিয়ে প্রায় তিন ঘন্টা যাবৎ প্রোডাকশন আংশিক বন্ধ । শনিবার। নতুন ফ্যাক্টরি অ্যাসিস্ট্যান্ট মিস্টার পাঠকও বিকেল নাগাদ ম্যানেজারকে বলে কোথাও বেরিয়ে গেছে। কাল ফিরবে। ডিউটিতে এই মুহুর্তে সুবর্ণ একা। রাত বারোটায় তির্কিবাবু এলে ছুটি মিলবে। তার আগে এই সাডেন ব্রেক ডাউন রিস্টোর করানোর দায়িত্বও সুবর্ণর ওপর।
যদিও বড় সাহেবকে জানিয়ে, মালবাবুর কাছ থেকে স্টোরের চাবি এনে, চৌকিদারকে দিয়ে মালগুদাম খুলিয়ে, বেল্ট বের করে মেরামতির কাজও শুরু হয়েছে অনেকক্ষণ। ফিটারবাবু, একজন টেকনিশিয়ান, দু'জন লেবার লড়ে যাচ্ছে ব্রেক-ডাউন ঠিক করতে। যন্ত্রপাতির ব্যাপার। এমনটা হতেই পারে। বড় সাহেব সেটা বুঝলেও কমার্শিয়াল ডিরেক্টর সুদেশ গর্গ সেসব কানেও তুলবে না। 'কে ছিল ডিউটিতে' ' রুটিন চেক-আপ হয়নি কেন' ' 'এত দেরি হল কেন ঠিক করতে' ইত্যাকার নানা প্রশ্ন খাড়া করবে। প্রোডাকশন লস হল তার জন্য কাউকে না কাউকে বলির পাঁঠা করে চার্জশিট ধরাবে। যদিও এক্ষেত্রে সুবর্ণর কিছু করার নেই। যা জবাবদিহি করার মিঃ পাঠক করবে। নয়তো ফিটারবাবু। কিন্তু পাঠক ক'দিনেই কোন মন্ত্রবলে যে সুদেশকে হাত করেছে কে জানে। ম্যানেজার-টু-ওয়ার্কার সবাইকে সুদেশ গর্গ বাপ-মা তুলে গালাগাল করলেও পাঠককে হাল্কার ওপর কড়কে ছেড়ে দেয়। ব্রেক-ডাউনের খবরটা কানে গেলেই বাংলো থেকে ঠিক ছুটে আসবে। নইলে ফোনেই যা মুখে আসবে বলে যাবে।লোকটা জাস্ট একটা গারবেজ -বিন। মুখ খুললেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। কিছু বলাও যায় না। মালিকের খাস-আদমি । বছর দুয়েক আগে একবার গার্ডেন -ভিজিটে এসেছিল মালিকের সাথে। আর ফেরেনি। সেই থেকে মৌরসিপাট্টা গেড়ে বসেছে নীলপাহাড়িতে। এক কালে আসামে কোনও চা-বাগানে কিছু কাল নাকি চাকরি করেছিল। সেটাই ভাঙিয়ে খাচ্ছে। চা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। উপরন্তু যেটা আছে সেটা হল আটঘাটে চারা খাইয়ে মালিককে সামান্য কিছু পাইয়ে দিয়ে নিজে দেদার লুটে নেওয়া। একা থাকে বাংলোয়। শোনা যায় বিস্তর চারিত্রিক দোষও নাকি আছে লোকটার। সুবর্ণর অবশ্য সেসবের সত্যতা যাচাই করার মতো রুচি হয়নি কখনও।
চা সম্পর্কে লোকটা জানে না কিছুই। ম্যানেজারকে পুতুল বানিয়ে নিজে সারাক্ষণ শুধু সাধারণ মানুষের ওপর দেখনদারি হম্বিতম্বি করে বেড়াচ্ছে। মালিকের অন্যান্য আরো ব্যাবসা রয়েছে দিল্লি, রাজস্থান, কলকাতায়। বাগান ভিজিট করতেও আসেন না তেমন। সেই ফায়দাটা লুটছে তার দূরসম্পর্কের আত্মীয় এই সুদেশ।
দিনে তিনটে কল তূর্ণার বাঁধা। ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চটাইমে কাজের তাড়া থাকে বলে তেমন সুবিধে হয় না। রাতের কলে যে কারণে ওর আনলিমিটেড কথা বলা চাই। আর সেটা না হলেই ওর মেজাজ চড়ে যায়। সারাদিনে কী করলো, কার-কার সাথে কী কথা হলো,বাবার ডিমেনশিয়াটা বেড়েছে, ওষুধ গুলো ফুরিয়ে গেছে, চেক-আপটা তাড়াতাড়ি দরকার, তূর্যর সায়েন্স-টিউটর ঠিক মতো পড়াচ্ছে না, ওর ক্লাসমেটরা এগিয়ে যাচ্ছে। উইক-এন্ডে সুবর্ণ গেলে কী কী করবে, শপিং-এ গিয়ে কী কিনবে, ইউ-টিউব দেখে নতুন কী রেসিপি শিখেছে ইত্যাকার নানান খুঁটিনাটি কথামালায় রাত গড়িয়ে চলে। তূর্ণার সঙ্গে কথায় সুবর্ণকে বিশেষ কিছু বলতে হয় না। ও নিজেই অনেক কথা বলে যায় একনাগাড়ে। কথার মাঝে টেম্পো ধরে রাখতে অবশ্য ছুটকো-ছাটকা গোঁজ মারতেই নয় সুবর্ণকে, নইলে গা-ছাড়া ভাব দেখলে বা ট্র্যাক মিস করলেই কেলো। ঝমাঝম কথা শুনিয়ে দেবে, 'চিন্তা তো সব আমারই, তাই না! অসুস্থ বাবা আর ছেলের যাবতীয় দায়িত্ব আমার ওপরে চাপিয়ে দিয়ে দিব্যি আছ। সারাদিনে নিজে থেকে তো একবারও কল করবে না। উল্টে ফোন করলে যে দু'চার মিনিট সময় দেবে তাতেও বাবুর অনীহা। থাকো তুমি তোমার কাজ নিয়ে।' বলেই ফোন কাট্। পরদিন সারাদিন ফোন আসবে না। রাতেও স্পিকটি নট। নীরবতা ভাঙতে তখন সুবর্ণকেই সচেষ্ট হতে হয়। কথা বললে গাম্ভীর্যের মোড়কটুকু খুলতেই যতটুকু , বাকিটা সময় যায় খুচরো অভিমানে। ব্যস, পরমুহুর্তেই সব ভুলে স্বমহিমায় তূর্ণা। ও আসলে এরকমই। এই ক্ষেপে বোম্ , আবার একটু উষ্ণতাতেই গলে মোম। আসলে বিয়ের পর কোনোদিন যে স্বামীকে ছেড়ে থাকতে হবে হয়তো স্বপ্নেও ভাবে নি। কিন্তু চা-বাগানে বিয়ে হয়ে এসে যখন দেখলো ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য সবার ফ্যামিলি শিফট হয়ে যাচ্ছে কারো শিলিগুড়ি, কারো জলপাইগুড়ি, কারো কুচবিহার, কেউ কলকাতা-মনটা দমে গেছিল ভীষণ।
সুবর্ণর মনে পড়ে মা মারা যাওয়ার পর বাবাকে যখন নীলপাহাড়িতে নিয়ে এসেছিল তূর্য তখন নাগরাকাটায় একটি নার্সারি স্কুলে পড়ে। তূর্ণার ইচ্ছে ছিল প্রাথমিকের গন্ডি পেরোনোর পর বিন্নাগুড়ির ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি করে ছেলেকে। নিজের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সেই সুযোগটা না পাওয়ার যে আক্ষেপ সেটা হয়তো ছেলেকে দিয়ে পুষিয়ে নিতে চেয়েছিল। নাগরাকাটা থেকে স্কুল বাস ছাড়ে। কত ছেলে মেয়ে পড়ে ঐ স্কুলে। পরিচিত অনেকেই সেখানে ভর্তি করেছে ছেলেমেয়েদের। সুবর্ণ রাজি হয়নি। ইংলিশ মিডিয়মে না পড়িয়েও যে ছেলে মানুষ করা যায় সেটা দেখিয়ে দিতে চেয়েছিল।
"আমরা ইংরেজি মিডিয়মে না পড়ে কী ইংরেজি শিখিনি? বাবার কাছে ছোটবেলায় যতটুকু গ্রামার শিখেছি সেই গ্রামাটিক্যাল সেন্স ঐ ইংরেজি মিডিয়মের ছেলেদেরও নেই। তূর্য ওর দাদুর কাছে ইংরেজি শিখবে। দেখো ও কেমন চোস্ত হয় ইংরেজিতে। তাছাড়া গাদাগুচ্ছের টিউশন ফিজ দিয়ে ইংলিশ মিডিয়মে পড়িয়ে ট্যাঁশমার্কা বকচ্ছপ বানানোর ইচ্ছে বা সঙ্গতি কোনোটাই আমার নেই।' সুবর্ণর একরোখা মনোভাব দেখে হাল ছেড়ে দিয়ে তূর্ণা বলেছিল,'তাহলে তুমি ওকে নাগরাকাটা হাইস্কুলে ভর্তি করে দাও। এখান থেকে যাতায়াত করবে। একসাথে থাকতে পারব আমরা।"
-"ক্ষেপেছ! এখানে থাকলে ওর ফিউচার প্রসপেক্ট কিছু থাকবে ভেবেছ! তার চেয়ে শিলিগুড়ির কোনো ভাল স্কুলে ভর্তি করে তোমাদের পাঠিয়ে দেব। বাড়িটা খালি পড়ে আছে। ভাড়া না দিয়ে তোমরা থাকবে ওখানে।"
" বাবার বয়স হয়েছে। আমি কী পারব ঐটুকু ছেলেকে নিয়ে থাকতে? "
-"কেন পারবে না, কাছাকাছি আত্মীয় স্বজন রয়েছে, আমিও প্রতি সপ্তাহে যাব...ছেলের ভবিষ্যৎ ভেবে এটুকু পারবে না। "
শিলিগুড়ির বাড়িতে ওদের রেখে আসার সময় সেদিন খুব কেঁদেছিল তূর্ণা। তখন প্রতি শনিবার অফিস করে কখনো কারো বাইক, কখনো হাটুরে ট্রেকার, যখন যা জুটতো তাতে চেপেই বাগান থেকে সাত কিমি উজিয়ে কাছাকাছি বাজার-গঞ্জে বাস ধরতে ছুটতো সুবর্ণ। শেষ বাস মিস করলে ভরসা হাইওয়ের লাইন ট্রাক। একবার তো বালির ট্রাকে পর্যন্ত চেপে যেতে হয়েছিল। বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে গভীর রাত। শুধু কিছুটা বাড়তি সময় স্ত্রী-পুত্রর সঙ্গে কাটানো, বাবাকে দেখে আসার অদম্য ইচ্ছে সুবর্ণকে বহুবার এরকম ঝুঁকি নিতে বাধ্য করেছে। বর্ষায় সেবক পাহাড়ে ধস পড়লে হেঁটে ধস পেরিয়ে অনেকটা হেঁটে ওপারে গিয়ে গাড়ি ধরতে হয়েছে এক একদিন। একটা মাত্র দিন, রবিবার-যেদিন পরিবারের সাথে কাটিয়ে পরদিন হয়তো শীতের কুয়াশা ঘেরা অন্ধকার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস ধরতে ছুটতে হতো। সময়মত বাগানে ফিরতে না পারলে বহুবার বড়সায়েবের কথাও শুনতে হয়েছে। তবু এ সবই সুবর্ণ করে গেছে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। ও যাতে শহরে ভাল স্কুলে পড়তে পারে। ভাল সুযোগ পেয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তাছাড়াও মনে একটা তীব্র ইচ্ছে কাজ করতো যাতে কখনোই ওকে ভবিষ্যতে এই চা-বাগানের কাজে যোগ দিতে না হয়। কেননা দিনকে দিন চা-বাগানের সেই চেনা পরিবেশটা হারিয়ে যাচ্ছে। অদ্ভূত এক নিরাপত্তা হীনতার মেঘ ঘিরে ধরছে চারপাশে।তৈরি হচ্ছে একটা অনিশ্চয়তা,অস্বস্তির বলয় ।
দেখতে দেখতে দশটা বছর পেরলো। ছেলে এবার মাধ্যমিক দেবে। সম্ভাবনা আছে ছেলের মধ্যে।পাশ করলে সুবর্ণর ইচ্ছে কলকাতায় দিদি-জামাইবাবুর কাছে পাঠিয়ে দেয়। হায়ার-স্টাডিজের জন্য ওদের কাছে ছেলেকে পাঠাতে পারলে ভালই হয়। ভাগ্না-ভাগ্নিরা সব বিদেশে। ওরাও তূর্যর পড়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে।ছেলেকে কলকাতায় সেটল করিয়ে বাবা আর তূর্ণাকে নিজের কাছেই রাখার ইচ্ছে সুবর্ণর। দিন দিন যা কাজের চাপ বাড়ছে। বাড়ছে বয়স। এখন আর প্রতি সপ্তাহে যাওয়াও হয়ে ওঠে না। তাছাড়া একা কোয়ার্টারে থাকতেও ইদানীং কেমন যেন নিঃসঙ্গ বোধ হয়।
হোয়াটসঅ্যাপ অফ-লাইন দেখাচ্ছে তূর্ণার। ফেসবুক ও বন্ধ। ঘুমিয়ে পড়েছে বোধহয়। একবার কল দিয়ে দেখবে নাকি! না থাক, ঘুমিয়ে থাকলে না জাগানোই ভাল। তারচেয়ে সকালে ফোন করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে সুবর্ণ লক্ষ্য করে সত্যবাবু ন-টা নাগাদ ফোন করেছিলেন। গত কয়েকদিন কথা হয়নি ওঁর সাথে। মাঝেও একদিন ফোন করেছিলেন। ধরতে পারেনি সুবর্ণ। পরে কলব্যাক করার কথাও মনে পড়ে নি আর।
অনেক কথা শোনার আছে ওনার থেকে। কিছু মানুষের সান্নিধ্য জীবনকে অন্যভাবে চেনায়। প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও লড়ে যাওয়ার শক্তি যোগায়। সত্যবাবুর জীবনটাই তেমন। বড় বিচিত্র। ডুয়ার্সের চা বাগানে জন্মে দীর্ঘদিন এই মাটিতেই কাটিয়েছেন। চা-বাগানের খুঁটিনাটি যাঁর নখদর্পণে। তাঁকে নিয়ে ভবিষ্যতে একটা উপন্যাস লেখার ইচ্ছে সুবর্ণর। ইচ্ছেটা মাথা চাড়া দিয়েছিল অনেক আগেই। যেদিন ওঁর জীবনের কিছু ঘটনা শুনিয়ে সত্যপ্রিয় বলেছিলেন, 'জীবনে আমি এত কিছু দেখেছি সুবর্ণ যা গল্পের মতো। বললে শেষ হবে না।'
ছিয়াশির মাইলস্টোন অতিক্রম করেছেন তিনি বেশ কিছুদিন হল। চোখে ভাল দেখতে পান না। পড়াশোনা বন্ধ, সেই আক্ষেপ বারবার করেন। ফোনেই যা কথা হয়। দৃষ্টিশক্তি হারালেও অসম্ভব স্মৃতি শক্তি সত্যপ্রিয়র। যথার্থই ফটোগ্রাফিক মেমরি যাকে বলে। ওঁর মূল্যবান স্মৃতিচারণা শুনে ডায়েরিতে নোট করে রাখে সুবর্ণ। মাঝে মাঝে ফোনে কথা হয়। কখনো নিজেও সুযোগ পেলে বাইকে চেপে চলেও যায় ওঁর কাছে। নীলপাহাড়ি থেকে কাঞ্চনপুর পঁয়তাল্লিশ কিমি পথ। সেখানে অবসরগ্রহণের পর সত্যপ্রিয়র দিন কাটে নিঃসঙ্গতায়। একে একে খুব কাছের প্রিয়জনেরা চিরকালের মত ছেড়ে গেছে । মৃত্যুশোক দিশেহারা করেছে তাঁকে। দুঃখভারে জর্জরিত হয়েও তবু আত্মসমর্পণ করেননি তিনি দুর্ভাগ্যের কাছে। বেঁচে থাকার স্পৃহা হারালেও কথা প্রসঙ্গে চা-জীবনের কথা উঠলেই যেন চেতনায় বিশল্যকরণী মাথা চাড়া দেয়। আলাপচারিতায় হয়ে ওঠেন সপ্রাণ। বিস্মৃতির ঢেউ যাঁর স্মৃতিতে পলি ফেলেনি এতটুকু। সুবর্ণ সেই মূল্যবান কথাগুলোই মোবাইলে রেকর্ড করে আনে।
একদিন তা দেখে উনি বলেন, 'কী করবে এসব রেকর্ড করে? আমার জীবন খুবই সাধারণ। নিতান্তই বর্ণহীন। খানিকটা বলতে পার রবীন্দ্রনাথের সেই কবিতার লাইনের মত, 'জীবনটা যেন ঘোলা জলের ডোবা, না আছে সেখানে হাঙর কুমীরের নিমন্ত্রণ, না রাজহাঁসের'। কী হবে আর এসব কাটাছেঁড়া করে। "
শুনে সুবর্ণ শুধু বলেছিল,' আসলে চা-জীবনের সাথে আপনার দীর্ঘ সম্পর্ক, চায়ের ইতিহাস,চাকরি সূত্রে বিভিন্ন চা বাগানে কাজ করা, ডুয়ার্সের অতীত বর্তমান, এখানকার প্রকৃতি এসব সম্পর্কে কত জানা আছে আপনার। কত বিচিত্র অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন এত বছর ধরে। আজকের মানুষ যে এসব জানতে চায়। তাই এগুলো রেখে দিতে চাই। যদি কখনো সুযোগ পাই লিখব। "
খুব ছোটবেলায় ঘুম ভেঙে ভোরের আলোয় চা-বাগানের শ্রমিক পরিবারের একটি মেয়ের জীবন দেখেছিলেন সত্যপ্রিয়। সেই ছবি আজও তিনি ভুলতে পারেন না । কথায় কথায় গভীর মমতায় একদিন সেই ছবি কথায় ফুটিয়েছিলেন সত্যপ্রিয়। সেই সাথে নিজের জীবনের বহু কথা।
ড্রয়ারে থেকে ডায়েরিটা বার করে সুবর্ণ। কথাগুলো সব সেখানে লেখা আছে। আছে সত্য বাবুর জীবনের অনেক কথা ডায়েরিটায়। সেগুলো অমূল্য সম্পদের মত আগলে রাখে সুবর্ণ। জানেনা কবে এই তথ্যগুলো সাহিত্য হয়ে উঠবে।