সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
22.অন্তহীন আকাশের নীচে : অন্তিম পর্ব/দেবপ্রিয়া সরকার

22.অন্তহীন আকাশের নীচে : অন্তিম পর্ব/দেবপ্রিয়া সরকার

21.অন্তহীন আকাশের নীচে-২১/দেবপ্রিয়া সরকার

21.অন্তহীন আকাশের নীচে-২১/দেবপ্রিয়া সরকার

20.অন্তহীন আকাশের নীচে/২০

20.অন্তহীন আকাশের নীচে/২০

19.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৯

19.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৯

18.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৮

18.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৮

17.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৭

17.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৭

16.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৬

16.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৬

15.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৫

15.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৫

14.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৪

14.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৪

13.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৩

13.অন্তহীন আকাশের নীচে/১৩

12.অন্তহীন আকাশের নীচে/১২

12.অন্তহীন আকাশের নীচে/১২

11.অন্তহীন আকাশের নীচে-/১১

11.অন্তহীন আকাশের নীচে-/১১

10.অন্তহীন আকাশের নীচে/১০

10.অন্তহীন আকাশের নীচে/১০

9.অন্তহীন আকাশের নীচে/৯

9.অন্তহীন আকাশের নীচে/৯

8.অন্তহীন আকাশের নীচে/৮

8.অন্তহীন আকাশের নীচে/৮

7.অন্তহীন আকাশের নীচে/পর্ব ৭

7.অন্তহীন আকাশের নীচে/পর্ব ৭

6.অন্তহীন আকাশের নীচে/৬

6.অন্তহীন আকাশের নীচে/৬

5.অন্তহীন আকাশের নীচে/৫

5.অন্তহীন আকাশের নীচে/৫

4.অন্তহীন আকাশের নীচে/৪

4.অন্তহীন আকাশের নীচে/৪

3.অন্তহীন আকাশের নীচে/৩

3.অন্তহীন আকাশের নীচে/৩

2.অন্তহীন আকাশের নীচে/২

2.অন্তহীন আকাশের নীচে/২

1.অন্তহীন আকাশের নীচে-১

1.অন্তহীন আকাশের নীচে-১

29-April,2023 - Saturday ✍️ By- দেবপ্রিয়া সরকার 647

অন্তহীন আকাশের নীচে/১৯

অন্তহীন আকাশের নীচে 
পর্ব ১৯
দেবপ্রিয়া সরকার 
------------------------------

এখন দুপুর একটা। সূর্য প্রায় মাঝ আকাশে। তবুও গ্রীষ্মের খরতাপের পরিবর্তে আবহাওয়া বেশ মনোরম। আকাশে মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি খেলা চলছে। কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছিল রাতে, তাই পথঘাট এখনও ভেজা ভেজা। শহরের ভিড় রাস্তার ট্র্যাফিক পেরিয়ে এসে এতক্ষণে একটু স্বস্তি পেয়েছে ইন্দ্রায়ুধ। গতি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকটা। একটা উঁচু বাম্পে ঝাঁকুনি খেতেই স্বয়ংদ্যুতি ইন্দ্রায়ুধের কাঁধ চেপে ধরল। ভীত স্বরে বলল, এত স্পিড বাড়ালে কেন? আস্তে চালাও প্লিজ। আমার বাইকটাইকে চড়ার অভ্যেস নেই। 
ইন্দ্রায়ুধ কৌতুক মেশানো স্বরে বলল, অভ্যেস করে নাও। এরপর তোমার বয়ফ্রেন্ড বাইক কিনলে তাতে চাপতে হবে তো। 
স্বয়ংদ্যুতি মুখ বিকৃত করে বলল, বয়ফ্রেন্ডই নেই, তার আবার বাইক!
মোটরবাইকের গতি কমিয়ে ইন্দ্রায়ুধ বলে উঠল, সে কী! এমন সুন্দরী, বিখ্যাত ইউটিউবারের কোনও পুরুষ সঙ্গী নেই? এটাও মানতে হবে?
-হুম, মানতে হবে।
-কিন্তু নেই কেন?
-নেই কারণ নেই। কাউকে সেভাবে মনেই ধরেনি কখনও । ছেলেবন্ধু প্রচুর আছে, কিন্তু তাদের কারও সঙ্গেই কখনও প্রেম করতে ইচ্ছে করেনি।    
-ও, আই সি!
-তা আপনার গার্লফ্রেন্ডের পরিচয়টাও দিয়ে দিন। কোচবিহার ছেড়ে যাওয়ার আগে আলাপ করে যাব। বাই দ্য ওয়ে, কোথায় থাকে সে?
বাইকের গতি আরও খানিকটা কমিয়ে ইন্দ্রায়ুধ জোরে জোরে হেসে উঠল। স্বয়ংদ্যুতি বিরক্ত হয়ে বলল, এতে হাসার কী আছে? তোমার মতো ইয়ং, হ্যান্ডসাম পুরুষের বান্ধবী থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক। তার ওপর এতো উঠতি বয়সের ছাত্রীদের পড়াও, তোমার ওপর ক্রাশ তো নিশ্চয়ই আছে অনেকের? বাইকটাকে একটা ধাবার সামনে দাঁড় করিয়ে ইন্দ্রায়ুধ গম্ভীর মুখে বলল, বাবার যখন ক্যান্সার ধরা পড়ে তখনও আমি স্কুল ছাত্র। তারপর থেকে টানা কয়েকটা বছর চরম কঠিন সময় কেটেছে। বাবার মৃত্যু আমাদের পুরো পরিবারটাকে খাদের কিনারে এনে ফেলেছিল। সেখান থেকে অনেক লড়াই করে সারভাইভ করেছি। প্রেম-ভালবাসার মতো বিলাসিতা করার সময় বা মানসিকতা কোনটাই ছিলনা আমার। 
ইন্দ্রায়ুধের বলা কথাগুলোয় মিশে থাকা বিষাদ চাড়িয়ে গেল স্বয়ংদ্যুতির মনের মধ্যেও। সে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকল ইন্দ্রায়ুধের দিকে। পাশের রাস্তা দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে যাচ্ছে একের পর এক গাড়ি। একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে ইন্দ্রায়ুধ বলল, চলো এখানে কিছু খেয়ে নেওয়া যাক। এরপর আর ভাল হোটেল পাওয়া যাবে না। 
বাইক থেকে নেমে দু’জনে ঢুকে গেল ধাবার ভেতর। স্বয়ংদ্যুতির মনের মধ্যে এখনও অনুরণিত হচ্ছে ইন্দ্রায়ুধের কথাগুলো। তার মনের ভাব লক্ষ্য করে ইন্দ্রায়ুধ বলল, মুখটা ওরম বাংলার পাঁচের মতো করে না থেকে কী খাবে চটপট বলো। আজকের ট্রিট আমার তরফ থেকে। 
-এ মা, না না। তা কেন? তোমাকে আমি আমার কাজের জন্য ডেকে এনেছি তাহলে আমারই খাওয়ানো উচিৎ। 
-ও আচ্ছা, বুঝতে পেরেছি, পারিশ্রমিক দিতে চাইছ তার মানে? আমি গরিব হতে পারি ম্যাডাম কিন্তু বন্ধুদের সাহায্য করার বিনিময়ে কখনও কিছু দাবী করিনা। সব জিনিসের হিসেব কি মুল্য দিয়ে করা যায়?  
-আমি মোটেও সেটা মিন করিনি। আমায় ভুল বুঝোনা।
ইন্দ্রায়ুধের মুখে লেগে থাকা দুষ্টুমির হাসিটা খেয়াল করেনি স্বয়ংদ্যুতি। তার মনের ভেতর একটা অপরাধবোধ ফণা তুলছে। মুখোমুখি দুটো চেয়ারে বসে আছে তারা। একটু সামনে ঝুঁকে এসে ইন্দ্রায়ুধ বলল, আপনাদের লখনউয়ের মতো খানদানি টেস্ট না হলেও, এরা মাটন বিরিয়ানিটা জব্বর বানায় শুনেছি। সঙ্গে চিকেন চাপ। চলবে তো?
মুখে এক চিলতে হাসি এনে স্বয়ংদ্যুতি বলল, শুধু চলবে না ইন্দ্রবাবু, রেসের ঘোড়ার মতো দৌড়বে। 
খাওয়ার অর্ডার দিয়ে ক্যামেরা বের করে রাজবাড়িতে তোলা ভিডিওগুলো তারা দেখে নিল চটপট। কোথায় কী এডিট করতে হবে সেই আলোচনাও সেরে নিল এই ফাঁকে। খেতে খেতে ইন্দ্রায়ুধ শোনাল কীভাবে সৌরিশ, তপন, ইকবাল আর সে, চারবন্ধু মিলে ‘আপনপাঠ’ কোচিং সেন্টার খুলেছিল এবং অনেক বাধা বিপত্তি কাটিয়ে কেমন করে সাফল্যের মুখ দেখল তারা। স্বয়ংদ্যুতিও বলল তাদের লখনউয়ে কাটানো জীবনের গল্প, শান্তিনিকেতন আর তার প্রিয়বন্ধু ভিক্টরের কথা। ভিক্টরই যে তাকে নিত্য-নতুন টপিক নিয়ে ভ্লগ বানাতে অনুপ্রাণিত করে, সে খবর জানাতেও স্বয়ংদ্যুতি  ভুলল না। 
খাওয়া শেষ করে বিল মিটিয়ে আবার বাইকে চেপে বসল তারা। জঙ্গলের বুক চিড়ে চলে যাওয়া রাস্তা ধরে পৌঁছল জঙ্গল সাফারির টিকিট কাউন্টারের সামনে। সেখানকার ফরম্যালিটি শেষ করে ইন্দ্রায়ুধ জিপসিতে এসে বসল। স্বয়ংদ্যুতি ঘুরে ঘুরে দেখছিল চারপাশটা। ফ্রেমবন্দি করছিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট কাঠের বাড়ি, ঘন সবুজ গাছপালা, রাভাবস্তির মানুষদের জীবনচরিত। সময় হতেই জিপসি রওনা দিল জঙ্গলের দিকে।গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নিজেদের স্বাভাবিক রঙ ফিরে পেয়েছে গাছপালা। সবুজের সমারোহে ঘন বন আরও ঘন হয়ে ধরা দিচ্ছে। হুড খোলা জিপসিতে দাঁড়িয়ে বনপথের ভিডিও করছে স্বয়ংদ্যুতি। সেই সঙ্গে অনর্গল তথ্য দিয়ে চলেছে ডুয়ার্সের বনভূমি সম্পর্কে। আগেকারদিনে রাজারা বন্যজন্তু শিকার করে নিজেদের বীরত্ব কেমন করে জাহির করতেন, সেসব কথাও বলে চলেছে অবলীলায়। ঘুরতে ঘুরতে একসময় তারা এসে পৌঁছাল একটা প্রাচীন দুর্গের ভগ্নাবশেষের সামনে। ইন্দ্রায়ুধ গাড়ি থেকে নেমে বলল, এই হল নলরাজার গড়। শোনা যায় ভুটান রাজার সঙ্গে যুদ্ধের সময় রসদ মজুত করার উদ্দেশ্যে মহারাজ নরনারায়ণের সেনাপতি বীর চিলারায় এই দুর্গ তৈরি করেছিলেন। চিলারায়ের নাম অনুসারে এই বনের নাম হয়েছে চিলাপাতা। 
স্বয়ংদ্যুতি অবাক চোখে দেখছিল প্রাচীন স্থাপত্যের ভগ্নপ্রায় নিদর্শনটাকে। দ্রুত ক্যামেরা বন্দি করে নিল আশপাশের চিত্র। নলরাজার গড় ছেড়ে তাদের গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছিল আরও গভীর জঙ্গলের দিকে। এক জায়গায় এসে আচমকা ব্রেক চাপল ড্রাইভার। রাস্তার ওপর রাজকীয় ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে আছে এক বিরাট দাঁতাল হাতি। সন্তর্পণে জিপসির ওপর দাঁড়িয়ে তার ছবি তুলল স্বয়ংদ্যুতিরা। বেশ কিছুক্ষণ নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল গাড়ি। গজরাজ পথ ছাড়লে আবার শুরু হল সাফারি। আকাশ কালো মেঘে ঢেকেছে।শুরু হয়েছে এলোপাথাড়ি হাওয়া। বৃষ্টি আসতে পারে এই আশংকায় ক্যামেরাটাকে সুরক্ষিত রাখতে  একখানা  মোটা পলিথিনে সেটা  মুড়ে ঝটপট  ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলল স্বয়ংদ্যুতি। তারপর  সিটের এককোণে জড়োসড়ো হয়ে বসে পড়ল। গাছগাছালিকে পাশ কাটিয়ে জিপসি দ্রুত ছুটছে। অরণ্যের আদিম বুনোগন্ধ হাওয়ার সঙ্গে নাকে এসে ঝাপটা মারছে। স্তব্ধতা ভেঙে মেঘ গর্জনের পাশাপাশি থেকে থেকে  শোনা যাচ্ছে  ময়ূরের কর্কশ ডাক। এমন এক পরিবেশের সম্মুখীন হয়ে শিহরণ খেলে যাচ্ছে স্বয়ংদ্যুতির শরীরে। একটা ভয়ের অনুভূতি বুকের ভেতর ধীরে ধীরে চাগাড় দিচ্ছে। হঠাৎ ইন্দ্রায়ুধকে চমকে দিয়ে স্বয়ংদ্যুতি তার পাশে এসে বসল। ইন্দ্র হাসিমুখে জিজ্ঞেস করল, কী হল? ভয় লাগছে নাকি?
স্বয়ংদ্যুতি মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালে তার কোলের ওপর রাখা হাতটা নিজের হাতে নিয়ে ইন্দ্রায়ুধ বলল, আমি আছি তো। ভয় কীসের?
অদ্ভুত সম্মোহনের যাদুতে ইন্দ্রায়ুধের আরও কাছে সরে এল স্বয়ংদ্যুতি। তার সুঠাম কাঁধে মাথা রেখে এলিয়ে দিল শরীর। দেখতে দেখতে তারা জঙ্গল পেরিয়ে এল। মেঘ আরও গাঢ় হয়ে এসেছে। গাড়ি থেকে নেমে স্বয়ংদ্যুতিকে নিয়ে ইন্দ্রায়ুধ দ্রুত বাইকে উঠে বসল। বৃষ্টি নামার আগে জঙ্গল পেরোতে না পড়লে বিপদ হবে। গতি বাড়িয়ে বাইক হাঁকাল ইন্দ্রায়ুধ। স্বয়ংদ্যুতি সভয়ে জড়িয়ে ধরেছে তাকে। তাদের মাঝে থাকা কয়েক ইঞ্চির দূরত্বটা ঘুচে গিয়েছে কখন যেন। ইন্দ্রায়ুধের শরীরের উষ্ণতা, তার পুরুষালি ঘ্রাণে আচ্ছন্ন হয়ে আছে স্বয়ংদ্যুতি। অপরদিকে ইন্দ্রায়ুধও আজ প্রথমবার নারী শরীরের পেলবতাকে অনুভব করছে। মনের ভেতর এক অনন্য পরিতৃপ্তি নিয়ে বাইক ছোটাচ্ছে সে। 
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জঙ্গলের সীমানা পেরুতেই তেজ বাড়ল তার। মেঘবৃষ্টির হাত ধরে অকাল সন্ধ্যা নেমেছে চারপাশে। দু’চারটে যানবাহন ছাড়া পথে  লোক চলাচল নজরে পড়ছে না। বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে একটা বন্ধ দোকানের ছাউনির নীচে আশ্রয় নিল স্বয়ংদ্যুতিরা। নির্জন আধো-অন্ধকারে একে অপরের আরো কাছাকাছি চলে এল তারা। ইন্দ্রায়ুধের বাঁ হাত এবং স্বয়ংদ্যুতির ডান হাত নির্দ্বিধায় একে অপরের সঙ্গে উষ্ণতা বিনিময় করছে। শুধু  দ্বিধা  রয়েছে দু’জনের মনের ভেতর। কেউই কোনও কথা বলছে না। অঝোর বৃষ্টির ছাট এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে তাদের। ইন্দ্রায়ুধ আপ্রাণ চেষ্টা করছে স্বয়ংদ্যুতিকে সুরক্ষিত রাখার। স্বয়ংদ্যুতি দুচোখে অপার মুগ্ধতা নিয়ে চেয়ে আছে তার দিকে। অনেক কষ্টে দমন করেছে আবেগকে। একসময়  সমস্ত প্রতিরোধ ভেঙে পড়ল। ধারাস্নান করতে করতে স্বয়ংদ্যুতির মোহময়ী শরীরটাকে ভালবাসার আলিঙ্গনে বেঁধে ফেলল ইন্দ্রায়ুধ। তার আবেগবিহ্বল দুচোখের ভেতর নিজেকে হারিয়ে ফেলল স্বয়ংদ্যুতিও। মাতাল প্রকৃতির সাহচর্যে মত্ত হয়ে উঠল তারাও। স্বয়ংদ্যুতির নরম ঠোঁটে ঠোঁট ডোবাল ইন্দ্রায়ুধ। 
নাজানি কত কত পল-অণুপল কেটে গেল এভাবে। ধীরে ধীরে বৃষ্টির গতি কমে এল। ধারাবর্ষণ শেষ করে ক্লান্ত মেঘের দল ফেরার রাস্তা ধরেছে। চাপা গর্জন তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের বিদায়বার্তা। এমনই এক গর্জনের শব্দে সম্বিত ফিরে পেল ইন্দ্রায়ুধরা। ঘোর থেকে বেরিয়ে একজন আরেকজনের দিকে পরিপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাল তারা এবং নিজেদের খুঁজে পেল একে অপরের চোখের ভেতর। নতুন ধারাপাতের আনন্দে তখন বিভোর হয়ে আছে প্রকৃতি। বর্ষণসিক্ত গাছেদের তরতাজা শরীর থেকে চুঁইয়ে পড়ছে জল। যতক্ষণ বৃষ্টি হচ্ছিল ততক্ষণ স্তব্ধ হয়েছিল জনজীবন। এবার একটু একটু করে স্পন্দন ফিরে আসছে চারপাশে। ঘরে ফেরার গান ধরেছে পাখির দল। সারিবদ্ধ শ্রমিকদের পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে দূর থেকে। আপন গতিতে ছুটে চলেছে গাড়িঘোড়া। 
স্বয়ংদ্যুতির চোখের থেকে নজর সরিয়ে ইন্দ্রায়ুধ বলল, বৃষ্টি ধরে এসেছে। এবার ফেরা যাক। 
স্বয়ংদ্যুতি স্হির দৃষ্টিতে এখনও চেয়ে আছে ইন্দ্রায়ুধের দিকে। কী একটা আর্তি যেন ফুটে উঠছে তার চোখের ভাষায়। ইন্দ্রায়ুধ তার হাত ধরে বাইকের কাছে নিয়ে এল। বাইকে ওঠার আগে ইন্দ্রায়ুধের দিকে মায়াময় দৃষ্টিতে তাকাল স্বয়ংদ্যুতি। তার দুচোখে টলটল করছে আনন্দের অশ্রু। বলবে না বলবে না করেও শেষমেশ বলেই ফেলল স্বয়ংদ্যুতি, এই জায়গাটা ছেড়ে, তোমায় ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে, আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি ইন্দ্র। 
স্বয়ংদ্যুতির হাতটা নিজের বুকের মধ্যে চেপে ধরে ইন্দ্রায়ুধ বলল, আমারও তাই মনে হচ্ছে টুপুর। দেখো, কী দ্রুত বিট করছে হার্টটা।
আচমকা লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠলো স্বয়ংদ্যুতি। সন্ধ্যার আবছা আলোতেও তার আরক্ত মুখমন্ডল ইন্দ্রায়ুধের নজর এড়ালো না। নতুন প্রাপ্তির খুশি ফুটে উঠছে দু’জনেরই চোখেমুখে। ইন্দ্রায়ুধ বলল, এবার ফিরতেই হবে। নাহলে রাধাকান্তজেঠু ভাববেন তাঁর সুন্দরী কন্যাটিকে আমি গুম করেছি।
অপেক্ষাকৃত ধীর গতিতে বাইক চালাচ্ছে ইন্দ্রায়ুধ। গভীর আশ্লেষে তাকে জড়িয়ে ধরে আছে স্বয়ংদ্যুতি। মেঘেঢাকা গোধুলির আকাশকে সাক্ষী রেখে এক অন্তহীন জীবনের পথে পা বাড়াচ্ছে তারা।         

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri