সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
27.দাঁড়াবার জায়গা-২৭/সমর দেব

27.দাঁড়াবার জায়গা-২৭/সমর দেব

26.দাঁড়াবার জায়গা-২৬/সমর দেব

26.দাঁড়াবার জায়গা-২৬/সমর দেব

25.দাঁড়াবার জায়গা-২৫/সমর দেব

25.দাঁড়াবার জায়গা-২৫/সমর দেব

24.দাঁড়াবার জায়গা-২৪/সমর দেব

24.দাঁড়াবার জায়গা-২৪/সমর দেব

23.দাঁড়াবার জায়গা-২৩/সমর দেব

23.দাঁড়াবার জায়গা-২৩/সমর দেব

22.দাঁড়াবার জায়গা-২২/সমর দেব

22.দাঁড়াবার জায়গা-২২/সমর দেব

21.দাঁড়াবার জায়গা-২১/সমর দেব

21.দাঁড়াবার জায়গা-২১/সমর দেব

20.দাঁড়াবার জায়গা-২০/সমর দেব

20.দাঁড়াবার জায়গা-২০/সমর দেব

19.দাঁড়াবার জায়গা-১৯/সমর দেব

19.দাঁড়াবার জায়গা-১৯/সমর দেব

18.দাঁড়াবার জায়গা-১৮/সমর দেব

18.দাঁড়াবার জায়গা-১৮/সমর দেব

17.দাঁড়াবার জায়গা-১৭/সমর দেব

17.দাঁড়াবার জায়গা-১৭/সমর দেব

16.দাঁড়াবার জায়গা-১৬/সমর দেব

16.দাঁড়াবার জায়গা-১৬/সমর দেব

15.দাঁড়াবার জায়গা-১৫/সমর দেব

15.দাঁড়াবার জায়গা-১৫/সমর দেব

14.দাঁড়াবার জায়গা-১৪/সমর দেব

14.দাঁড়াবার জায়গা-১৪/সমর দেব

13.দাঁড়াবার জায়গা-১৩/সমর দেব

13.দাঁড়াবার জায়গা-১৩/সমর দেব

12.দাঁড়াবার জায়গা-১২/সমর দেব

12.দাঁড়াবার জায়গা-১২/সমর দেব

11.দাঁড়াবার জায়গা-১১/সমর দেব

11.দাঁড়াবার জায়গা-১১/সমর দেব

10.দাঁড়াবার জায়গা-১০/সমর দেব

10.দাঁড়াবার জায়গা-১০/সমর দেব

9.দাঁড়াবার জায়গা-৯/সমর দেব

9.দাঁড়াবার জায়গা-৯/সমর দেব

8.দাঁড়াবার জায়গা-৮/সমর দেব

8.দাঁড়াবার জায়গা-৮/সমর দেব

7.দাঁড়াবার জায়গা-৭/সমর দেব

7.দাঁড়াবার জায়গা-৭/সমর দেব

6.দাঁড়াবার জায়গা-৬/সমর দেব

6.দাঁড়াবার জায়গা-৬/সমর দেব

5.দাঁড়াবার জায়গা-৫/সমর দেব

5.দাঁড়াবার জায়গা-৫/সমর দেব

4.দাঁড়াবার জায়গা-৪/সমর দেব

4.দাঁড়াবার জায়গা-৪/সমর দেব

3.দাঁড়াবার জায়গা-৩/সমর দেব

3.দাঁড়াবার জায়গা-৩/সমর দেব

2.দাঁড়াবার জায়গা-২/সমর দেব

2.দাঁড়াবার জায়গা-২/সমর দেব

1.দাঁড়াবার জায়গা-১/সমর দেব

1.দাঁড়াবার জায়গা-১/সমর দেব

05-December,2022 - Monday ✍️ By- সমর দেব 409

দাঁড়াবার জায়গা-১৭/সমর দেব

দাঁড়াবার জায়গা/সতেরো
সমর দেব
^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^^

একটা লণ্ঠনের টিমটিমে আলোর চারপাশ ঘিরে আমরা চার ভাইবোন। একটু দূরেই আরেকটা লণ্ঠন নিয়ে ওদিকে আরও দুজন! বাবার কড়া নির্দেশ, কে কী পড়ছে তিনি যেন শুনতে পান! মজা হলো, ছ-জন একই সঙ্গে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করলে তিনি শুনবেন কী করে! ফলে, কেউ কেউ স্রেফ ‘অ্যাঁ, অ্যাঁ, অ্যাঁ’ করে দিব্যি কাটিয়ে দিত! তবে, গলার আওয়াজ যেন বাবার কানে পৌঁছয়! তা পৌঁছত বৈকি! মুশকিল হলো, কারও নিজের কানে তার নিজের পড়াটাই ঢুকছে, নাকি পাশের জনের? যেমন, একজন তারস্বরে পড়ে চলেছে, ‘ভূতের মতন চেহারা যেমন’, পাশে একজন হয়ত সমান চিৎকারে পড়ছে ‘ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতি’, তৃতীয়জন হয়ত তীক্ষ্ণ সরু গলায় জ্যামিতি পড়ছে ‘ধরা যাক, এ এ-ড্যাশ রেখাটি…’, চতুর্থজন চেঁচাচ্ছে ‘নরঃ নরৌ নরাঃ’…। তুমুল এক তাণ্ডব চলছে যেন, সে তাণ্ডবে ঘরের চাল উড়ে যাবার জোগাড়! যে ‘ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতি’ পড়ছে তার কানে ঢুকছে পাশের জনের ‘ভূতের মতোন চেহারা’, আবার তারই মধ্যে আরেকজনের ‘নরঃ নরৌ নরাঃ’…ইত্যাদি। যে পড়ছে সে কিন্তু একইসঙ্গে অনেকের পড়াই মুখস্থ করতে বাধ্য হচ্ছে! সেই সময়গুলোতে পড়ুয়ার মস্তিষ্কে ঠিক কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ঘটছে এবং তার ফলাফলই বা কী সেটা রীতিমতো গবেষণার বিষয় হতে পারে। প্রতিদিনই সন্ধ্যায় ছয় শিক্ষাব্রতীর সেই ভয়ানক গগনবিদারী চিৎকারে পাড়া বোধহয় সজাগ হয়ে উঠত। নইলে, পাড়ায় সকলেই কী করে জানত, এবাড়িতে সবাই খুব পড়াশুনো করে! আর, এঘটনার ফলাফল হয়েছিল মারাত্মক। পাড়ার যারা একই ক্লাসের ছাত্র ছিল তারা বাপ-মায়ের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ত। বাড়িতে তাদের অভিভাবকদের কাছে বকাঝকা খেয়ে তারা অসহিষ্ণু, ক্ষিপ্ত হয়েই থাকত। কোনও অজুহাতে অথবা বিনা অজুহাতেই তারা কেউ কেউ আমার ওপরে রীতিমতো চড়াও হত। অন্য দাদা-দিদিদের ক্ষেত্রেও এরকম হতো কিনা, আমার জানা হয়ে ওঠেনি। ঘটনাক্রমে পরীক্ষায় আমার রেজাল্ট খুব ভালো হতো এবং সেটাও আমার পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠত। তবে, ক্লাস সিক্স অবধি আমার মার্কশিট হাতে নিয়েই পরিবারের অধিকাংশের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, ‘সারা বছর তো পড়াশুনাই করিস না! এবার থেকে অন্তত ভালো করে পড়িস’! আর, পাড়ায় সমবয়সীরা মুখ ভার করত, রেগে যেত, গালাগাল করত। তবে, জেনকিন্স স্কুলে ভর্তি হবার পর থেকেই এসব বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছি। কারণ, বইপত্র থেকে শুরু করে শিক্ষার প্রয়োজনীয় কোনও উপকরণই থাকত না বলে এবং সেই সঙ্গে অনেক মেধাবী ছাত্রের উপস্থিতি আমাকে পিছিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। ফলে, স্কুল জীবনের শেষ চার বছর লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড না থাকায় খেলোয়াড় হিসেবে ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে হয়েছে, যেটা আমার পক্ষে শাপে বর হয়েছে। একদিকে, পাড়ার সমবয়সীদের রোষের হাত থেকে অনেকটা রক্ষা পেয়েছি, অন্যদিকে, নিজের সম্পর্কে কোনও উচ্চাশা না থাকায় এক মুক্ত জীবনের হাতছানি আমাকে সীমাহীন স্বপ্নে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বড় উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল সেই স্বাধীনতা। যে স্বাধীনতার সুযোগে অনেক বড় হয়ে উঠেছিল আমার পৃথিবীটা। জেনকিন্স স্কুলের বিশাল লাইব্রেরি এবং সহপাঠীদের কারও কারও বাড়িতে অবাধে যাতায়াত ও সুসম্পর্কের সূত্রে নতুন নতুন বই পড়ার সুযোগ একেবারে হাতের মুঠোয় চলে আসে। এক বন্ধুর দিদি সুনীতি অ্যাকাডেমির ছাত্রী এবং তার স্কুল থেকে নিয়ে আসা বইগুলো আমি অসম্ভব দ্রুততায় পড়তে থাকি। সেই দিদি স্কুল থেকে বই এনে প্রথমে আমাকেই পড়তে দিত। আমি পড়ে ফেরত দেবার পর সে পড়ত। এতে একটা বিশেষ লাভ হতো আমার, পড়া বইটা সম্পর্কে আমার মতামত সে জানতে চাইত। সেজন্য এমনভাবে পড়তে হতো, যাতে আমার মতামতটা বেশ জোরালো ভাবে পেশ করতে পারি। সেই দিদির মাধ্যমেই পড়েছি বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র, তারাশঙ্কর, রমেশচন্দ্র দত্ত, ত্রৈলোক্যনাথ, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় – এরকম আরও কত! আর, বাড়িতেই পেয়ে যেতাম বিভিন্ন পত্রিকার পুজো সংখ্যা। পাড়ার ক্লাবেও প্রচুর বই ছিল। দাদা-দিদিরা যেসব বই বাড়িতে নিয়ে আসত সেসবও গোগ্রাসে গিলেছি। এসব করতে গিয়ে প্রায়ই রীতিমতো লুকোচুরি খেলতে হয়েছে। ধরা পড়ে গেলে খুচরো মারধর, ভর্ৎসনা জুটেছে – এসবও সত্য। তবু শেষ অবধি লাভবান হয়েছি। দাদা-দিদিদের সূত্রে বাংলা সাহিত্যের (সেই সময় অবধি) প্রায় পূর্ণাঙ্গ চেহারাটা চোখের সামনে সহজেই উন্মোচিত হয়েছে। পুজোর ছুটি এবং গ্রীষ্মের ছুটিতে দাদা (বড়দাদা) বাড়িতে এলে প্রায় রোজই গুচ্ছ গুচ্ছ বই কিনে আনত আর সেসব প্রায় কেড়ে নিতাম আমি। বই পড়ার ব্যাপারে দাদার প্রভূত প্রশ্রয় পেয়েছি। আরেকটি বড় ঘটনা, দাদার অভিমত ছিল, বই পড়ে কেউ খারাপ হয় না। ফলে, তার নিয়ে আসা প্রাপ্তবয়স্ক পাঠকের পক্ষে উপযোগী বইও আমি পড়ে ফেলতাম। সেসব বইয়ের তালিকায় আমার বয়সের পক্ষে দাঁতভাঙা প্রবন্ধের বইও থাকত। সেকারণে, বয়সটা দ্রুত বেড়ে উঠতে থাকে। তাতে আমার খুব লাভ হয়েছে। জীবন তো একটাই, তার মধ্যেই যা করার করে ফেলা জরুরি। সেজদি সংস্কৃতের ছাত্রী ছিল। তার মাধ্যমে অনেকগুলো উপনিষদ যেমন পড়ে ফেলেছিলাম, তেমনই কুমারসম্ভব, অভিজ্ঞান শকুন্তলমের মতো বইও পড়ে ফেলেছি। বাড়িতে মার্ক্সবাদের কিঞ্চিৎ চর্চা ছিলো। সেই সূত্রে মার্ক্স-এঙ্গেলসের বেশ কিছু লেখাও পড়া হয়ে গেছে স্কুলের উঁচু ক্লাসে ওঠার আগেই। এসবের পরিণতিতেই বোধহয় মাধ্যমিক পরীক্ষার কদিন পরেই প্রথম উপন্যাস লেখার চেষ্টা! কিন্তু তার পরিণাম তেমন সুখকর হয়নি! লুকিয়ে রাখা সত্ত্বেও লেখাটা বাড়িতে যে দাদা-দিদিদের হাতে প্রথম পড়েছিল তাদের অজ্ঞতা এবং অদূরদর্শিতায় চরম লাঞ্ছিত হতে হয়েছিল। সে লেখাটা ওরাই বাড়ির পেছন দিকের জঙ্গলে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। আমার কপালে জুটেছিলো প্রবল ভর্ৎসনা, গঞ্জনা। সেই রাতে আমি খুব কেঁদেছি একা একা। রাতে খেতেও বসিনি। অনেক পড়ে ভেবে দেখেছি লেখাটা থাকলে মন্দ হতো না। মনে আছে, সে লেখার কেন্দ্রে ছিল এক রোমান্টিক প্রেম। সেই প্রেম ছিল নায়ক-নায়িকার পারস্পরিক গোপন দৃষ্টিপাতেই সীমাবদ্ধ! তারা উভয়েই নিজেদের পরিবারে একক, বিচ্ছিন্ন মানুষ। কেউ তাদের কথা বোঝে না। কেউ তাদের ভালো-মন্দ জানতে চায় না। তাদের স্বপ্ন, আশা আকাঙ্ক্ষা ক্রমশ ভেঙে গুঁড়িয়ে যেতে থাকলে তারা দুজনে মিলে দূরে কোথাও চলে যেতে চায়। নিজের জীবনের সুস্পষ্ট ছায়াপাত ঘটেছিল সে কাহিনিতে। এখন ভাবি, লেখাটা দাদার (বড়দা) হাতে পড়লে বোধহয় ঘটনাপরম্পরা অন্যরকম হতো। যাই হোক, আরও তিন বছর আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে সঠিক অর্থে উপন্যাস লেখার জন্য। সে প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে।

সেভেনে পড়াকালেই স্কুলের লাইব্রেরি থেকে এনেছিলাম হেমেন্দ্রকুমার রায়ের যখের ধন। আগের দিন নিয়ে আসা বইটা টেবিলের ওপরে রাখা ছিল। এক দাদার বন্ধু এসে বইটা চেয়ে নিয়ে গেল। সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, দুদিনেই শেষ করে সে ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু দিনের পর দিন পেরিয়ে গেলেও সে বই আর ফেরত এল না। স্কুলের লাইব্রেরিয়ান যে আমাকে ছেড়ে কথা বলবেন না সেটা জানাই আছে, অতএব প্রবল আতঙ্কে আমি আর লাইব্রেরি মুখো হই না। বছর গড়াতেই সমস্যাটা প্রকট হয়ে ওঠে। আমাকে নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে স্পষ্ট নির্দেশ, হয় বইটা ফেরত দিতে হবে নতুবা ফাইন দিতে হবে! আমার সারা বছরের বেতনই নিয়মিত দেওয়া হয় না। তায়, ফাইন! কাঁপতে কাঁপতে একদিন লাইব্রেরিয়ানের কাছে গিয়ে সব বলি। তিনি নানা ভাবে প্রশ্ন করে সত্যটা বোঝার চেষ্টা করেন। তারপর, আমাকে বলেন, ‘এবারে ছেড়ে দিচ্ছি, যা। কিন্তু, মনে রাখবি, স্কুলের বই নিয়ে ফেরত না দেওয়া গুরুতর অপরাধ। জীবনে যেন আর কখনও এমন না হয়’। ভয়ানক বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি। ফলে, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির প্রশ্নই নেই। ক্ষমা চেয়ে, দুঃখপ্রকাশ করে অব্যাহতি পাই। এঘটনার পর স্কুল জীবনে আর কখনও কাউকে একটি বইও দিইনি। কারণ, আমি জেনে গেছি সে বই আর ফেরত আসবে না। তখন থেকে বই লুকিয়ে রাখার অভ্যাস হয়ে যায়। স্কুল জীবনে আর একটি বইও হারিয়ে যায়নি আমার অতি সতর্কতায়। আর, স্কুলের লাইব্রেরি থেকে বা বন্ধুর দিদির কাছ থেকে নিয়ে আসা বই লুকিয়ে রাখতাম। একদিন কোনও একটা লেখায় পেয়েছিলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় খড়ের গাদায় লুকিয়ে লুকিয়ে পড়েছিলেন হরিদাসের গুপ্তকথা! এই বই নিশ্চয়ই শরৎচন্দ্রকে বড় হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলো, মনে করে একদিন স্কুলের লাইব্রেরিতে গিয়ে খোঁজ করলাম হরিদাসের গুপ্তকথার। লাইব্রেরিয়ান হেসে জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় পেয়েছি এই বইয়ের নাম। আমার জবাব শুনে তিনি বললেন, এখন এই বই পড়ার দরকার নেই। আমি জানতে চাইলাম, বইটা আছে কিনা। তিনি আঙুল দিয়ে দেখালেন। দেখি, কাচের আলমারির ভেতরে জ্বল জ্বল করছে ‘হরিদাসের গুপ্তকথা’! ভাবলাম, স্কুলের লাইব্রেরিতে বইটা আছে, অথচ আমাকে পড়তে দেওয়া হবে না কেন! তিনি আমাকে সন্দিগ্ধ চোখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললেন, সেভেনের ছাত্রকে এই বই দেওয়া যাবে না। কারণ, ওটা বড়দের বই। আমাকে তারপরও খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি বললেন, ‘এটা নিয়ে যা। খুব ভালো বই’। তিনি আমার হাতে তুলে দিলেন ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইট্টি ডেইজ’ (বাংলা অনুবাদ)। লেখকের নাম জুল ভার্ন। লেখকের নামটাও খুব পছন্দ হয়ে গেল! এদিন স্কুল থেকে ঘরে ফিরেই বইটা পড়তে শুরু করেছি কি করিনি, হেমেন্দ্রকুমার রায়ের ‘যখের ধন’ নিয়ে ফেরত দেয়নি দাদার যে বন্ধু, বাবলুদা, এসে হাজির! বইটা নিয়ে সে নানা ভাবে নেড়েচেড়ে দেখতে থাকল অনেকক্ষণ ধরে। আমি তো কাঁটা হয়ে আছি, ফের চেয়ে বসে কিনা। মনে মনে ভাবছি, চাইলে তাকে কী বলে প্রতিহত করব। কিন্তু অনেকক্ষণ নেড়েচেড়ে দেখলেও সে এদিন বই না চেয়ে বলে, ‘এটা খুব ভালো বই’। আমি ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকি তার দিকে। পরে, জানতে চাই, তুমি পড়েছ? সে বলে, ‘না পড়িনি। তবে, বইটা খুব ভালো’! তারপর সে সেখান থেকে চলে গেলে আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। সারা জীবনে বহুবার দেখেছি অনেকেই কারও কাছে বই দেখলেই সেটা পড়তে চায়। বাস্তবে সে কখনই পড়বে বলে নিয়ম মাফিক কোনও লাইব্রেরি থেকে একটিও বই আনেনি, বা জীবনে একটি বইও কেনেনি কখনও। একটা পুরো বই পড়ে শেষ করার মতো ধৈর্যও তার নেই। তবু, কারও কাছে বই দেখলেই চেয়ে বসে। ঘটনাক্রমে পেয়ে গেলে সেই বই আর ঘরে ফেরে না! বই চেয়ে নিয়ে এরকম লোকজন নিজের বাড়িতে ফেরার আগেই সম্ভবত সেই বই হারিয়ে ফেলে! দুর্ভাগ্যবশত এরকম অসংখ্য মানুষের সংশ্রব ঘটেছে আমার জীবনে!

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri