সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

46.শালসিড়ি-৪৬/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

45.শালসিঁড়ি-৪৫/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

44.শালসিঁড়ি-৪৪/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

43.শালসিঁড়ি-৪৩/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

42.শালসিঁড়ি-৪২/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

41.শালসিঁড়ি-৪১/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

40.শালসিঁড়ি-৪০/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

39.শালসিঁড়ি-৩৯/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

38.শালসিঁড়ি ৩৮/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

37.শালসিঁড়ি-৩৭/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

36.শালসিঁড়ি-৩৬/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

35.শালসিঁড়ি-৩৫/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

34.শালসিড়ি-৩৪/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

33.শালসিঁড়ি-৩৩/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

32.শালসিঁড়ি-৩২/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

31.শালসিঁড়ি-৩১/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

30.শালসিঁড়ি-৩০/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

29.শালসিঁড়ি-২৯/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

28.শালসিঁড়ি-২৮/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

27.শালসিঁড়ি ২৭/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

26.শালসিঁড়ি - ২৬/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

25.শালসিঁড়ি-২৫/বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

24.শালসিঁড়ি ২৪/ বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

23.শালসিঁড়ি-২৩/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

22.শালসিঁড়ি-২২/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

21.শালসিঁড়ি-২১/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

20.শালসিঁড়ি-২০/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

19.শালসিঁড়ি-১৯/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

18.শালসিঁড়ি-১৮/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

17.শালসিঁড়ি-১৭/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

16.শালসিঁড়ি-১৬/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

15.শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

14.শালসিঁড়ি-১৪/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

13.শালসিঁড়ি-১৩/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

12.শালসিঁড়ি-১২/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

11.শালসিঁড়ি-১১/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

10.শালসিঁড়ি-১০/বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

9.শালসিঁড়ি-৯ /বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

8.শালসিঁড়ি -৮/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

7.শালসিঁড়ি-৭/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

6.শালসিঁড়ি –৬/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

5.শালসিঁড়ি-৫/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

4.শালসিঁড়ি - ৪/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

3.শাল সিঁড়ি-৩/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

2.শাল সিঁড়ি-২/বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

1.শালসিঁড়ি/১ বিমল দেবনাথ

26-November,2022 - Saturday ✍️ By- বিমল দেবনাথ 475

শালসিঁড়ি-১৫/বিমল দেবনাথ

শালসিঁড়ি--১৫
বিমল দেবনাথ
^^^^^^^^^^^^^

বিকাশ জল খেতে যায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
- জলটা তো বসে খাও। 
বিকাশ সোফায় বসে পড়ে। জল খায় প্রাণভরে। অপরূপার দিকে তাকিয়ে থাকে। অপরূপা স্থির দাঁড়িয়ে আছে হাত বাড়িয়ে- গ্লাস নেবার জন্য। মিঠুদি সব কাজ করলেও কিছু কাজ অপরূপার একান্ত নিজের। বিকাশের মনে পড়ে প্রথম অপরূপার হাতে জল পানের কথা। 
- আরে উজ্জ্বল গোলাপি রঙ এসে গেছে; নাও এক ঢোঁক জল খাও।
বিকাশ কপালের ঘাম পুঁছে বোতলের জল খায় কয়েক ঢোঁক। তখন স্কুলে কলেজে এখনকার মতো বোতলে জল নেওয়ার চল ছিল না। বিকাশ অবাক হয়ে ভাবে- মেয়েদের ঐটুকু ব্যাগে কত কী থাকে। একদিন সাহস করে দেখতে হবে- ব্যাগে কী কী আছে। বিকাশের অবশ্য সেই সাহস এখনো পর্যন্ত হয়নি। অপরূপা কখনো কখনো শাড়ির কুচি ধরতে বলে; কোথাও গেলে কখনো ব্যাগ ধরতে বলে। বিকাশ ব্যাগ খোলার চেষ্টা করেনি কখনও। বিকাশ মনেমনে ভাবে – ভাগ্যিস ওদের কলেজের বিজ্ঞানের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর কেমিস্ট্রি ক্লাস একসাথে হত। তা না হলে তো এই জল পান ভাগ্যে হত না কোনোদিন। তবে সেইদিন বিকাশের ভাগ্য ভালো ছিল। মন্ডলস্যার সন্দেহ করলেও বিশ্বাস করেনি কিছু। কিছু গন্ধ কিছু বর্ণ আছে এমন যাকে দেখলে বিশ্বাস জন্মায় মনে। ক্লাসে অপরূপাও তেমন, মালাগীরি গাছের মতো। বনে গন্ধ ছড়ায়। 
- স্যার, ও ঘামছিল। তাই জল দিলাম।
- তুমি বোতলে জল নিয়ে আসো! আমরা তো কলেজের জল খাই। তা বেশ। তবে- মোলের(mole) হিসাবটা সবাই ঠিক করে করবে। টাইট্রেশনে খালি গোলাপি রঙ এলে হবে না। সঠিক মোলে সঠিক রঙ আনতে হবে। সবার মোলের পরিমাপ কিন্তু এক নয়। 
বিকাশ ভাবে অপরূপা মোলের সাথে মনও দিয়েছিল কিনা। কিন্তু উতরে দিয়েছিল কেমেস্ট্রি প্রাক্টিকাল। শুধু কী পরীক্ষা- বিকাশের জীবনের কেমেস্ট্রি পাল্টে দিয়েছে। সেই জন্যে বনপাওয়া মানুষটির সংসার টিকে গেল বটগাছের ডালের মতো।
- হা করে কী দেখছ। গ্লাসটা দাও।
- ও । অংশু কী করছে।
- দেখ, পড়ার ঘরে আছে।
ছেলেটিকে ভালো দেখে ঘর থেকে বের হলাম; সন্ধ্যায় জ্বর যে কেন এল। বাবা ছেলের সম্পর্ক কী গাছের মূল আর ডালের মতো। মূল যদি মাটিতে পাথরে বাঁধা পায় ডালে ধাক্কা যায়। গতকাল কত ঝামেলা গেল; প্রাণ যায় যায় পরিস্থিতি হল – ছেলেটার এদিকে জ্বর এল। কেমন সব ব্যাপার। স্নান সেরে বিকাশ ফ্রেশ হয়ে নেয়।
- কেমন আছ।
- ভাল। 
বিকাশ স্পর্শ করতে গেলে অংশু সরে যায়। অংশু বড় হয়ে ওঠার সাথে প্রতিদিন বাড়ছে অভিমান। অভিমান যেন লীনতাপ। আগুনের মত দ্যাখা যায়না। ভিতরে জ্বলতে থাকে জ্বালাতে থাকে। পরিবর্তন করে দেয় আকার আকৃতি প্রকৃতি আরো কত কী – জলের মত; লোহার মত।  এই পরিবর্তন মানুষকে ক্রমশ হতাশাগ্রস্থ করে তোলে। হতাশাগ্রস্থ মানুষ আর শিকড়হীন গাছ এক। বিকাশের হঠাৎ শরীরে শীত শীত লাগে। নিজের হাত নিজে স্পর্শ করে দ্যাখে। না- শরীর গরম নয়। বিকাশ বুঝতে পারে এটা জ্বরের লক্ষণ নয়। উৎকণ্ঠা যে উত্তাপ বাড়ায় মনের। বিকাশ দেখতে পায় বর্ষায় ভরা তিস্তায় একটি হালহীন নৌকা ভেসে যায় মোহনার দিকে। বিকাশ মনে মনে চিৎকার করে ওঠে।  ব্যাকুল হয়ে উঠে তাকে কূলে পাবার জন্য। জড়িয়ে ধরতে চায় অংশুকে। বিকাশ জানে স্পর্শ এক মহৌষধ-সঞ্জীবনীর মতো। স্পর্শে প্রাণের স্পন্দন বোঝা যায়; স্পর্শে মন প্রবাহিত হয়। স্পর্শ শুষে নেয় অভিমান রাগ গর্ব অহংকার – শালসিঁড়ির মতো। বিকাশের কখনো মন আনচান করলে জড়িয়ে ধরে শাল চাপ কত কি গাছ। পিতা হল পুত্রের গাছ। কে কাকে স্পর্শ করল সেটা বড় নয়; এখন স্পর্শ অনিবার্য। বিকাশ জোর করে জড়িয়ে ধরে অংশুকে। অংশু বাবার বুকে মুখ গুঁজে কাঁদে।
- কী হোল; এমন করছ কেন। তোমার তো এখন জ্বর নেই।
- তুমি আমাকে ভালোবাস না। 
- না,না বাবা সেটা একদম ঠিক নয়। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।
- না। আমার যখন মন খারাপ করে, শরীর খারাপ করে তখন তুমি আমার কাছে আস না।
বিকাশ অংশুকে বুকের উপর আরো জোরে চেপে ধরে।
- দ্যাখ পাগল ছেলের কথা। বাবাকে কাজ করতে হবে না? তাছাড়া তোমার মা তো তোমার সাথে আছেন। 
- না। তোমাকেও থাকতে হবে।
- দ্যাখ; তুমি বড় হয়েছ। শহরের ভালো স্কুলে পড়াশুনা করার সুযোগ পেয়েছ। সামনে মাধ্যমিক। এরকম করলে চলে। আর আমি বাড়ি বসে থাকলে কাজ করবে কে। কাজ না করলে খাব কী।
- নাও। ছাড় ছেলেকে এবার। চা নাও। আমার রান্না হয়ে এল। বাবা ছেলেকে একসাথে খেতে দেব।

অংশু বাবার বুক থেকে মুখ তুলে বাবার দিকে তাকায়। বিকাশ অংশুর চিবুকে হাত দিয়ে আদর করতে চায়। রান্নাঘর থেকে সুস্বাদু খাবারের গন্ধ ভেসে আসে। রান্নাঘরে বাসন পড়ে ঝনঝন করে শব্দ করে কেঁপে উঠল। সেই কম্পনে বিকাশের হৃদয় যেন কেঁপে ওঠে। বিকাশের সুস্বাদু খাবারের রমণীয় গন্ধ ভালো লাগেনা। মুখে কিছু বলে না। অংশুকে বুকে চেপে ধরে মাথায় হাত বুলাতে থাকে। বিকাশের দুপুরের কোন খাবার ভালো লাগেনা। অংশু বাবার সাথে একসাথে পরম তৃপ্তিতে সালাদ ফ্রাইড রাইস মাটন কষা খায়। বিকাশ সব কিছুতে সিগারেটের গন্ধ পায়। বুকে সেঁকা লাগে। খাওয়া গিলতে থাকে। খাদ্যরস হজম করায় মন তৃপ্তি দেয়। বিকাশের কিছুতেই তৃপ্তি লাগে না। 
- কী গো কেমন হয়েছে। কিছু বলছ না যে। ভালো হয়নি?
- ভালো হয়েছে।
- মা; দারুণ হয়েছে।
- আর একটু দেব।
- দাও।
- তোমাকে? 
- না না।
বারণ সত্ত্বেও অপরূপা বিকাশকে আরো কিছুটা ফ্রাইড রাইস আর মাটনকষা দিয়ে নিজের খাবার নিয়ে বিকাশের পাশে বসে। অংশু বাবামা’র সাথে একসাথে বসে পরম তৃপ্তিতে লাঞ্চসারে। অপরূপার নাকে কেন যেন ছাতিম ফুলের ঝাঁঝাল গন্ধ লাগে। বিকাশের কাছে বনচাঁপার গন্ধ খোঁজে। খেতে গিয়ে বিকাশের মুখের ভিতর দাঁতের চাপে কেটে যায় অনেকটা জায়গা। কেউ বুঝতে পারেনা বিকাশ রক্তমাংস একসাথে গেলে। বিকাশের খুব খারাপ লাগে সেদিন কেন অপরূপার কথা মন দিয়ে শোনেনি…
- বিকাশ;  অংশু যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে।
- কেন কী হয়েছে।
- ওর অনেক বন্ধু হয়েছে। 
- সে এই বয়সে এইরকম একটুআধটু হয়।
- পড়াশুনা ঠিক করছে না।
- একটু শাসন করতে পার তো।
- আমাকে মানতে চায় না। তোমার অনুপস্থিতি ওকে কেমন যেন একগুঁয়ে করে দিচ্ছে। আমার থেকে বন্ধুদের বেশি গুরুত্ব দেয়। 
- মন্দ কী।
- মন্দ হয় বন্ধুরা মন্দ হলে। 
- কেন কী করছে।
- কী আর করবে; তোমার জায়গাটা ওরা দখল করে নিচ্ছে। 
- কী… 
বিকাশ মনে মনে চমকে ওঠে। বয়সে  যখন বল খেলত কখনও নিজের যায়গা ছাড়ত না। এইজন্য সে পরিশ্রম করত অপরিসীম। এইজন্য বিকাশ ছিল কোচের বিশেষ পছন্দের। তারপর বনে এসে পেয়েছিল কাবু লেপচাকে। কাবু লেপচার কথা মনে পড়ে। কাবু বলত- স্যার, নার্সারিতে খালি জায়গায় আগাছা উঠে সদ্য গজিয়ে ওঠা চারা নষ্ট করে দেয়। তাই প্রতিনিয়ত আগাছা তুলে ফেলতে হয়। এই সময় টাকার থেকে সময়ের দাম বেশি। বিকাশ দেখত – যখন নার্সারির কাজ শুরু হোত কাবু ঘুমটুকু বাদ দিয়ে সব সময় গাছের নার্সারিতে পড়ে থাকত। সকাল থেকে বিকাল নার্সারির বেডগুলো ঘুরেঘুরে দেখতো। ছোট ছোট চারা গাছের সাথে গজিয়ে ওঠা আগাছাগুলো খুব ছোট অবস্থায় মূলসহ তুলে ফেলে দিত। বিকাশও কাবুকে দ্যাখে; কখনো কখনো ভোরবেলায় উঠে নার্সারির বেড ঘুরে ঘুরে দেখত। 
- স্যার! কী করছেন।
- কেন; আগাছা তুলছি।
- আপনি তো চারাগাছ তুলে ফেলছেন।
বিকাশ হাত ঝেড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। বিকাশ বুঝতে পারে নার্সারিতে আগাছা তুলে ফেলার কাজ খুব কঠিন। খুব ছোট অবস্থায় আগাছা ও গাছের চারা চেনা খুব কঠিন। এই কাজে অভিজ্ঞতা না থাকলে নার্সারির ক্ষতি অবধারিত। বিকাশ এখন মনের কষ্ট-কথা চালতা বীজের মত লুকিয়ে রাখে - নিজেকে চালতা ফলের মত ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তুলে। বিকাশ চায় একসাথে দুপুরের খাওয়াটা উপভোগ করতে…
- জান তো কালকের গাউরটি বেঁচে আছে।
- তাই!
- জানিস অংশু গাউরটি সুস্থ হয়ে উঠে এসে যেন আমাকে থ্যাঙ্ক ইউ বলে গেল।
- সত্যি বলছ; আমার বিশ্বাস হয়না; তুমি এমনি এমনি বলছ।
- কেন বলতো।
- জানত বাবা; সেবার যখন তুমি অনেকদিন বাড়ি আসছিলে না; মাকে বার বার জিজ্ঞাসা করাতে মা বলেছিল তুমি নাকি গাউরের পায়ে সাদা মোজা পরাতে গিয়েছিল।
- অংশু তুমি চুপ করবে।
- কেন মা। আমি বলব। জানত বাবা; এই কথাটি আমি বন্ধুদের বলাতে সবাই হা হয়ে গেছিল।
- তাই; তোমার খুব মজা লাগছিল।
- না বাবা, আমিও বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু পরে যখন বিষয়টা জেনেছি আমার মন খারাপ করছিল।
বিকাশ অপরূপার মনে যেন ময়না কাঁটা ফোটে। কবেকার কোন কথা অংশু মনে রেখে দিয়েছে। তীব্র যন্ত্রণায় অপরূপার মন হুহু করে উঠে। বিকাশের বারবার কাবুর মুখটা  ভেসে ওঠে…
- স্যার, নার্সারি করার সময় কোন ফাঁকি দেওয়া যাবে না। 
- তোমরা ফাঁকি দাও নাকি। 
- সবাই নয়। আবার অনেকের ভুলও হয়ে যায়।
- যেমন।
- ভালো গাছ থেকে বীজ তুলে আনতে হবে। বীজকে ট্রিটমেন্ট করতে হবে।  মাদার বেডে সঠিক অনুপাতে মাটি বালু সার দিতে হবে। বীজগুলোকে যাতে পিঁপড়ে,পোকারা খেতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। বীজকে সঠিক ভাবে বপন করতে হবে। পরিমানে জল দিতে হয় এবং পরিচর্চা করতে হয়। 
বিকাশের মনে পড়ে একদিন কাবু একজন শ্রমিককে কাজ থেকে বের করে দেয় -কারণ ও মাদারবেডে কীটনাশক  দেয়নি। বিকাশভাবে –কীট শুধু বীজ খায় না। কুরেকুরে জীবন খেয়ে নেয়। চাকুরির প্রথম জীবনে বিকাশ কত কী শিখেছে কাবুর কাছ থেকে। 
- যদি কোন সময় চারাগাছের সাথে আগাছাও বড় হয়ে যায় তখন কি করবে। আগাছা টেনে ওঠাতে গেলে তো চারাগাছও অসময়ে উঠে আসবে; নষ্ট হয়ে যাবে। 
- ঠিক স্যার। তখন আগাছাকে উপর থেকে পাতা কাণ্ড ছাঁটতে হবে। ছাঁটতে ছাঁটতে একসময় আগাছা মারা যাবে। চারাগাছটি বড় হয়ে উঠবে। 
অপরূপা তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে উঠে যায়। অংশুর কথাটি শুনে অপরূপা যেন লজ্জাবতী গাছের মত গুটিয়ে যায়। সব পাতাগুলো গুটিয়ে যাওয়াতে লজ্জাবতী ফুলগুলো স্পষ্ট দ্যাখা যায়। লজ্জাবতী ফুলগুলো কী সুন্দর গোলাপি – নিষ্পাপ। বিকাশ এই অপার সৌন্দর্য হারাতে পারবে না। বিকাশ ভাবতে থাকে কী করে চারাগাছের শিকড় থেকে আগাছার শিকড় ছাড়াবে।  কী করে আগাছার পাতা-কাণ্ড ছাঁটবে। ও কী কাবুর মতো অভিজ্ঞ। 
- মা’রা মজা করে কত কথা বলে।
- বারে আমি কী করে বুঝবো কোন কথাটা মজার কোনটা সত্যি।
- ঠিক। আমি এবার থেকে মাকে বলে দেব।
- না। তুমিও এখন আমাকে সব কথা বলবে। 
- ঠিক আছে। জান তো সেদিন তোমার মা বকাবকি করার পর সিগারেট ছেড়ে দিয়েছি। কালকে কত ঝামেলা হয়েছিল; সিগারেট খেতে খুব ইচ্ছে করছিল; তবুও সিগারেট খাইনি। 
বিকাশ দেখতে পায় অংশুর মুখটা যেন মাটিতে পড়ে থাকা থেতলে যাওয়া কদমফুল। বিকাশের ভালো লাগে না। হেমন্তের খালি ধানখেতে জন্ম নেওয়া সূর্যশিশিরের আলোক বিচ্ছুরণ দেখতে চায় অপরূপার মনে, অংশুর প্রাণে। 
- আজকে সন্ধ্যায় ময়ূখ’রা আসবে। 
- দারুণ হবে। কতদিন দ্যাখা হয়না। 
অপরূপা ফিরে এসে বলে
- কারা আসবে বললে।
- মাধুরী আর ময়ূখ।
- মাধুরী কালকে ফোন করে বলেছিল তোমাদের ঘটনা।
- আমাকেও রাতে ফোন করে বলে অংশুর জ্বরের কথা। ও একই রকম থেকে গেল, বল।
- ঠিক বলেছ। শোন; বিকালে দেশি মোরগ নিয়ে আসবে। ময়ূখ-অংশু খুব ভালোবাসে। 
- ঠিক আছে।
- মাংস কিন্তু তোমাকে রান্না করতে হবে…
অংশু আনন্দে লাফিয়ে ওঠে। বিকাশ অপরূপা ও অংশুকে দুপাশে নিয়ে সোফায় বসে। বিকাশ জানে ওর এই রেসিপি অপরূপা অংশু ময়ূখ –সবাই ভালোবাসে। সেইদিন কাঠের উনানে মাংস রান্না করে ও আনতে পারেনি। রমেশকে গাউর আহত করেছিল। আজরাতে কি হবে জানেনা বিকাশ। তবে মনেমনে বেশ আনন্দ হচ্ছে। বন্ধুসঙ্গ যে অনেক দাগ মুছে দেয়- শালসিঁড়ির মত। বিকাশ বুঝতে পারে তার অনুপস্থিতিতে কিছু কথা কাল দাগ ফেলেছে অংশুর মনে; অপরূপার প্রাণে। বিকাশ বুঝতে পারে আগাছায় ঢেকে যাওয়া চারাগাছের মত অংশুও কেমন যেন চাপা পড়ে আছে। এইজন্যে অপরূপা এবং অংশু এখন  দাঁড়িপাল্লার দুই দিকে দাঁড়িয়ে। বিকাশের অবস্থান সূক্ষ কীলক-এ। বিকাশ মনে মনে ভাবে ময়ূখ মাধুরী যেন আজকে মলমের কাজ করে। বিকাশ অংশু অপরূপাকে সমান উল্লাসে পেতে চায়। বিকাশের চাই সুষম মাদার বেডে চনমনে চারা। অপরূপার এবং অংশুর মন যেন সূর্যশিশিরের মত আটক করে দেয় সব কীটগুলোকে। আজকাল তো সূর্যশিশির দ্যাখা যায়না। গতকাল গাউর উদ্ধার করতে গিয়ে যখন ধানক্ষেত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, তখন বিকাশ কয়েকটি সূর্যশিশির দেখেছিল ধানক্ষেতে। সূর্যশিশিরের জন্য সঠিক পরিবেশ চাই- বিকাশ মন শক্ত করে সূর্যশিশিরের মাটির জন্য পরিবেশের জন্যে…
- অপরূপা, তুমি রেডি হয়ে নাও। অংশু, তুমি আমার সাথে বাজারে যাবে?
অংশু আনন্দ উল্লাসে বলে…
- চল।
বিকাশ এখন চলতে চায় মাটি চিনে কাবুর মতন। কাবু বিকাশকে কত গাছ চেনাতো; বলত…
- এইযে গাছটি দেখছেন একে আমরা টাংগ্রুক বলি আপনারা বলেন লসুনি, এই গাছটাকে বলি পানোরিপ আপনারা বলেন কানাইডাংগা ; এই গাছটাকে আপনারা বলেন সোনালু আমরা বলি মুন্ডারকুং…
বিকাশের মন কেমন করে ওঠে। ভাবে অংশুর পাশে যদি কাবুর মতো কেউ থাকত। অংশুকে চিনিয়ে দিত কে কেমন। চারাগাছ আর শিশুতো একই রকম। বিকাশ অপরূপা অংশুকে জড়িয়ে ধরে।  সবাই মিলেমিশে ফোটাতে চায় সূর্যশিশির। শুষে নিতে চায় সব কষ্ট-কথা - গাছের মত। ভাবতে থাকে কাবু কি এই রকম কোন গাছের কথা বলেছিল…

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri