সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
21-December,2022 - Wednesday ✍️ By- অমর চক্রবর্তী 486

শূন্য আমি পূর্ণ আমি/১৪

শূন্য আমি পূর্ণ আমি
পর্ব : ১৪
অমর চক্রবর্তী
^^^^^^^^^^^^^^^^^^  

হেথা  যে গান গাইতে আসা আমার/হয়নি সে গান গাওয়া/আজ কেবলই সুর সাধা, আমার কেবল গাইতে চাওয়া'...
সত্যিই তো কতজনের কথা বলতে সাধ জাগে কিন্তু বলা হবে কিনা জানি না! সুর সেধে যাচ্ছি শুধু!
আমার কি হবে অঞ্জনদা? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন - তুই সোজা বেহালা চৌরাস্তায় উঠে উল্টো দিকের ফুটে গিয়ে বেচু চ্যাটার্জী স্ট্রীটে মা তারা প্রিন্টার্সে গিয়ে সোজা মালিকের ঘরে  গিয়ে আমার কথা বলবি। আমি নিরঞ্জনদাকে তোর কথা বলে রেখেছি।ওনার দৈনিক পত্রিকা 'দৈনিক আকর্ষণ'এ তোকে সাব এডিটর হিসেবে কাজ দেবেন। ঈশ্বর পথ দিলেন। চলে গেলাম মা তারা প্রিন্টার্সে। ঘরে ঢুকে দেখি গোল্ডেন কালার চশমা পরিহিত একজন ছোটখাটো মানুষ। খুব চেনা লাগছে। কেন চেনা লাগছে ভাবতেই ওনার মাথার ওপরে চোখ গেল। আরে ইনিই তো রামকৃষ্ণদেব । ঠাকুর  শ্রীরামকৃষ্ণ ছবির চরিত্রাভিনেতা। গুরুদাস বন্দোপাধ্যায়ের পর ইনিই। নিজের পরিচয় ও অঞ্জনদার কথা বললাম। হ্যাঁ অঞ্জন বলেছে। উনি বললেন, কোচবিহার থেকে এসে পোষাবে? ৪০০টাকা মাসে! থাকবে কোথায়? বললাম অঞ্জনদার প্রেস। চাকরি হয়ে গেল। উনি পাশের ঘরে গিয়ে কাজ বুঝে নিতে বললেন। পাশের ঘরে চিফ রণেন মোদক। উনিও সিনেমা বানান।পাখি নামে বোধহয় একটা ছবি বানাচ্ছেন।ভালোই হল। সাংবাদিকতা আর সিনেমা। দৈনিক আকর্ষণ পত্রিকার সাব এডিটর অমর চক্রবর্তী।
নান্দনিক জীবনের লক্ষ্য ও আগ্রহ যথাযথ পালন করতে না পারলে হতাশার সৃষ্টি হয়--কিয়কেগার্ড পড়ে জেনেছি। চাকরির আনন্দ নিয়ে ফিরলাম। সন্ধে  হয়েছে। অঞ্জনদার ছোট্ট ঘরে তারার হাট। শমিত ভঞ্জ থেকে পরিচালক অমল রায় ঘটক। মেলা শেষ হলে  অঞ্জনদাকে সব বললাম। রাতে খাওয়া হল। আমি সামনের প্রেস ঘরে। হঠাৎ ঘুম ভাঙল। টিনের ঝাপ। মনে হচ্ছে কি যেন টিনের ঝাপে ছিটকে এসে লাগছে আর বিকট শব্দ। বুঝলাম বোমাবাজি হচ্ছে। রাতটা ঠকঠক করে কাটালাম। 
পরদিন আমি ফিরব। বাড়ি এসে লাগেজ নিয়ে আবার কলকাতা। তখন বেহালা ট্রাম ডিপো থেকে সোজা হাওড়া। হাওড়ায় এসে একটা জেনারেল টিকিট কাটলাম। খুব ভিড়।উঠব কি করে! এখন শিয়ালদহতে পুলিশ লাইন ঠিক রাখে তখন হাওড়ার মালিক কুলি ‌বা যাত্রী সহায়ক। একজনকে ধরলাম সে বলল আমি দো রুপাইয়া লাগে গা। ম্যায় কারশেড সে সিট লাউঙ্গা। ঠিক হ্যায়। দুটাকা দিলাম। গাড়ি প্লাটফর্মে এলো আমি আর সেই কুলিকে চিনতে পারি না! সব এক পোশাক।সবাই যেন এক। এদিকে হুড়োহুড়ি। দরোজা বন্ধ। মারামারি! আমি কি করি। ঢুকব কোথা দিয়ে! দৌড়ানো এক কুলিকে ধরলাম। দো রূপাইয়া লাগবে। ঠিক আছে। তিনি দরোজা খোলার ব্যর্থ ‌প্রয়াসের পর আমাকে বললেন জানালা দিয়ে ঢুকিয়ে দেবে। হুইসেল পড়ে গেছে - স্টার্ট। রোগা ছোট এই ছেলেটাকে পাঁজাকোলা করে জানালায় ঢুকিয়ে দিলেন।ভেতর থেকে কেউ ধরলেন। আমি কষ্টে‌ মাথা ঢুকিয়ে নিলাম কিন্তু তিনি ছাড়ছেন না! বলে যাচ্ছেন দো রূপাইয়া দো। গাড়ির সঙ্গে আমার জামা ধরে চলছেন! একহাত দিয়ে বুকপকেট থেকে টাকাটা বের করে দিলাম।তিনি জামা ছাড়লেন আমি পড়লাম কারো গায়ে এবং এক পায়ে। সারারাত এভাবে। বাথরুমে যেতে পারিনি। নির্লজ্জ কেউ জানালা দিয়ে.. ! সেই নরক থেকে ফিরতে পারলাম। চাক্ষুষ হল নরকে ঋতু নয় একরাত।
রাতে কি হয়েছিল! একসময় ঐ অঞ্চলে গুন্ডামি মস্তানি হত। তপন সিংহের 'আপনজন' যেমন। ওই রাতে তেমন কিছু একটা ঘটেছিল। বোমার স্প্রিন্টার বোধহয় ছিটকে আসছিল। মনে মনে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। বাড়ি ফিরে দেখি আবার মন দিলাম আবার লেখা ও সাংস্কৃতিক সাংবাদিকতা। উত্তর বঙ্গ সংবাদ-এ ছোটদের পাতায় অজানা তথ্য নিয়ে লেখা। জন্ম নিল একটি নাম আবীর চক্রবর্তী। অন্যদিকে 'বর্তিকা' পত্রিকায় একটা গল্প পাঠিয়েছিলাম নাম 'মাছধরা'। ছাপা হল । মহাশ্বেতা দেবীর পত্র পেলাম। তিনি হয়ে গেলেন দিদি। পরে নবারুণ ভট্টাচার্য যখন বইমেলায় বুকে চেপে ধরেছিলেন চিত্রকল্প-এর সর্বভারতীয় কাজের জন্য, আমি কি সম্বোধন করব বুঝতে পারিনি! তবে কবি লেখকরা জেঠু কাকু হয় না বড় হলেই দাদা ও দিদি। ডাকলাম নবারুণদা। লেখা ছাপা হল 'ভাষাবন্ধন' পত্রিকায়। ভালো বন্ধু পেলাম কবি অনীক রুদ্র। বর্তিকার  সঙ্গেই আরো দুটি গল্প পাঠিয়েছিলাম দৈনিক সত্যযুগ পত্রিকা ও বাংলাদেশের সাপ্তাহিক সুর পত্রিকায়। তিনটি গল্পই ছাপা হল। আমি গল্পকার হয়ে উঠছি।সা়ংস্কৃতিক খবর-এ নকশাল আন্দোলনের ওপর একটা গল্প 'এইদশক'। বীরভূম থেকে আনন্দ বাজারের করেসপন্ডেন্ট অরুণ মুখার্জি পত্রে জানালেন আমরা গল্পটির নাট্যরূপ দিয়ে মঞ্চস্থ করছি। যুগান্তর পত্রিকার কার্টুনিস্ট অমল চক্রবর্তী পত্রে জানালেন তোমার দুটি ছড়া ছাপা হবে। কি বন্ধনে জড়ালেন অমলদা। ছ'জন মানুষ আমাকে সবচেয়ে বেশি পত্র দিয়েছেন তাঁরা হলেন ড: হংসনারায়ণ ভট্টাচার্য, মহাশ্বেতা দেবী, চিত্রকর অমল চক্রবর্তী, অধ্যাপক অচিন্ত্য বিশ্বাস, লেখক অধ্যাপক সমীর রক্ষিত, লেখক শৈবাল মিত্র, কবি মঞ্জুষ দাশগুপ্ত। কত খ্যাতনামা মানুষ আমাকে কত অজানা বিষয় জ্ঞাত করেছেন। 
দেবাশিস নস্কর 'হাওয়া থেকে চালচিত্র' পত্রিকা থেকে ছোটগল্প চাইলেন; আমি একটা অণুগল্প পাঠালাম, নাম 'মুখেভাত'।গল্পটিকে ওরা পুরস্কৃত করলেন। আমার হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রখ্যাত কবি মণিভূষণ ভট্টাচার্য। প্রথম পুরস্কার পেয়েছি ডিব্রগড়  'সাংস্কৃতিকী' থেকে। অধ্যাপক অসিত দত্ত যিনি আমাকে ডেকেছিলেন চাকরির সম্ভবানায়। দ্বিতীয় পুরস্কার চালচিত্র।

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri