সহজ উঠোন

রেজিস্টার / লগইন করুন।

সব কিছু পড়তে, দেখতে অথবা শুনতে লগইন করুন।

Sahaj Uthon
28.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৮

28.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৮

27.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৭

27.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৭

26.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৬

26.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৬

25.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৫

25.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৫

24.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৪

24.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৪

23.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৩

23.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২৩

22.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২২

22.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২২

21.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২১

21.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২১

20.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২০

20.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-২০

19.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৯

19.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৯

18.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৮

18.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৮

17.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৭

17.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৭

16.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৬

16.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৬

15.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৫

15.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৫

14.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৪

14.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৪

13.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৩

13.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৩

12.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১২

12.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১২

11.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১১

11.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১১

10.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১০

10.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১০

9.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৯

9.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৯

8.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৮

8.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৮

7.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৭

7.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৭

6.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৬

6.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৬

5.স্মৃতি দিয়ে ঘের্রিত-৫/রণজিৎ কুমার মিত্র

5.স্মৃতি দিয়ে ঘের্রিত-৫/রণজিৎ কুমার মিত্র

4.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৪

4.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-৪

3.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা৩/রণজিৎ কুমার মিত্র

3.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা৩/রণজিৎ কুমার মিত্র

2.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা২/রণজিৎ কুমার মিত্র

2.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা২/রণজিৎ কুমার মিত্র

1.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১/রণজিৎ কুমার মিত্র

1.স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১/রণজিৎ কুমার মিত্র

15-December,2022 - Thursday ✍️ By- রণজিৎ কুমার মিত্র 354

স্মৃতি দিয়ে ঘেরা-১৩

স্মৃতি দিয়ে ঘেরা/ত্রয়োদশ পর্ব
রণজিৎ কুমার মিত্র
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
     
         'স্মৃতি দিয়ে ঘেরা'র বর্তমান পর্ব শুরু করবার আগে খবর পেলাম ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান জ্যোতির্ময় রায় ও ডেপুটি কন্ট্রোলার অফ এক্সামিনেশন অশোক ঘোষ চলে গেলেন। দুজনেই আমার অগ্রজ, শিক্ষকপ্রতিম। ছাত্রাবস্থা থেকেই ওদের চিনতাম, পরে যখন গ্রন্থাগার বিভাগের কর্মী হিসেবে যোগ দিলাম, তখন দুজনের সান্নিধ্য ও যে স্নেহের উদার অনুশাসন পেয়েছিলাম, তা কখনো ভুলবার নয়। শ্রদ্ধেয় গ্রন্থাগারিক চিত্রভানু সেনের গ্রন্থ ভবনের কলেবর আজ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, পরিষেবার গুণগত মানে না হোক আকারে-প্রকারে।
         বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ভবনটি বোধহয় এখন সবচেয়ে প্রাচীন। এই বাড়িটির একতলার একাংশে ছিল  কন্ট্রোলার অফ এক্সামিনেশন ও ইনস্পেক্টর অফ কলেজেস-এর দপ্তর। একতলা থেকে তেতালার পুরো অংশটাই ছিল গ্রন্থাগার বিভাগের। জ্যোতির্ময় রায় নিচে এক তলার একটি ঘরে বসতেন। উনি তখন সহকারি গ্রন্থাগারিক। পরে ডেপুটি গ্রন্থাগারিক হন। পাশের ঘরে শ্যামল বসাক, রমেন্দ্র মোহন মুনসী, তনয়া গুপ্ত-রা বসতেন। শ্যামলদা অসময়ে চলে যাবার পর এসেছিলেন সুজাতা মিশ্র। সুজাতা পরে এখান থেকে এশিয়াটিক সোসাইটির লাইব্রেরীতে চলে যায়। মাঝখানে প্যাসেজ, উল্টোদিকের বড় ঘরে আমি, বিজয় ছেত্রী, রমেশ লাহিড়ী। শিশির লাহিড়ী কয়েক বছরের জন্য এসেছিলেন। পাশের ঘরটি ছিল বই বাঁধাই করবার দপ্তর, যার দায়িত্বে ছিলেন বলরাম দত্ত ও মানিক রাহা-রা। দোতালায় সার্কুলেশন, পত্র-পত্রিকা বিভাগ, অফিস ও গ্রন্থাগারিকের ঘর।গ্রন্থাগারিক চিত্রভানু সেনের ঘরের পেছনে ছিল, উপ গ্রন্থাগারিক দিলীপ চৌধুরীর ঘর, পাশেই অফিস রুম, বড়বাবু বিমল চৌধুরী ও  তার সহযোগীরা ছিলেন অসীম বসু, চঞ্চল পাল ও ভরতদা। পত্র-পত্রিকা বিভাগে ছিলেন ল্যাডলি রায়, তপন গুপ্ত, সুখময় সরকার, অশোকদা, শিবেনদা। সার্কুলেশনে নারায়ণ ঘোষ ,জয়ন্ত ঘোষ, তনয়া গুপ্ত, ছোট দিলীপ চৌধুরী, ঘোষবাবু, ভূষণ। ডি পি লামা, ফলেন-রা ওপরে স্টেক রুমে।  তেতলাতে তখন ছিল দেবাশীষ হাজরার দায়িত্বে রেপ্রগ্রাফির ইউনিট।
  তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরি দুটো শিফটে খোলা থাকত, সকাল দশ টা থেকে রাত্রি আটটা। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে হাফ ছুটি থাকলেও লাইব্রেরী খোলা থাকত বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। আমি জলপাইগুড়িতে থাকতাম বলে সেকেন্ড শিফটে ডিউটি করা সম্ভব হত না, তাই আমার জন্য ব্যাবস্থা ছিল, প্রতি শনিবার দুটো থেকে পাঁচটা পর্যন্ত, আমি প্রতি শনিবার দুটো থেকে পাঁচটা পর্যন্ত সার্কুলেশনে কাজ করতাম ।
        একই ভবনের হওয়াতে পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগ ও ইনস্পেক্টর অফ কলেজের বিভাগের সকলের সাথেই যোগাযোগ ছিল । কন্ট্রোলার সুখময় মজুমদার, আইসি, অধ্যাপক অরুন ভূষণ মজুমদার,পরে  ডক্টর সিনহা, সকলের অপরিসীম স্নেহ পেয়েছি ।অশোক ঘোষ তখন ওই দপ্তরে, খুব আন্তরিক ভাবে হাক ডাক করে কথা বলতেন, আর সবাইকে বিশেষ করে আমাদের মতো কনিষ্ঠদের খুব স্নেহ করতেন। এক লহমায় কত কথা মনে পড়ে গেল, তবে মানস অংকতে এখন বিয়োগের পাল্লাই ভারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃক্ষ থেকে এখন শুধু  পাতা ঝরানোর দৃশ্য! মনটা কেমন বিহ্বল হয়ে গেল, অশোক ঘোষ ও জ্যোতির্ময় রায়-দের চলে যাবার  সংবাদে। ... পথের সাথী, নমি বারংবার/পথিক জনের লহো নমস্কার।
    
         ফিরে যাই, আবার সেই পিঁপড়ের আলোর-ধুলোমাখা রেণুর ভুবনে। সেবারে দোল পূর্ণিমাতে শাল কুঞ্জে রবীন্দ্রসংগীতের আসর বসবে। সুচিত্রা মিত্র সঙ্গীত পরিবেশন করবেন তার সঙ্গে ভাষ্যপাঠ করবেন বিখ্যাত সাংবাদিক-সাহিত্যিক সন্তোষ কুমার ঘোষ। তবে তিনি সেদিন চন্দ্রাহত ছিলেন, সামান্য দু-চার কথা বলবার পর উপাচার্য অম্লান দত্ত তাকে নিরস্ত করলেন। সুরের বন্যায় ভাসিয়ে দিলেন সুচিত্রা মিত্র। পূর্ণিমার আলো-অন্ধকারে শাল কুঞ্জকে কেমন মায়াময় মনে হচ্ছিল। সেদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি, দুপুরের দিকে থেমে গেল, কিন্তু মেঘলা আবহাওয়া রয়েই গেল সেই সন্ধ্যায় জোছনা ফুটল না, কালোমেঘ ঢেকে রেখেছিল চাঁদকে। সেই আবহে সুচিত্রা মিত্র প্রথম গান গেয়েছিলেন - "রোদন ভরা এ বসন্ত /সখি কখনো আসেনি বুঝি আগে।" পূর্ণিমা রাত্রির মেঘের আড়ালে চাঁদের ভেসে থাকা,  শুকনো পাতার মর্মরে কার যেন মনের বেদন, দীর্ঘশ্বাস আর নীরবতায় ছেয়ে ফেলছে চতুর্দিক, সেদিন যেন এক অলৌকিক রাত নেমে এসেছিল রাজা রামমোহনপুরে।      
      বছরটা ছিল কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের জন্ম শতবার্ষিকী। কলকাতা পার্ক সার্কাস ময়দানে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বক্তৃতা প্রতিযোগিতা হবে, এই প্রতিযোগিতার জন্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি ও পার্ট টুর কেশবদা নির্বাচিত হয়েছিলাম, পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুজন করে প্রতিযোগী যোগ দেবেন। আমাদের ওই প্রতিযোগিতায় পাঠানোর বিষয়ে উপাচার্য মহাশয়-এর গভীর আগ্রহ ছিল। কলকাতা যাবার থাকার  সব ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকেই করা হয়েছিল। কলকাতায় তখন ইউনিভার্সিটির ক্যাম্প অফিস ছিল কালীঘাটের ঐ দিকে, সেখানে গিয়ে দেখি ধুলোয় ভর্তি অতিথিশালা, কেউ সেখানে কোনো দিন থাকত বলে মনে হল না। আমরাও সেখানে থাকতে রাজি হলাম না। ওখান থেকে বেরিয়ে শিয়ালদার কাছে একটি হোটেলে উঠেছিলাম। সেখান থেকে পার্ক সার্কাস ময়দানে শরৎ মেলায় যাব, সেখানে ওই বক্তৃতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। মফস্বলের স্বভাবের আমাদের খুব ভয় করছিল, বক্তৃতার মঞ্চে ডাকার পর একটি করে চিরকুট ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমার বিষয় উঠেছিল, "শরৎসাহিত্যে বাৎসল্য "। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন ছাত্র, দ্বিতীয় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী, তৃতীয় হয়েছিলাম আমি। আমাদের তিনজনের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের মন্ত্রী শ্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ওই প্রতিযোগিতাতেই প্রথম আলাপ হয়েছিল অচিন্ত্য বিশ্বাসের সঙ্গে। অচিন্ত্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিযোগী হয়ে এসেছিলেন, পরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হন।  আমি তখন গ্রন্থাগার বিভাগে যোগ দিয়েছি। অচিন্ত্য পুরনো আলাপ ঝালিয়ে নিলেন, খুব ভাল লেগেছিল। আমাদের গ্রন্থাগার বিভাগের সহকর্মী চঞ্চলের সঙ্গে ওদের মেসে অচিন্ত্য প্রথমে থাকতেন, পরে কোয়াটার পেলেন অচিন্ত্য।  পরে অচিন্ত্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চলে যান। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছিলেন। বন্ধুবৎসল, অত্যন্ত মেধাবী, 
সজ্জন অধ্যাপক অচিন্ত্য বিশ্বাসের উত্তরবঙ্গে বহু অনুরাগী ছাত্রছাত্রীরা রয়েছেন।
       
       কত কিছু মনে পড়ে যাচ্ছে। সেবারের সমাবর্তনে এসেছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের দুই কিংবদন্তি শিল্পী শান্তিদেব ঘোষ ও দেবব্রত বিশ্বাস। দুজনেরই দুদিন আলাদা করে অনুষ্ঠান হয়েছিল। মনে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক অধ্যাপক, আধিকারিক ও শিক্ষা কর্মীদের দ্বারা নাট্যাভিনয় শরৎচন্দ্রের 'নিষ্কৃতি' অধ্যাপক হরিপদ চক্রবর্তী, অধ্যাপক শিবচন্দ্র লাহিড়ী, কমার্সের জে.এন.সি, গ্রন্থাগার বিভাগের আধিকারিক দিলীপ চৌধুরী, অধ্যাপক হরিপদ চক্রবর্তীর স্ত্রী শ্রদ্ধেয়া ষোড়শী চক্রবর্তী, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সবার মাসিমা ছিলেন সবাই অভিনয় করেছিলেন। 
 ধন্য হয়েছিলাম শান্তিদেব ঘোষ ও দেবব্রত বিশ্বাসের গান শুনে।  দুজনকে দেখা, গান শোনা এক দুর্লভ অভিজ্ঞতা। শান্তিদেব ঘোষ চিরাচরিত শান্তিনিকেতন ঘরানার, সাদা ধুতি, গেরুয়া পাঞ্জাবি আর বাবরি চুল। বৃদ্ধ বয়সেও তিনি যেন আশ্রম বালকের মতো নবীন। আর দেবব্রত বিশ্বাস তখন বির্তকিত 'ব্রাত্যজন' কিন্তু তার সংগীত অবশ্য তখন রুদ্ধ ছিল না। গেরুয়া লুঙ্গি পাঞ্জাবী আর চোখেমুখে অসম্ভব বিরক্তি।  দুজনেরই একক সঙ্গীতানুষ্ঠান, দুই দিনে। দেবব্রত বিশ্বাসকে নিয়ে আমাদের তখন অসীম কৌতুহল, গেস্ট হাউসে গিয়েছিলাম শান্তিদেব ঘোষ ও দেবব্রত বিশ্বাসের অটোগ্রাফ নিতে। নিতে পারিনি, দুইজনই তখন বিশ্রাম রত ছিলেন ।আর তাছাড়া অনেক পাহারা ডিঙিয়ে তাদের কাছে যাবার সাহস হয়নি। সেদিনের সেই রবীন্দ্রসংগীত অনুষ্ঠানের কথা ভারী সুন্দর করে তার নিজের স্মৃতিকথাতে লিখেছেন অধ্যাপক  হিতেন নাগ । অধ্যাপক হিতেন নাগ কুচবিহার জেলা দিনহাটা কলেজের অধ্যাপক ছিলেন, সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন ছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সেই সময়ে সদস্য থাকাকালীন তাঁর অভিজ্ঞতার বিস্তারিত বিবরণ থেকে সামান্য একটু অংশ উল্লেখ করছি

        "সেবারে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব উপলক্ষে,  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন শান্তিদেব ঘোষ ও দেবব্রত বিশ্বাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজে উঠেছেন। আমিও তখন গেস্ট হাউসে ছিলাম । শান্তিদেব ঘোষের সাথে নিভৃতে আড্ডা দেবার বিরল সুযোগ কেউ হাতছাড়া করে! আরো একজন ছিলেন ওই আড্ডায়, তিনি সেসময়কার রেজিস্টার বিমলকুমার বাজপেয়ি। গেস্ট হাউজের দোতলার বারান্দায় আড্ডা চলছে ,শান্তিদেব ঘোষ আড্ডায় ছিলেন উদার, নিজের জীবনের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা, রবীন্দ্র সান্নিধ্যের দুর্লভ মুহূর্তের কথা তিনি বলে চলেছেন, আমরা দুজন মুগ্ধ হয়ে শুনছি ।এমন সময় খুব স্বাভাবিকভাবে উঠল দেবব্রত বিশ্বাসের সেই সব অজানা কাহিনী।বিশ্বভারতীর মিউজিক বোর্ড দেবব্রত বিশ্বাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, এই বলে, "তুমি রবীন্দ্র সংগীতের সুর বিকৃত করেছ,  অতএব তুমি আর ওই সংগীত গাইতে পারবে না",  আসলে ব্যাপারটা উস্কে দিয়েছিল আনন্দবাজার পত্রিকা, আর সব ঘটনার মূলে ছিল সন্তোষ কুমার ঘোষ, 'কিনু গোয়ালার গলি' লিখে রাতারাতি বিখ্যাত হওয়া সন্তোষ কুমার ঘোষ-এর স্থান তখন আনন্দবাজার পত্রিকার মালিক অশোক কুমার সরকারের পরে, তিনি যা করেন বা বলেন পত্রিকা চলে ঠিক সেভাবে। সন্তোষ কুমার ঘোষ যে কোনো কারণেই হোক, দেবব্রত বিশ্বাসের ওপর রেগে ছিলেন। একদিন এক অনুষ্ঠানে দেবব্রত বিশ্বাস গিয়েছেন গান গাইতে, দেখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি আর কেউ নয় সন্তোষ কুমার ঘোষ। দেবব্রত বিশ্বাস বিচলিত হলেন না এতটুকুও বরং খুশি হলেন। গান গাওয়ার সময় এলে হাঁটুর ওপর হারমোনিয়াম তুলে দেবব্রত বিশ্বাস শুরু করলেন জনপ্রিয় সেই রবীন্দ্র সংগীত, "পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে/পাগল আমার মন নেচে ওঠে/ আমার স্বপ্ন ঘিরে নাচে, যত মাতাল জুটে/" গানটার যেখানে 'যত মাতাল জুটে' আছে সেই কলিটাই  দেবব্রত বারবার গাইছেন আর তুড়ি মেরে দেখাচ্ছেন সভাপতির আসনকে, প্রথম-প্রথম শ্রোতারা কিঞ্চিৎ অবাকই হয়েছিল দেবব্রত বিশ্বাসকে ওভাবে গাইতে দেখে। আসলে সেদিন ছিল প্রতিশোধ নেবার দিন। সবারই জানা ছিল ব্যাপারটা। সন্তোষ কুমার ঘোষ দিবা রাত্র আকন্ঠ নিমজ্জিত থাকতেন মদের নেশায,  দেবব্রত বিশ্বাস তাই যখন যত মাতাল জুটে বলছেন, অমনি শ্রোতারা হাততালিতে মেতে উঠছেন।  সেদিন এমন মধুর অথচ মর্মান্তিক প্রতিশোধ  নিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস।"

'স্মৃতি দিয়ে ঘেরা' শুধু আমার নিজস্ব স্মৃতিকথা নয় এ সবার, সমস্ত প্রাক্তনীদের। একে বলা যেতে পারে 'স্মৃতির অর্কেস্ট্রা' তাই ভূগোল বিভাগের প্রাক্তনী কৃষ্ণাদি যখন স্মৃতিবিহ্বল নস্টালজিক হয়ে যান, আমিও তার অংশীদার হয়ে যাই। কৃষ্ণাদি ও ভূপেশদা, এই বাগচী দম্পতি দীর্ঘকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান  প্রত্যক্ষ করেছেন, ওদের বাড়ির নাম 'সূর্যমুখী', বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই। ও  বাড়িতে অনেক শিল্পীরা অতিথি হয়েছেন। কৃষ্ণাদি  আজও মনে করতে পারেন, সেইসব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের স্মৃতি  - রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, আরতি   মুখোপাধ্যায় সকলেই এসেছিলেন রাজা রামমোহনপুর,  গীতসুধা রসের সেই ঘোর  যেন এখনো আবিষ্ট করে। সত্যিই! কত কথাই তো অজানা, কত গান তো গাওয়া হল না, শোনা হল না। এখন শুধু 'পূর্বাচলের পানে তাকাই অস্তাচলের ধারে আসি /ডাক দিয়ে যার সাড়া না পাই, তার লাগি আজ বাজাই বাঁশি' ...

আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴
software development company in siliguri,best
                            software development company in siliguri,no 1 software
                            development company in siliguri,website designing company
                            in Siliguri, website designing in Siliguri, website design
                            in Siliguri website design company in Siliguri, web
                            development company in Siliguri