মায়াপথের মীড়-১২/সৌগত ভট্টাচার্য
মায়াপথের মীড়/শেষ পর্ব
সৌগত ভট্টাচার্য
বাউন্ডুলে শব্দটির মধ্যে একটি হন্তদন্ত বেরিয়ে পড়া আছে! বাউন্ডুলে অগোছালো আত্মভোলা! তাঁর না আছে বাঁধন, না আছে গ্রন্থি! থাকার মধ্যে আছে একটা বেরিয়ে পড়ার মন! সে সবার মধ্যে থেকেও একক ও মুক্ত। গৃহীর আছে সংসার ভাবনা, আছে মায়া-বাঁধন, সঞ্চয়...
বাউন্ডুলে ফাঁকা পকেটে মায়াপথের গান শুধু বাজে। সে নির্ধন, তাঁর সঞ্চয় শুধু পথের দুইধারে প্রকৃতি মানুষ, প্রান্তরের ধুলোয় তাঁর হৃদয় রঙিন।
গৃহী চাইলেই বাউন্ডুলে হতে পারে না! হবেনই বা কেন! কিন্তু প্রতিটি পথ প্রান্তরেই বাউন্ডুলের বসত ভিটা। তাঁর সংসার বাঁধন থাকলেও, ঝোলার গ্রন্থী বাঁধা পথে প্রান্তরে! দুনিয়াময় অফুরান আনন্দকণা তাঁর বেঁচেবর্তে থাকার রসদ!
গৃহী হারানোর ভয়ে কাঁটা, এই বুঝি সব হারিয়ে গেল! বাউন্ডুলের প্রাপ্তির আশা নেই, তাই হারানোরও ভয় নেই। সে জানে সে এই জীবন সংসারের দুই দিনের অতিথি। তাই গোটা জীবনটাই আসলে মায়াপথের ভ্রমণ উৎসব। এই সহজ পথই তাঁর অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছে। সে পথের গানে সাড়া দিয়ে বেরিয়ে পরে জীবনকণা সঞ্চয়ে!
সকল গৃহীর ভেতরেও একটি বাউন্ডুলে মনের বাস। তাই গৃহীমন বেরিয়ে পড়তে চায় প্রতিদিনের দীর্ঘশ্বাসের অভ্যাসকে ছুটি দিয়ে, একান্ত নিজস্ব সেই মুখচোরা বাউন্ডুলে মনটাকে খুঁজতে।
শুধু নিজের গভীরে লুকিয়ে থাকা বাউন্ডুলেটিকে খোঁজার জন্য বুকের ভেতরে একটি খাঁটি বাউন্ডুলে থাকা চাই --- যে তাকে নিয়ে যাবে মায়াপথের মীড় শোনাতে।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴