অলৌকিক চড়ুইভাতি /রণজিৎ কুমার মিত্র
অলৌকিক চড়ুইভাতি
রণজিৎ কুমার মিত্র
নাগরিক অস্মিতা আর বুদ্ধিজীবীর খোলস নিয়ে রুদ্ধ ঘরে সঙ্গীহীন থাকতে থাকতে ডাক এলো সহজ উঠোনে চড়ুইভাতির। যাঁদের সঙ্গে প্রত্যেক সপ্তাহে দেখা হয় মুখবই এর পাতায় ভার্চুয়াল- দুনিয়ার দূরত্বে, সেই সব সঙ্গী-সাথী অনেকেরই নিকটে-নির্জনে সান্নিধ্য পেলাম দুটি দিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এও যেন এক নবীনতর প্রেম যা একান্তই 'নিকষিত হেম।' অমিত আর পপির দারাগাঁও এর অস্থায়ী সংসারে আড়াই দিনের অতিথিরা যেন চিরকালের সংসারে ঠাঁই পেয়ে গেলেন। চম্পাদি-বেলাদি-চিত্রাদি আর প্রশান্তদার 'আয় তবে সহচরী, হাতে হাতে ধরি ধরি'র সাথে, সপ্তম সুরে তান বেধেছিলেন শুক্লা-সুদীপা-মালবিকা-মনিকুন্তলা-নীপা-মীনাক্ষী-সৌমিতা আর পার্থ। 'উলসিত তটিনী'র মতো নাচলেন মীনাক্ষী পার্থকে সঙ্গে করে। কৃষ্ণ-সুব্রত-আশীষ বিকাশ-অনুপম-শান্তনুরা রাখিলো 'প্রমোদে ভরি মন প্রাণ দিবানিশি'। কবিতায়-গানে-গল্পে-কথকতায় যেন "ঢালো ঢালো শশধর, ঢালো ঢালো জোছনা।" শাশ্বতীর মৃদু হাসির সঙ্গে সুজাতা পরমান্ন প্রদান করলেন পরম কারুনিক তথাগতর কাছে। এরই মাঝে শাশ্বত আর শুভমিতা অন্নদাশঙ্কর রায়ের ছড়ায় আমাদের 'চাংরিপোতা' নিয়ে গেল। সুদীপার উজ্জ্বল উত্তরাধিকার ওরা পেয়েছে, ওদের খুব যত্নে রেখো। আর অতনু-মুক্তির অনুরিমা আমাদের সবার আকবরী মোহর, তার নিজস্ব উজ্জ্বলতায় আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করেছে। ভালোবাসার জন্য যাঁরা "দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেধেছে লাল কাপড়", "বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছে ১০৮ টা নীল পদ্ম।" তাঁরা সবাই ভালোবেসে কথা রাখবার এক নতুন ভাষ্য রচনা করলেন। এঁদের সকলের জন্য, "এই লভিনু সঙ্গ তব সুন্দর হে সুন্দর/ এই জনমে ঘটালে মোর জন্ম- জন্মান্তর।" সহজ উঠোনের কাছে কৃতজ্ঞ রইলাম, এই 'অলৌকিক চড়ুইভাতি' উপহার দেবার জন্য।
আপনাদের
মূল্যবান মতামত জানাতে কমেন্ট করুন ↴